গর্ভাবস্থায় স্রাব বা ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ | কখন স্বাভাবিক, কখন নয়

Spread the love

গর্ভাবস্থায় স্রাব বা ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ বলতে সাধারণত সাদা স্রাব বা লিউকোরিয়াকে বোঝানো হয়। তবে প্রকৃতপক্ষে এসময় স্রাব বিভিন্ন বর্ণের হতে পারে। এর মধ্যে কিছু হয়তোবা স্বাভাবিক আবার কিছু জটিল কোন শারীরিক সমস্যার নির্দেশ করতে পারে।

এই আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরণের স্রাব এবং করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপণ

স্রাব বা ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ কি?

প্রত্যেকটি নারীরই বয়ঃশন্ধির এক বা দু বছর আগে থেকে ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ বা স্রাব নির্গত হতে পারে যা মেনোপজ এর পর বন্ধ হয়ে যায়। সারভিক্স এবং যোনির সেক্রেশন, পুরনো কোষ এবং স্বাভাবিক যোনির ব্যাকটেরিয়ার সমন্বয়েই তৈরি হয় এই স্রাব যা যোনিকে পিচ্ছিল রাখে এবং জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

স্রাবের গঠন, পরিমাণ ও ধরণ বয়সভেদে এবং মানুষভেদে ভিন্ন হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, যোনি স্রাব নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই যদি না এর সাথে আর কিছু লক্ষণ যেমন- চুলকানি, বাজে গন্ধ, প্রস্রাবে বা শারীরিক মিলনে জ্বালাপোড়া ইত্যাদি উপসর্গ না থাকে।

গর্ভাবস্থায় স্রাব বা ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ কি স্বাভাবিক

গর্ভধারণের পূর্ব থেকে শুরু করে ডেলিভারি পর্যন্ত এই পুরো সময়েই ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ হওয়া খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়৷ এই সময়ে আপনি যা খেয়াল করছেন, খুব সম্ভবত এটা লিউকোরিয়া। লিউকোরিয়া হলো দুধের মতো সাদা গন্ধহীন কিংবা অল্প গন্ধযুক্ত এক ধরণের স্রাব।

এই ধরণের স্রাব হয়তো গর্ভধারণের আগেও আপনার হয়ে থাকতে পারে কিন্তু এই সময়ে এসে এই স্রাবের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়।

সুস্থ স্রাবের বৈশিষ্ট্যসমূহ হলো:

  • রঙ দুধের মতো সাদা বা বর্ণহীন
  • পাতলা থেকে ঘন হতে পারে; অনেকটা শ্লেষার মতোও হতে পারে
  • গন্ধহীন কিংবা অল্প গন্ধযুক্ত

যদিও গর্ভবতী হলে সাদা স্রাব নির্গত হওয়া স্বাভাবিক তারপরও সবার উচিত এর দিকে নজর রাখা এবং কোন পরিবর্তন দেখা গেলেই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া।

গর্ভাবস্থায় স্রাব কেন হয়

এর কারণ হলো গর্ভাবস্থায় শরীর অনেক বেশি এস্ট্রোজেন উৎপাদন করে এবং যোনির আশেপাশের অংশে রক্ত চলাচল অনেক বেড়ে যায়।

গর্ভাবস্থায় জরায়ুমুখ (Cervix) এবং যোনীর দেয়াল নরম হয়ে যায়। তাই এ সময় স্রাব নির্গত হওয়ার পরিমান বেড়ে যায় যাতে যোনী থেকে কোন সংক্রমণ উপরের দিকে জরায়ুতে পৌঁছাতে না পারে।

প্রসব যত এগিয়ে আসবে, স্রাবের পরিমাণ অনেকটুকু বেড়ে যেতে পারে, এমনকি স্রাবের রঙও পালটে যেতে পারে, আপনি সবসময় যেমন দেখে অভ্যস্ত – তেমন নাও হতে পারে।এর কারণ হলো প্রসবের সময় যত এগিয়ে আসে বাচ্চার মাথা তত বেশী জরায়ুমুখের উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এর ফলে স্রাব আরও বেশী পরিমানে নির্গত হয়।

গর্ভাবস্থার শেষের দিকে স্রাবের পরিমান এতটাই বেড়ে যেতে পারে যে তা প্রস্রাবের মত মনে হতে পারে। শেষ এক বা দু সপ্তাহ আগে স্রাবের সাথে ঘন শ্লেষ্মা বা রক্তের রেখা দেখে যেতে পারে। এর নাম “শো” (show)। এটা হয় যখন জরায়ুতে যে শ্লেষ্মাগুলো জরায়ুমুখ সীল করে রাখে (মিউকাস প্লাগ) তা স্রাবের সাথে বেড়িয়ে আসে।

এটা মায়ের শরীরের প্রসবের জন্য তৈরি হওয়ার লক্ষন। প্রসব যন্ত্রণা শুরু হওয়ার আগে দু তিনবার এ ধরনের “শো” দেখা যেতে পারে। এর মাধ্যমে বোঝা যায় প্রসবের সময় কাছাকাছি।

গর্ভাবস্থায় স্রাবের প্রকারভেদ এবং করণীয়

সাদা স্রাব

স্বচ্ছ এবং দুধের মত সাদা স্রাব সাধারণত লিউকোরিয়া নির্দেশ করে। লিউকোরিয়া গন্ধহীন বা খুব মৃদু গন্ধযুক্ত হতে পারে। এ ধরণের স্রাব গর্ভাবস্থায় খুবই স্বাভাবিক এবং স্বাস্থ্যকর।

তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই সাদা স্রাবের বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে, যেমন- গর্ভাবস্থার বয়স যদি ৩৭ সপ্তাহের কম হয় কিন্তু আপনার স্রাব অনেক বেশি বেড়ে যায় অথবা স্রাবে বড় ধরণের কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করেন, স্রাব অনেক বেশি পাতলা ও স্বচ্ছ হলে অথবা জেলেটিনের মতো অনেক বেশি ঘন হয়ে গেলে। এটি preterm premature rupture of membranes বা প্রিটার্ম লেবারের লক্ষণ হতে পারে।

এসব ক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তারকে জানাতে হবে।

সাদা এবং ঘন ক্রীমের মত স্রাব

স্রাব যদি ঘন এবং সাদা বা অফ হোয়াইট বর্ণের হয় ( অনেকটা কটেজ চীজের মত) তবে তা ইস্ট ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারে। ইস্ট ইনফেকশন গর্ভাবস্থায় অনেকেরই হয় তবে একে স্বাভাবিক হিসেবে গণ্য করা যাবেনা।

এর সাথে অন্য যেসব লক্ষণ দেখা দেয় তা হলো –

  • যোনী এবং ল্যাবিয়াতে চুলকানি হওয়া, লাল হয়ে যাওয়া, ব্যাথা হওয়া, জ্বালাপোড়া করা প্রভৃতি হতে পারে। কখনো কখনো ফুলে যেতে পারে।
  • যৌনমিলনের সময় অস্বস্তি ও ব্যাথা হতে পারে
  • প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া হতে পারে (সংক্রমিত অংশে যখন প্রস্রাব স্পর্শ করে)।

সবুজ অথবা হলুদ স্রাব

গর্ভাবস্থায় স্রাব হলুদ অথবা সবুজাভ, অনেকটা ফেনার মতো এবং তীব্র গন্ধযুক্ত হলে তা খুব সম্ভবত ট্রীকোমোনাইয়াসিস (trichomoniasis) নামক এক ধরণের ইনফেকশন যা যৌন মিলনের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। ট্রীকোমোনাইয়াসিসের অন্যান্য লক্ষণগুলোর মধ্যে যোনিমুখ লাল হয়ে যাওয়া, চুলকানি অথবা জ্বালা করা, প্রস্রাব কিংবা যৌনমিলনের সময় খুব অস্বস্তি হওয়া প্রভৃতিও রয়েছে।

এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

ধূসর রঙের স্রাব

আশটে গন্ধযুক্ত পাতলা সাদা অথবা ধূসর রঙের স্রাব হলে (পিরিয়ডের সময় বা সহবাসের পর দুর্গন্ধ আরও প্রকট হয়ে ওঠে) তা ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস নামক যোনির এক ধরণের ইনফেকশনের লক্ষণ। এর সাথে প্রস্রাবের সময় জ্বালা পোড়া এবং যৌনাঙ্গে চুলকানির উপসর্গও দেখা দিতে পারে।

এ ধরনের লক্ষন দেখা গেলেই আপনার চিকিৎসককে জানান। তিনি BV বা অন্য ইনফেকশনের পরীক্ষা করে দেখবেন এবং সে অনুযায়ী নির্দেশনা দেবেন।

বাদামী স্রাব

গর্ভাবস্থায় বাদামী স্রাব সাধারণত তেমন উদ্বেগের বিষয় নয়। জরায়ু থেকে পুরনো রক্ত বের হয়ে যাওয়ার কারণে বাদামী স্রাব হতে পারে। কখনো কখনো শারীরিক মিলনের পর, যৌনাঙ্গের কোন পরীক্ষার পর বা ভারী কাজ করলে এমন হতে পারে।

বিজ্ঞাপণ

তবে স্রাব যদি গাঁড় বাদামী বর্ণের হয়, একটানা বেশ কিছুদিন চলতে থাকে এবং এর সাথে ব্যথা, ক্র্যাম্প, দুর্গন্ধ, চুলকানি এসব লক্ষণ থাকে তবে ডাক্তারকে জানাতে হবে।

গোলাপি স্রাব

গর্ভাবস্থায় গোলাপি স্রাব স্বাভাবিক হতে পারে আবার নাও হতে পারে। এধরনের স্রাব গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে এবং শেষের দিকে দেখা যায় যখন মায়ের শরীর প্রসবের জন্য প্রস্তুত হতে শুরু করে। এছাড়াও গর্ভপাত বা এক্টপিক প্রেগন্যান্সিতেও এমন স্রাব হতে পারে। তাই ডাক্তারকে জানানো জরুরী।

কখনো কখনো শারীরিক মিলনের পর বা কোন ইনফেকশনের কারণেও গোলাপি স্রাব দেখা দেয়।

লাল স্রাব

গর্ভাবস্থার যেকোনো সময়ই লাল স্রাব হলে অবশ্যই ডাক্তারকে জানাতে হবে বিশেষ করে যদি পরিমাণে বেশি হয়, জমাট বাঁধা রক্ত থাকে এবং সাথে যদি ক্র্যাম্প ও পেটে ব্যথা থাকে। এগুলো সাধারত এক্টপিক প্রেগন্যান্সি অথবা গর্ভপাতের লক্ষণ।

গর্ভাবস্থার শুরুর ইমপ্লান্টেশন (যখন নিষিক্ত ডিম্বাণু জরায়ুর দেয়ালে সংযুক্ত হয়) বা কোন ইনফেকশনের কারণে লাল স্রাব হতে পারে। এগুলো তেমন ভয়ের কারণ নয়। তবে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে লাল স্রাব প্রিটার্ম লেবারের লক্ষণ হতে পারে।  

স্রাবের ক্ষেত্রে আসলে লক্ষণ দেখে বিপদের সম্ভাবনা পরিমাপ করা দূরহ একটি ব্যাপার। এমনকি সাধারণ কিছু লক্ষণ যেমন অস্বস্তি হওয়া, চুলকানি হওয়া, জ্বালাপোড়া করা প্রভৃতি যদি আপনার মাঝে নাও দেখা যায়, তবুও আপনার ভ্যাজাইনাল ইনফেকশন কিংবা যৌনমিলন ঘটিত ইনফেকশন থাকতে পারে।

আপনার যদি মনে হয় যে আপনার ইনফেকশন হয়েছে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই নিজে নিজে চিকিৎসা করতে যাবেন না অথবা প্রেসক্রিপশন ছাড়া ঔষধ গ্রহণ করবেন না। ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন যিনি সঠিক সমস্যা খুঁজে বের করে আপনাকে সঠিক চিকিৎসা প্রদান করবেন।

স্রাবে কোন ধরণের পরিবর্তন কি গর্ভধারণের লক্ষণ নির্দেশ করে?

সাধারণত, না! গর্ভধারণের সময় অনেক নারীদেরই স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যায় এটা সত্যি, কিন্তু গর্ভধারণের দু’এক সপ্তাহের মধ্যেই আপনার সাথে এমন কিছু হওয়ার সম্ভাবনা খুব একটা নেই।

এছাড়া গর্ভধারণের প্রথম কয়েক সপ্তাহে সচরাচর নারীরা যে সকল পূর্বলক্ষণ গুলোর কথা উল্লেখ করে থাকেন, সেখানেও এ ধরণের কিছু নেই। আপনি গর্ভবতী কিনা সেটা পরীক্ষা করার জন্যে সর্বোত্তম পন্থা হলো আপনার পিরিয়ডের আশেপাশের সময়ে ‘প্রেগন্যান্সি কিট’ এর মাধ্যমে পরীক্ষা করানো।

স্রাব ও মিউকাস প্লাগের পার্থক্য কিভাবে বুঝবেন

মিউকাস প্লাগ এবং যোনিস্রাবের মধ্যে পার্থক্য বোঝা কঠিন একটি কাজই বটে, তাই আপনি যদি নিশ্চিত না হন, তাহলে আপনার ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করাই ভালো হবে।

মিউকাস প্লাগ কাঁচা ডিমের সাদা অংশের মতো ঘন এবং স্বচ্ছ পদার্থ। এটি এক প্রকার সেক্রেশন যা গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে সার্ভিকাল ক্যানেলে জমাট হয়ে থাকে এবং এক ধরণের প্রতিরক্ষা দেয়াল তৈরি করে।

কিন্তু ডেলিভারির সময় যখন এগিয়ে আসতে থাকে, তখন সারভিক্স প্রসারিত হতে শুরু করে এবং মিউকাস প্লাগ বেড়িয়ে যায়। তাই, মিউকাস প্লাগ বেড়িয়ে যাওয়াকে ডেলিভারি বা প্রসবের পূর্বলক্ষণ বলা যেতে পারে।

মিউকাস প্লাগ বেড়িয়ে যাওয়াটা সবাই ঠিকঠাক খেয়াল করতে পারেন না। মিউকাস প্লাগ বের হওয়ার সময়, আপনি হয়তো হঠাৎ খেয়াল করে থাকবেন যে, দুই একদিন ধরে আপনার অনেক বেশি পরিমাণ স্রাব বের হচ্ছে যা দেখতে বেশ থকথকে দলার মতো অথবা অনেকটা নাকের সর্দির মতো। মিউকাস প্লাগের রঙ স্বচ্ছ, গোলাপী, বাদামি হতে পারে, আবার কিছু রক্তের ফোঁটাও থাকতে পারে।

স্রাব নির্গত হচ্ছে নাকি এমনিওটিক ফ্লুইড, তা কিভাবে বোঝা যাবে?

গর্ভাবস্থায় তিন ধরনের তরল নির্গত হয়- স্রাব, প্রস্রাব এবং অ্যামনিওটিক ফ্লুইড। প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকে তাই হয়তো ভালোভাবে খেয়াল করলে আপনি হয়তো পার্থক্য বুঝতে পারবেন।

অ্যামনিওটিক ফ্লুইড

  • এটা সাধারনত বর্ণ ও গন্ধবিহীন হয়। মাঝে মাঝে মিষ্টি গন্ধযুক্ত হতে পারে।
  • হাল্কা রক্ত বা সাদা শ্লেষ্মার চিহ্ন থাকতে পারে।
  • অ্যামনিওটিক ফ্লুইড সাধারণত একটানা নির্গত হতে থাকে। এটি ফোঁটা ফোঁটা করে ঝরতে পারে বা হঠাত ফিনকি আকারেও বেড়িয়ে আসতে পারে।
  • প্রস্রাবের পর ব্লাডার খালি হয়ে যাওয়ার পরও যদি তরল নির্গত হতে থাকে তবে তা অ্যামনিওটিক ফ্লুইড হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।

প্রস্রাব

  • স্বচ্ছ হলুদ বর্ণের বা আরও গাঁড় বর্ণের হয়।
  • অ্যামোনিয়ামের গন্ধ যুক্ত হয়।
  • গর্ভাবস্থার শেষের দিকে প্রস্রাব বেড়িয়ে আসা স্বাভাবিক কারণ এ সময় বাচ্চা ব্লাডার এর উপর চাপ প্রয়োগ করে।

স্রাব

  • সাধারণত সাদা বা হলুদ বর্ণের হয়।
  • এমনিওটিক ফ্লুইড এবং প্রস্রাবের চাইতে ঘন হয়।
  • গন্ধযুক্ত বা গন্ধবিহীন হতে পারে কিন্তু প্রশ্রাবের মত গন্ধ হবে না।
  • স্রাব সাধারণত বিক্ষিপ্তভাবে, এবং অল্প পরিমানে নির্গত হয়।

আপনার যদি মনে হয় এমনিওটিক ফ্লুইড নির্গত হচ্ছে বা পানি ভাঙ্গছে তবে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। এটা খুবই জরুরী কারণ তা প্রসব বেদনা শুরু হওয়ার লক্ষন হতে পারে।

কিন্তু আপনার গর্ভাবস্থার বয়স যদি ৩৪ সপ্তাহের কম হয় এবং আপনার পানি ভেঙে যায়, তাহলে ডাক্তার প্রসব আরো দেরিতে করানোর জন্যে এবং শিশুর গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোর (যেমন ফুসফুস) দ্রুত বিকাশের জন্যে ঔষধ প্রদান করবেন।

গর্ভাবস্থায় ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ নিয়ে আমি কি করতে পারি?

কোন প্রকার ইনফেকশন যদি না থাকে, সেক্ষেত্রে স্রাব বন্ধে আপনার তেমন কিছু করার প্রয়োজন নেই। এটা স্বাভাবিক, হবেই। স্রাব শুষে নেওয়ার জন্যে প্যান্টি লাইনার ব্যাবহার করা যায়, তবে গর্ভাবস্থায় কোনভাবেই ট্যাম্পুন ব্যবহার করা ঠিক হবে না।

গর্ভাবস্থায় আপনার যৌনাঙ্গ পরিষ্কার ও সুস্থ রাখতে নিম্নোক্ত পন্থাগুলো অবলম্বন করতে পারেন:

  • সবসময় পুরো যৌনাঙ্গ সামনে থেকে পেছনে মুছে রাখুন। এতে পায়ুপথের ব্যাকটেরিয়া যোনির সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা কম থাকবে।
  • কটনের অন্তর্বাস পরিধান করুন,
  • আঁটসাট প্যান্ট বা পাজামা পরিধান করবেন না; নাইলনের প্যান্টিহোজও এড়িয়ে চলুন,
  • বাবল বাথ, সুগন্ধি প্যাড, সুগন্ধি টয়লেট টিস্যু, হাইজিন স্প্রে, সুগন্ধি সাবান প্রভৃতি পণ্য গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করবেন না।

গর্ভাবস্থায় ‘ড্যুশ’ ব্যবহার করবেন না, এর ব্যবহারের ফলে যোনিতে ব্যাকটেরিয়ার সাধারণ ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় এবং ইনফেকশনের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। এমনকি ডাক্তারেরাও ড্যুশ ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করে থাকেন, কারণ (কিছু দুর্লভ কেসে দেখা গেছে) এর ফলে বাতাস যোনির মাধ্যমে রক্ত সংবহনতন্ত্রের সাথে মিলিত হতে পারে যা বেশ ভয়াবহ কোন বিপদ ডেকে আনতে পারে।

সবার জন্য শুভকামনা।


Spread the love

Related posts

Leave a Comment