৩৭ সপ্তাহের গর্ভাবস্থা | ভ্রূণের বৃদ্ধি, মায়ের শরীর এবং কিছু টিপস

Spread the love

কিছুদিন আগেও গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহে জন্ম নেয়া শিশুদের “ফুল টার্ম” হিসেবে ধরা হতো। কিন্তু এখন American College of Obstetricians and Gynecologists এটি পরিবর্তন করে ৩৯ সপ্তাহের পর জন্ম নেয়া শিশুদের “ফুল টার্ম” হিসবে বিবেচনা করছে। কারণ গবেষণায় দেখা যাচ্ছে ৩৯ সপ্তাহের আগে জন্ম নেয়া অনেক শিশুর বেশ কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছে। ৩৭তম সপ্তাহের পর আরো দুই সপ্তাহ মায়ের গর্ভে থাকলে ভ্রূণের মস্তিষ্ক এবং শ্বাসযন্ত্র পুরোপুরিভাবে পরিপক্ব হওয়ার সুযোগ পায়।

তাই যদি সিজারিয়ান করানোর পরিকল্পনা থাকে তবে ডাক্তাররা সাধারণত ৩৯ সপ্তাহের দিকে করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন যদি না আপনার অন্য কোনো মেডিকেল কন্ডিশন থাকে।

বিজ্ঞাপণ

গর্ভাবস্থার ৩৭ তম সপ্তাহকে প্রেগন্যান্সির তৃতীয় ট্রাইমেস্টারের দশম সপ্তাহ হিসেবে ধরা হয়। এ সপ্তাহের অবস্থান গর্ভাবস্থার নবম মাসে।

৩৭ সপ্তাহের গর্ভাবস্থা

গর্ভধারণের ৩তম সপ্তাহে গর্ভের শিশুর বৃদ্ধি

গর্ভাবস্থার ৩৭ তম সপ্তাহে শিশুটি বাইরের পৃথিবীতে বেঁচে থাকার কৌশলগুলো ঝালিয়ে নিতে থাকে। শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে অ্যাম্নিওটিক ফ্লুয়িড গ্রহণ ও ত্যাগ করার মাধ্যমে তার শ্বাসতন্ত্রের বিকাশ হচ্ছে, বুড়ো আঙ্গুল চোষার মাধ্যমে তার খাবার গ্রহণের দক্ষতা বাড়ছে এবং কিছু কিছু অ্যাম্নিওটিক ফ্লুয়িড গেলার মাধ্যমে তার পরিপাকতন্ত্র সুগঠিত হয়ে উঠছে।

ভ্রূণটি এখন বিভিন্ন মুখভঙ্গির মাধ্যমে তার মুখের পেশীগুলোর ব্যায়াম করতে থাকে। সেই সাথে তার শ্রবণশক্তি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে তার মোরো বা স্টার্টল রিফ্লেক্স আরো  জোরালো হয়ে উঠছে। উচ্চ শব্দ বা তীব্র আলোতে নবজাতক শিশুরা হঠাৎ আঁতকে ওঠার যে প্রবণতা দেখায় তাকেই স্টার্টল রিফ্লেক্স বলে।

ভ্রূণের হাতের নখগুলো পুরোপুরি গজিয়ে গেলেও পায়ের নখের বৃদ্ধি এখনো চলমান। তবে খুব দ্রুতই সেগুলো পরিপূর্ণতা লাভ করবে। শিশু ভুমিষ্ট হওয়ার পরও তার হাতের নখ, পায়ের নখের চাইতে দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তাই হয়তো কয়েকদিন পরপরই তার হাতের নখ কাটার প্রয়োজন পড়বে।

ভুমিস্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত আপনি গর্ভের শিশুর নড়াচড়া বুঝতে পারবেন। তার নড়াচড়া আগের মত শক্তিশালী না হলেও নড়াচড়ার পরিমাণে কোন তারতম্য হবেনা। যদি নড়াচড়ায় কোন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ্য করেন তবে দ্রুত ডাক্তারকে জানাতে হবে। এই বিষয়ে কোনভাবেই রিস্ক নেয়া যাবেনা।

৩৭ সপ্তাহে ভ্রূণটিকে “আর্লি টার্ম” হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই সপ্তাহে শিশুটি ভুমিষ্ট হলে তার কিছুটা নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। এই সময় জন্ম নেয়া শিশুর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ৯৯ ভাগেরও বেশি।

ভ্রূণের আকার ৩৭ তম সপ্তাহে একটি বড় সাইজের মিষ্টিকুমড়ার সাথে তুলনা করা যায়। এসময় ভ্রূণের উচ্চতা থাকে প্রায় ১৯.১৩ ইঞ্চি বা ৪৮.৬ সেমি এবং এর ওজন হয় আনুমানিক ৬.৩০ পাউন্ড  বা ২৮৫৯ গ্রামের মত।

৩৭ তম সপ্তাহের দিকে এসে ভ্রূণের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক বিকাশের মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। সেগুলো নিম্নরূপঃ

চোষা এবং গেলা

ভুমিষ্ট  হওয়ার পর ব্রেস্টফীড করার জন্য শিশুর চোষা এবং গেলার দক্ষতা খুবই প্রয়োজনীয়। এই সময় সে এসব দক্ষতা আরো  ঝালিয়ে নিতে থাকে। সাধারণত ৩৮ সপ্তাহের মধ্যে ভ্রূণটি  চোষা এবং গেলার সমন্বয় করতে শিখে যায়।

আঁকড়ে ধরার দক্ষতা

গর্ভধারণের ৩৭তম সপ্তাহে ভ্রূণের আঙুলগুলো পরস্পরের মাঝে অনেক বেশি সমন্বয় সাধন করতে পারে। সে তার আঙুলগুলো দিয়ে মুঠো করে কিছু ধরতে পারে । কখনো কখনো সে অ্যাম্বিক্যাল কর্ড অথবা এক হাত দিয়ে অন্য হাতকে ধরে রাখে। এই দক্ষতার কারণে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরপরই সে আপনার হাতের আঙুলও  ধরতে পারবে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

মায়ের প্লাসেন্টার মাধ্যমে অ্যান্টিবডি পরিবাহিত হয়ে গর্ভে থাকা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করার কাজ চালিয়ে যায়। শিশুর শরীর যেহেতু জন্মের পরও বেশ কিছুদিন পর্যন্ত এসব অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারেনা তাই জন্মের পর মায়ের বুকের দুধের মাধ্যমে এসব অ্যান্টিবডি শিশুর দেহে পরিবাহিত হয়।

শিশু বুকের দুধ হিসেবে প্রথমে যা পান করে তা হলো- কোলস্ট্রাম, যা প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি এবং অ্যান্টিবডিতে সমৃদ্ধ। এই দুধ পান করার ফলে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং সে বিভিন্ন ইনফেকশান থেকে সুরক্ষিত থাকে।

পরিপাকতন্ত্র

ভ্রূণের পরিপাকতন্ত্র এখনো সুগঠিত হচ্ছে যা তার জন্মের পরও কয়েক বছর পর্যন্ত চলমান থাকবে। শিশুর ক্ষুদ্রান্ত্রের র দৈর্ঘ্য তার জন্মের প্রথম বছরেই প্রায় ১ মিটারের বেশি  বৃদ্ধি পায়।

মাথা

গর্ভাবস্থার এই সময় ভ্রূণের মাথার পরিধি তার পেট, ঘাড় এবং কোমরের পরিধির সমান থাকে। জন্মের পর কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত তার শরীরের এসব অঙ্গের আকৃতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে।

তম সপ্তাহে মায়ের শারীরিক পরিবর্তন

৩৭তম সপ্তাহে এসে, প্রায় ৯৭% ভ্রূণের মাথা নিচের দিকে থাকে এবং তাদের মুখ থাকে মায়ের পিঠের দিকে। প্রসবের জন্য এই পজিশনকে সেরা পজিশন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

যখন ভ্রূণের মাথা মায়ের তলপেট বা পেলভিসের দিকে চলে যায়, এই অবস্থানকে বলা হয় “এনগেইজড”। এই অবস্থায় মায়ের পেটের ফুলে থাকা বর্ধিত অংশটি একটু নীচের দিকে নেমে আসতে পারে।  

যদি ৩৭ সপ্তাহেও ভ্রূণ ব্রীচ বা ট্রান্সভার্স লাই পজিশনে থাকে তবে ডাক্তার হয়তো ECV বা এক্সটার্নাল সেফালিক ভার্শন করার পরামর্শ দিতে পারেন। এই পদ্ধতিতে আপনার পেটে চাপ প্রয়োগ করে কৃত্রিম উপায়ে ভ্রূণের অবস্থান পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হয়। এটি একটি নিরাপদ প্রক্রিয়া (কিছু কিছু ক্ষেত্রে জটিলতার সম্ভাবনা থাকে) তবে অবশ্যই তা প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ডাক্তার বা ধাত্রীর (মিড ওয়াইফ) মাধ্যমে করাতে হবে।

যখন বসবেন একটু সামনের দিকে ঝুঁকে বসার চেষ্টা করুন যাতে কোমর আপনার হাঁটু বরাবর থাকে। এইভাবে বসাটা যদিও বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয় তবে অনেকের মতে এভাবে বসলে ভ্রূণ প্রসবের উপযোগী অবস্থানে চলে আসে। এভাবে বসার কারণে গর্ভের শিশুরও কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

বিজ্ঞাপণ

এসময়ে অনেকের মনে হতে পারে পেটের আকার আর আগের মত বাড়ছে না। এমন হওয়াটা স্বাভাবিক, কারণ এই সময় থেকে জরায়ুর অ্যাম্নিওটিক ফ্লুয়িডের পরিমাণ কমতে থাকে। তবে এই সময় গর্ভের শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় অ্যাম্নিওটিক ফ্লুয়িড আছে কিনা সেটি ডাক্তারের কাছ থেকে চেক করিয়ে নিতে হবে।  

এই সময় ব্র্যাক্সটন হিক্স কন্ট্রাকশন বা ফলস লেবার পেইন আরো ঘন ঘন ও দীর্ঘ সময় ধরে হতে পারে এবং তা আরো  বেশি অস্বস্তিকর হতে পারে। ব্র্যাক্সটন হিক্স কন্ট্রাকশন এবং আসল প্রসব বেদনার মধ্যে পার্থক্যগুলো জেনে রাখা জরুরী। সেই সাথে প্রসব শুরু লক্ষণগুলো সম্পর্কেও আমাদের আর্টিকেল থেকে জেনে নিন।

অনেক নারীর প্রসবের সময় পানি ভাঙ্গে, তবে প্রসবের পূর্বেও অনেকের পানি ভাঙতে পারে। মায়ের জরায়ুর ভেতর ‘এ্যামনিওটিক স্যাক’ নামে একটি থলেতে ভ্রূণ বড় হতে থাকে। প্রসবের পূর্ব মুহুর্তে এই থলেটি ছিঁড়ে  যায় এবং এ্যমনিওটিক ফ্লুয়িড বের হয়ে আসে। একেই সোজা বাংলায় ‘পানিভাঙ্গা’ বলে।পানি ভাঙলে তা চুইয়েও পড়তে পারে বা হঠাৎ অনেক পানি বের হতে পারে।যেটাই হোক তখন সাথে সাথে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।অধিকাংশ মায়েদের পানি ভাঙ্গার আগেই প্রসব বেদনা শুরু হয়ে যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে প্রসব ব্যাথা শুরু হওয়ার আগেই পানি ভেঙ্গে যেতে পারে।

গর্ভাবস্থার এ সময় যেসব উপসর্গ বেশি দেখা দিতে পারে তা হলো-

ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ

এই সময়ে সাদা স্রাব বা লিউকোরিয়া নির্গত হওয়ার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। গর্ভাবস্থায় এস্ট্রজেন হরমোনের  পরিমান বেড়ে যায় এবং ভ্যাজাইনার আশপাশে এসময় রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পায় বলেই এমনটা হয়। এই বিষয়টি অস্বস্তিকর হলেও এর বিশেষ উপকারী দিক আছে। এই ডিসচার্জ জরায়ুমুখ এবং জন্মনালীকে বিভিন্ন ধরণের ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে এবং ভ্যাজাইনাল এরিয়ার বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখে।

তবে দুর্গন্ধযুক্ত, হলুদাভ, বাদামী কিংবা লাল স্রাব দেখা দিলে দ্রুত আপনার গাইনীকে জানান। এই সময় গাঁঢ়  লাল বা বাদামী বর্ণের ডিসচার্জের বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে কারণ মিউকাস প্লাগ নিঃসরণ হলে এমনটা হয়। মিউকাস প্লাগ নিঃসরণের কয়েকদিনের বা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সাধারণত প্রসব শুরু হয়ে যায়। এছাড়াও প্লাসেন্টার কিছু সমস্যার কারণেও এ সময় রক্তক্ষরণ হতে পারে।

বুক জ্বালাপোড়া

গর্ভাবস্থায় অধিকাংশ মায়ের বুক জ্বালাপোড়া করে।এটি খুব সাধারণ ও স্বাভাবিক শরীরবৃত্তীয় ঘটনা। এই বুকজ্বালা কখনো  শুধু বুকে আবার কখনো  শুধু গলায় বা উভয় স্থানে হতে পারে।গবেষণায় দেখা গেছে, প্রথম সন্তান জন্মের সময় এ সমস্যা বেশি হয়।

অনেকেই আছেন যারা জীবনে প্রথমবারের মত এ সমস্যা অনুভব করে থাকেন গর্ভধারনকালে। যদিও বুক জ্বালাপোড়া করা গর্ভাবস্থার স্বাভাবিক উপসর্গগুলোর মধ্যে একটি এবং এর তেমন ক্ষতিকর প্রভাব নেই, তারপরও এ সমস্যা অনেক অস্বস্তির কারণ হতে পারে।

গর্ভাবস্থার শেষ দিকে বড় হয়ে যাওয়া জরায়ু পাকস্থলীকে উপরের দিকে কিছুটা চাপ দেয়ার ফলে, পাকস্থলীর এসিড অনেকসময় উপরের খাদ্যনালীতে উঠে আসে যার কারণে বুক জ্বালা করে।

একসাথে বেশি খাবার বা পানি না খেয়ে সারাদিন অল্প অল্প পরিমাণে খেলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে।

এসব ছাড়াও গর্ভকালীন সময়ে মায়েরা আরও অনেক ধরণের উপসর্গ অনুভব করতে পারেন। গর্ভকালীন সব ধরণের উপসর্গ নিয়ে জানতে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ুন।

এ সপ্তাহে করনীয়

প্রচুর পানি পান করুন। কারণ পানিশূন্যতার কারণে আপনার জরায়ুতে ব্যাথা অনুভূত হতে পারে এবং অস্বস্তিবোধ হতে পারে। এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান আপনার বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে রাখবে।

টয়লেটে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।কারণ এই সময় মায়ের শরীরের ভারসাম্য ঠিক থাকেনা। যে ধরনের স্যান্ডেলগুলোতে স্লিপ করার সামান্যতম আশঙ্কাও থাকে, সেগুলো দ্রুত পাল্টে ‘নিরাপদ’ স্যান্ডেল ব্যবহার করতে হবে। আপনার বাথরুম যেন পিচ্ছিল হয়ে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন।

আপনার প্রসব পরিকল্পনা ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে যাওয়া উচিত । প্রসবের সময় আপনি কি কি চান , কীভাবে এবং কোথায় প্রসব করাতে চান সেটি  অবশ্যই ঠিক করে ফেলা জরুরী। যদি আপনার আরো সন্তান থাকে, তাহলে আপনি হসপিটালে থাকা অবস্থায় তার / তাদের দেখাশুনার জন্য কে থাকবে সেটাও ঠিক করে ফেলতে হবে।

হাসপাতালে যাবার জন্য এর মধ্যে ব্যাগ গুছিয়ে না রাখলে দ্রুত গুছিয়ে ফেলুন। হাসপাতালে থাকার সময় নানা ধরনের খরচ হতে পারে। আর সে জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান আগেই করুন। প্রয়োজনে আত্মীয়-স্বজনকে বলে রাখুন।আপনার আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে যাদের সঙ্গে আপনার রক্তের গ্রুপ মিলে যায় তাদের বলে রাখুন। রক্তের প্রয়োজনে তাদের ডাকার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন।

নিরাপদ প্রসব সম্পর্কে চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিন। মা হওয়ার মানসিক প্রস্তুতিও থাকা প্রয়োজন। সন্তান জন্মের পর মায়ের করণীয় সম্পর্কে জেনে রাখুন গর্ভাবস্থায়ই।

হাসপাতালে পৌঁছানোর রাস্তাগুলোর বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে রাখুন, যাতে করে আগে থেকেই জানা থাকে কখন কোন রাস্তায় গেলে সময় কম লাগবে, আর কোন রাস্তায় একেবারেই যাওয়া যাবে না।

আপনার শিশুর জন্য শিশু বিশেষজ্ঞের বিষয়ে এখনি খোঁজ খবর নিতে শুরু করুন। জন্মের পর সাধারণত হাসপাতালেই শিশুর চেকআপ করে নেয়া হয়। তবে আপনার যদি পছন্দের কোন শিশু বিশেষজ্ঞ থাকেন তবে তার সাথে কথা বলে রাখতে পারেন চেকআপের বিষয়ে।

মাকে সবসময় পরিবারের সদস্যদের মানসিকভাবে সাহস দিতে হবে। কোনভাবেই তাকে ভয়ের কোন কথা বলে ভড়কে দেওয়া যাবেনা।একজন মা ও তার পরিবারের সঠিক প্রস্তুতি ও মানসিক সাহসই একটি সুস্থসবল শিশুর জন্ম দিতে পারে।

কখন ডাক্তারকে জানাতে হবে

যদি আপনি কন্ট্রাকশন্স (মাংসপেশীর যন্ত্রণাদায়ক সংকোচন এবং প্রসারণ; এটা গর্ভবতীর পেটে কিংবা পিঠে হতে পারে) অনুভব করেন কিংবা কন্ট্রাকশন্স হওয়ার আশংকা করেন তাহলে ডাক্তার ডাকুন কিংবা হাসপাতালে চলে যান।

এছাড়া যদি রক্তপাত ঘটে, তরল কিছুর নির্গমন হয় কিংবা পেটে খুব যন্ত্রণা অনুভূত হয় সেক্ষেত্রেও ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।

আপনার গর্ভের শিশু যত বড় হবে, পেটের ফাঁকা স্থান তত কমতে থাকবে এবং বাচ্চার নড়াচড়ার জায়গা কমে আসবে। এমতাবস্থায় আপনার বাচ্চার নড়াচড়া ধীরে হচ্ছে বলে মনে হতে পারে। তবে আপনার কাছে যদি বাচ্চার  নড়াচড়া করাকে অস্বাভাবিক বলে মনে হয় তাহলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। হয়তো নড়াচড়া কমে যাওয়ার পেছনে কোনো বিশেষ কারণ নেই, আবার এটাও হতে পারে বাচ্চা কোনো যন্ত্রণা অনুভব করছে কিংবা কষ্ট পাচ্ছে, তাই সে কম নড়াচড়া করছে। সেজন্য সতর্ক থাকা জরুরি, কোনো ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। সমস্যা দেখা দেওয়ার সাথে সাথে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

সবার জন্য শুভকামনা।  

<<গর্ভাবস্থা সপ্তাহ- ৩৬
গর্ভাবস্থা স
প্তাহ- ৩৮>>


Spread the love

Related posts

Leave a Comment