মর্নিং সিকনেস কি? একে মর্নিং সিকনেস বলা হয় কেন?
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব বা বমি হওয়াকে মর্নিং সিকনেস বলা হয়ে থাকে। তবে এই নামকরণে ভুল রয়েছে বলা যেতে পারে কারণ গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব শুধু সকালবেলাতে নয়, বরং সারাদিনই থাকতে পারে কিংবা দিনের কোনো কোনো সময় অনুভূত হতে পারে ।
কিছু মায়েদের সকালে বমি বমিভাব খুব বেশি থাকতে পারে এবং দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্যা কমে আসে।আর অধিকাংশ মায়েদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা দিনভর চলতেই থাকে। লক্ষণগুলোর তীব্রতা একজন মা থেকে অন্যজনের ভিন্ন হতে পারে।
গর্ভবতী মায়েদের প্রায় তিন চতুর্থাংশই তাদের গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে মর্নিং সিকনেস বা বমিভাবের সমস্যায় ভোগেন।
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব বা মর্নিং সিকনেস কখন শুরু হয় এবং কখন শেষ হয়?
গর্ভধারণের ৬ সপ্তাহ সময় থেকে সাধারণত মর্নিং সিকনেস বা বমি বমি ভাব দেখা দেয়। কিন্তু এটা কখনো কখানো ৪ সপ্তাহ থেকেও শুরু হতে দেখা যায়। পরবর্তী এক মাস ধরে সমস্যাটা আরো বেশী প্রকট হতে থাকে।
প্রায় অর্ধেক মায়েদের ক্ষেত্রে মর্নিং সিকনেস ১৪ সপ্তাহ নাগাদ পুরোপুরি ঠিক হয়ে যায়। অন্যদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা ঠিক হতে আরও এক মাস সময় লাগতে পারে। তবে পুরো গর্ভকালীন সময় জুড়েই বমি বমি ভাব আসা যাওয়া করতে পারে।
পুরো গর্ভকালীন সময় জুড়ে মর্নিং সিকনেস সাধারণত থাকেনা তবে কিছু কিছু মায়ের ক্ষেত্রে তা হতে পারে। খুব অল্প সংখ্যক মায়েদের ক্ষেত্রে মর্নিং সিকনেস দ্বিতীয় এমনকি তৃতীয় ট্রাইমেস্টারেও থাকতে পারে।
মর্নিং সিকনেস যদি প্রথম ট্রাইমেস্টারের পরেও ঠিক না হয় তবে বিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করা উচিত। মর্নিং সিকনেসে বেশীদিন চলতে থাকলে আপনি দুর্বল হয়ে যেতে পারেন এমনকি তা মারাত্মক আকার ধারন করলে ডিহাইড্রেশন দেখা দিতে পারে এবং গর্ভকালীন ওজন বৃদ্ধি পর্যাপ্ত নাও হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় মর্নিং সিকনেস বা বমি বমি ভাব বা বমি কেন হয়?
গর্ভধারণের সময় কেন বমি বমি ভাব হয় তার সঠিক কারণ কারো জানা নেই। তবে গর্ভধারণের পর শরীরে যে ব্যাপক পরিবর্তন আসে তা এর জন্য দায়ী হতে পারে। কিছু সম্ভাব্য বিষয়কে এর কারণ মনে করা হয় যার মধ্যে রয়েছে-
হিউম্যান করিওনিক গনাডোট্রোফিন (Human Chorionic Gonadotropin -hCG)
এই হরমোনটি গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে দ্রুত বাড়তে থাকে। এ হরমোন কিভাবে মর্নিং সিকনেস বা বমি বমি ভাব ঘটায় তা জানা যায়নি। তবে এর বৃদ্ধি পাওয়া এবং মর্নিং সিকনেস যেহেতু এক সময়ে ঘটে তাই মনে করা হয় এটি মর্নিং সিকনেসের কারণ হতে পারে।
এছাড়াও গর্ভে যমজ সন্তান থাকলে এই হরমোনটির উৎপাদন বেশি হয় এবং এসব ক্ষেত্রে মর্নিং সিকনেসের প্রকোপও বেশি থাকে।
এস্ট্রোজেন
অন্য হরমোনের সাথে সাথে এস্ট্রোজেন হরমোনের বৃদ্ধিও মর্নিং সিকনেসের আরেকটি কারণ হিসেবে ধরা হওয়ায়। এই হরমোনও গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে দ্রুত বাড়তে থাকে। তবে যাদের মর্নিং সিকনেস থাকে তাদের মধ্যে এই হরমোনের পরিমাণ অন্যদের তুলনায় বেশি থাকে কিনা সে সম্পর্কে তেমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
গন্ধপ্রবনতা
গর্ভকালীন সময়ে নারীদের গন্ধপ্রবন হয়ে উঠতে দেখা যায় । এস্ট্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধিকে এর কারণ মনে করা হয়। এই গন্ধপ্রবনপতার কারণে কোন কোন খাবারের গন্ধে মায়েদের বমি ভাব বয়া বমি হতে পারে।
পাকস্থলীর সংবেদনশীলতা
কিছু কিছু মায়ের পরিপাকতন্ত্র গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পরিবর্তনের প্রতি বেশি সংবেদনশীল থাকে। কিছু গবেষণায় দেখা যায় যেসব মহিলার পাকস্থলীতে হেলিকোবেক্টার পাইলোরি (Helicobacter pylori) নামক একটি ব্যাকটেরিয়া থাকে তারাই বেশীরভাগ অরুচি ও বমিবমিভাবে আক্রান্ত হন। যদিও সব গবেষণায় এটি নিশ্চিত করে বলা হয়নি।
মানসিক চাপ
কিছু গবেষকদের মতে গর্ভাবস্থায় মায়েরা যে দুশ্চিন্তা বা উদ্বেগ বোধ করেন তাও মর্নিং সিকনেসের কারণ হতে পারে। এই তত্ত্বও প্রমানিত নয় কারণ মানসিক চাপের কারণে যেমন বমি বমি ভাব হতে পারে তেমনই কেউ অনেক বেশি অরুচি বা বমিতে আক্রান্ত হলেও মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় বমি ভাব বা মর্নিং সিকনেস কাদের বেশী হতে পারে?
মায়েদের গর্ভাবস্থায় মর্নিং সিকনেস বা বমি বমি ভাব বা বমি হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে যদি-
- যদি গর্ভে একের অধিক সন্তান থাকে। একের অধিক সন্তান থাকলে বিভিন্ন হরমোনের মাত্রা ও বেশী থাকে ফলে অন্যদের তুলনায় বমি বমি ভাব বেশী থাকতে পারে। এটা যে হবেই তা অবশ্য প্রমানিত নয়। যমজ বাচ্চা গর্ভে থাকা মায়েদের মর্নিং সিকনেস কম থাকা বা একেবারে না থাকারও উদাহরন আছে।
- প্রথমবারের গর্ভাবস্থায় যদি এই সমস্যা হয় তবে দ্বিতীয়বার গর্ভধারণে তা আরও বেশি পরিমাণে হতে পারে।
- মোশন সিকনেস (Motion sickness) থাকলে
- জন্ম-নিয়ন্ত্রণকারী পিল খাওয়ার জন্য যদি আগে থেকেই এই সমস্যা হতে থাকে গর্ভকালীন সময়ে এটি আরও বাড়তে পারে।
- বংশগত সমস্যার কারণেও এই বমি বমি ভাব দেখা যায়। যদি আপনার মা কিংবা বোনের এই সমস্যা থাকে তবে আপনিও এই সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
- মাইগ্রেন এর ব্যথা মর্নিং সিকনেস এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারন।
- যদি মায়ের গর্ভে মেয়ে শিশু থাকে তবে এই সমস্যা বেশি দেখা যেতে পারে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় ৫৫ ভাগ মায়েদের ক্ষেত্রে যারা মেয়ে শিশুর জন্ম দিয়েছে তাদের মর্নিং সিকনেস বেশী ছিল।
মর্নিং সিকনেসের কারণে শিশুর কোন ক্ষতি হতে পারে?
মর্নিং সিকনেসের কারণে অল্প বিস্তর বমি বমি ভাব বা মাঝে মাঝে বমি হলে তা গর্ভের শিশুর তেমন কোন ক্ষতি করেনা। এর ফলে যদি মায়ের ওজন প্রথম ট্রাইমেস্টারে খুব বেশী একটা নাও বাড়ে তাতেও তেমন ভয়ের কোন কারণ নেই যদি না আপনি হাইড্রেটেড থাকতে পারেন এবং অন্তত অল্প কিছু হলে খেতে পারেন। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই কিছু দিনের মধ্যেই আপনার রুচি ফিরে আসবে এবং ওজন বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করবে।
যদি মর্নিং সিকনেসের কারণে মা পরিমান মত সুষম খাবার খেতে না পারেন তাহলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে প্রি-ন্যাটাল ভিটামিন খেতে পারেন যাতে শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যায়। বিশেষ করে ফলিক এসিডের প্রতি নজর রাখা জরুরী।
তবে অতিরিক্ত বমি হওয়া এবং অনেক দিন ধরে বমি হওয়ার সাথে প্রি-টার্ম বার্থ, বাচার ওজন কম হওয়া এবং বাচ্চা তুলনামূলক ছোট হওয়ার সম্পর্ক থাকে। তাই এমনটা হলে বিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করা উচিত।
গর্ভাবস্থায় বমি ভাব দূর করার উপায়
যদি আপনার হালকা বমি বমি ভাব বা বমি হয় তবে সাধারণ কিছু উপায় অবলম্বন করে এতে স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে। যদি ও এগুলো পুরোপুরি প্রমানিত নয় তারপরও অনেক বিশেষজ্ঞ এবং অভিজ্ঞ মায়েরাই এসব পদ্ধতির পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
পেট খালি থাকা মর্নিং সিকনেস বা বমি বমি ভাব আরও বেশি বাড়িয়ে দিয়ে থাকে। অল্প পরিমাণে বার বার খান। এটি আপনার শরীরের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ রাখে। যা সারাদিন কাজের শক্তি দিয়ে থাকে। এর ফলে পেট কখনও খালি থাকবেনা। এছাড়াও এখন যেহেতু আপনার চলাফেরা অনেকটা সীমিত তাই একবারে বেশী খেলে তা হজম হতেও সমস্যা হবে। প্রোটিন এবং জটিল শর্করা জাতীয় খাবার এসময় বেশী উপকারী।
খাওয়ার পরপরই শুয়ে পড়বেননা। এটা হজমের সমস্যা হয়।সকালে বিছানা থেকে ওঠার আগে বিছানায় হাল্কা খাবার যেমন বিস্কুট, শরবত, মুড়ি-চিড়া খান। এ খাবার পরিপাক হওয়ার জন্য কিছু সময় দিন। এরপর বিছানা থেকে উঠে পড়ুন। বিছানা থেকে ওঠার সময় ধীরে সুস্থে উঠুন। কিছুক্ষন বিছানায় বসে বিশ্রাম নিন তারপর উঠে দাঁড়ান।
খুব বেশী গরম খাবার না খেয়ে চেষ্টা করুন খাবার সাভাবিক তাপমাত্রায় আসলে খাওয়ার। কারণ মর্নিং সিকনেসের প্রধান কারণ হোল গন্ধ আর গরম খাবারে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় থাকা খাবারের চাইতে বেশী গন্ধ থাকে।চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ঝাল, ভাজা পোড়া খাবার গ্রহন থেকে বিরত থাকুন।খাওয়ার পড়ে দাঁত মাজুন বা ভালোভাবে কুলি করে নিন।
গর্ভাবস্থায় বমিভাব থেকে মুক্তি পেতে পানি সর্বোত্তম ওষুধ। যে হবু মা প্রায় প্রতি ঘণ্টায় এক গ্লাস করে পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তোলেন, তার বমি ভাব হওয়ার সম্ভাবনা কম। শুধু তা-ই নয়, গর্ভাবস্থায় বেশি করে পানি পান করলে গর্ভবতী মায়ের শরীর হাইড্রেটেড থাকে, যা মা ও তার গর্ভের সন্তানের জন্য ভীষণ দরকারি।এছাড়াও এতে করে আপনার হজম প্রক্রিয়া ভালো থাকবে, শরীর ফুরফুরে ও মানসিকভাবে চনমনে থাকবেন। তবে একসাথে বেশী পানি পান করা উচিত নয়।
জেনে নিন, কোন গন্ধে মায়ের সমস্যা হচ্ছে। যদি দেখা যায় মা পেঁয়াজ এর ঘ্রাণ সহ্য করতে পারছেন না। তখন তার কাছ থেকে পেঁয়াজ একেবারে দূরে সরিয়ে রাখুন। মায়ের সমস্যা হয় এমন কিছুই তার কাছে ঘেঁষতে দেওয়া যাবেনা।পরিবারের কারো পারফিউমের গন্ধে সমস্যা হলে তাকে অনুরোধ করুন কিছুদিন তা ব্যবহার না করার।
মর্নিং সিকনেস বা বমিভাবের অন্যতম আরেকটি কারণ হলো আপনার শরীরের পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিশ্চিত না করা। সকালে যদি বিছানা ছেড়ে উঠতে আলসেমি লাগে, তাহলে জোর করে উঠবেন না, আরও খানিকটা সময় বিশ্রাম নিন। কারণ এই সময়টায় বমি হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ক্লান্তিভাব গর্ভাবস্থায় বমিভাবের অন্যতম কারণ।
দুশ্চিন্তা করবেন না। দুশ্চিন্তা মর্নিং সিকনেসকে বাড়িয়ে দিতে পারে। হাসি-খুশি থাকার চেষ্টা করুন। অনাগত সন্তানকে নিয়ে সুখের ভাবনা ভাবতে পারেন। মজার কোনো বই পড়ে সময় কাটান।
আয়রন ট্যাবলেট খেলে অনেকের বমি বমি লাগে। গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে আয়রনের চাহিদা খুবই কম থাকে। তাই ১২ সপ্তাহের পর আয়রন ট্যাবলেট সেবন করুন। আয়রন ট্যাবলেট খেলে যদি মর্নিং সিকনেস বেড়ে যায় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্র্যান্ড পরিবর্তন করে দেখতে পারেন।
বমিভাব থেকে মুক্তি পেতে আদা একটি অতুলনীয় প্রাকৃতিক উপাদান, এমনকি গর্ভাবস্থায়ও। আদা হজম প্রক্রিয়া ভালো রাখার পাশাপাশি বমি হওয়ার জন্য দায়ী পেটের অম্লীয় স্রাব প্রতিরোধ করে। এমনকি আদার গন্ধ বমি বমি ভাব কমায়।
অ্যারোমাথেরাপির সাহায্য নিতে পারেন। একটা টিস্যু বা রুমালে গর্ভাবস্থায় নিরাপদ এবং আপনি সহ্য করতে পারেন এমন কোন এসেনশিয়াল তেল এর কয়েক ফোটা নিয়ে আপনার ব্যাগে রেখে দিতে পারেন। যখনই কোন দুর্গন্ধ নাকে আসবে তখনই রুমালটি নাকে চেপে ধরুন।
যদি খুব বেশি সমস্যা হয় তবে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। ওষুধের সঙ্গে ভিটামিন বি৬ সেবন করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এতে বমির ভাব কমবে । তবে যে কোন ওষুধ সেবনের আগেই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
কখন ডাক্তারকে জানাতে হবে?
মর্নিং সিকনেস বা বমি বমি ভাব যদি এতটাই ভয়াবহ হয়ে ওঠে যে কোন কিছু আপনার পেটে থাকছেনা এমনকি পানি, ওষুধ ইত্যাদি তবে তা হাইপারএমেসিস গ্রেভিডেরাম (Hyperemesis gravidarum) এর লক্ষন হতে পারে। এক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে। যদি নিচের লক্ষনগুলো দেখা যায় তবে দেরী না করে আপনার ডাক্তারকে জানান-
- যদি আপনার ২ পাউন্ড বা তার বেশী ওজন কমে যায়।
- ৯ সপ্তাহের পরে আপনার বমি বমি ভাব বা বমি শুরু হয়।
- ২০ সপ্তাহের পরেও যদি বমি বমি ভাব বা বমি থাকে।
- বমির সাথে রক্ত গেলে।
- দাঁড়ালে যদি মাথা ঘোরে।
- ডিহাইড্রেশনের লক্ষন দেখা দিলে। প্রস্রাবের রং গাঁড় হলে বা অনিয়মিত প্রস্রাব হলে।
- যদি পেটে ব্যাথা, জ্বর, মাথা ব্যাথা বা গলা ফুলে গেলে।
গর্ভাবস্থায় মর্নিং সিকনেস বা বমি না হওয়া কি খারাপ?
গবেষণায় দেখা গেছে গর্ভাবস্থায় প্রায় ৭৫ ভাগ মায়েরাই কম বেশি মর্নিং সিকনেসে ভোগেন। অল্পকিছু গবেষণায় দেখা গেছে এর সাথে যাদের মর্নিং সিকনেস বা হাইপারএমেসিস গ্রাভিডেরাম থাকে তাদের ক্ষেত্রে গর্ভপাতের হার কম থাকে। তবে মর্নিং সিকনেসই এটার কারণ কিনা তা নির্দিষ্ট করে বলা যায়না।
যদি মায়ের প্লাসেন্টা এবং ভ্রূণের বৃদ্ধি ঠিকভাবে না হয় তবে শরীরে হরমোনের মাত্রা কম থাকবে। আর যদি মর্নিং সিকনেসের কারণ হরমোন হয়ে থাকে তবে এটা স্বাভাবিক যে এসব ক্ষেত্রে মর্নিং সিকনেস থাকবেনা। তবে হরমোনের কারণেই মর্নিং সিকনেস হয় কিনা সেটা যেহেতু প্রমানিত নয় তাই একথা নিশ্চিত করে বলা যায়না যে মর্নিং সিকনেস বা বমি না হওয়াটা খারাপ।
এমন অনেক মায়েরা আছেন যাদের পুরো গর্ভাবস্থায় মর্নিং সিকনেস ছিলোনা কিন্তু সুস্থ স্বাভাবিক সন্তান জন্ম দিয়েছেন। তাই এই উপসর্গ না থাকলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করতে পারেন সেই সাথে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডাক্তারের পরামর্শও নিয়ে নিন।
সবার জন্য শুভকামনা।