২৯ সপ্তাহের গর্ভাবস্থা | ভ্রূণের বৃদ্ধি, মায়ের শরীর এবং কিছু টিপস

Spread the love

গর্ভাবস্থার ২৯ সপ্তাহে গর্ভস্থ ভ্রূণ বেশ অনেকটা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এখনো যেহেতু সে অনেক ছোট তাই মায়ের জরায়ুতে নড়াচড়ার বেশ জায়গা রয়েছে। এসময় মা ভ্রূণের নড়াচড়া আগের চাইতে বেশি ঘন ঘন এবং জোরালোভাবে বুঝতে শুরু করবেন। এছাড়াও এসময় ভ্রূণ আলো, শব্দ, মায়ের নড়াচড়া, খাওয়া ইত্যাদি প্রায় সবকিছুতেই প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করে।

গর্ভাবস্থার ২৯ তম সপ্তাহকে প্রেগন্যান্সির তৃতীয় ট্রাইমেস্টারের দ্বিতীয় সপ্তাহ হিসেবে ধরা হয়। এ সপ্তাহের অবস্থান গর্ভাবস্থার সপ্তম মাসে।

বিজ্ঞাপণ
২৯ সপ্তাহের গর্ভাবস্থা

গর্ভধারণের ২৯ তম সপ্তাহে গর্ভের শিশুর বৃদ্ধি  

গর্ভাবস্থার ২৯ তম সপ্তাহে এসে ভ্রূণের ত্বকের নিচে আরো বেশি চর্বির স্তর জমা হয়ে যায়। এতে তার শরীরের ভাঁজগুলো আরো কমে আসে। তবে এসময় জমা হওয়া চর্বির স্তর এর আগে জমা হওয়া ব্রাউন ফ্যাটের চাইতে আলাদা। এগুলোকে হোয়াইট ফ্যাট বলা হয় যা পূর্ণবয়স্ক মানুষের শরীরে দেখা যায়।

ব্রাউন ফ্যাট শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। অন্যদিকে হোয়াইট ফ্যাট শরীরের শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। এই ফ্যাট জমা হওয়ার কারণে ভ্রূণের ত্বক আগের চাইতে পুরু হতে থাকবে।

এসময় ভ্রূণ প্রথম বারের মত হাসির ভঙ্গি করতে শুরু করতে পারে বিশেষ করে সে যখন ঘুমিয়ে থাকে। তার হেঁচকি তোলাও আগের চাইতে বৃদ্ধি পেতে পারে যা মায়ের কাছে হালকা, ছন্দময় নড়াচড়ার মত অনুভূত হবে।

প্রতিটি সপ্তাহ অতিক্রম করার সাথে সাথে গর্ভের ভ্রূণের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়তে থাকে, যদি সে সম্ভাব্য সময়ের আগে কিংবা প্রী-ম্যাচিওর অবস্থায়  জন্ম গ্রহন করে। এ সপ্তাহে জন্ম নিলে তাকে বেশ কিছুদিন NICU তে কাটাতে হলেও তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা প্রায় ৯৪ ভাগ।

ভ্রূণের আকার ২৯ তম সপ্তাহে একটি কুমড়োর সাথে তুলনা করা যায়। এসময় ভ্রূণের উচ্চতা থাকে প্রায় ১৫.২ ইঞ্চি বা ৩৮.৬ সেমি এবং এর ওজন হয় আনুমানিক ২.৫৪ পাউন্ড  বা ১১৫৩ গ্রামের মত।

২৯ তম সপ্তাহের দিকে এসে ভ্রূণের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক বিকাশের মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। সেগুলো নিম্নরূপঃ

মস্তিষ্ক

এ সময়ে এসে ভ্রূণের মস্তিষ্কে নতুন অনেক ভাঁজ ও খাঁজের সৃষ্টি হবে। এগুলো মস্তিষ্কের সারফেস এরিয়া বাড়িয়ে দেয় যাতে আরও নতুন কোষ গঠিত হতে পারে।

তৃতীয় ট্রাইমেস্টারের শেষের দিকে এসে ভ্রূণের মস্তিষ্কে বিলিয়ন বিলিয়ন নতুন কোষ তৈরি হয়ে যাবে এবং এর ওজন এখনকার তুলনায় প্রায় তিনগুন বৃদ্ধি পাবে। মস্তিষ্কের এই দ্রুত বৃদ্ধির জন্য যে প্রচুর পরিমাণ শক্তির দরকার হয় তার জোগান আসে ভ্রূণের শরীরে জমা হতে থাকা চর্বির স্তর থেকে।

হাঁড়

গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টার থেকেই ভ্রূণের হাঁড়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসতে শুরু করে। এসময় তার হাঁড়গুলো আরো মজবুত ও শক্ত হতে থাকে। তাই এসময় ভ্রূণ মায়ের শরীর থেকে ক্যালসিয়াম গ্রহণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

প্রতিদিন ভ্রূণের কঙ্কালে প্রায় ২০০-২৫০ মি.গ্রা ক্যালসিয়াম জমা হতে থাকে যা এক গ্লাস দুধে থাকা ক্যালসিয়ামের সমান।

চুল

ভ্রূণের মাথায় এ সময় আরো বেশি চুল গজাতে শুরু করে। অনেক নবজাতক মাথা ভর্তি চুল নিয়ে জন্মগ্রহণ করে আবার অনেকের চুল কম থাকে। বাচ্চা জন্মের সময় যে চুল নিয়ে জন্মায় তা সাধারণত শিশুর চার মাসের দিকে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ঝরে যায়। এরপর শিশুর যে চুল গজায় তা জন্মের সময়কার চুল থেকে পুরোপুরি ভিন্ন হতে পারে।

ত্বক

পূর্ববর্তী বেশ কয়েক সপ্তাহে ভ্রূণের শরীর ভারনিক্স নামক একধরনের তৈলাক্ত পদার্থ এবং হালকা ধূসর লোমের স্তর দিয়ে আবৃত ছিল যেগুলো গর্ভে তাকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করত।

গর্ভাবস্থার এ সময়ে এসে এই স্তরগুলো ধীরে ধীরে ঝরে যেতে থাকে। শরীরে চর্বির স্তর জমা হতে থাকার কারণে এবং মস্তিষ্কের বিকাশের ফলে ভ্রূণের শরীর এখন নিজস্ব তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেছে।

২৯ তম সপ্তাহে মায়ের শারীরিক পরিবর্তন

গর্ভাবস্থার ২৯ তম সপ্তাহে মায়ের জরায়ু বড় হয়ে নাভির প্রায় ৩-৪ ইঞ্চি উপরে চলে আসে। এসময় এই স্থান বরাবর হাত দিয়ে আলতো চাপ দিয়ে ডাক্তাররা জরায়ুর অবস্থান অনুভব করতে পারেন। স্বাভাবিক গর্ভাবস্থায় এ সময় মায়ের ফান্ডাল হাইট থাকতে পারে ২৬-৩৫ সেমি।

এই সময় মায়ের ওজন সাধারণত ১৯ থেকে ২৫ পাউন্ডের (৮.৬-১১.৩ কেজি) মত বেড়ে যেতে পারে। তবে এর চাইতে যদি কিছু কম বেশি হয় তবে খুব বেশি চিন্তার কারণ নেই। এছাড়াও প্রতিটি সাক্ষাতকারেই ডাক্তার আপনার ওজন মেপে দেখবেন এবং অস্বাভাবিক কিছু থাকলে আপনাকে জানাবেন। তাই ওজন নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার প্রয়োজন নেই।

গর্ভাবস্থার এ সময় যেসব উপসর্গ বেশি দেখা দিতে পারে তা হলো-

দম বন্ধ অনুভূতি

গর্ভাবস্থায় শ্বাসকষ্ট হতে পারে অনেকের।  প্রায় তিন চতুর্থাংশ গর্ভবতী নারী যাদের আগে কখনোই  শ্বাস-কষ্ট সংক্রান্ত সমস্যা ছিলো না তাদের এই সময়ে সহজে হাঁপিয়ে ওঠা বা দম ফুরিয়ে আসে বলে মনে হয়।

মায়ের গর্ভে থাকা শিশুটি যত বড় হতে থাকবে, জরায়ুর ভেতর ফাঁকা জায়গা কমতে থাকে, সেইসাথে বর্ধিত জরায়ুর কারণে অন্যান্য অঙ্গগুলোর ওপর চাপ বাড়তে থাকবে। যে কারণে গর্ভাবস্থার শেষের কিছু মাসে ফুসফুসের ওপর চাপ পড়ার ফলে শ্বাস নেয়ার সময় ফুসফুস খুব বেশি বিস্তৃত হতে পারে না। ফলশ্রুতিতে বেশিরভাগ সময় দমবন্ধকর ও হাসফাঁস ধরণের অনুভূতি হতে থাকে।  

বিজ্ঞাপণ

এই ধরণের শ্বাসকষ্ট হওয়াটা স্বাভাবিক ও ক্ষতিকর কিছু নয়।তবে শ্বাসকষ্ট যদি কোন বিশেষ স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে হয় কিংবা মায়ের কিছু সমস্যার পূর্বের হিস্ট্রি থাকে যেমনঃ অ্যাজমা, এনেমিয়া বা উচ্চ রক্তচাপ, তবে গর্ভাবস্থায় শ্বাস কষ্টের সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।এসব ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ আনুযায়ী চলতে হবে।

শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে, রিলাক্স করার চেষ্টা করুন। লম্বা লম্বা শ্বাস নিয়ে শান্ত থাকার অভ্যাস করুন। যখনই পারবেন বিশ্রাম নিন এবং প্রয়োজনীয় কাজকর্ম ধীর স্থির ভাবে করার চেষ্টা করুন। যদি শ্বাসকষ্ট বেশি হয় বা গর্ভধারণের আগে থেকেই কোন সমস্যা থেকে থাকে তবে শ্বাসকষ্ট হলে, দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া জরুরী।

ভেরিকোস ভেইন

ভেরিকোস ভেইন হল অস্বাভাবিকভাবে স্ফীত হয়ে যাওয়া শিরা যা চামড়ার উপর দিয়ে দেখা যায়। নীল বা বেগুনি রঙের আঁকাবাঁকা শিরাগুলো সাধারণত পায়ের অংশে দেখা যায়। তবে গর্ভাবস্থায়  ভেরিকোস ভেইন নিতম্বে বা ভ্যাজাইনাল এরিয়াতেও দেখা যেতে পারে।

ভেরিকোস ভেইনের কারণে চুলকানি বা ব্যাথা হতে পারে কিন্তু এগুলো সাধারণত তেমন ঝুঁকির কারণ নয়। এর যদি কোন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তবে তার জন্য সন্তান জন্মদান পর্যন্ত অপেক্ষা করা যায়।

তবে অল্প কিছু ক্ষেত্রে ভেরিকোস ভেইনের কারণে শিরায় রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে (superficial venous thrombosis)। এমনটা হলে শিরা শক্ত হয়ে যায় এবং দড়ির মত দেখায় এবং এর আশপাশের জায়গা লাল ও গরম হয়ে যায়, সেইসাথে  ব্যাথা অনুভূত হয়।যদি এধরনের লক্ষন দেখা দেয় তবে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবার জন্য যতটুকু সম্ভব পা উঁচিয়ে বসুন এবং যথাসম্ভব পা- কে বিশ্রাম দিন।

ক্লান্ত লাগা

যদিও হরমোনের পরিবর্তনের কারণেই মূলত গর্ভকালীন সময়ে অবসাদ ও ক্লান্তি আসে, তবু এর অন্যান্য আরো বেশ কিছু কারণও রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে গর্ভাবস্থার তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে ওজন অনেক বেড়ে যাওয়া , কোমরে এবং মেরুদণ্ডে হালকা ব্যথা অনুভূত হওয়ার কারণে অথবা বারবার প্রস্রাব করতে উঠতে হওয়ার কারণে আপনার হয়ত তেমন একটা ভালো ঘুম হবে না। আর রাতের বেলায় ভালো ঘুম না হলে অবসাদ আপনাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরবে এটা খুবই স্বাভাবিক।

এছাড়া আয়রনের অভাবের কারণেও আপনাকে ক্লান্তি এবং অবসাদ ঘিরে ধরতে পারে। গর্ভকালীন বিষণ্ণতাও – ক্লান্তি, অবসাদ এবং ঘুম না আসার অন্যতম একটা কারণ।

নিয়মিত গর্ভাবস্থার উপযোগী ব্যায়াম, বিশ্রাম, সুষম খাবার, পর্যাপ্ত পানি পান ইত্যাদি আপনার ক্লান্তি কমাতে বেশ সাহায্য করবে। অপ্রয়োজনীয় কাজগুলো থেকে দূরে থাকুন।

মাথা ঘোরা বা জ্ঞান হারানোর অনুভূতি

বেশিরভাগ সময় গর্ভাবস্থায় হরমোনের প্রভাবে রক্তনালীগুলো স্ফীত হয়ে যায় যার কারনে রক্তচাপ কমে যায়। এছাড়াও দ্বিতীয় ও তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে বর্ধিত জরায়ুটি মায়ের শরীরের নিম্নাংশের রক্তনালীর উপর চাপ ফেলতে থাকে যার কারনে ব্লাড প্রেসার কমে যেতে পারে। আমাদের শরীর এই পরিবর্তনগুলোর সাথে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা রাখে। তবে মাঝে মাঝে খুব দ্রুত মানিয়ে নিতে পারেনা। তখন মায়েদের মাথা ঘুরে ওঠা, অচেতন অনুভব হওয়া বা কিছু সময়ের জন্য জ্ঞান হারানোর মত অনুভুতি হতে পারে।

হঠাৎ করে বসা বা দাঁড়ানো কিংবা গর্ভাবস্থার শেষের দিকে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকার কারনেও মায়ের ব্লাড প্রেসার কমে যেতে পারে এবং এ ধরনের অনুভুতি হতে পারে।

যদি দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় আপনার জ্ঞান হারানোর মতো ভাব হয় তাহলে তাড়াতাড়ি কোথাও বসে পড়ুন,  যদি সম্ভব হয় দুই হাঁটুর মাঝখানে মাথা দিয়ে বসার চেষ্টা করুন (গর্ভাবস্থার শেষ দিকে যদিও এভাবে বসাটা সম্ভব নাও হতে পারে)। কিছুক্ষণের মধ্যে জ্ঞান হারানোর ভাব কেটে যাবে।

বসা সম্ভব না হলে একপাশে কাত হয়ে শুয়ে পড়ুন। এতে শরীরে এবং মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক থাকবে এবং মাথা ঘোরার  অনুভূতি আস্তে আস্তে কেটে যাবে।

এসব ছাড়াও গর্ভকালীন সময়ে মায়েরা আরও অনেক ধরণের উপসর্গ অনুভব করতে পারেন। গর্ভকালীন সব ধরণের উপসর্গ নিয়ে জানতে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ুন।

গর্ভধারণের এ সপ্তাহে করনীয়

গর্ভাবস্থায় ইউরিন ইনফেকশনের ঝুঁকি বেড়ে যায় কারণ বর্ধিত জরায়ু ব্লাডারের উপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করে যার ফলে মূত্রত্যাগের সময় মায়েদের ব্লাডার পুরোপুরি খালি হয়না। এতে ব্যাকটেরিয়া বংশবিস্তার করার অনেক সময় পায়। এর ঝুঁকি কমাতে নিয়মিতভাবে পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত। দিনে অন্তত ১০ গ্লাস পানি খাওয়ার চেষ্টা করুন যাতে প্রস্রাব পরিষ্কার বা হালকা হলুদ বর্ণের থাকে, প্রস্রাবের এই রংগুলো শরীর হাড্রেটেড থাকার লক্ষণ।

প্রস্রাব আটকে রাখবেন না। এতে ইনফেকশনের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায় কারণ প্রস্রাবের সাথে আমাদের শরীরের অনেক জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া বেরিয়ে যায়। প্রস্রাব করার সময় ব্লাডার পুরোপুরি খালি করে ফেলার চেষ্টা করুন।

গর্ভাবস্থার শেষ তিনমাসেই শিশুর হাঁড়ের গঠন সবচেয়ে মজবুত হবে। সুতরাং আপনার খাবারের তালিকায় প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণ দুধ বা দই থাকা উচিত। গর্ভজাত শিশুটির প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম সরবরাহের জন্য প্রতিদিন অন্তত দুই কাপ দুধ খেতে পারেন।

তবে  দুধ খেলে হজমে সমস্যা হয় সমপরিমাণ দই খেতে পরামর্শ দেয়া হয়। দই হজম সহায়ক এবং দুধের সমস্ত পুষ্টিগুণ এতে বজায় থাকে। তার উপর দইয়ে রয়েছে প্রবায়োটিক, যা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।  ক্যালসিয়ামের আরো কিছু  ভালো উৎস হচ্ছে বিভিন্ন দুগ্ধজাত খাবার, শিমের বীজ জাতীয় খাবার, সবুজ শাক-সবজি এবং ছোটো মাছ ( যেমন কাঁচকি, মলামাছ  ইত্যাদি)।

মায়ের যদি দুধ বা দুধ জাতীয় খাবারে সমস্যা থাকে তাহলে ডাক্তারকে সে কথা জানান। হজম ছাড়াও অন্য কোনো সমস্যার কারণে যদি আপনি খাবারের তালিকায় পর্যাপ্ত ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার না রাখতে পারেন, তাহলে সে ব্যাপারেও ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। সেক্ষেত্রে ডাক্তার হয়তো আপনাকে নিয়মিত খাবারের সাথে ট্যাবলেট আকারে বাড়তি ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নিতে বলবে।

২৮ সপ্তাহ অতিক্রান্ত হওয়ার পর শিশুর নড়াচড়া বা কিক কাউন্ট শুরু করুন। মনে রাখবেন ২ ঘন্টার মধ্যে যদি শিশু ১০বারের কম কিক করে তাহলে অবিলম্বে আপনাকে আপনার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

গর্ভবতী মা চাকরিজীবী হলে, কী ধরনের কাজ করেন এবং গর্ভাবস্থার কতদিন পর্যন্ত  আপনি কাজ করতে পারবেন তা নিয়ে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন৷ মা ও ভ্রূণের স্বাস্থ্যের সামগ্রিক অবস্থা  সাপেক্ষে বিষয়টি ব্যক্তি-বিশেষে ভিন্ন হতে পারে।

সেইসাথে গর্ভাবস্থা ও সন্তান লালন পালনের বিভিন্ন দিক ও মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে একটু পড়াশোনা করে নিন। আজকাল মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক প্ল্যাটফর্মেই আলোচনা হচ্ছে। আলোচনায় অংশগ্রহণ করুন, জানুন। এতে আপনার আত্ববিশ্বাস বাড়বে এবং কিছু সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারবেন।  বিভিন্ন কাজে প্রায়োরিটি ঠিক করতে শেখা এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছু কাজ কিংবা কথা যেগুলো আপনার মানসিক অস্থিরতা বাড়িয়ে দেয়, তা সাময়িক ভাবে এড়িয়ে চলুন।

সবার জন্য শুভকামনা

<<গর্ভাবস্থা সপ্তাহ ২৮
গর্ভাবস্থা সপ্তাহ ৩০>>


Spread the love

Related posts

Leave a Comment