শিশুর কৌতূহল এবং স্বাদ অনুভবের ক্ষমতা তাকে চারপাশের পৃথিবীর সাথে ধীরে ধীরে পরিচিত হতে অনেক সাহায্য করে। এমনকি সে সলিড খাবার শুরু করার আগেই তার স্বাদগ্রন্থির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণ এবং স্বাদের খাবারের প্রতি তার পছন্দ বা অপছন্দের বিষয়টি অনুধাবন করতে শুরু করে।
শিশুর স্বাদ অনুভবের ক্ষমতা কখন বিকশিত হতে শুরু করে?
মায়ের গর্ভেই বাচ্চার স্বাদ অনুভব করার ক্ষমতা বিকশিত হতে শুরু করে। গর্ভাবস্থার নবম সপ্তাহের দিকে গর্ভের শিশুর মুখ ও জিহ্বার সাথে সাথে তার প্রথম স্বাদগ্রন্থি বা টেস্ট বাডও গঠিত হয়।
গর্ভে থাকাকালীন সময়ে শিশু এমনিওটিক তরল দিয়ে ঘিরে থাকে এবং খুব স্বাভাবিক ভাবেই শিশু তখন এই তরল শ্বাস প্রশ্বাস এবং মুখের মাধ্যমে গ্রহণ করতে থাকে। এই তরলই শিশুর ফুসফুস এবং খাদ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া পরিপক্ব হতে সাহায্য করে।
শিশু গর্ভে থাকাকালীন সময় মা যে খাবার এবং পানীয় গ্রহণ করে থাকেন সেগুলোর স্বাদ মায়ের রক্তের মাধ্যমে এম্নিওটিক তরলে প্রবেশ করে।
আর শিশুর মুখ দিয়ে যখন এই তরল প্রবেশ করে তখনই শিশু প্রথমবারের মত স্বাদ অনুভব করা শুরু করে। এমনকি এই তরলের ঘ্রাণও পেয়ে থাকে গর্ভের শিশু। মিষ্টি, ঝাল অথবা টক আপনি যাই খেয়ে থাকেন না কেন, শিশু এই তরলের মাধ্যমে সেগুলোর স্বাদ অনুভব করতে থাকে।
তবে জন্মের পরপর শিশুর নতুন স্বাদ গ্রন্থি বেশ সংবেদনশীল থাকে। আর এই প্রাথমিক সময়ে শিশু মিষ্টি এবং টক দুই ধরনের স্বাদই অনুভব করতে পারলেও তখন সে মিষ্টিকেই বেশি পছন্দ করে থাকে। আর এই কারণেই বুকের দুধ শিশুর কাছে এত পছন্দের।
এক্ষেত্রে একটি বিষয় খুব মজার, আর সেটা হল ঘ্রাণ এবং স্বাদ দুটো ক্ষমতাই একে অপরের সাথে সম্পৃক্ত। আর জন্মের পরপরই শিশুর ঘ্রাণ শক্তিও বেশ চমৎকার ও শক্তিশালী থাকে। এমনকি শিশুরা নিজের মায়ের দুধ এবং অন্য দুধের মধ্যেও ঘ্রাণ এবং স্বাদের মাধ্যমে পার্থক্য করতে পারে।
শিশুর স্বাদ অনুভূতির ক্রমবিকাশ
জন্মের সাথে সাথেই কিন্তু শিশু বেশ ভালোভাবেই যে কোন কিছুর স্বাদ পেয়ে থাকে। তার মুখের স্বাদ গ্রন্থিগুলো বয়স বাড়ার সাথে সাথে আরো বৃদ্ধি পেতে থাকে। যার ফলে ধীরে ধীরে শিশুর স্বাদ গ্রহণের ক্ষমতাও পরিপক্বতা পেতে থাকে।
জন্মের পর থেকে তিন মাস
এই সময়ে শিশুর স্বাদ গ্রহণের ক্ষমতা বেশ সংবেদনশীল থাকে। কেননা এই সময়ে শিশুর মুখের স্বাদ গ্রন্থিগুলো বড়দের থেকেও বেশি থাকতে পারে। নবজাতক শিশুর স্বাদ গ্রন্থি তার টনসিলের কাছে, গলার নিচের দিকে এবং জিহ্বার মধ্যেও থাকে।
তবে প্রথম তিন মাসের মধ্যে শিশু কেবল মিষ্টি এবং টকের মধ্যেই পার্থক্য করতে পারে এবং বুকের দুধের মত মিষ্টি স্বাদটাকেই বেশি পছন্দ করে থাকে।
তিন থেকে ছয় মাস
তিন থেকে ছয় মাস বয়সের মধ্যে শিশুর জিহ্বা বেশ খানিকটা বৃদ্ধি পায় বা বড় হয়ে যায়। আর আপনি হয়ত এই সময়ে লক্ষ্য করবেন যে শিশু এই সময়ে বিভিন্ন জিনিস মুখে দেয়ার চেষ্টা করে। এর কারণ হল শিশু মূলত তার জিহ্বার মাধ্যমে সেই জিনসটি সম্পর্কে একটু ধারনা পেতে চায়।
আর পাঁচ মাস বয়সের মধ্যে শিশুর স্বাদ গ্রহণের ক্ষমতায় বেশ খানিকটা পরিবর্তন আসে এবং শিশু লবণাক্ত যে কোন কিছুরও স্বাদ বুঝতে শুরু করে। তাই বলে এই সময়টাতে শিশুর খাবার লবণ দেয়া কোনভাবেই উচিৎ নয়।
ছয় থেকে বারো মাস
ছয় মাস হলেই আমরা সাধারণত শিশুকে মায়ের দুধের পাশাপাশি অন্যান্য খাবার দিয়ে থাকি, আর তাই এই সময়টা শিশুর জন্য বেশ চমকপ্রদ। দীর্ঘদিন ধরেই শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধের মিষ্টি স্বাদ গ্রহণ করতে থাকা শিশুর কাছে যখন নতুন ধরনের স্বাদ পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় তখন শিশু যে কোন ধরনের স্বাদ গ্রহণের দিক থেকেই একটু অস্বস্তিতে ভুগতে থাকে। তবে এটা কয়েকদিনের নিয়মিত অভ্যাসের মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়।
আর যখনই শিশুকে শক্ত কোন খাবার দেয়া হয়, তখন আপনি দেখবেন কোনো ধরনের খাবার শিশুকে দেয়ার সাথে সাথেই শিশু সেটা পছন্দ করে ফেলছে। আবার কোনো খাবারের প্রতি শিশু দেখাচ্ছে চরম অনীহা এবং অনাসক্তি।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে শিশু কোনটা পছন্দ করছে বা অপছন্দ করছে সেটা বুঝার জন্য আপনাকে সেই খাবার অন্তত আট বার শিশুকে দিতে হবে। এরপরও যদি শিশুর তা খেতে না চায় তবে বুঝতে হবে সে খাবারটি আসলেই খেতে চাইছেনা।
এছাড়া ৭ থেকে ৮ মাসের দিকে শিশু বিভিন্ন ধরণের ফিঙ্গার ফুড খেতে পারবে। এই সময়টা শিশুর সাথে নিত্য নতুন খাবারের পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য সত্যিই এক চমৎকার সময়। নরম যে কোন ধরনের ফল ফলাদি এবং সবজি এই সময়ে শিশুর হাতে দিয়ে দিতে পারেন, দেখবেন খেলার ছলেই শিশু সেটার স্বাদ গ্রহণ করছে।
বাবা মায়ের পছন্দ বা অপছন্দ কি শিশুর ব্যক্তিগত খাবার পছন্দের উপর প্রভাব রাখে?
না, সাধারণত শিশুর খাবারের পছন্দ বা অপছন্দ সম্পূর্ণ নিজের উপরেই নির্ভর করে। পারিবারিক বা জীনগত কোন প্রভাব এর উপরে সাধারণত পরে না।
সাধারণত গর্ভে থাকার সময় মা যে খাবার খেয়ে থাকেন অথবা শিশুকে যে খাবার প্রাথমিক দিকে বেশি দেয়া হয়ে থাকে সেদিকেই শিশুর আগ্রহ বেশি থাকাই স্বাভাবিক। আর তাই এই সময়ে আপনি যদি শিশুকে বিভিন্ন ধরনের খাবার খাইয়ে থাকেন তাহলে দেখবেন বড় হয়েও শিশুর বিভিন্ন ধরনের খাবার গ্রহণ করার অভ্যাসটি রয়ে গেছে।
এছাড়াও শিশু খাবার পছন্দ বা অপছন্দ প্রকাশের ক্ষেত্রে আপনাকে নকলও করতে পারে। আর তাই ব্যক্তিগত ভাবে আপনার যদি কোন খাবারের প্রতি অনাগ্রহ থাকে তাহলে সেটা শিশুর সামনে প্রকাশ করবেন না। বিশেষ করে সেই খাবারটি যদি খুবই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হয়ে থাকে।
এছাড়া শিশু বড় হয়েও বিভিন্ন খাবার খাচ্ছে কি না সেটা অনেকাংশেই নির্ভর করে আপনি শিশুকে দীর্ঘ সময় ধরে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন কি না তার উপর। কেননা, একটি গবেষণায় উঠে এসেছে বিভিন্ন স্বাদ এবং ঘ্রাণের বুকের দুধ খাবার সাথে সাথে শিশুর মধ্যেও বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে উঠে। আর বড় হয়েও এই অভ্যাসটি শিশুর মধ্যে রয়ে যায়।
শিশুর স্বাদ গ্রহণের ক্ষমতাকে কীভাবে উৎসাহিত করা যায়?
বিভিন্ন রঙের শাক সবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
গর্ভকালীন সময়ে আপনি যাই খান না কেন, এমনিওটিক ফ্লুয়িডের মাধ্যমে আপনার গর্ভের শিশুও সেই খাবারের স্বাদ গ্রহণ করে থাকে। আর তাই এই প্রাথমিক সময়েই শিশুর স্বাদ গ্রহণের ক্ষমতা ও ইচ্ছেকে উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন রঙের বাহারি ফল ফলাদি ও শাক সবজি খান।
অনেকেই বলে থাকেন গর্ভকালীন সময়ে আপনি যদি বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্বাদ গ্রহণ না করেন তাহলে শিশুর মধ্যেও বিভিন্ন ধরনের খাবার গ্রহণের অভ্যাস গড়ে উঠবে না।
বুকের দুধ খাওয়ান
মায়ের বুকের দুধ কিন্তু ফরমুলা দুধের মত একই ধরনের বর্ণ এবং স্বাদের হয় না। কেননা, মায়ের খাদ্যাভ্যাসের উপরে বুকের দুধের স্বাদ পরিবর্তন হয়ে থাকে। আর তাই শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় আপনি বেশি করে বিভিন্ন ধরনের খাবার গ্রহণের অভ্যাস করুন, যাতে করে বুকের দুধের মাধ্যমে শিশুও সেই খাবারের স্বাদ গ্রহণ করে।
বুকের দুধের পাশাপাশি অন্যান্য খাবার অল্প অল্প করে দিয়ে শুরু করুন
বুকের দুধের স্বাদ বেশ মিষ্টি হয়ে থাকে আর শিশুও প্রাথমিক অবস্থায় মিষ্টি স্বাদ খুবই পছন্দ করে থাকে। তবুও যখন বুকের দুধের পাশাপাশি অন্যান্য খাবার দেয়ার সময় হয়ে আসে তখন শিশুকে বিভিন্ন ধরনের খাবার দিন।
প্রাথমিক অবস্থায় যদি বিভিন্ন ধরনের ও স্বাদের খাবার শিশু দুই এক চামচের বেশি না খায় তাহলে অতটা চিন্তিত হবেন না। এমতাবস্থায় মিষ্টি আলুর সাথে গাজর, ব্রকলি দিয়ে দেখতে পারেন অথবা শিশুকে কলা অথবা নাশপতি ম্যাশ করে খেতে দিন।
প্রথম থেকেই শিশুর খাবারে অল্প মসলা যোগ করুন
অনেক বাবা মা ই একদম প্রাথমিক সময়ে শিশুকে স্পাইসি খাবার দিতে চান না, কেননা তারা ভেবে থাকেন এই সময়ে শিশু হয়ত হালকা ঝাল অথবা মশলাদার খাবার পছন্দ করবে না। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই এখন শিশুকে একদম ৭-৮ মাসের মধ্যেই হালকা ঝাল ও মশলাদার খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস গড়ে তোলা হয়ে থাকে।
প্রাথমিক অবস্থাতেই শিশুর খাবার খুব অল্প পরিমাণে মসলা যোগ করলে তা তার স্বাদ গ্রন্থির বিকাশে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরণের খাবার গ্রহণে শিশুকে উৎসাহিত করে তুলবে। আবার হলুদের মত বেশ কিছু মশলায় বিভিন্ন ধরনে পুষ্টি-গত গুন বিদ্যমান থাকে যা শিশুর জন্য বেশ উপকারী।
ভিন্ন ধরনের খাবার খেতে শিশুকে উৎসাহ দিন
একই খাবার শিশু প্রতিদিন খুব উৎসাহ নিয়ে খেয়ে ফেললেও শিশুকে প্রতিদিন একই খাবার দিবেন না বরং তাকে বিভিন্ন ধরনের খাবার দিন। বিভিন্ন রঙের, স্বাদের বাহারি খাবার খেতে দিন শিশুকে, এর মাধ্যমে শিশুর ভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার পাশাপাশি পুষ্টিগত ভাবেও বেশ উপকৃত করবে।
শিশুর নিজ হাতে খেতে দিন
হ্যাঁ! এত ছোট একটি শিশুর হাতে খাবার দিলে হয়ত সে সাড়া গায়ে মাখামাখি করে ফেলবে। তবে সেগুলো পরিষ্কার করে ফেলতে আপনি তো আছেন! এই অভ্যাসটি শিশুর দৃষ্টি, হাত ও মুখের মধ্যকার সমন্বয়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া একটি গাজর হাতে ধরে কামড়ানো অথবা একটি বিস্কিট খাওয়া এগুলো একটি শিশুর জন্য খুবই চমকপ্রদ অভিজ্ঞতা।
কেবলমাত্র শিশু একটু এলোমেলো করে ফেলবে অথবা হাতে মুখে মাখিয়ে ফেলবে সব, এটা ভেবে শিশুকে এই চমৎকার অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত করা ঠিক না। তবে শিশুর হাতে খাবার দিয়ে সব সময় তার দিকে নজর রাখতে হবে।
[ আরও পড়ুনঃ শিশুকে নিজের হাতে খাওয়া শেখানো | বেবি লেড উইনিং (baby-led weaning) ]
বিভিন্ন বর্ণের খাবার দিয়ে পরখ করে দেখুন
খাবারের স্বাদের সাথে সাথে কোন রঙের খাবার শিশুকে দিচ্ছেন সেটাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কেননা বাহারি খাবারে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিমান। আর শিশুকে যদি একটু নরম করে সেই খাবার দেয়া হয় তাহলে খাবার খেতে শিশুর দাঁতের প্রয়োজন হয় না।
তাই অল্প বয়স থেকেই শিশুকে বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে দেয়ার অভ্যাস করুন। এছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নরম খাবারের সাথে ছোট দানাদার খাবার থাকলে সেটা শিশুর কথা বলার ক্ষমতা বিকশিত হওয়ার ক্ষেত্রেও উপকারী প্রভাব বিস্তার করে।
অতিরিক্ত লবণ এবং চিনি পরিহার করুন
একদম ছোট অবস্থায় শিশুকে অতিরিক্ত লবণ এবং পরিশোধিত চিনি দিয়ে তৈরি খাবার প্রদান থেকে বিরত থাকুন বরং তাকে বেশি বেশি প্রাকৃতিক খাবার প্রদান করার ব্যাপারে সচেষ্ট হন। কেননা খাবারে অতিরিক্ত লবণ শিশুর কিডনির জন্য খুবই ক্ষতিকর হয়ে উঠে। এছাড়া পরিশোধিত চিনি দিয়ে তৈরি খাবার খেলে শিশুর দাঁত ও মাড়িকে ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি ডায়াবেটিক জনিত সমস্যা ও শিশুকে ওবেসিটিতে ভোগাতে পারে।
[ আরও পড়ুনঃ লবণ, চিনি, মধু শিশুর এক বছরের আগে কেন দিতে নিষেধ করা হয়? ]
শিশুকে খাবার খাওয়ানোর সময় ধৈর্য ধারণ করুন
দেখা যেতে পারে বিভিন্ন ধরনের ভালো এবং পুষ্টিগত খাবারের ব্যাপারে শিশু প্রচণ্ড অনীহা প্রকাশ করছে। এছাড়া শিশু কিন্তু আপনাকেই অনুকরণ করে থাকে আর সে কখনো দেখে না যে আপনি শুধু সবজি আর ফলফলাদি খাচ্ছেন, তাই সেও বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফলফলাদির প্রতি অনীহা প্রকাশ করতে পারে।
এমতাবস্থায় আপনাকে হতাশ হয়ে সেই গুনগত মান সম্পন্ন খাবার প্রদান করা থেকে বিরত থাকলে চলবে না বরং ধৈর্য ধারণ করে শিশুকে বারবার ভালো খাবার প্রদানের ব্যাপারে সচেষ্ট হন। অনীহা প্রকাশ করলেও শিশুকে ভালো ভালো গুণগত মান সম্পন্ন খাবার প্রদানের সময় বিভিন্ন কথা বলার মাধ্যমে শিশুকে উৎসাহের মধ্যে রাখুন।
শিশু সবকিছু নিয়ে মুখে দেয় কেন?
যেহেতু একদম ছোট বেলা থেকেই শিশু যে কোন কিছুর স্বাদ গ্রহণ করতে পারে তাই চারপাশের সবকিছুর সাথে পরিচিত হওয়ার একটা মাধ্যম হিসেবেও শিশু সবকিছু মুখে ঢুকিয়ে স্বাদ নিতে চায়। আর ঠিক একারণেই আপনি দেখবেন খেলনা, বই অথবা যে কোন কিছুই সাথে সাথে শিশু মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়।
তবে যে কোন কিছু এভাবে মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়াতে শিশুর ক্ষতি হতে পারে, আর তাই আপনাকে এই সময়ে বেশ সতর্ক থাকতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে শিশু বিপদজনক কিছু মুখে ঢুকিয়ে দিচ্ছে কি না।
তবে মুখের দেয়ার নিরাপদ খেলনা দিয়েও শিশুকে নতুন নতুন কিছু শেখার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করতে পারেন। এই অভ্যাস নিয়ে একদমই চিন্তা করবেন না, কেননা সময়ের সাথে সাথে শিশুর এই অভ্যাস ঠিক হয়ে যাবে। ১২ থেকে ১৮ মাস বয়সের মধ্যেই মুখের মাধ্যমে নতুন সব কিছুর সাথে পরিচিত হওয়ার অভ্যাসটি শিশু সাধারণত বন্ধ করে দেয়।
সবার জন্য শুভকামনা।