বাচ্চার মাথার তাপমাত্রা যদি হুট করেই স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে একটু বেশি হয়ে যায় আর ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে ডাক্তার ঘোষণা দিয়ে দেন যে শিশুর কোন জ্বর নেই, এমন পরিস্থিতি বাবা মায়েদের জন্য খুবই আশঙ্কাজনক হয়ে উঠে। তারা তখন উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেন যে, যেহেতু জ্বর নেই তাহলে বাচ্চার মাথা গরম কেন?
শিশুর স্বাস্থ্যই সবসময় বাবা মায়েদের জন্য প্রথমে আসে, বিশেষ করে শিশুর যদি কোন ধরনের জ্বর অথবা কোন ধরনের ফ্লু হয়ে থাকে তাহলে তো কোন কথাই নেই।
আপনার ছোট শিশুটির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বড়দের তুলনায় অনেক কম থাকে। আর তাই আপনি যখন শিশুর পরিচর্যা করতে যাবেন তখন ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে সঠিক পরিচর্যা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ছোট শিশুর ক্ষেত্রে আপনাকে সবসময় দেখে রাখতে হবে যে তাদের তাপমাত্রা স্বাভাবিক আছে কি না এবং তারা সুস্থ আছে কি না। আর তাদের যদি জ্বর আসে তাহলে আপনি দেখতে পাবেন যে তাদের কপাল এবং বগলের নিচের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশি।
এমতাবস্থায় আপনার কি করনীয় সেটা যদি আপনার জানা না থাকে তাহলে সেই পরিস্থিতি আপনার জন্য বেশ উদ্বেগের হয়ে উঠাটাই স্বাভাবিক।এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন শিশুর মাথার তাপমাত্রা জ্বর ছাড়াও আরো কি কি কারণে বেড়ে যায় এবং এমতাবস্থায় আপনার করনীয় কি?
বাচ্চার মাথা গরম থাকে কেন?
অনেকর ধারণা আমাদের শরীরের তাপমাত্রা বেশি নির্গত হয় মাথা দিয়ে। কিন্তু গবেষণা বলছে শরীরের যে কোন খোলা অংশ (surface) দিয়েই সমানহারে তাপ নির্গত হতে পারে। নবজাতকের ক্ষেত্রে যেহেতু তারা বেশিরভাগ সময় শরীর গুটিসুটি করে রাখে তাই তাপ নির্গত হওয়ার জন্য তার ত্বকের খোলা অংশ তুলনামুলকভাবে কম থাকে।
আবার নবজাতকের মাথা শরীরের তুলনায় আনুপাতিক হারে একটু বড় হয়। এছাড়াও নবজাতকের পুরো শরীর বেশিরভাগ সময় কাঁথা বা কাপড়ে মোড়ানো থাকে। সব মিলিয়ে তার শরীরের তাপ নির্গত হওয়ার জন্য তার মাথাতেই সবচাইতে বেশি খোলা অংশ (surface) থাকে। এই কারণে বাচ্চার মাথা গরম লাগতে পারে এবং তার মাথার তাপমাত্রা কখনো কখনো তার শরীরের অন্যান্য অংশের চাইতে বেশি মনে হতে পারে।
নবজাতকের শরীরে খুব অল্প পরিমাণে ফ্যাট থাকে এবং পানির পরিমাণ বেশি থাকে। এই কারণে তাদের শরীরের তাপমাত্রা খুব দ্রুত ওঠানামা করতে পারে। এমনকি তাদের কাপড় বেশি পড়ানো হলেও তাদের শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
মনে রাখতে হবে মানুষের শরীরের তাপমাত্রা বিকেলের শেষভাগে ও সন্ধ্যের আগে বেড়ে যায় এবং মধ্যরাতে ও ভোরের দিকে হ্রাস পায়।
তবে যায় হোক না কেন, যেহেতু তিন বছরের কম বাচ্চাদের ক্ষেত্রে জ্বর খুবই মারাত্মক ইনফেকশনের লক্ষণ, তাই তার তাপমাত্রা বেশি মনে হলে অবশ্যই তা ডাক্তারকে জানাতে হবে। এ বিষয়ে কোন ধরণের ঝুঁকি নেয়া যাবেনা।
শিশুর বয়েস যদি তিন মাসের কম হয়ে থাকে এবং তাপমাত্রা ১০০.৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট (৩৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস্) অথবা তার চাইতে বেশী হয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এমন শিশুদের ক্ষেত্রে, ক্ষতিকর সংক্রমণ বা রোগের জন্য পরীক্ষা করানো আবশ্যক।
[ আরও পড়ুনঃ শিশুর জ্বর । কখন স্বাভাবিক, কখন নয় ]
বাচ্চার হাত পা শরীরের তুলনায় ঠাণ্ডা মনে হয় কেন?
নবজাতকের সংবহনতন্ত্র খুব একটা পরিপক্ব হয়না, যার কারণে শরীরের সব অংশে তা সমানভাবে রক্ত পরিবহন করতে পারেনা। এ সময় তার সংবহনতন্ত্র শরীরের যে অংশগুলোতে সবচাইতে বেশি প্রয়োজন সে অংশগুলোতে আগে রক্ত পরিবহন করে এবং তাপমাত্রা ঠিক রাখে। শরীরের হাত এবং পায়ে তাই মাঝে মাঝে রক্ত পরিবহন কম হতে পারে যার কারণে তার হাত পা ঠাণ্ডা লাগতে পারে। বাচ্চার বয়স তিন মাস হতে হবে এটা ঠিক হয়ে যায়।
অনেক বছর ধরেই এটা মনে করা হোতো যে বাচ্চার হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু এখন WHO (World Health Organization) বলছে বাচ্চার হাত পা উষ্ণ এবং গোলাপি বর্ণের থাকতে হবে। এর মানে হোল বাচ্চার শরীরের তাপমাত্রা তার জন্য আরামদায়ক অবস্থায় আছে।
যদি বাচ্চার পা ঠাণ্ডা এবং শরীরের মধ্যবর্তীই অংশ (Trunk) উষ্ণ থাকে তার মানে শিশুর ঠাণ্ডা লাগছে। আর যদি উভয়স্থান ঠাণ্ডা হয়ে যায় তার মানে সে হাইপোথারমিয়াতে আক্রান্ত।এসব ক্ষেত্রে অবশ্য ডাক্তারকে জানাতে হবে।
কখনো কখনো বাচ্চার পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া মেনিনজাইটিসের লক্ষণ হতে পারে। যদি বাচ্চার পা ঠাণ্ডা থাকার সাথে সাথে জ্বর, মাথার নরম অংশগুলো ফুলে ওঠা, অস্বস্তি, নিশ্বাসের সমস্যা, পিঠ ও ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, শরীর নিস্তেজ হয়ে যাওয়া, বমি, খাওয়াতে অরুচি বা ক্লান্তির লক্ষণ দেখেন, তবে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। মেনিনজাইটিসের চিকিৎসা না হলে তা মারাত্মক হতে পারে।
এবার দেখে নেয়া যাক জ্বর না থাকা সত্ত্বেও বাচ্চার মাথা গরম থাকে কেন-
বাইরের আবহাওয়া খুবই গরম থাকলে
এমন কেন হয়?
এই অবস্থাটি তাদের জন্য খুবই প্রযোজ্য যারা গরম অথবা উষ্ণপ্রধান অঞ্চলে বসবাস করে। এছাড়া হুট করে যদি গরম পরে যায় তাহলে এর সাথে সাথে আমাদের শরীরের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়।
শিশুদের ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ার কারণে ঠিক এমনটা যখন হয় তখন ডাক্তারি ভাষায় তখন একে হিট র্যাশ বলা হয়। এই কারণে জ্বর না থাকা সত্ত্বেও শিশুর মাথা গরম লাগতে পারে।
এমতাবস্থায় করনীয় কি?
শিশুকে যথা সম্ভব ঠাণ্ডা পরিবেশ এবং আরামের মধ্যে রাখুন। এই সময়ে শিশুকে বেশি করে বুকের দুধ খাওয়ান তবে তার মানে কিন্তু অত বেশি নয় যে শিশুর জন্য সেটা পান করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া উষ্ণ আবহাওয়ায় শিশুকে ছায়ার মধ্যে রাখুন যাতে করে তারা একটু ঠাণ্ডা পরিবেশে থাকতে পারে।
শিশুকে ছায়ার মধ্যে রাখার পাশাপাশি তাকে যথা সম্ভব কম জামা কাপড় পরিধান করান যাতে করে শিশু গরমে কষ্ট না পায়। পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে শিশুকে ঠাণ্ডা জামা কাপড় পরিধান করান, যেমন আমাদের দেশে গরমের সময় শিশুকে পাতলা সুতির কাপড় পড়াতে পারেন।
গরমের সময় শিশুকে সূর্যের তাপ থেকে দূরে রাখুন, তবে আপনাকে যদি বাইরে বের হতেই হয় তাহলে অবশ্যই একদম সকাল সকাল ৬টা থেকে ৯টার মধ্যে কাজটা সেরে ফেলুন। কেননা সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টার মধ্যের সময়টাতে বাইরে যে রোদ থাকে সেটা আপনার শিশু এবং আপনার দুইজনেরই স্বাস্থ্য ও ত্বকের জন্য বেশ ক্ষতিকারক।
থার্মোমিটারের কারণে
এমনটা কেন হয়?
প্রায় সময় এমনটি হতে পারে যখন আপনার থার্মোমিটার নামক এই তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রটির উপর আপনি তেমন একটা নির্ভর করতে পারছেন না, বিশেষ করে সেই মুহূর্তে যখন এটা ভেঙ্গে যায় অথবা নষ্ট হয়ে যায়। আর এই থার্মোমিটারটি ম্যানুয়াল হোক অথবা ডিজিটাল হোক, সেটা যদি সঠিক তাপমাত্রা না দেখাতে পারে তাহলে অনেক ধরনের সমস্যা হতেই পারে।
এমতাবস্থায় আপনি কি করবেন?
সাধারণত, অন্য আরেকটি ভালো থার্মোমিটারের সাথে আপনার যন্ত্রটিকে মিলিয়ে দেখতে পারেন যে আপনার থার্মোমিটারটি ভালো আছে কি না। এছাড়া আরো ভালোভাবে লক্ষ্য রাখুন যে থার্মোমিটারটি সঠিক অবস্থায় আছে, নাকি আপনার শিশু তার বগলের ঠিক নিচ থেকে থার্মোমিটারটি সরিয়ে ফেলেছে? এছাড়া বাসার অন্যান্য সুস্থ সদস্যদের দিয়েও আপনি চেক করে নিতে পারেন যে আপনার থার্মোমিটারটি ঠিক আছে কি না।
সব ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষার পর যদি আপনার মনে হয় যে থার্মোমিটারটি নষ্ট হয়ে গেছে তাহলে অতিসত্বর সেটা পরিবর্তন করুন। থার্মোমিটার ম্যানুয়ালটি ভালো নাকি ডিজিটালটি ভালো সেটা সেটা নিয়ে মানুষের মধ্যে অনেক বিভেদ রয়েছে তবে সেটা যেমনই হোক না কেন যদি ভালোভাবে ব্যাবহার না করা হয় তাহলে সেটা নষ্ট হয়ে যেতেই পারে।
এছাড়া শিশু যদি মাত্র কয়েক মাস বয়সের হয় তাহলে থার্মোমিটার একেক সময় একেক রকমের তাপমাত্রা দেখাতে পারে এবং সেটা একদম স্বাভাবিক একটা বিষয়।
[ আরও পড়ুনঃ শিশুর শরীরের তাপমাত্রা কিভাবে পরিমাপ করবেন ? ]
শিশুর দাঁত উঠার সময়
কেন এমন হয়?
বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, শিশুর দাঁত উঠার সময় কিন্তু শিশুর শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। দাঁত উঠার ব্যথা এবং যন্ত্রণার কারণে শিশুর শরীরের তাপমাত্রা হালকা বেড়ে যেতে পারে।
তবে দাঁত উঠার সময়কার জ্বরের মত এই উচ্চ তাপমাত্রার কারণে শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক বাবা মাই কিঞ্চিৎ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। মূলত দাঁত উঠার সময় শিশুর শরীরের উপর দিয়ে ব্যথার কারণে যে ধকলটা যায় তার কারণে তাপমাত্রা কিঞ্চিৎ বেড়ে যেতে পারে।
এমতাবস্থায় কি করবেন?
এমতাবস্থায় সাহায্যের জন্য আপনার শিশুর ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। শিশু বিশেষজ্ঞ হয়ত শিশুকে এমন কোন খেলনা দিতে পারেন যেটা কামড়ালে শিশু তার ব্যথা থেকে কিছুটা মুক্ত হতে পারবে। এছাড়া ডাক্তার চাইলে হয়ত কোন ওষুধও দিতে পারেন শিশুর দাঁতে ব্যথা কমানোর জন্য।
তবে মনে রাখবেন দাঁত উঠার এই সময়টা শৈশবের একদম সাধারণ ও স্বাভাবিক একটা ঘটনা এমনটা যে কারো ক্ষেত্রেই হতে পারে। আর এই দাঁত উঠার সময়ের সামান্য তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে সেটাকে জ্বর ভেবে খুব বেশি উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং প্রয়োজনে ডাক্তারের সাথে আলাপ করুন।
শিশু যদি খুব বেশি শুয়ে থাকে
এমনটা কেন হয়?
শিশু যদি চুপচাপ তার বিছানায় শুয়ে থাকে তাহলে তার রক্ত চলাচলের জন্য শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া ঘরের আনুষঙ্গিক কাজ করার সময় আপনার হাত একটু ঠাণ্ডা হয়ে যেতে পারে আর সেই ঠাণ্ডা হাত দিয়ে যখন আপনি শিশুকে ধরবেন তখন তার শরীরের তাপমাত্রা কিঞ্চিৎ বেশি লাগতেই পারে।
এমতাবস্থায় কি করবেন?
শিশু ঘুম থেকে জেগে উঠলে তাকে কোলে নিয়ে নিন কিছুক্ষণের জন্য। এছাড়া একটু লক্ষ্য রাখবেন যে কাপ প্লেট ধোয়া অথবা অন্যান্য কাজ করার জন্য আপনার হাত কি একটু ঠাণ্ডা হয়ে আছে কি না। আর এমতাবস্থায় বাসার অন্য যে কোন সদস্যকে বলুন শিশুকে ধরে দেখতে যে আসলেই কি তার শরীরের তাপমাত্রা কিঞ্চিৎ বৃদ্ধি পেয়েছে কি না।
এছাড়া সমসাময়িক কিছু গবেষণায় উঠে এসেছে যে, সবসময় লক্ষ্য রাখতে হবে শিশু চিত হয়ে শুয়ে ঘুমাচ্ছে কি না। কেননা এতে করে শিশুর শরীরের তাপ বের হয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ সুযোগ থাকে এবং শিশুর শরীরে ঠিকমত বাতাসও লাগে। আর এই বাতাস চলাচলের কোন প্রকার বাঁধা না থাকলে সেটা শিশুর শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখে।
[ আরও পড়ুনঃ ঘুমানোর সময় শিশুকে কিভাবে শোয়ানো নিরাপদ ]
শিশু যদি খুব বেশি কান্নাকাটি করে
এমনটা কেন হয়?
শিশু যদি খুব বেশি কান্নাকাটি করে তাহলে তার শরীরের উপরে স্ট্রেস এবং ধকল যায়। এই কান্নাকাটির কারণে শিশুর রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে এবং তার শরীরের তাপমাত্রাও বৃদ্ধি পেতে পারে। এই সময় বাচ্চার মাথা গরম লাগতে পারে।
শিশু যখন একটু অতিরিক্ত কান্নাকাটি করে তখন আপনি দেখবেন শিশুর মুখের রঙ কিছুটা লালচে হয়ে গেছে এবং কখনো কখনো এটা কিছুটা উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তবে এটা জ্বরের কারণে নয় বরং কান্নার কারণে শিশুর শরীরের উপর দিয়ে যে ধকল যায় তার কারণে হয়।
এমনকি বড় ধরনের কোন ক্ষতি যেমন পরিবারের কেউ মারা গেলে অথবা ব্রেক-আপের পর আপনিও যদি অনেক কান্নাকাটি করেন তখন আপনার কপালে হাত দিয়ে দেখবেন যে আপনার কপালের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এটা কিঞ্চিৎ গরম হয়ে আছে। আর ঠিক একই কারণে কান্নাকাটির ফলে বাচ্চার মাথা গরম লাগতে পারে।
এমতাবস্থায় কি করবেন?
শিশুকে শান্ত রাখার জন্য চেষ্টা করুন এবং আপনার শিশু কেন এমন করে কাঁদছে তার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। এমনটা হতে পারে আপনার শিশু কোন কিছু দেখে হয়ত ভয় পেয়েছে অথবা শিশুর ডায়পার পরিষ্কার করা প্রয়োজন।
এছাড়া শিশুর যদি খুধা অথবা তৃষ্ণা পেয়ে থাকে তাহলেও শিশু কাঁদতে পারে। এমতাবস্থায় শিশু যে কারণে কাঁদছে তার সমাধান এর জন্য সচেষ্ট হন।
শিশুর যে কোন ধরনের স্ট্রেস এবং উদ্বেগের সমাধান করলে শিশু আশ্বস্ত এবং নিরাপদ বোধ করে। এছাড়া শিশুর সমস্যার সমাধান করলে, তার কান্নার কারণে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে সেটাকে জ্বর বলে ভাবার প্রয়োজনও হয় না। তবে সঠিকভাবে শিশুর কান্নার কারণ নির্ধারণ করাটা একটু কষ্টকর হলেও, বাবা-মা হিসেবে অচিরেই আপনি সেটা খুঁজে বের করতে পারবেন।
কখন ডাক্তার দেখাতে হবে
যদি নীচের কোন লক্ষণ শিশুর মধ্যে দেখেন তবে ডাক্তারকে জানাতে হবে-
- উপরের সবগুলো পদ্ধতি প্রয়োগ করার পরও বাচ্চা যদি খিটখিটে হয়ে থাকে এবং অস্বস্তি বোধ করে বা কান্নাকাটি করতে থাকে।
- বাচ্চার মধ্যে যদি পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা যায়। যদি এর সাথে বমি বা ডায়রিয়ার লক্ষণ থাকে তবে দ্রুত ডাক্তারকে জানাতে হবে।
- যদি বাচ্চার শরীরের তাপমাত্রা মাপার পর তার জ্বর দেখা যায়।
মনে রাখবেন প্রতিটি বাচ্চাই আলাদা এবং তাদের মধ্যে জ্বর না থাকা সত্ত্বেও মাথা বা কপাল গরম লাগতে পারে। তারপরও আপনার উচিত বাচ্চার মাথা গরম লাগলে তার শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখা বা অসুস্থতার লক্ষণ আছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখা। যদি কোন কিছু অস্বাভাবিক মনে হয় তবে দেরী না করে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
সবার জন্য শুভকামনা।