মা হওয়ার গল্প | তারানা এ. তাবাসসুম

Spread the love

“I thought I would have to teach my child about the world. It turns out I have to teach the world about my child”- কয়েকটা দিন আগেও বুঝিনি এই কথাটা যে এইভাবে আমার জন্য সত্য হয়ে যাবে!

আমার মেয়েকে সাথে নিয়ে আমাদের যুদ্ধ শুরু ও পেটে যখন ৫ মাসের, তখন থেকে। বিশ্বাস করতে ইচ্ছা হচ্ছিল না Anomaly test এর সময়কার কথা গুলো! ৭ দিনের ব্যবধানে ৫ বার কয়েক জায়গায় test করে ডক্টরের পর ডক্টর এর কাছে দৌড়িয়েছি একটু ভালো কিছু শোনার আশায়!

বিজ্ঞাপণ

কেও আশা দেখায়নি, কেও আমাদের লড়তে বলেনি, সাহস দেয়নি। বার বার “হবেনা , পারবেনা, রেখোনা” শুনতে শুনতে অস্থির হয়ে পাড়ি দিলাম ১৭৯৪ কিলোমিটার, এক মুহুর্তের সিদ্ধান্তে! হাতে ভিসা মেয়াদ ৮ দিন তখন। কিন্তু মনের অস্থিরতা কমানোর আর কোন উপায় পাচ্ছিলাম না আমরা! Screen এ ২৩ সপ্তাহের মেয়েটার চেহারা স্পষ্ট ভাবে দেখার পরে কোনভাবেই ওকে হারানোর কথা ভাবতে পারছিলাম না।

ফেসবুকে সব সব গ্রুপে পোস্ট দিচ্ছিলাম এমন কোন মা/বাবা আছেন নাকি যারা HLHS term টার সাথে পরিচিত। পাইনি কাও কে। কেবল একটা পোস্ট চোখে পড়েছিল “ফাতিন” নামের এক বাবুর, ওর চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়েছিলেন তার বাবা- যে বাচ্চাটা পরে ১৮ দিন বয়সে মারা গিয়েছিল এয়ার এ্যাম্বুলেন্স এর ভেতরেই, গন্তব্যস্থলে পৌছানোর আগেই।

সেই বাবুর বাবার সাথে কথা বলেছিলাম অন্য কাওকে না পেয়ে। ভাইয়া আমাকে অনেক ইনফরমেশন দিয়েছেন সেই সময়। উনি ও সাহস দিয়েছেন আমাদের- ফাতিনের জন্য যা যা করতে পারেননি, আমাদের জন্য উনি করবেন! তাদের কোন Test এ আগে ধরা পড়েনি, তাই কিছু করতেও পারেননি তারা সময়মত। ভাইয়া এখনো আমাদের খোজ নেয়, এখন ভাইয়াটার ঘর আলো করে আছে মরহুম ফাতিনের বোন, ফাতিহা।

ইন্ডিয়াতে যেয়ে আবার Fetal echo করার পর তারা জানালো যে এই combination বাচ্চাদের survive করা অনেক কঠিন। ৩-৪+ সার্জারি, পসিবল হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। কিন্তু উনি আরেকটা কথাও বললেন- “উপরওয়ালা সব পারেন। আপনারা চাইলে প্রেগ্নান্সি কন্টিনিউ করতে পারেন; চেষ্টা করতে পারেন, আমরা আছি। এখন দেশে ফেরত যান, ৩২ সপ্তাহে এসে পরবেন ১০ মাস-১ বছরের একটা প্রিপারেশন নিয়ে। বাচ্চার ৩ দিন বয়সে ১ম এবং ৬-৭ মাসে ২য় সার্জারী লাগবে।“

চলে আসলাম দেশে এবং এইবার মনের অস্থিরতা অনেক অনেক কম ছিল আলহামদুলিল্লাহ! বার বার শুকরিয়া আদায় করছিলাম যে আল্লাহ আমাদের সুযোগ দিয়েছেন চেস্টা করার! অনেকেই তো তা পারেনা, বোঝার আগেই সব শেষ হয়ে যায়। আমরা অনেক লাকি আলহামদুলিল্লাহ! দোয়া করার আর সবার থেকে দোয়া চাওয়ার সুযোগ আমাদের উনি দিয়েছেন!

এভাবে, সেভাবে গেল আরো কয়টা সপ্তাহ- ৩২ সপ্তাহে আবার গেলাম চলে- নতুন করে সব শুরু করার মত ছিল সেই দিন গুলো! ১ বছরের ব্যপার যেহেতু, আবাসিক এলাকায় যেয়ে ফ্ল্যাট ভাড়া নিলাম। ২ বেড, ডাইনিং ড্রইং এর জন্য ফার্নিচার ভাড়া নিলাম! রান্নার সরঞ্জামাদি কিনলাম- আরও কত কিছু! দুইজনে ঘুরিফিরি, খাইদাই আর অপেক্ষা করি। (এই গল্প শুরু করলে থামতে পারবোনা! সে কি অস্বাভাবিক রকমের আজব কাহিনী ছিল সব!)

ডেলিভারির সপ্তাহ খানেক আগে আব্বু আম্মু আসলো সেখানে। ৪ জনে তখন ঘুরিফিরি সময় কাটাই। হঠাত বাবুর নড়াচড়া কম লাগলো ডিসেম্বরের ২৪ তারিখের দিকে। ইমার্জেন্সি ইকো করে দেখা গেল পানি কম, আর বাবুর হার্টবিট ও দুর্বল। ভর্তি করা হল কয়েক ঘন্টার মধ্যেই। অবসার্ভেশনে রাখার পরে ২৭ তারিখ আমাকে ইন্ডিউস করানো হয় এবং কোনোভাবেই তারা সিজারে যাবার জন্য রাজি ছিলনা কারন বাচ্চার চেয়ে আমার দিকে তাদের খেয়ালটা সেই সময় পর্যন্ত বেশি ছিল। এর পর পরপর ৩ বার ইন্ডিউস করার পরেও আমার জড়ায়ুর মুখ বেশি না খোলার দরুন সিজারের জন্য তারা আমাকে নিয়ে যায় ওটি তে, আর অন্যদিকে বাবুর জন্য সার্জারীর টিম রেডি ছিল!

ডিসেম্বরের ৩১ তারিখ বেলা “৩.৩৫” এ ২৫৬০ গ্রাম ওজনের ১৯ ইঞ্চি লম্বা এক ছোট্ট ছানা পয়দা হলো। ভালোভাবে দেখার ও সুযোগ হলনা আমার, ওকে নিয়ে গেল দৌড়ে NICU তে। তবে বাবুর যেসব সমস্যা ধরা পড়েছিল, সেই অনুযায়ী জন্মের পর পর কান্না করাটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল! খুব জোর গলায় কান্না ছিল আমার মেয়ের আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু হাত পা ছিল গাড়ো বেগুনি রঙের “cyanosis”.

৫দিন NICU তে থাকার পর অজস্র পরিক্ষার পর ৬ দিনের দিন আমরা আমাদের সেই বাসায় এসে পড়লাম। follow-up এর পর জানালো আমরা ঢাকা চলে আসতে পারব!!! It was a miracle!!! কিন্তু ৩ মাস পরে, মার্চ মাসের শেষ অথবা এপ্রিলের দিকে বাবুর সার্জারীর জন্য যাওয়া লাগবে।

ভাবতেও পারছিলাম না আমরা কেও, কোথায় ১বছরের জন্য সব করা আমাদের, আর কোথায় মাত্র ৯ দিনের মাথায় আমরা ছাড়া পেয়ে গেলাম! We were allowed to fly!!!! Alhamdulillah। বাবুর Birth Certificate আর প্রয়োজনীয় অন্য কাগজপত্র (যা যা আমাদের বলা হয়েছিল হাসপাতাল + হাই কমিশন থেকে) রেডি করে ফেলছিলাম।

আব্বু, আম্মু, আর আমরা ৩জন- ব্যংগালুর থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। বাবু তখন ৯দিনের। কলকাতায় যেয়ে বাকি কাগজ পত্র নেয়া হলো, এবং পরের দিন ছিল ঢাকায় আসার ফ্লাইট। সময়মত বিমানবন্দরে গিয়ে ইমিগ্রেশনে গেলাম সবাই। আম্মু আব্বু cleared হল। আমার আর রাজনের পাসপোর্ট এও সিল পড়ল- কিন্তু বাবুর কাগজ দেখতে যেয়ে তাদের চোখে পড়ল একটা ডকুমেন্ট মিসিং! আমাদের যেতে দিবেনা তারা। আমাদের কোথাও বলেও নি সেই কাগজের কথা, যার কারনে নেয়া হয়নি সেটা।

এইদিকে আব্বু আম্মু পার হয়ে গেছে, লাগেজ তো আরো আগেই পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে checkin এ। ইন্ডিয়ায় শেষ দিন ভেবে বাকি সব রুপি শপিং আর খাওয়া দাওয়া তে শেষ, টাকাও নাই পকেটে! অনেক বলে পরে বাবুর ব্যাগটা আমরা নামিয়ে রাখতে বললাম, আমাদের তো যেতে দিলই না ওইদিন। আব্বু আম্মু চলে আসল, আমরা আটকে গেলাম। বলা হল পরের দিন FRRO Office এ যেয়ে কাগজটা নিয়ে আসতে। বলে রাখি, সেদিন ছিল শুক্রবার, পরের দিন শনিবার সরকারি অফিস almost বন্ধ (নামকাওয়াস্তে খোলা থাকে) তারপরদিন রবিবার তো ফুল অফ! তারমানে আমাদের পরেরদিন কাজ না হলে আবার আটকে যাবো!

এয়ারপোর্টে বসে আমার কান্না থামছিলই না! কত আশা করেছিলাম বাসায় যাবো, কিভাবে কি থেকে কি হয়ে গেল। ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা আলহামদুলিল্লাহ উঠানো গেল। টাকা তুলে ফেরত গেলাম হোটেলে, হাতে কেবল বাবুর একটা ছোট্ট ব্যাগ নিয়ে।

সেদিন রাতে যেমন ঠান্ডা ছিল, হঠাৎ বৃষ্টি এসে অবস্থা আরো ভয়াবহ করে দিল! বাবুর ঠান্ডা লেগে গেল কিছুক্ষণের মধ্যেই। ওর অবস্থা কেমন জানি খুব খারাপ লাগছিল। গলা দিয়ে অদ্ভুত আওয়াজ আসছিল আর খুব স্বাসকষ্ট শুরু হয়ে গিয়েছিল।

বিজ্ঞাপণ

সকাল সকাল আমরা চলে গেলাম FRRO office এ। গিয়ে দেখি আসেননি অফিসার। আসতে আসতে তার ১২ টা বাজলো। আমাদের ফ্লাইট বুক করা সন্ধ্যা ৬.৩০ এ। লোকের সাথে কথা বলতে যেয়ে রাজন শুনে যে আজ সে কাগজ দিবেনা! দিবেনা মানে দিবেই না! ৩ দিন পরে যেতে বল্ল! কোন কারন ছাড়াই!

আমি গেলাম এর পর আমার কোলের অসুস্থ বাচ্চা নিয়ে, কাদতে কাদতে সব বললাম! ভেবেছিলাম বাবুকে দেখে যদি মায়া হয়! বললাম বাবুকে কলকাতায় কোন হাসপাতালে নিব ভেবে পাচ্ছি না! এখন বেংগালুর যাবার অবস্থায় ও নাই আমরা! প্লিজ ঢাকা যেতে দেন, মাত্র কয়েকটা ঘন্টা পরেই বাবুকে ওইখানেই হাসপাতালে ভর্তি করতে পারবো!!

তার এক্টাই কথা, “আজ অফিস খোলা লাশ এর পারমিট দাওয়ার জন্য। জীবিত বাচ্চার কাগজে সে আজ হাত দিবেনা! আমার সামনে না কেদে ওই গাছের সামনে যেয়ে কথা বলেন! আমি আর গাছ একই কথা!” অনেক কষ্ট নিয়ে কাদতে কাদতে বললাম “আল্লাহ আপনাকে কখনোই যেন আমাদের অবস্থায় না ফেলে” এইটা বলে বের হয়ে আসলাম। জানিনা কই যাবো। টাকা নাই, কাপড়চোপড় নাই- আর এমনিতেই গতকালের টিকেট এর টাকা নষ্ট হলো, আজও এ একই অবস্থা।

বের হয়ে এসে আমি রাস্তায় দাড়িয়ে বাবুকে ধরে কাদছিলাম আর বাবুর বাবাকে বলছিলাম আমি বাসায় যাবো, আমাকে হোটেলে নিও না। আমাকে এয়ারপোর্টে নিয়ে চলো। গতকাল ওরা ফিরিয়ে দিয়েছিল, আমরা তো আজ চেষ্টা করলাম কাজ টা করার- পারলাম না। There is always a room for exception, there must be! বাবুকে দেখলে কেও না কেও হেল্প করবেই ইন শা আল্লাহ!

রাজনও সাথে সাথেই নিয়ে গেল এয়ারপোর্টে। ওখানে গিয়ে দেখি গতকালের কেও নাই, সবাই অন্য শিফট এর। তাদের কাছে যেয়ে সব বলার পরে তারা বলল তাদের কিছু করার নাই। procedure follow করতেই হবে। আমরাও নাছোড়বান্দা! Process যত automated ই হোক না কেন, human intervention এর একটা জায়গা থেকেই যায়। কিছু তো একটা করার মত থাকার কথা!

আল্লাহ আল্লাহ করছিলাম আর চেষ্টা করেই যাচ্ছিলাম আমরা। রাজন বার বার বাবুর কথা বলছিল তাদের, পরে বাবুকে দেখে একজন বললো, দেখি কি করা যায়! সময় লাগবে ২-৩ ঘন্টা। আমাদের হাতে ৩ ঘন্টার মত ছিল সময়।উনি নিজে পরে অনলাইনে ফর্ম ফিলাপ থেকে শুরু করে দরকারি সব করে দিলেন-২ ঘন্টার মধ্যে।  কাংখিত সেই কাগজ pass হয়ে গেল!!! Alhamdulillah! Alhamdulillah!!! অনেক বেশি কৃতজ্ঞ আমরা কিছু মানুষের প্রতি।

এরপর আমরা ঢাকা আসতে পারলাম, এবং সবচেয়ে মজার বিষয় হলো প্লেন থেকে নামার পর থেকে বাবুর গলার আওয়াজটা ছিল না, আর শ্বাসকষ্ট কম লাগছিল! হাসপাতালে যাওয়া লাগেনি সেদিন। বাসায় এসে খুশিতে দিন গুনছিলাম আমরা এপ্রিল হওয়ার!

মার্চ মাসের ফলোআপ এর পর পরেই করোনার জন্য সব বন্ধ হয়ে গেল। আবার আমাদের সামনে অন্ধকার দেখা শুরু! বাবুর অবস্থা ভালোনা তখন, আর এদিকে কোন ডাক্তার রাজি ছিলনা ওর অপারেশন করার জন্য। বাবুর আসলে CHD না, CCHD বলে যেখানে Each and every diagnosis were critical! মানে ওর সমস্যা গুলো individually ও complex আর combination এ তো আরও বেশি ঝামেলা!

ডাক্তার আমাদের বলে নিয়েছিল যে বাচ্চা ফেরত নেওয়ার চিন্তা না করতে, কারন বলা যাচ্ছিল না outcome সম্পর্কে। তবু আমাদের যেহেতু কিছু করার ছিলনা, আমরা উল্টা তাকে বুঝাচ্ছিলাম “আপনি চেষ্টা করেন, বাকিটা তো আল্লাহ’র হাতে। আপনারা অপারেশন না করলে কিভাবে বুঝবেন successful হবার chance কতটুকু”। উনি এরপর ডেট দিলেন- হল বাবুর অপারেশন, এবং তাদের অবাক করে দিয়ে আমার মেয়ে সার্জারীর ৮দিনের মাথায় বাসায় চলে আসল! আলহামদুলিল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ!

এরপরে কিছু খারাপ ঘটনা আছে আরও, যার কারনে আমার ইউসরার সেলাই দুইবার করা হয়েছিল। ১.৫ মাস সেলাই এর যন্ত্রনাতে ছিল মেয়েটা আমার। কিন্তু তবু, অনেক অনেক অনেক ভালো আছি আমরা এখন। ২য় ওপেন হার্ট এর অপেক্ষায় আছি। সামনের মাসে হয়ত ডেট পড়তে পারে পরের সার্জারির।দোয়া করবেন আমাদের জন্য।

এত বড় করে লিখলাম, তাও মনে হচ্ছে অনেক কিছু বাকি বলার। আসলে থামাতে পারিনা নিজেকে আমি। CHD বিষয়ে সবাইকে জানাতে আমার খুব ইচ্ছা হয়। কারন এই একটা Defect খুব কমন, কিন্তু মানুষের অজানা একটা জায়গা! জন্মের পর থেকে বাবুর যত সাধারণ কমপ্লিকেশন ছিল সব একা বাসায় বসে ঘাটাঘাটি করে সামলিয়েছিলাম।

বিজ্ঞাপণ

একা বলছি কারন কোন Pediatrician বাবুর ব্যাপারে কিছু বলতে চাইত না। অনেক Cardiologist ও আমাকে ডাক্তার ভেবে ভুল করেছে- কারন আমি অনর্গল বাবুর প্রতিটা সমস্যার বিস্তারিত আগে ভাগেই বলে দিতাম আর আমি ওর outcome জানানোর পরেও নির্বিকার থাকতাম। বিভিন্ন CHD Group থেকে Similar cases যাদের তাদের থেকে সাহায্য নিয়ে কাজ করে গেছি। বাবুকে প্রতি Oz খাবার Fortified করে দাওয়া লাগত সংগত কারনে। কি কি করা যাবে, কিভাবে করা লাগবে সব ঘেঁটে ঘেঁটে বের করতে হয়েছে কারন আমি আমার আসে পাশে কাওকে পাইনি যারা same situation face করেছে।

আমি নিজে এখনো কোন বাচ্চার হার্টে সমস্যা আছে জানলেই knock করি, যদি কোনভাবে কোন কাজে আসতে পারি সেই আশায়। কারন আমি খুব মিস করেছি একটা Reliable experienced guideline. তবে Facebook আর Google এর বদৌলতে কত যে সহজ হয়েছে আমার জার্নি! আলহামদুলিল্লাহ! সেই থেকেই দুনিয়ার অনেক প্রান্তের অনেক CHD MOM এখন আমার সবসময়কার সঙ্গী। আর আমিও সুযোগ পেলেই টুকুর টুকুর করে সবাইকে CHD সম্পর্কে জ্ঞান দিতে চলে আসি!

হার্টের সমস্যা বলতে কেবল ছিদ্র বুঝে সবাই, কিন্তু জানলে অবাক হবেন কম করে হলেও ১৮ ধরনের individual defects আছে, এবং combined এ অগনিত! এখনো research stage এ আছে বেশিরভাগ ই। আমি আবার বলব, আমি আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভাগ্যবতী যে আমরা জানতাম আগে থেকে। কারন না হলে কি থেকে কি করতাম ভাবতেও পারিনা….. আমাদের এখনো অনেকটা পথ বাকি- দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন সব সহজ করে দেন।

শেষ করি এইটা বলে- আমি কৃতজ্ঞতা বোধ থেকে Foresight Prenatal Clinic এর ডাক্তার হুমায়রা জাহেদা আপার কথা বলব। উনি ৩ বার নিজে আমার টেস্ট করে রিপোর্ট দিয়েছেন, উনি আমাকে সাহস দিয়েছিলেন শুরু থেকেই, আল্লাহর উপর ভরসা করে বাবুর জন্য যা যা করা যায় করতে বলেছেন! বাবুর অপারেশনের পরেও উনি খোজ নেন! (এই টেস্ট এর পরে reconfirm করার জন্য অন্য জায়গায় টেস্ট করেছিলাম, কিন্তু Normal findings ছিল, তাই আমার কাছে উনার গ্রহনযোগ্যতা অনেক বেশি )

প্রতিটা মা একেক ভাবে তাদের যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত, সবার জন্য মন থেকে অনেক অনেক দোয়া আর শুভকামনা। আমাদের জন্যও দোয়া করবেন, আমার ইয়ুসরা কে আল্লাহ যেন নেক হায়াত দান করেন, তার জীবনটা যেন সহজভাবেই কাটে।


Spread the love

Related posts

Leave a Comment