১-৩ বছর বয়সী শিশুর ঘুম কেমন হতে পারে

Spread the love

বাচ্চাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ রাখার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন। কিন্তু এই বয়সের বাচ্চাদের ঘুম পাড়ানোটা সহজ কোন কাজ নয়। অনেক বাচ্চাই দিনে ঘুমাতে চায়না এমন কি রাতেও ঘুমাতে ঝামেলা করে কারণ এই বয়সে তাদের ভেতর এক ধরণের উৎফুল্লতা কাজ করে এবং সবকিছুর বিপরীত থাকাটাই এসময় তাদের কাছে বেশি আনন্দের।

এই বয়সে বাচ্চারা সহজে ক্লান্ত হয়না ফলে তাদের সহজে ঘুম পাড়ানো বা শান্ত রাখা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। আপনার বাচ্চার মধ্যে যদি এই ধরণের বৈশিষ্ট থাকে সেক্ষেত্রে বাচ্চার প্রয়োজন মত বিশ্রাম ও পর্যাপ্ত ঘুমের জন্য আপনাকে অনেক কিছুই করতে হতে পারে। যেমন-বাচ্চাকে শোয়ানোর একটা নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে দৈনিক ঐ সময় অনুযায়ী তাকে বিছানায় নিয়ে যাওয়া।

বিজ্ঞাপণ

এছাড়াও বিছানায় যাওয়ার আগে কোন ধরণের খেলনা ও চিনি জাতীয় খাবার দেওয়া থেকে বিরত থাকা, ঘুমানোর আগে টেলিভিশন বা কোন ধরণের ভিডিও দেখা থেকে বিরত রাখা, মৃদু গরম পানিতে বাচ্চাকে গোসল করানো ও গল্পের বই পড়তে দেওয়া ইত্যাদি।

[ আরও পড়ুনঃ শিশুর ঘুম (০-১২ মাস) ]

১-৩ বছর বয়সী বাচ্চার কি পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন হয়?

American Academy of Pediatrics এর তথ্য অনুসারে এই বয়সের বাচ্চাদের দৈনিক ১১-১৪ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়। বাচ্চা দিনে ১-২ দুই ঘণ্টার দুবার ঘুম এবং রাতে ১০-১২ ঘণ্টা ঘুমাতে পারে তবে ২ বছরের কাছাকাছি সময় বেশিরভাগ বাচ্চা দিনে একবার লম্বা সময় ঘুমিয়ে নেয়।

যেহেতু বেশিরভাগ বাচ্চাই কিছুতেই ঘুমাতে চায় না তাই  বাচ্চার দিন এবং রাতের ঘুমের রুটিনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চেষ্টা করে যেতে হবে। এতে শুধু বাচ্চার পর্যাপ্ত ঘুমই হবেনা সাথে আপনার দৈনন্দিন জীবন আরও সহজতর করতে সাহায্য করবে।

বাচ্চার ঘুমের উপযুক্ত সময়

বাচ্চারা খুব ভালো ঘুমায় যদি তাদের সন্ধ্যা ৭:৩০ – ৮ তার মধ্যে শুইয়ে দেয়া হয়। কারণ যেসব বাচ্চা রাত ৯টার মধ্যে ঘুমিয়ে পরে  সেসব বাচ্চারা জলদি ঘুমিয়ে পড়তে পারে এবং রাতে খুব কম জাগে। ফলে রাতে বাচ্চার শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম পায়।

বাচ্চা সকাল ৬ টা থেকে ৭ টার মধ্যে উঠে যেতে পারে। কিছু কিছু বাচ্চা এর আগেও জেগে যায়। বাচ্চা যাতে ঘুম থেকে জেগেই কান্নাকাটি না করে তাই তার বিছানার আশে পাশে তার নাগালের মধ্যে কিছু খেলনা রেখে দিতে পারেন। ঘরে ভারি পর্দা দিয়ে দিন যাতে এ সময় সূর্যের আলো ঘরে ঢুকতে না পারে।

বাচ্চাকে দিনে কতবার ঘুম পাড়ানো উচিত?

বাচ্চার বয়স দেড় বছর হওয়া পর্যন্ত সে প্রতিবার ১ থেকে দেড় ঘণ্টা করে দিনে ২ বার ঘুমাতে পারে। তবে ১৬ থেকে ২০ মাস বয়সের বাচ্চাদের মধ্যে অধিকাংশ বাচ্চা দিনে দুবার না ঘুমিয়ে বিকেলের দিকে এক থেকে দেড় বা দু ঘণ্টার একবার ঘুম দেয়। সেক্ষেত্রে বাচ্চার দুপুরের খাবার একটু আগে খাওয়াতে হবে যেন প্রথম বিকেলেই তাকে ঘুম পাড়ানো যায়।

বাচ্চাকে ঘুম পাড়ানোর কৌশল

বাচ্চাকে ঘুম পাড়ানোর বিশেষ কিছু কৌশল অবলম্বন করলে তা আপনার বাচ্চার পর্যাপ্ত ঘুমের ক্ষেত্রে বেশ সহায়ক ভুমিকা রাখতে পারে।

একটা সক্রিয় দিন মানে রাতের শান্তিময় ঘুম। তাই বাচ্চাকে দিনের বেলা খেলাধুলা করার যথেষ্ট সুযোগ দিতে হবে। এতে করে দিন শেষে তার শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়বে এবং সে কোনরকম ঝামেলা ছাড়াই জলদি ঘুমিয়ে পড়বে।

বাচ্চার ঘুমের সময়সূচীর ধারাবাহিকতা রক্ষা করুন বাচ্চার ঘুমানোর সময়সূচীর মধ্যে যে আহামরি কোন রহস্য রয়েছে এমনটা নয়। ঘুমের পুড়ো ব্যাপারটাই হল তিনটা জিনিষের উপর। আর তা হল- গোসল, বই আর ঘুমানোর বিছানা।

আপনাকে যা করতে হবে তা হল, (গোসল, বই, বিছানা) এই তিনটা বিষয়ের সঠিক সমন্বয় করে দেখতে হবে যে তা বাচ্চার পর্যাপ্ত ঘুমে কতটা কার্যকর।

ঘুমানোর আগে বাচ্চার সাথে খুব বেশি সময় কাটানো উচিত না। আপনি তাকে যত বেশি গল্প বলবেন, গান শোনাবেন বা তার সাথে খেলবেন সে তত বেশি সময় ধরেই জেগে থাকবে। 

প্রতিদিন বাচ্চার ঘুমানোর নির্দিষ্ট সময়ের ১৫ মিনিটের মধ্যেই তাকেই শুয়ে দেয়ার চেষ্টা করুন। এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করাটাই বাচ্চার ঘুমের সময়সূচী তৈরি করার মূলমন্ত্র।  

ঘুমানোর পূর্বে খাবারের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। ঘুম পাড়ানোর আগে বাচ্চাকে কখনই অধিক চিনি জাতিয় খাবার দেওয়া যাবেনা। তা তাকে আরও বেশি সজাগ করে তুলবে। বরং এসব কিছুর বদলে ছোট এক গ্লাস দুধ দিতে পারেন। তবে খাওয়ানোর পড়ে ও ঘুমানোর আগে অবশ্যই তার দাঁত ব্রাশ করে দিতে ভুলবেননা।

বাচ্চা ঘুমানোর আগে স্ক্রীন থেকে দুরে রাখুন। American Academy of Pediatrics এর পরামর্শ অনুযায়ী বাচ্চাকে ঘুম পাড়ানোর ৩০ মিনিট পূর্বে টেলিভিশন, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট ও স্মার্ট ফোন বন্ধ করে রাখতে হবে। ভালো হয় এইসব বাচ্চার শোওয়ার ঘর থেকে বাইরে রাখলে।

এক্ষেত্রে আপনি দিনের বেলায় বাচ্চাকে নিয়ে তার বয়স অনুস্বারে বিভিন্ন ধরণের কার্টুন মুভি ও মজার কিছু দেখতে পারেন তবে অবশ্যই এমন কিছু না যা দেখলে বাচ্চা ভয় পেতে পারে এমন কি তার দুঃস্বপ্নের কারণ হয়ে দাড়ায়। বইয়ের ক্ষেত্রেও তাই অর্থাৎ এমন কোন বই না যা বাচ্চার ভয় ভিতি সৃষ্টি করতে পারে।

বাচ্চা ঘুমাতে না চাইলে কি করবেন?

আপনার বাচ্চা যদি সহজে ঘুমাতে না চায় সেক্ষেত্রে, প্রথমত কখনই তাকে ঘুমানোর জন্য জোড় জবরদস্তী বা কড়া ভাষায় কিছু বলা যাবেনা যা তার মধ্যে শুধুমাত্র এক ধরণের ভীতিকর অনুভূতির সৃষ্টি করবে। এতে সে মনে করবে ঘুমের সাথে বকা দেয়ার কোন সম্পর্ক আছে এবং ঘুমের প্রতি তার ভীতি চলে আসবে।

তার সাথে ভালমত কথা বলুন, তাকে গান গাইতে বলতে পারেন অথবা তাকে দুই একটা খেলনা দিয়ে আস্তে আস্তে খেলতে বলুন যতক্ষণ পর্যন্ত না তার ঘুম আসে। তাকে খেলতে দেওয়াটা তার ভেতর এক ধরণের আনন্দের আনুভুতির সৃষ্টি করবে যা তার রাতে গভীর ঘুমে সাহায্য করতে পারে।

এছাড়াও বাচ্চার ঘুমাতে না চাওয়া অভ্যাস থেকে বের হয়ে আসার জন্য তার দিনের খাওয়ার ও ঘুমের সময়সুচি একটু এগিয়ে নিতে পারেন। এতে করে বাচ্চা দিনের বেলা যথেষ্ট পরিমাণে খেলা ধুলা করার সুযোগ পাবে ফলে বাচ্চার শরীর ক্লান্ত হয়ে পরায় খুব জলদি তার ঘুম চলে আসবে।

বিজ্ঞাপণ

বাচ্চার গড়ে ওঠা ঘুমের অভ্যাসের পরিবর্তন বা Sleep Regression কি এবংআপনার বাচ্চার ক্ষেত্রে এমনটা হলে কি করবেন?

ঠিক যখনই আপনি দেখলেন যে আপনার বাচ্চাকে ভালো ঘুমের ব্যাপারে যথেষ্ট প্রশিক্ষন দেওয়া হয়ে গেছে এমন কি বাচ্চা সেভাবেই প্রতিদিন তার ঘুম নিয়ন্ত্রন করছে, ঠিক তখনি যদি দেখেন যে বাচ্চা আবার আগের মতই সমস্যা করা শুরু করেছে অর্থাৎ ঠিক মত ঘুমাতে চায়না সেক্ষেত্রে ভেঙ্গে পড়া যাবেনা।

এই বয়সের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক। বিশেষ করে এই বয়সে বাচ্চারা নতুন নতুন কৌশল শিখে, যেমন- হাটতে শেখা। তাই এই সময় তাদের মধ্যে একটু বেশি হই-হুল্লোড় ও উৎফুল্লতা দেখা যায় ফলে তাদের শান্ত রাখা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।

অনেক সময় ছোট ছোট পরিবর্তন বাচ্চার নিয়মিত ঘুমের উপর অনেক বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। তাই বোঝার চেষ্টা করুন যে তেমন কোন কিছু আপনার বাচ্চার ঘুমের উপর প্রভাব ফেলছে কি না এবং তা পরিহার করার চেষ্টা করুন।

তবে যদি এমন কিছু থাকে যা না করলেই নয় যেমন- কোথাও বেড়াতে যাওয়া, সেক্ষেত্রে আপনাকে সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে বাচ্চার ঘুমের সময়সূচী যথানিয়মে ঠিক রাখার।

বাচ্চার সাথে আপনিও ঘুমাতে পারবেন কি না?

প্রথম বছরে বাচ্চাকে সম্পূর্ণ আলাদা বিছানায় ঘুম পাড়ানো উচিত। কারণ যেসব বাচ্চারা বাবা মায়ের সাথে ঘুমায় তাদের মাঝে আকস্মিক মৃত্যুর (SIDS-sudden infant death syndrome) ঝুঁকি বেশি থাকে।

১-৩ বছর পর্যন্ত বাচ্চাকে সাথে নিয়ে ঘুমানোটা একান্তই পারিবারিক একটা ব্যাপার। তারপরেও যেসব বাচ্চা বাবা মায়ের সাথে এক বিছানায় ঘুমায় তাদের মধ্যে ভালো ঘুমের অভ্যাস তৈরি করাটাও বেশ কঠিন হয়ে যায়।

গবেষণায় দেখা গেছে যে বাচ্চাকে সাথে নিয়ে ঘুমানোর ফলে বাবা মায়েরও পর্যাপ্ত ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। তাই অভিজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী বাচ্চাকে আলাদা ঘরে তার নিজস্ব বিছানায় ঘুম পারানোটাই সব থেকে ভালো, এতে করে বাচ্চার ভালো ঘুমের পরিবেশ তৈরি হয় ফলে তার পরিমিত ঘুমের কোন ব্যাঘাত ঘটেনা। এতে বাবা মায়েরও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে কম।

বাচ্চা কি উপুর হয়ে ঘুমাতে পারবে?

জন্মের প্রথম ৪ মাসে বাচ্চার মধ্যে আকস্মিক মৃত্যুর ঝুঁকি (SIDS-sudden infant death syndrome) সবথেকে বেশি থাকে। যেহেতু বাচ্চা ঐ সময়টা পার হয়ে এসেছে, সুতরাং বাচ্চা যেভাবেই ঘুমাতে চায় ঘুমাতে পারে এতে কোন সমস্যা নেই এমন কি উপুর হয়ে ঘুমালেও।

কি কি কারণে বাচ্চার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে?

অনেক কারন আছে যা বাচ্চার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। নিচে তেমনই কিছু কারণ উল্লেখ করা হল যা প্রতিনিয়তই বাচ্চার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটার জন্য দায়ী। যেমন-

বাচ্চার ঘুমের পর্যাপ্ত সময়সূচীর অভাব। সম্ভবত এটাই সবথেকে কমন একটা কারণ যা বাচ্চার ঘুমের মারাত্মকভাবে ব্যাঘাত ঘটায়। স্বভাবতই এই বয়সের বাচ্চাদের যা শেখানো হয় তারা সেভাবেই অভ্যাস গড়ে তুলে। তাই যতই সমস্যা থাকুক না কেন, বাচ্চার ঘুমের সময়সূচী যদি তৈরি করে ফেলা যায় তবে তা সবার জন্যই ভালো। এভাবে একবার বাচ্চার মধ্যে জলদি ঘুমানোর অভ্যাস হয়ে গেলে  পরবর্তীতে সে নিজে থেকে ঐ সময় অনুযায়ী ঘুমাতে চাইবে।

ভয় ও দুঃস্বপ্নের কারনে। বেডের নিচে ভূত বা অন্ধকার ঘর,  বাচ্চাদের জন্য মারাত্মক ভয়ের। তাই বাচ্চাকে ঘুম পাড়ানোর সময় সময় তাকে কিছুক্ষন আলিঙ্গন করে রেখে ও তাকে চুমু দিলে তার মধ্যে সেই ভয়টা চলে যাবে এবং সে স্বাভাবিক ভাবে ঘুমিয়ে পড়বে। তবে এসব করতে গিয়ে আবার বাচ্চাকে বেশি সময় জাগিয়ে রাখা যাবেনা।

ছুটির সময় অথবা অসুস্থ হলেঃ আপনি নিশ্চয়ই জানেন যখন ঠাণ্ডা লাগে তখন ঘুমানো কতটা কঠিন। তাহলে একবার ভাবুন রাতে ঘুমানোর সময় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তা কেমন লাগে যারা কেবল নিজের ব্যালেন্স ঠিক রাখা শিখছে। এই ধরণের কঠিন সময়গুলোতে বাচ্চার ঘুমের একটু নড়চড় হতেই পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে সে সুস্থ হওয়ার পর বা অবকাশযাপন শেষে যেন আবার আগের রুটিন শুরু করা হয়।

বাচ্চারা ঘুম কে শত্রু মনে করে কেন এবং এক্ষেত্রে আপনার করনীয় কি?

এই বয়সে বাচ্চারা কম বেশি কথা বলা  শিখে যায়। তাই যখন তাদের ঘুম পাড়াতে চাইবেন, তখন তারা নানা ধরণের অজুহাত দেখাবে। হয়ত বলবে সে ক্লান্ত না, নাহয় বই পড়ার প্রতি আরেকটু বেশি মনযোগী হয়ে বলবে সে আরও কিছুক্ষন পড়তে চায় এমন কি অনেকেই সরাসরি না ও বলে দেয়। বলতে গেলে ঘুমানোর সময়টা তাদের রপ্ত করা নতুন সব দক্ষতা পরীক্ষা করার উপযুক্ত সময়।

এখানে বাচ্চা না ঘুমাতে চাওয়ার প্রধান কারণ গুলো এবং কিভাবে আপনার বাচ্চাকে এই বদভ্যাস থেকে দূরে রাখবেন তার কিছু কৌশল দেওয়া হল।

বাচ্চারা একটু বেশি নাছোড়বান্দা। তাদের একটাই কাজ আর তা হল প্রায় সব কিছুতেই না বলা। আপনি যদি সরাসরি তাকে বলেন যে এখন তার ঘুমানোর সময় হয়ে গেছে সেক্ষেত্রে সে স্বভাবতই রাজি হবেনা। তাই এক্ষেত্রে আপনি যা করতে পারেন তা হল, তাকে তার ঘুমানোর পোশাকগুলো থেকে তার পছন্দমত যেকোনো একটা বেছে নিতে বলুন।

তাকে জিজ্ঞাসা করুন সে আপনার কাছ থেকে কোন বইটা পড়ে শুনতে চায় এবং সে তার সাথে কোন টেডি বেয়ার অথবা কোন পুতুল রাখতে চায় কিনা। এভাবে তার সম্মতিতে তাকে খুব সহজেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘুমানোর জন্য প্রস্তুত করা যেতে পারে।

বাচ্চারা কোন কিছু মিস করতে চায়না। বাচ্চারা স্বভাবতই প্রজাপতির মত, অর্থাৎ ঘরে বাইরে ছুটা ছুটি করাই তার জন্য আনন্দের। তাই কেবল মাত্র বিছানা বাদে বাকি সব কিছুর মধ্যে থাকতে তার কোন আপত্তি থাকেনা। এক্ষেত্রে তাকে ঘুম পাড়াতে হলে প্রথমেই ঘড়ের পরিবেশ শান্ত করে বাচ্চাকে মৃদু গরম পানিতে গোসল করিয়ে ও বাচ্চার সাথে দিনের ব্যাপারে কিছুক্ষন গল্প করুন।

তারা আপনাকে মিস করে। একাকীত্ব বাচ্চার মধ্যে এক ধরণের ভয়ের জন্ম দেয়। তাই রাতে ঘুমানোর সময় যখন সে আপনাকে তার পাশে থাকতে বলে তখন বুঝতে হবে সে একাকীত্ব অনুভব করছে। এক্ষেত্রে বাচ্চার পাশে কিছুক্ষন থেকে তার সাথে দিনে ঘটে যাওয়া দুই একটা মজার ঘটনা সংক্ষেপে বলুন এবং পরের দিন আরও কি কি মজার ঘটনা ঘটতে পারে তা বলুন।

[ আরও পড়ুনঃ শিশুর সেপারেশান অ্যাংযাইটি । নিরাপত্তাহীনতা । প্রিয়জনকে হারাবার ভয় ]

বাচ্চার সাস্থসম্মত ঘুমের জন্য তার মধ্যে ভালো ঘুমের অভ্যাস তৈরি করা অভিভাবক হিসেবে আপনার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলোর মতই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও এক্ষেত্রে কিছুটা বুদ্ধিমত্তা ও ধৈর্য লাগবে, তবে সঠিক প্ল্যান ও মনোবল নিয়ে চেষ্টা করলে তা শুধু বাচ্চার ক্ষেত্রেই নয় সাথে পরিবারের সবারই ঘুম ভালো হওয়াতে সাহায্য করবে।

সবার জন্য শুভকামনা।


Spread the love

Related posts

Leave a Comment