২৩ সপ্তাহের গর্ভাবস্থা | ভ্রূণের বৃদ্ধি, মায়ের শরীর এবং কিছু টিপস

Spread the love

গর্ভাবস্থার ২৩ তম সপ্তাহে ভ্রূণের  বৃদ্ধি খুব দ্রুত হতে থাকে। এসময় পর্যন্ত ভ্রূণের ওজন বেশ ধীরে বাড়ছিলো । ২২-২৩ সপ্তাহের দিকে এসে ভ্রূণের ওজন অপেক্ষাকৃত দ্রুত বৃদ্ধি হতে থাকে এবং পরবর্তী  ৪ সপ্তাহের মধ্যে তার ওজন বর্তমান ওজনের প্রায় দ্বিগুণও  হয়ে যেতে পারে।

গর্ভাবস্থার ২৩ তম সপ্তাহকে প্রেগন্যান্সির দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারের নবম সপ্তাহ হিসেবে ধরা হয়। এ সপ্তাহের অবস্থান গর্ভাবস্থার ষষ্ঠ মাসে।

বিজ্ঞাপণ
২৩ সপ্তাহের গর্ভাবস্থা

গর্ভধারণের ২৩ তম  সপ্তাহে গর্ভের শিশুর বৃদ্ধি

গর্ভের ভ্রূণটির ত্বক এখনো বেশ নাজুক ও পাতলা হওয়ায় ত্বকের নীচের বিভিন্ন অঙ্গ ও হাঁড়গুলো  দৃশ্যমান। তবে এখন তার ত্বক ধীরে ধীরে লালচে বর্ণ ধারণ করছে কারণ তার চামড়ার ঠিক নীচে শিরা ও ধমনীগুলো গঠিত হচ্ছে। সেইসাথে শরীরে চর্বির স্তর জমা হতে শুরু হওয়ার কারণে ত্বকের আবরণ আরো  পুরু ও অস্বচ্ছ হতে থাকবে।

এসময় গর্ভে থাকা শিশুটি তার শরীরের সবগুলো পেশী নাড়াতে সক্ষম হয়ে ওঠে। এই কারণে তার নড়াচড়া এখন অনেক নিয়ন্ত্রিত ও শক্তিশালী হয়ে উঠবে, ফলে মা তার গর্ভের শিশুর নড়াচড়া আগের চাইতে আরেকটু জোরালোভাবে টের পেতে পারেন। সেই সাথে তার জেগে থাকা ও ঘুমানোর সময় সম্পর্কেও মায়ের কিছুটা ধারণা হয়ে যাবে।

তবে, গর্ভের ভ্রূণের নড়াচড়া এক এক জনের এক এক রকমভাবে হতে পারে।কিংবা এক এক প্রেগ্ন্যান্সীতে একই মায়ের ভিন্ন অভিজ্ঞতা হতে পারে।  এসময়ে এসে যদি ভ্রূণের নড়াচড়া ঠিকভাবে বুঝতে না পারেন বা অতটা জোরালোভাবে টের না পান,  তবে ঘাবড়ে যাবেন না।

গর্ভে ভ্রূণের অবস্থান অথবা প্লাসেন্টার অবস্থানের উপর এটা নির্ভর করতে পারে। যেমন- মায়ের প্লাসেন্টা যদি জরায়ুর সামনের দিকে থাকে (অ্যান্টেরিয়র প্লাসেন্টা) তবে তা গর্ভের শিশু ও মায়ের পেটের মাঝে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে যাতে তার নড়াচড়া কম বোঝা যায়।

গর্ভের শিশুটির আকার ২৩ তম সপ্তাহে একটি বড় সাইজের বাতাবি লেবু বা জাম্বুরার সাথে তুলনা করা যায়। এসময় ভ্রূণের উচ্চতা থাকে প্রায় ১১.৩৮ ইঞ্চি বা ২৮.৯ সেমি এবং এর ওজন হয় আনুমানিক ১.১ পাউন্ড বা ৫০১ গ্রামের মত।

২৩ তম সপ্তাহের দিকে এসে ভ্রূণের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক বিকাশের মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। সেগুলো নিম্নরূপঃ

কান

গর্ভের ভ্রূণটির শ্রবণশক্তি ২৩ সপ্তাহে এসে আরও সংবেদনশীল হয়ে উঠবে। গর্ভাবস্থার ১৬ সপ্তাহ থেকেই সে মায়ের গলার স্বর ও শরীরের আভ্যন্তরীণ বিভিন্ন শব্দ শুনতে শুরু করে। সেইসাথে, ধীরে ধীরে সে গর্ভের বাইরের শব্দ আরেকটু স্পষ্টভাবে শুনতে শুরু করবে।

শ্রবনশক্তির বিকাশের প্রথম দিকে ভ্রূণটি সাধারণত নিম্ন কম্পাঙ্কের শব্দ ভালোভাবে বুঝতে পারে। যেমন, নারী কণ্ঠের কম্পাঙ্ক যেহেতু বেশি, তাই ধারণা করা হয়, নারী কণ্ঠের চেয়ে পুরুষ কণ্ঠ এসময় সে হয়তো ভালো শুনতে পাবে।

পরিপাকতন্ত্র

আমরা যখন কোনো  খাবার খাই তখন তা অনেকটা ঢেউয়ের মত খাদ্যনালীর পেশীর সংকোচন প্রসারণের মাধ্যমে খাদ্যনালী দিয়ে নেমে পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন অংশে পৌঁছায়। এই প্রক্রিয়াটিকে পেরিস্টালসিস (peristalsis)  বলা হয়।  

২৩ তম সপ্তাহে ভ্রূণের পরিপাকতন্ত্রের এই প্রক্রিয়াটি শুরু হতে পারে। ভ্রূণটি এখন কোন খাবার গ্রহণ না করলেও জন্মের পর এই কাজের অনুশীলন হিসেবেই এটি শুরু হয়ে যায়।

হৃদপিণ্ড

এতদিন হয়তো আলট্রাসাউন্ড স্ক্যানেই আপনি ভ্রূণের  হৃদস্পন্দন শুনতে পেরেছেন। ২৩ সপ্তাহের দিকে এসে ভ্রূণের হার্টবিট বেশ শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং এখন থেকে সাধারণ স্টেথেস্কোপের সাহায্যেই তার হার্টবিট শোনা যেতে পারে।

এসময়ে আলট্রাসাউন্ডে ভ্রূণের হৃদপিণ্ডের প্রকোষ্ঠ ও গুরুত্বপূর্ণ রক্তবাহীনালীগুলো দেখা যাবে এবং এসময়ে হৃদপিণ্ডের গঠন জনিত ভ্রূণের কোনো ত্রুটি থাকলে তা অ্যানোমালী স্ক্যানে ধরা পড়ে।

ফুসফুস

২৩ সপ্তাহের দিকে, ভ্রূণের ফুসফুসের গঠন প্রায় শেষের দিকে থাকে । এসময় তার ফুসফুসের বিভিন্ন রক্ত নালীগুলো গঠিত হতে থাকে যা জন্মের পর তাকে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে সাহায্য করবে। সেসময় পর্যন্ত ভ্রূণটি প্লাসেন্টার মাধ্যমেই  তার প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পেয়ে থাকে।

ত্বক

এতদিন ভ্রূণের পুরো শরীরজুড়ে হালকা ধূসর বর্ণের যে আবরণ তৈরি হচ্ছিল তা এসময়ে এসে  আরও ঘন ও গাঁঢ়  হয়ে উঠবে, এমনকি আলট্রাসাউন্ড স্ক্যানেও এ আবরণটি এখন দৃশ্যমান হয়ে উঠতে পারে।

জন্মের ঠিক আগে আগে লানুগো নামের এই লোমশ আবরণ বেশিরভাগটাই মিলিয়ে যায়। কখনো কখনো জন্মের পরও সামান্য কিছু অংশে এই আবরণ থাকতে পারে, তবে ক’দিনের মধ্যে সেটাও ঝরে যাবে।

২৩ তম সপ্তাহে মায়ের শারীরিক পরিবর্তন

২৩ তম সপ্তাহে মায়ের জরায়ু নাভীর প্রায় ১.৫ ইঞ্চি উপরে চলে আসে। এসময় থেকে ডাক্তাররা গর্ভের শিশুর বৃদ্ধি ঠিক আছে কিনা তা দেখার জন্য মায়ের পেটের আকার পরিমাপ করে থাকেন। এর জন্য মায়ের পিউবিক বোন থেকে জরায়ুর উপরের অংশ পর্যন্ত উচ্চতা পরিমাপ করা হয়। একে ফান্ডাল হাইট (Fundal Height) বলা হয়।  স্বাভাবিক গর্ভাবস্থায় এসময় মায়ের ফান্ডাল হাইট হতে পারে ২১-২৫ সে.মি.

গর্ভাবস্থার আগের ওজনের উপর নির্ভর করে এসময় মায়ের ওজন প্রায় ১২-১৫ (৫.৪-৬.৮ কেজি) পাউন্ড বেড়ে যেতে পারে। ডাক্তারদের মতে গর্ভধারণের আগে যদি মায়ের BMI বা বডি ম্যাস ইনডেক্স  স্বাভাবিক থাকে তবে এর পরবর্তীতে প্রতি সপ্তাহে ১ পাউন্ড করে ওজন বৃদ্ধি পেলে তা স্বাভাবিক। আবার, যদি গর্ভধারণের আগে বিএমআই কম বা বেশি থাকে অথবা যদি প্রথম ট্রাইমেস্টারে মায়ের ওজন খুব বেশি কমে যায় বা বেড়ে যায় তবে তার উপর নির্ভর করে মায়ের ওজনের বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হবে।

বিজ্ঞাপণ

তবে মনে রাখবেন এই ১ পাউন্ড করে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার হিসেবটি একটি গড়পড়তা হিসেব। মায়ের ওজন যদি কোন সপ্তাহে আধ পাউন্ড বৃদ্ধি পায় এবং পরবর্তী সপ্তাহে  দেড় পাউন্ড বাড়ে তবে সেটাও খুব স্বাভাবিক। ২০

গর্ভাবস্থার এ সময় যেসব উপসর্গ বেশি দেখা দিতে পারে তা হল –

ঘন ঘন প্রস্রাব

এসময় মায়ের বর্ধিত জরায়ু সরাসরি ব্লাডারের উপরে চাপ প্রয়োগ করে যাতে মায়ের ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ পেতে পারে। এটি গর্ভাবস্থার একটি স্বাভাবিক উপসর্গ।

ঘন ঘন প্রস্রাব হয় বলে পানি কম পান করা উচিত নয়। বরং পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ইউরিন টেস্ট করিয়ে নিতে হবে কোনো ইনফেকশন আছে কিনা কিংবা ডায়াবেটিস আছে কি না তা দেখে নেওয়ার জন্য। থাকলে সে মোতাবেক চিকিৎসা  নিতে হবে।

ব্লাডারের উপর জরায়ুর চাপের কারণে অনেক সময় মায়ের ইউরিন লিক করতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে এই লিক করা তরল প্রস্রাব নাকি অ্যাম্নিওটিক ফ্লুইড। যদি নির্গত তরল পাতলা ও গন্ধহীন হয় তবে অ্যাম্নিওটিক ফ্লুইড হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। পানি ভাঙ্গা বা অ্যাম্নিওটিক ফ্লুইড নির্গত হচ্ছে মনে হলে কিংবা যদি অনবরত ফোঁটা ফোঁটা তরল নির্গত হতে দেখা যায়  অথবা একসাথে অনেকটুকু তরল বেরিয়ে আসছে সেক্ষেত্রে সিম্পটম জানিয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।   

ইডেমা বা শরীরে পানি আসা

গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক অবস্থার তুলনায় মায়ের শরীরে প্রায় ৫০ ভাগ বেশী রক্ত ও তরল উৎপন্ন হয়। এই অতিরিক্ত রক্ত এবং তরলের কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যায়।

বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থায় শরীর ফুলে যাওয়া বা ইডেমা খুব স্বাভাবিক। এতে ভয়ের কোন কারণ নেই । বেশীর ভাগ মায়েরাই কম বেশী এ সমস্যায় ভোগেন। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইডেমা ভয়ের কারণ হতে পারে। তাই এসময় থেকে নিয়মিত ব্লাড প্রেশার চেক করতে হবে। যদি শরীর ফুলে যাওয়ার সাথে সাথে মাথা ব্যাথা থাকে এবং দৃষ্টি ঝাপসা মনে হয় তবে তা প্রি-এক্লাম্পশিয়ার লক্ষণ হতে পারে। সেক্ষেত্রে দ্রুত আপনার গাইনক্লোজিস্টকে বিষয়টি অবহিত করতে হবে।

যখন বিশ্রাম নেবেন বা শুয়ে থাকবেন তখন পায়ের নীচে বালিশ বা কুশন দিয়ে পা উপরের দিকে তুলে রাখুন। এতে যেমন আপনার রিলাক্সেশান  হবে তেমনি এতে শরীরে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্থ হবেনা। সবচাইতে ভালো হয় যদি শুয়ে থাকা অবস্থায় পা আপনার হার্টের চাইতে উপরে রাখা যায়। তবে শেষপর্যন্ত যেটা আপনার জন্য আরামদায়ক সেটাই করুন।

হাত অবশ লাগা বা সুই ফোটার অনুভূতি

গর্ভাবস্থায় কারপাল টানেল সিনড্রোমের কারণে হাত অবশ লাগা, সুই ফোটা বা ঝিন ঝিন অনুভূতি হতে পারে। সাধারণত হাতের বুড়ো আঙুল, তর্জনী, মধ্যমা এবং রিং ফিঙ্গারের অর্ধেকে এ সমস্যা দেখা দেয়। খাবার খেতে, হাত মুষ্টিবদ্ধ করতে বা কোনো জিনিস ধরতে সমস্যা হয়। লক্ষণগুলো রাতে বেশি দেখা যায়।

গর্ভাবস্থায় শরীরের অতিরিক্ত তরল আমাদের হাতের কব্জির কাছে থাকা মিডিয়ান নার্ভে চাপ দেয় বলে এমনটা হয়। প্রসবের পর শরীরের অতিরিক্ত তরল কমে গেলে এ সমস্যাও কমে যায় তবে কিছু কিছু মায়েদের সন্তান জন্মদানের পরও প্রায় বছরখানেক এ সমস্যা থাকতে পারে।

মাথা ব্যাথা

কিছু কিছু মায়েদের মাথা ব্যাথা এসময় বেড়ে যেতে পারে। হরমোনের পরিবর্তনের কারণেই এমনটা হয়। এছাড়াও ক্লান্তি, ক্ষুধা, পানিশূন্যতা, স্ট্রেস লেভেল, সতেজ বাতাসের অভাব কিংবা ব্যায়াম ইত্যাদি মাথা ব্যাথা হওয়া ও তার তীব্রতাকে প্রভাবিত করে।

তবে এসব ক্ষেত্রে হুটহাট ওষুধ না খেয়ে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেয়া উচিত। প্রচুর পরিমানে পানি খাওয়া, গরম পানিতে গোসল বা মাথা ম্যাসাজ এ ক্ষেত্রে উপকারি। এ ব্যাপারে ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে নিন।

যদি খুব বেশি ব্যাথা করে বা মাথা ব্যাথার ধরন আপনার অপরিচিত মনে হয় অথবা যদি এর সাথে অন্য আরো কোনো লক্ষণ থাকে তবে অবশ্যই ডাক্তারকে জানাতে হবে।

নাক বন্ধ লাগা বা প্রেগন্যান্সি রাইনাইটিস

ঠাণ্ডা লাগার কারণে যখন আমাদের নাক বন্ধ থাকে, এই ব্যাপারটা কিছুটা ঠিক তেমনই। তবে এমন অবস্থা গর্ভকালীন সময়ে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে হয়ে থাকে।

শতকরা ত্রিশ শতাংশ নারীর ক্ষেত্রে এই নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া সমস্যাটি দেখা যায়।  এই সমস্যা গর্ভধারণের দ্বিতীয় মাস থেকে শুরু হলেও এটা প্রায় সময়ই পরবর্তীতে আরো তীব্র আকার ধারণ করে। সন্তান প্রসবের পরপরই এই সমস্যা কিছুটা প্রশমিত হয় এবং প্রসবের পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যেই একেবারে ঠিক হয়ে যায়।

এসব ছাড়াও গর্ভকালীন সময়ে মায়েরা আরও অনেক ধরণের উপসর্গ অনুভব করতে পারেন। গর্ভকালীন সব ধরণের উপসর্গ নিয়ে জানতে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ুন।

গর্ভধারণের এ সপ্তাহে করনীয়

মায়ের পেটের আকার ও ওজন বাড়ার কারণে এসময় মায়ের ভরকেন্দ্রের পরিবর্তন হয়। এতে মায়ের শরীরের ব্যাল্যান্স রাখা একটু কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। এছাড়াও মায়ের শরীরের জয়েন্টগুলোও এসময় একটু শিথীল হয়ে যায়। তাই চলাফেরায়  একটু সাবধান হতে হবে।

কখনো যদি হোঁচট খান বা একটু পিছলে যান  তবে খুব বেশি আতঙ্কিত হবেন না। গর্ভের শিশু জরায়ুর ভেতর অ্যাম্নিওটিক স্যাকে সুরক্ষিত অবস্থায় থাকে। তারপরও ছোট খাটো কোন দুর্ঘটনায়ও, নিশ্চিন্ত হবার জন্য আপনার ডাক্তারের কাছ থেকে চেকআপ করিয়ে নিতে পারেন।

নিজের শরীরকে বোঝার চেষ্টা করুন এবং গর্ভাবস্থায় কিভাবে শরীরকে শিথিল বা রিলাক্স করা যায় তা শিখে নিন। এর ফলে যখন আপনার প্রসব বেদনা উঠবে তখন আপনি এ পদ্ধতিগুলো  ব্যাবহার করতে পারবেন।এগুলো আপনার দুশ্চিন্তা দূর করতে, জরায়ুকে আরো ভালো কাজ করতে এবং আপনাকে শক্তি সংরক্ষন করে রাখতে  সাহায্য করবে।

গর্ভাবস্থায় পাশ ফিরে শোওয়া বিশেষ করে বাম পাশ ফিরে শোওয়াটা সবচাইতে নিরাপদ।বাম কাত হয়ে শোয়া গর্ভস্থ শিশুর জন্যও ভালো কারণ এতে করে পুষ্টি ও রক্ত প্লাসেন্টার মাধ্যমে সহজেই বাচ্চার কাছে পৌঁছাতে পারে।তবে, একটানা এক পাশে শোয়া কষ্টকর হয়ে পড়লে আপনি আপনার সুবিধামত পাশ পরিবর্তন করে শুতে পারেন।

মনের যত্নে প্রথমেই আপনার শরীরের স্বাভাবিক এবং সাধারণ প্রয়োজনগুলো পরিপূর্ণ করুন যেমন পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, নিকোটিন, ক্যাফেইন এবং চিনিযুক্ত খাবার কিংবা জাঙ্কফুড এড়িয়ে যাওয়া, হালকা ব্যায়াম ও হাঁটাচলা করা এবং যতটা সম্ভব বিশ্রাম নেয়া। এগুলো আপনার দুশ্চিন্তাগুলোকে মানিয়ে চলার ব্যাপারে অনেক সাহায্য করবে।

সেইসাথে গর্ভাবস্থা ও সন্তান লালন পালনের বিভিন্ন দিক ও মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে একটু পড়াশোনা করে নিন। এতে আপনার আত্ববিশ্বাস বাড়বে এবং কিছু সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারবেন।  বিভিন্ন কাজে প্রায়োরিটি ঠিক করতে শেখা এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছু কাজ কিংবা কথা যেগুলো আপনার মানসিক অস্থিরতা বাড়িয়ে দেয়, তা সাময়িক ভাবে এড়িয়ে চলুন।

<<গর্ভাবস্থা সপ্তাহ ২২
গর্ভাবস্থা সপ্তাহ ২৪>>


Spread the love

Related posts

Leave a Comment