৩৯ সপ্তাহের গর্ভাবস্থা | ভ্রূণের বৃদ্ধি, মায়ের শরীর এবং কিছু টিপস

Spread the love

গর্ভাবস্থার ৩৯ তম সপ্তাহে ভ্রূণটিকে “ফুল টার্ম” হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ৩৯ সপ্তাহ থেকে শুরু করে ৪০ সপ্তাহ ৬ দিন পর্যন্ত ভ্রূণকে ফুল টার্ম ধরা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে এই সময়ের মধ্যে জন্ম নেয়া নবজাতকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি সবচাইতে কম থাকে।

৩৯ তম সপ্তাহকে গর্ভাবস্থার তৃতীয় ট্রাইমেস্টারের বারো তম সপ্তাহ হিসেবে ধরা হয় এবং এর অবস্থান গর্ভাবস্থার নবম মাসে।

বিজ্ঞাপণ
৩৯ সপ্তাহের গর্ভাবস্থা

গর্ভধারণের ৩৯ তম সপ্তাহে গর্ভের শিশুর বৃদ্ধি

ভ্রূণের ফুসফুস এবং মস্তিষ্কের বিকাশ ৩৯ সপ্তাহেও চলমান যা তার জন্মের পরও বেশ কিছুদিন ধরে চলবে। তবে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর শিশুটির পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য এসব অঙ্গের যতটুকু কর্মক্ষম হওয়ার দরকার সে পরিমাণ বিকাশ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।

এই সময় ভ্রূণের মোট ওজনের এক তৃতীয়াংশই থাকে তার মাথার ওজন। জন্মের সময়ও তার ওজনের অনুপাত এমনই থাকবে। অর্থাৎ তার মাথার ওজন এবং আকৃতি তার পুরো শরীরের তুলনায় একটু বেশি থাকবে। তার মস্তিষ্কের বিকাশ এসময় খুব দ্রুত গতিতে চলতে থাকে এবং জন্মের প্রথম তিন বছর এই বিকাশ চলমান থাকবে।

ভ্রূণটি এখন একটি পরিপূর্ণ নবজাতকের মতই দেখতে। তার হাত ও পায়ের ছোট্ট আঙ্গুলগুলো সে এখন নাড়াতে পারে, তার চারপাশের সবকিছু সে মোটামুটি দেখতে এবং শুনতে পারে। এই সময় কিছু কিছু শিশুর মাথাভর্তি চুলও গজিয়ে যেতে পারে। আবার কিছু শিশুর ক্ষেত্রে মাথাভর্তি চুল গজাতে জন্মের পর প্রায় দেড় দুই বছর সময় লাগতে পারে।

এসময় ভ্রূণের উচ্চতা থাকে প্রায় ১৯.৯৬ ইঞ্চি বা ৫০.৭ সেমি এবং এর ওজন হয় আনুমানিক ৭.২৫ পাউন্ড  বা ৩২৮৮ গ্রামের মত।

তবে মনে রাখতে হবে এই পরিমাপগুলো একটি গড় হিসেব। আপনার শিশুর ওজন ও উচ্চতা এর চাইতে কম বা বেশি হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে একটি সুস্থ নবজাতকের উচ্চতা ১৭.৬ ইঞ্চি (৪৫ সেমি) থেকে ২২ ইঞ্চি (৫৫ সেমি)  পর্যন্ত হতে পারে। এবং জন্মের সময় ওজন হতে পারে ৫.৫ পাউন্ড (২৫০০ গ্রাম) থেকে ১০ পাউন্ড (৪৫০০ গ্রাম) পর্যন্ত।

৩৯ তম সপ্তাহের দিকে এসে ভ্রূণের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক বিকাশের মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। সেগুলো নিম্নরূপঃ

ত্বক

জন্মের পর শিশুর ত্বকের রং যাই হোক না কেন, এসময়ে এসে তা হালকা ধূসর বর্ণের থাকবে এবং ত্বকে কোন পিগমেন্ট থাকবেনা। তার ত্বক এখন কিছুটা পুরু এবং ফ্যাকাসে হয়ে যাবে কারণ ত্বকের বহিরাবরণ থেকে পুরনো কোষগুলো ঝরে পরার সাথে সাথে সেখানে নতুন কোষ গঠিত হচ্ছে।

প্রেগন্যান্সির নবম সপ্তাহের দিকে ভ্রূণের ত্বকে যে কোষগুলো মেলানিন উৎপন্ন করে সেগুলো গঠিত হয়। মেলানিন হলো ত্বকের একটি উপাদান যা ত্বকের রং কেমন হবে তা নির্ধারণ করে। মেলানিন উৎপাদনকারী কোষগুলো মূলত কাজ শুরু করে শিশুর জন্মের পর থেকে। যার শরীর যত বেশি মেলানিন তৈরি করবে তার ত্বকের রং তত গাঁঢ় বর্ণের হবে। তবে মনে রাখবেন মানবদেহে মেলানিন কি পরিমাণ উৎপন্ন হবে সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে বাবা মায়ের কাছ থেকে পাওয়া জিনগত বৈশিষ্ট্যের উপর।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীর থেকে অ্যান্টিবডি প্লাসেন্টার মাধ্যমে শিশুর দেহে পরিবাহিত হয়ে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। এই কাজটি ১৩ তম সপ্তাহ থেকেই শুরু হলেও গর্ভাবস্থার শেষের দিকে সবচাইতে বেশি অ্যান্টিবডি মায়ের শরীর থেকে ভ্রূণের শরীরে প্রবাহিত হয়। তাই এই সময় শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হতে থাকে যা জন্মের পরও বেশ কিছুদিন তাকে বিভিন্ন ইনফেকশন থেকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে। ।

চোখ

জন্মের পর বেশ কিছুদিন কান্নার সময় নবজাতকের চোখ থেকে পানি পড়েনা। এর কারণ জন্মের সময় তার অশ্রুনালী গুলো পুরোপুরি সুগঠিত থাকেনা। অশ্রুনালীর গঠন এসময় শুরু হয়ে গেলেও সেগুলো পরিপূর্ণতা লাভ করতে জন্মের পর মাসখানেক সময় লাগতে পারে।

৩৯ তম সপ্তাহে মায়ের শারীরিক পরিবর্তন  

এসময় মায়ের শারীরিক পরিবর্তনগুলো পূর্ববর্তী কয়েক সপ্তাহের মতই। গর্ভাবস্থার ৩৯ তম সপ্তাহে এসে আপনি নতুন যেসব উপসর্গ অনুভব করবেন তার বেশিরভাগই হতে পারে প্রসব শুরুর পূর্বলক্ষণ।

ডাক্তার নরমাল ডেলিভারির যে সম্ভাব্য তারিখ ঠিক করে দিয়েছেন, সে তারিখ অনুযায়ী ডেলিভারির কিছুদিন আগে অর্থাৎ প্রেগন্যান্সির শেষ সপ্তাহে অথবা শেষ মাসের দিকে আপনি প্রসব পূর্ববর্তী লক্ষণগুলো খেয়াল করতে শুরু করবেন:

শিশু পেটের নিম্নভাগে চলে আসা: এটি যদি আপনার প্রথম সন্তান হয়, তাহলে ডেলিভারির কয়েক সপ্তাহ আগে হয়তো আপনি ‘লাইটেনিং’ বা হালকা লাগার ব্যাপারটি অনুভব করতে পারবেন। লাইটেনিং অর্থ আপনার শিশু এখন পেটের নিম্নভাগে অর্থাৎ পেলভিক অঞ্চলে চলে এসেছে। তবে এটি যদি আপনার প্রথম সন্তান না হয়, তাহলে প্রসব শুরু হওয়ার ঠিক আগমুহূর্ত পর্যন্ত ‘লাইটেনিং’ অনুভূত নাও হতে পারে।

বারবার ব্রাক্সটন হিকস কন্ট্রাকশন হওয়া: ঘন ঘন এবং তীব্র মাত্রার ব্রাক্সটন হিকস কন্ট্রাকশন বা ফলস লেবর পেইনের মাধ্যমে আপনি প্রসবের সংকেত পেতে পারেন। কিছু কিছু নারীদের এই সময় পিরিয়ডের মত ক্র‍্যাম্প হতে পারে।

ব্র্যাক্সটন হিক্স কন্ট্রাকশন সাধারণত শরীরের অবস্থান পরিবর্তন করলে, পানি খেলে অথবা বিশ্রাম নিলে কমে আসে কিন্তু আসল প্রসব বেদনায় এসবে কোন পরিবর্তন হয়না।

সারভিক্সের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন: প্রসবের কিছুদিন আগে অথবা কিছু সপ্তাহ আগে থেকে সারভিক্স ধীরে ধীরে পাতলা ও প্রশস্ত হতে থাকে। সারভিক্সের পাতলা হয়ে যাওয়াকে এফেসমেন্ট (effacement) বলে এবং এর মুখ খোলাকে ডায়লেশন (dilation) বলে। শরীরের এই পরিবর্তনগুলো আপনি অনুভব করতে পারবেন না। ডাক্তারের চেকআপের সময় তিনি এগুলো পরীক্ষা করে দেখবেন।

পেলভিক প্রেশার বা তলপেটে চাপ

গর্ভাবস্থার এই সময় জরায়ু এবং ভ্রূণের ওজন অনেকটুকু বেড়ে যাওয়ার কারণে মায়েরা তলপেটে এবং ভ্যাজাইনাল এরিয়ায় চাপ অনুভব করতে পারেন। সেই সাথে ভ্রূণ যদি নীচের দিকে নেমে আসে তবে পেলিভিক এরিয়াতে চাপ আরো  বেড়ে গিয়ে শরীরের নিম্নাংশ খুব ভারী অনুভূত হতে পারে।

পেলভিস বা ভ্যাজাইনাল এরিয়াতে হঠাৎ তীক্ষ ব্যথা

ভ্রূণ এসময় জরায়ুর নীচের দিকে অবস্থান করে বলে তার নড়াচড়ার সময় মায়ের শরীরের নীচের দিকে যে সব সেনসিটিভ নার্ভ থাকে সেগুলোতে চাপ পড়তে পারে। তাই এসময় হঠাৎ এসব জাগায় তীক্ষ্ণ ব্যথা অনুভূত হতে পারে।

মিউকাস প্লাগ নিঃসরণ

বিজ্ঞাপণ

মিউকাস প্লাগ হলো এক ধরণের ঘন চটচটে পদার্থ যা গর্ভাবস্থায় সার্ভিকাল ক্যানেল জমাট করে রাখে এবং প্রসবের আগে বেরিয়ে আসে। মিউকাস প্লাগ একসাথে পিণ্ডের মতো বেরিয়ে আসতে পারে, অথবা ডিসচার্জের মতো ধীরে ধীরে কয়েকদিন ধরে নির্গত হতে পারে।

মিউকাস প্লাগ বেরিয়ে যাওয়া নির্ভর করে সারভিক্স কখন মুখ খুলছে সেটার উপর। তাই কখনো কখনো প্রসবের কয়েক দিন কিংবা কয়েক সপ্তাহ আগে এটা হতে পারে, আবার প্রসবের একদম আগ মুহুর্তেও হতে পারে – যেটা আপনি হয়তো আলাদা করে খেয়াল নাও করতে পারেন। মিউকাস প্লাগের সাথে হালকা রক্ত মিশ্রিত থাকতে পারে। এটিকে “ব্লাডি শো” বলা হয়।

ডায়রিয়া

তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মায়ের ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে। এটি প্রসব ঘনিয়ে আসার লক্ষন হতে পারে। ডায়রিয়া প্রসবের ঠিক আগে বা প্রসবের সপ্তাহ দুয়েক আগে দেখা দিতে পারে। এটি প্রসবের জন্য মায়ের শরীরকে প্রস্তুত করার কারণেও হতে পারে। তাই এ সময় ঘাবড়ে না গিয়ে প্রসব শুরুর অন্যান্য লক্ষন গুলো দেখা যাচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শমত ডায়রিয়ার স্বাভাবিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

এই উপসর্গগুলো প্রসব শুরুর কয়েকদিন আগে থেকে এমনকি কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেও আপনি লক্ষ্য করতে পারেন। কিন্তু এসময় যে দুটো লক্ষণ অথবা এর যে কোন একটি অনুভব করলে ধরে নেয়া যায় প্রসবের সময় খুব কাছাকাছি, সেগুলো হলো-   

পানি ভাঙা

যদি পানি ভেঙ্গে যায় তবে বুঝতে হবে প্রসবের সময় খুবই কাছে। অধিকাংশ মায়েদের পানি ভাঙার আগেই প্রসব বেদনা শুরু হয়ে যায়। এটি প্রসবের প্রথম বা দ্বিতীয় স্তরের যে কোন সময় হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে প্রসব ব্যথার আগেই পানি ভেঙ্গে যেতে পারে। তবে পানি আগে ভেঙ্গে গেলেও তার একটু পরেই মায়ের লেবার পেইন শুরু হয়ে যায়।

পানি ভাঙার পরেও যদি প্রসব বেদনা শুরু না হয় তাতে ইনফেকশনের সম্ভাবনা থাকে। তাই এ ব্যাপারে কোন ঝুঁকি নেয়া উচিত নয়। আবার যদি প্রসব বেদনা শুরু হওয়ার পরও নিজ থেকে পানি না ভাঙ্গে তবে ডাক্তার কৃত্রিম উপায়ে পানি ভাঙার ব্যবস্থা করবেন।

প্রসব বেদনা বা লেবার পেইন

প্রসবের সময় যখন জরায়ু সংকুচিত হবে, তখন আপনার পেটে প্রচুর টান ও চাপ অনুভব করবেন এবং ক্র‍্যাম্প এর মতো হতে পারে। সংকোচনের মধ্যকার বিরতিতে এই ব্যাথাযুক্ত টান লাগার অনুভূতি একটু কমে যাবে। এই সঙ্কোচন ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে,তীব্রতর হতে থাকে এবং আরো দীর্ঘ সময় ধরে হতে থাকে।

জরায়ুর সংকোচন হচ্ছে কিনা বোঝার উপায় হচ্ছে, যখন ব্যথা হয় ঠিক তখনই জরায়ুও সংকুচিত হয়৷ এসময় পেটে হাত দিলে জরায়ুর অংশটি শক্ত হয়ে আছে এমন অনুভূত হবে৷ আর ঠিক তার পরক্ষণেই যখন ব্যথা নেই তখন পেটের সেই অংশটি স্বাভাবিক অনুভত হবে।

তবে একই ধরণের অনুভূতি ফলস লেবার পেইনের কারণেও হতে পারে। আসল প্রসব বেদনা সম্পর্কে জানতে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ুন।

৩৯ সপ্তাহে কি প্রসব হতে পারে?

৩৯ সপ্তাহে প্রসব হওয়া খুবই স্বাভাবিক। যুক্তরাষ্ট্রে ২০০৭ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে প্রায় ৩৪ মিলিয়ন গর্ভবতী মহিলার উপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে ৩৯ থেকে ৪০ সপ্তাহের মধ্যে ৫৪ থেকে ৬০ ভাগ শিশু ভূমিষ্ঠ হতে পারে।

৩৯ সপ্তাহের যদি প্রসবের লক্ষণ দেখা না যায় তবে কি উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত?

যদি কোন মেডিকেল কন্ডিশন না থাকে তবে ডাক্তাররাও ৪০ সপ্তাহ এমনকি কখনো কখনো ৪১ সপ্তাহ পর্যন্ত নিজ থেকে প্রসব শুরুর হওয়ার জন্য অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন। তাই ৩৯ সপ্তাহে যদি প্রসবের কোন লক্ষণ অনুভব করতে না পারেন তবে সেটি বরং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। সাধারণত ৪১ সপ্তাহ পেরিয়ে গেলে ডাক্তাররা প্রসব ত্বরান্বিত করার চেষ্টা শুরু করেন।

আবার মনে রাখতে হবে সব শিশুর ক্ষেত্রেই প্রসব শুরুর অনেক আগে থেকে লক্ষণ নাও বোঝা যেতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমনও হতে পারে সকালে প্রসবের লক্ষণ দেখা দিয়ে বিকেলেই সন্তান ভুমিষ্ট হয়ে যায়।

গর্ভধারণের সপ্তাহে করণীয়

ভ্রূণের নড়াচড়া এইসময় আগের চেয়ে কিছুটা মৃদু বা হালকা অনুভূত হতে পারে কারণ জরায়ুতে জায়গা এখন বেশ কমে আসার কথা। তাই তার নড়াচড়া বুঝতে আপনাকে হয়তো একটু বেশি মনোযোগ দিতে হবে। যদি মনে হয় তার নড়াচড়া স্বাভাবিক নেই বা কোন কারণে যদি নড়াচড়া নিয়ে আপনার সন্দেহ হয় তবে অবশ্যই স্ক্যান করিয়ে নিন এবং ডাক্তারকে অবহিত করুন।

হাঁটাহাঁটি করলে আমাদের হাঁটু এবং পায়ের গোড়ালিতে খুব বেশি একটা চাপ পড়ে না। এই কারণে হাঁটাকেই গর্ভাবস্থায় সবচাইতে ভালো ব্যায়াম বলা হয়। তাই এই সময়ে নিয়মিত হাঁটা চলা করার চেষ্টা করুন।

বিশেষ কোন জটিল প্রেগন্যান্সিতে ডাক্তারের নিষেধ না থাকলে, গর্ভাবস্থার শেষের দিকে হাঁটার আরেকটি বেশ উপকারী দিক আছে। এই সময় পেটের আকার বেড়ে যাওয়ার কারণে মায়েদের অনেকটা পেঙ্গুইনের মত হাঁটতে হয়। অর্থাৎ হাঁটার সময় পায়ের পাতা সোজা রাখার পরিবর্তে দুপাশে ফিরিয়ে রাখতে হয়। এভাবে হাঁটার কারণে মায়ের কোমর যে অবস্থানে থাকে তাতে ভ্রূণের মাথা মায়ের পেলভিসে ভালোভাবে সেট হওয়ার সুযোগ পায়।  

প্রসব ত্বরান্বিত করতে বেশ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে হয়তো শুনে থাকবেন। কিন্তু এগুলোর কোনটিই নিশ্চিতভাবে প্রমানিত নয়। এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করতে কোন বাধা নেই, কিন্তু তার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে।

সবশেষে মনে রাখতে হবে এই সময়ে যে কোন কিছুর জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। হতে পারে, আপনার প্রসবের আরো সপ্তাহ দুয়েক দেরী আছে, কিংবা কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তো আপনাকে হাসপাতালে ছুটতে হতে পারে। তাই হসপিটাল ব্যাগে প্রয়োজনীয় জিনিষ গুছিয়ে নিয়েছেন কিনা চেক করুন এবং রিলাক্স থাকার চেষ্টা করুন। আপনার সঙ্গীর সাথে সুন্দর সময় কাটান এবং শরীরকে যতটা সম্ভব বিশ্রাম দিন।

শিশু ভূমিষ্ঠ হবার ঠিক পর পর কি কি বিষয় জানা দরকার তা এখন থেকে কিছুটা অনুসন্ধান করুন এবং জেনে নিন। নবজাতকের বিষয়ে সবার এক্সপিরিয়েন্স সমান হয় না। এক এক মায়ের শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা ক্ষেত্রবিশেষে ভিন্ন হয়। তাই প্রসব এবং প্রসব পরবর্তী বিভিন্ন প্রয়োজনীয় বিষয়, মায়ের যত্ন, শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো, পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশান এবং নবজাতকের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জেনে নিতে পারেন ফেইরিল্যান্ডের আর্টিকেলগুলো থেকে।

সবার জন্য শুভকামনা।

<<গর্ভাবস্থা সপ্তাহ- ৩৮
গর্ভাবস্থা সপ্তাহ- ৪০>>


Spread the love

Related posts

Leave a Comment