শিশুকে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা। হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং

Spread the love

আপনার সন্তানকে কীভাবে লালন পালন করছেন?  তাকে খুব বেশি ছাড় দিয়ে ফেলছেন না তো?  বা খুব বেশি শাসন করছেন না তো? সে ঠিকঠাক মতো বেড়ে উঠছে তো? – এ সমস্ত প্রশ্ন খুব সম্ভবত প্রত্যেকটি মা-বাবাকেই তাড়িয়ে বেড়ায়। সব বাবা-মাই চান তাদের সন্তানকে যেকোনো রকম বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করতে। তারা নিশ্চিত করতে চান যে তাদের সন্তান কোনো সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে না, বা ভুল পথে যাচ্ছে না বা খারাপ কিছু করছে না। এটি খুবই স্বাভাবিক আর এটা তাদের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। তবে বর্তমান ভালো করতে গিয়ে ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যাচ্ছে কিনা সেটিও মাথায় রাখা জরুরি।

হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং (Helicopter parenting) কী?

প্রত্যেকটি মা-বাবাই চান তাদের সন্তান ভালো থাকুক, ভালো কাজ করুক, জীবনে উন্নতি করুক। সুযোগ থাকলে যেকোনো বাবা-মাই চান তাদের সন্তানকে সাহায্য করতে, তাদের জীবনের পথচলাকে সহজ করে তুলতে।

কিন্তু কিছু সংখ্যক মা-বাবা এই ‘সাহায্য করা’ জিনিসটাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যান। তারা বুঝতে চান না যে সন্তানকে কোনো কাজে সাহায্য করা আর কাজটা নিজে করা দেওয়ার মাঝে অনেক পার্থক্য রয়েছে। তারা সব সময় তাদের সন্তানের আশেপাশে হেলিকপ্টারের মতো ঘোরাঘুরি করতে থাকেন। এখান থেকেই “হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং” টার্মটার জন্ম।

এই “হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং” টার্মটি সম্পর্কে প্রথম জানা যায় ড. হাইম জিনোটের “বিটুইন প্যারেন্ট এন্ড টিনেজার” বইটি থেকে যেটি ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত হয়। বইটিতে একটি শিশু জানিয়েছে কীভাবে তার মা তার চারপাশে হেলিকপ্টারের মতো ঘোরাফেরা করতো। তবে টার্মটি বেশি জনপ্রিয় হয় এই দশকের শুরুর দিকে। বর্তমানে এটি একটি বহুল পরিচিত প্যারেন্টিং কৌশল।

মনোবিজ্ঞানের লেখক ড. ক্যারোলিন ডাইচ, পিএইচডি, এর মতে হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং হচ্ছে, “একটি প্যারেন্টিং কৌশল যেখানে বাবা-মা তাদের সন্তানকে অতিরিক্ত নজরদারিতে রাখেন”। তিনি আরো যোগ করেন, “তারা(হেলিকপ্টার প্যারেন্ট) সাধারণত তাদের সন্তানের সবরকম অভিজ্ঞতার দায়িত্ব নিতে চান বিশেষ করে তাদের সফলতা বা ব্যর্থতার”।

মনোবিজ্ঞানী ও লেখক ড. এন ডানওল্ড, পিএইচডি, বলেন, “হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং হচ্ছে অতিরিক্ত প্যারেন্টিং”।

সবমিলিয়ে বলা যায়, সন্তানের জীবনের সাথে অতিরিক্ত জড়িয়ে পড়া, সন্তানের চারপাশে সবসময় হেলিকপ্টারের মতো ঘোরাঘুরি করাকেই “হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং” বলে।

হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং হচ্ছে ফ্রি-রেঞ্জ প্যারেন্টিং (Free-range parenting) এর ঠিক বিপরীত, লনমোয়ার প্যারেন্টিং (Lawnmower parenting) এবং টাইগার প্যারেন্টিংয়ের (Tiger parenting) কাছাকাছি।

ফ্রি-রেঞ্জ প্যারেন্টিংয়ে পিতা-মাতা সন্তানকে তাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও চিন্তাভাবনা প্রকাশের সুযোগ দেন। এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় প্যারেন্টিং কৌশল।

অপরদিকে লনমোয়ার প্যারেন্টিংয়ে পিতা-মাতা তাদের সন্তানকে রক্ষা করার জন্য, তাদের সফলতার জন্য সামনের সব বাঁধাকে দুমড়ে মুচড়ে দিতে চান।

আর টাইগার প্যারেন্টিংয়ে সন্তানকে কড়া শাসনের মধ্যে রেখে সফল হওয়ার জন্য বা যেকোনো কিছুর জন্য প্রস্তুত করা হয়। এই ধরনের প্যারেন্টিংয়ে কোনো স্বাধীনতা নেই বললেই চলে।

অনেকে হয়তো জানেনও না যে তারা “হেলিকপ্টার প্যারেন্ট” কারণ তারা নামটির সাথে পরিচিত নন। কিন্তু তাদের সমস্ত কার্যাবলীই “হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং’ এর পরিচয় বহন করে। আমাদের আশেপাশে লক্ষ্য করলেই এমন অনেক হেলিকপ্টার প্যারেন্ট পাওয়া যাবে।

হেলিকপ্টার প্যারেন্টিংয়ের কিছু উদাহরণ

আপনার সন্তান যখন স্কুলের দেওয়া বাড়ির কাজ করে, তখন কি আপনি পাশে বসে থাকেন? বা সে যখন বাসার বাইরের খোলা জায়গায় সাইকেল চালায় তখন কি আপনি তার আশেপাশে থাকেন যাতে সে পড়ে না যায়? আপনার সন্তান স্কুলে কি করছে, পড়ালেখা করছে কিনা, রেজাল্ট কেমন করছে সে ব্যাপারে আপনি কি সবসময় তার শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করেন? সে বাসার সামনের দোকানে গেলে আপনি কি আশেপাশেই থাকেন যাতে তার কোনো সমস্যা না হয়? সে কার সাথে মিশছে,তার কয়টা বন্ধু এই সমস্ত ব্যাপারে আপনি হস্তক্ষেপ করেন? যদি এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর “হ্যা” হয় তাহলে আপনি হেলিকপ্টার প্যারেন্ট।

অনেকেই মনে করেন হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং শুধু শিশু ছোট থাকা অবস্থায়, বড়জোর টডলার থাকা অবস্থায় দেখা যায়। কিন্তু অবাক করা বিষয় হচ্ছে অনেক সময় এটি কিশোর বয়সী বা প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেও দেখা যায়।

সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, অনেক সময় চাকরির উপযুক্ত সন্তানও হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং এর আওতাধীন থাকেন। সাম্প্রতিক একটি পরিসংখ্যান এই চমকপ্রদ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বয়সভেদে হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং কীরকম হতে পারে সে ব্যাপারে একটু ধারণা দেয়ার চেষ্টা করা হলো:

অল্পবয়সী শিশু

  • ছোটখাটো ব্যাথা বা সামান্য পড়ে যাওয়া প্রতিরোধের চেষ্টা করা।
  • শিশুকে একা খেলতে না দেওয়া।
  • শিশুকে স্বাধীনভাবে কিছু করতে না দেওয়া।
  • সবসময় স্কুলের শিক্ষকের সাথে শিশু কেমন আছে, কি করছে, পড়ছে কিনা এসব বিষয়ে যোগাযোগ রাখা।

প্রাথমিকের শিশু

  • সন্তান যাতে সব শিক্ষকদের সঠিক গাইডলাইন পায়, সে ব্যাপারে স্কুল প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করা।
  • সন্তানের বন্ধু বাছাই করে দেওয়া।
  • সন্তানকে নিজের সমস্যার সমাধান নিজে করতে না দেওয়া।
  • সন্তানের স্কুলের প্রজেক্ট ও বাড়ির কাজ নিজেরা করে দেওয়া।

কিশোর বয়স ও তার উর্ধ্বে

  • সন্তানের মতামত না নিয়েই তাকে বিভিন্ন প্রশাসনিক এবং বিভিন্ন সাংগঠনিক কাজের সাথে জড়িয়ে ফেলা।
  • তাদের বয়স উপযোগী কোনো কিছুই নিজ থেকে যাচাই বাছাই করতে না দেওয়া।
  • প্রশাসনিক, সাংগঠনিক সব সফলতা, ব্যর্থতায় হস্তক্ষেপ করা।
  • রেজাল্ট ভালো, খারাপ সবকিছুতেই শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ রাখা।
  • কোনো বন্ধু বা শিক্ষক বা কারো সাথে কোনো সমস্যা হলে, সে বিষয়েও হস্তক্ষেপ করা।

একটি সাম্প্রতিক গবেষণা হতে জানা যায় যে, অনেক নামীদামী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চাকরজীবীদের বাবা-মা তাদের চাকরির কোনো একটা পর্যায়ে যেকোনো সমস্যা বা যেকোনো ইস্যুতে প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকতাদের সাথে যোগাযোগ করেন। এমনকি কিছু সংখ্যক বাবা-মা সন্তানের পরিবর্তে নিজে জব ফেয়ারে অংশ নেন এবং বেতনসহ বিভিন্ন বিষয় কথা বলে নিশ্চিত হয়ে নিতে চান। এরকম “অতিরিক্ত প্যারেন্টিং” এর জন্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অনেকে বিরক্তবোধ করেন।

হেলিকপ্টার প্যারেন্টিংয়ের কারণ

বর্তমান যুগ ডিজিটাল বিপ্লবের যুগ। প্রযুক্তির ক্রমাগত উন্নতিতে দুনিয়া এখন আমাদের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। প্রায় সবরকম তথ্যই আমরা এখন ঘরে বসে জানতে পারি। কিছু তথ্য হয়তো উপকারী আবার কিছু হয়তো ক্ষতিকর বা হুমকির কারণ হতে পারে।

বাবা-মারাও এরকম অনেক তথ্য বা ঘটনা শুনে থাকেন যা তাদের সন্তানের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। যদিওবা তেমন খারাপ কিছু না হয় বা ক্ষতির শঙ্কা নাও থাকে, তাও তারা চিন্তিত হয়ে থাকেন। কারণ আমাদের চারপাশে এখন আচমকা অনেক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এজন্য মা-বাবারা সন্তানকে চোখের আড়াল হতে দিতে চান না।

হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং এর আরো কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কারণ রয়েছে। যেমন :

অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শঙ্কা

যদি সন্তানের পরীক্ষার ফলাফল ভালো না হয়, যদি সন্তান স্কুলের ক্রিকেট দল থেকে বাদ পড়ে যায়, যদি তার চাকরিটা না থাকে, যদি সে কোনো বিপদে পড়ে এরকম বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাবা-মারা চিন্তিত থাকেন। আসলে তারা মনে করেন তারা এই ক্ষেত্রে সন্তানকে আরেকটু সাহায্য করতে পারবেন, তারা সাথে থাকলে সন্তান আরো সহজে কাজগুলো করতে পারবে। তারা না থাকলে হয়তো তাদের সমস্যা হবে – এরকম চিন্তাভাবনায় মূলত তাদেরকে হেলিকপ্টার প্যারেন্টিংয়ের দিকে ধাবিত করে।

দুঃশ্চিন্তা

কিছু সংখ্যক বাবা-মা খুবই আবেগী হয়ে পড়েন এবং দুঃশ্চিন্তায় পড়ে যান যখন তারা তাদের সন্তানকে কষ্ট পেতে বা হতাশ হয়ে পড়তে দেখেন। তারা তাদের ক্ষমতার ভিতর সবকিছুই করার চেষ্টা করেন যাতে তাদের সন্তান সুখী হয়, সফল হয়।

এই বিষয়ে ড. ডাইচ বলেন, “ দুঃশ্চিন্তা বাবা-মাদের মধ্যে এই ধারণা গড়ে তোলে যে তারা তাদের সন্তানকে সবসময় আঘাত পাওয়া বা অসফল হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারবেন”।কিন্তু তারা এটা ভুলে যান না যে সফলতা, ব্যর্থতা এগুলো জীবনেরই অংশ। ব্যর্থতা, অপারগতা এগুলো সন্তানকে আরো শক্ত হতে, আরো বেশি পরিশ্রম করার অনুপ্রেরণা যোগায়।

ভুল সংশোধনের চেষ্টা

কিছু পিতা-মাতারা মনে করেন তারা নিজেরা তাদের কাছের মানুষদের ভালোবাসা, আদর-যত্ন মনোযোগ পান নি, কিন্তু তাদের সন্তানকে যেনো এসব মোকাবিলা করতে না হয়। তারা চান তারা যা পান নি, তা তাদের সন্তানকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিবেন। কিন্তু এসব করতে গিয়েই কিছু ক্ষেত্রে তারা অতিরিক্ত করে ফেলেন।

বাস্তবতা হচ্ছে অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। সব কিছুতে অতিরিক্ত মনোযোগ, অতিরিক্ত বাড়াবাড়িতে একটা সময় সন্তান বিরক্ত হয়ে পড়তে পারে।

অন্য পিতা-মাতাদের দ্বারা প্রভাবিত হওয়া

যখন কোনো সন্তানের পিতা-মাতা অন্য কোনো পিতা-মাতাকে তাদের সন্তানের সাথে অতিরিক্ত জড়িয়ে থাকতে দেখেন বা অন্য হেলিকপ্টার প্যারেন্টদের দেখেন তখন তাদের ভেতর এক ধরনের অপরাধবোধ কাজ করে। তারা মনে করেন যে তারা তাদের সন্তানকে যথেষ্ট সময়, যথেষ্ট মনোযোগ দিচ্ছেন না। তখন তাদের মধ্যে ও হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং এর চিন্তা আসে।

সন্তানের সাফল্যকে নিজের জীবনের অর্থ মনে করা

অনেক সময় সন্তানের সফলতার সাথে পিতা-মাতার পরিচয় ও প্রাধান্য পায়। সন্তান ভালো ফলাফল করলে বা ভালো কিছু করলে, তাদের সাথে সাথে তাদের পিতা-মাতাও প্রশংসিত হয়। এই সমস্ত বিষয়ে মা-বাবাদের ভিতর একপ্রকার সন্তুষ্টি কাজ করে। তখন তাদের মধ্যে হেলিকপ্টার প্যারেন্ট হওয়ার চিন্তা আসতে পারে। কারণ তারা মনে করে সন্তান সফল হওয়া মানেই ভালো বাবা মা।

হেলিকপ্টার প্যারেন্টিংয়ের নেতিবাচক দিক

কোনো বাবা-মাই কখনোই চান না তাদের সন্তান ব্যর্থ হোক বা ভুল কিছু করুক। তারা সবসময় চেষ্টা করেন এমন কিছু করতে যাতে তাদের সন্তানকে কষ্ট পেতে না হয়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আপনার সন্তান যদি ব্যর্থ না হয়, সে যদি ভুল না করে তাহলে সে জীবনের অনেক শিক্ষা থেকেই বঞ্চিত হবে। তাকে জীবনে চলার জন্য, জীবনে উন্নতি করার জন্য ভুল করতেই হবে আর সেই ভুল থেকেই সে শিখবে।

এ প্রসঙ্গে ড. গিলবোয়া বলেন, “ব্যর্থতা এবং চ্যালেন্জ শিশুদেরকে নতুন দক্ষতা শেখায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এটি শিশুদেরকে শেখায় যে তারা ব্যর্থতা এবং চ্যালেন্জ সামলাতে সক্ষম।

[ আরও পড়ুনঃ শিশুর ভুল বা ব্যর্থতায় মা বাবার প্রতিক্রিয়া কেমন হওয়া উচিত ]

অনেকেই মনে করেন যে হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং খুবই ভালো একটি প্যারেন্টিং কৌশল। তবে কিছু ক্ষেত্রে হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং বা “অতিরিক্ত প্যারেন্টিং” হিতে বিপরীত হতে পারে।

আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মান কমে যাওয়া

ড. ডানওল্ড বলেন, “হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং এর মূল সমস্যা হলো এটি হিতে বিপরীত হতে পারে”। এর কারণ হচ্ছে আপনি যখন আপনার সন্তানের সবকিছুতে হস্তক্ষেপ করবেন তখন তার মনে হবে যে তাকে দিয়ে কিছু হবেনা, তার মা-বাবা তাকে ভরসা করেন না। বিষয়টা তার আত্মসম্মানবোধে আঘাত করবে।

পাশাপাশি সে তার নিজের যোগ্যতা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়বে। সে কোনো কিছুর যোগ্য হলেও তার সেই আত্মবিশ্বাস আর থাকবেনা। আপনি হয়তো তার ভালোর জন্যই করছেন এসব, কিন্তু তার কাছে উল্টোটা মনে হবে।

পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে না পারা

বিজ্ঞাপণ

আপনার সন্তানের রুম পরিষ্কার, খাওয়ার প্লেট পরিষ্কার, টাই লাগিয়ে দেওয়া, জুতা পড়িয়ে দেওয়া সবই যদি আপনি করে দেন তাহলে সে শিখবে কীভাবে? সে যদি ব্যর্থতা, সফলতা, ভালো, মন্দ, হতাশা, খুশি সবকিছুর মোকাবিলা না করে, তাহলে সে কিভাবে যেকোনো পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে শিখবে?

গবেষণায় জানা যায় যে, হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং এর কারণে শিশুরা নিজেদেরকে কোনো চাপ নিতে, কোনো সমস্যার সমাধান এবং কঠিন পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়ার কম উপযুক্ত মনে করে।

প্রয়োজনীয় দক্ষতা তৈরি না হওয়া

জুতার ফিতা বাঁধা, টাই লাগানো, কাপড় ইস্ত্রি করা, নিজের প্রশাসনিক কাজ নিজে শেষ করা এগুলো খুবই সাধারণ জিনিস। আপনি যদি এগুলোও নিজ থেকে করে দেন তাহলে তো সে ভবিষ্যতে অনেক সমস্যায় পড়বে। সে যদি শারীরিক বা মানসিকভাবে অসুস্থ হয় তাহলে আলাদা কথা, কিন্তু সে সম্পূর্ণ সুস্থ থাকা সত্ত্বেও কেন তাকে এসব নিজে করতে দিবেন না?

এই ধরণের মানসিকতা পৃথিবীতে টিকে থাকার জন্য শিশুর যেসব দক্ষতা প্রয়োজন সেগুলো অর্জন করার ক্ষেত্রে বাঁধাস্বরূপ।

বিভিন্ন মানসিক সমস্যা তৈরি হওয়া

ইউনিভার্সিটি অফ মেরি ওয়াশিংটনের একটি গবেষণার ফলাফল হতে জানা যায়, যে সমস্ত বাচ্চারা “অতিরিক্ত প্যারেন্টিং” বা হেলিকপ্টার প্যারেন্টিংয়ের মাধ্যমে বড় হয়েছে বা হচ্ছে, তারা বেশিরভাগই বিভিন্ন রকম দুঃশ্চিন্তা ও বিষণ্ণতায় ভোগে।

২০১৬ সালে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুরের একটি গবেষণা হতে জানা যায় যে, যেসব শিশুদের উপর তাদের বাবা-মারা খুব বেশি প্রত্যাশা করেন যে তারা পড়ালেখায় ভালো করবে এবং যেসব শিশুদের সামান্য ভুলে পিতা-মাতা অনেক শাসন করে থাকেন সেই শিশুরা সাধারণত আত্মসমালোচনা, দুঃশ্চিন্তা, বিষণ্ণতায় ভোগে।

গবেষকরা এই টার্মটির নাম দিয়েছেন, “ম্যালাডেপটিভ পারফেকশনিজম”। এই টার্মটি দ্বারা বোঝায় যে হেলিকপ্টার প্যারেন্টের সন্তানেরা সবসময় ভীত থাকে কখন কী ভুল করে ফেললো, পাশাপাশি কোনো কিছু ঠিক মতো করতে না পারলে, তার জন্য নিজেকে দোষী ভাবে। কারণ তাদের পিতা-মাতারা তাদের কথা বা আচরণ দ্বারা তাদের বুঝিয়েছেন যে তারা যাই করুক তা যথেষ্ট হয় না। এজন্য ওইসব শিশু কখনোই নিজেদের পরিপূর্ণ ভাবতে পারে না।

২০১৬ সালে মিডওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় ৩৭৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। শিক্ষার্থীরা তাদের পিতা-মাতা কেমন, তাদের সাথে কেমন সম্পর্ক, তাদের বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে কিনা এইসব বিষয়ে জানায়। গবেষকরা সেসব শিক্ষার্থীর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা, প্রশাসনিক কর্মদক্ষতা, দুঃশ্চিন্তা, বিষণ্ণতাসহ বিভিন্ন রকম পরীক্ষা করান। সেই পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায় যে, যেসব শিক্ষার্থীর পিতা-মাতা হেলিকপ্টার প্যারেন্ট ছিলো বা আছে, তাদের মধ্যে দুঃশ্চিতা ও বিষণ্ণতার শক্তিশালী লক্ষণ রয়েছে।

হেলিকপ্টার প্যারেন্টিংয়ের ইতিবাচক প্রভাব

হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং যে খুবই খারাপ তা কিন্তু নয়। আসলে হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং ভালো উদ্দেশ্য নিয়েই শুরু হয়। সব ঠিকঠাকই চলতে থাকে। কিন্তু সমস্যাটা হয় যখন আপনি ভয় এবং কি হতে পারে, কি হবে এসব ভেবে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রেনের চেষ্টা শুরু করেন।

বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে না গেলে হেলিকপ্টার প্যারেন্টিংয়ের বেশ কিছু উপকারী দিক রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে ভালো দিক হলো, পিতা-মাতার সন্তানের সাথে ব্যস্ত থাকা শিশুদের মধ্যে এই অনুভূতি জাগ্রত করে যে তাদের পিতা-মাতা তাদের অনেক বেশি ভালোবাসে, অনেক গুরুত্ব দেয় তাদেরকে। তবে এমনটা তখনই হয় যখন সেটা সহনীয় পর্যায়ে থাকে। যেটাকে ইংরেজিতে ইনভলভড প্যারেন্টিং বলা হয়।

হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং বাবা-মাদের জন্যও উপকারী হতে পারে। কারণ আপনি যদি আপনার সন্তানদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তাহলে আপনার অন্যান্য সব ঝামেলা, যেকোনো রকম সমস্যা সবকিছু ভুলে থাকতে পারবেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে, যেসব পিতা-মাতা সন্তানদের সাথে বেশি সময় কাটান তারা অনেক বেশি সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারেন।

হেলিকপ্টার পিতা-মাতা ও তাদের সন্তানেরা খুবই গোছানো স্বভাবের হয়ে থাকেন। সময় মতো স্কুলের বাড়ির কাজ করা বা স্কুল এর দেওয়া প্রজেক্ট ঠিকঠাক মতো করতে পারবে কিনা এই ব্যাপারে শিক্ষকদের কোনো রকম চিন্তায় থাকতে হয় না। তাছাড়া স্কুলে, প্যারেন্টস মিটিংয়ে বা পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠানে তাদের যথাসময়ে উপস্থিত পাওয়া যায়। এছাড়াও হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং নিশ্চিত করে যে তারা সবসময়ই যেকোনো কিছুর জন্য প্রস্তুত আছে।

আজকাল পুরো বিশ্বেই এতো এতো খারাপ ঘটনা ঘটছে যে সব বাবা-মারাই তাদের সন্তানকে নিয়ে চিন্তায় থাকেন। সে কোথায় আছে, কেমন আছে এসব কম-বেশি সব বাবা-মারই চিন্তার বিষয়। এদিক দিয়ে হেলিকপ্টার প্যারেন্টরা একরকম নিশ্চিন্তে থাকে। কারণ তারা জানে তাদের সন্তান কার সাথে মিশছে, কোথায় যাচ্ছে। এজন্য সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে তাদের চিন্তায় থাকতে হয় না।

তবে এই ধরণের প্যারেন্টিং এর উপকারী দিকগুলো বেশিরভাগই বাবা মায়েদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অতিরিক্ত নজরদারি এবং নিয়ন্ত্রণের কারণে বাবা মা নিশ্চিন্ত থাকলে সন্তানের যে মানসিক ক্ষতি হয় তা এসব সুবিধার তুলনায় অনেক বেশি।  

কীভাবে আমরা হেলিকপ্টার প্যারেন্টিংয়ের অভ্যাস বদলাতে পারি?

হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং অভ্যাস বদলানো হয়তো একটু কঠিন হবে, তবে সার্বিক দিক বিবেচনা করে চেষ্টা করলে এই অভ্যাস অবশ্যই বদলানো সম্ভব। আপনি হেলিকপ্টার প্যারেন্ট না হয়েও আপনার সন্তানকে ততোটুকই ভালোবাসা দিতে পারবেন, ততোটাই তার দেখাশোনা করতে পারবেন। শুধু দেখুন সে নিজের মতো করে বিষয় গুলো কেমনে সামলাচ্ছে না কেমনে সমস্যার সমাধান করছে। না পারলে তো আপনি আছেনই। সবই আগের মতোই হবে, শুধু প্রক্রিয়াটা ভিন্ন হবে এই যা।

হেলিকপ্টার প্যারেন্টিং অভ্যাস বদলানোর জন্য নিচের পদ্ধতিগুলো চেষ্টা করে দেখতে পারেন :

• শুধু বর্তমান নিয়ে না ভেবে ভবিষ্যৎ নিয়েও ভাবুন। আপনি কি চান আপনার সন্তান চিরকাল আপনার উপর নির্ভর করে থাকুক? নিজেকে নিজে প্রশ্ন করে দেখুন। আপনিতো চাইলেও তার সাথে সবসময় থাকতে পারবেন না। তখন সে কি করবে? তখন তো তাকে ঠিকই কষ্ট পেতে হবে। তাই শুধু বর্তমান নিয়ে না ভেবে সুদূরপ্রসারী চিন্তা-ভাবনা করুন।

• আপনার সন্তান যদি নিজের কাজ নিজে করতে সক্ষম হয় তাহলে তাকে সেটা করতে দিন। প্রথমে ছোট ছোট কাজ দিয়েই শুরু করতে পারেন যেমন নিজের রুম নিজে গোছানো, নিজের জুতা, টাই বাঁধতে শেখা, নিজের কাপড় নিজে ইস্ত্রি করা ইত্যাদি। আস্তে আস্তে আরো বড় হলে তখন আরো বড় কাজ দিতে পারেন। একদম না পারলে সেক্ষেত্রে আপনি সহযোগিতা করবেন, আগে তাকে নিজে চেষ্টা করতে দিন।

[আরও পড়ুনঃ ঘরের কাজে শিশুকে কেন অভ্যস্ত করবেন | কিভাবে করবেন ]

• যদি আপনার সন্তানের তার কোনো বন্ধু বা পরিচিত বা অপরিচিত কারো সাথে কোনোরকম মনোমালিন্য বা মতবিরোধ হয় সেখানে আপনার হস্তক্ষেপ করার দরকার নেই। তাকে শিখিয়ে দিন কীভাবে নিজের সমস্যার সমাধান নিজেই করা যায়। তারপর তাকে তার মতো করে বিষয়গুলো সামলাতে দিন। যদি এটা তার জন্য ক্ষতিকর বা হুমকিস্বরূপ হয়ে দাঁড়ায়, সেক্ষেত্রে আপনি হস্তক্ষেপ করতে পারেন। তার আগ পর্যন্ত তার উপরই ছেড়ে দিন।

• আপনার সন্তানকে ব্যর্থ হতে, হতাশ হতে দিন। জানি এটা বাবা-মা হিসেবে সহ্য করা কঠিন। কিন্তু আপনি নিজেই ভেবে দেখুন আজ যদি সে ব্যর্থ না হয় তাহলে সে কেমনে শিখবে ব্যর্থতা, হতাশার সাথে কীভাবে লড়াই করতে হয়? এগুলো তো জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, আমাদের অন্যতম শিক্ষক।

বিজ্ঞাপণ

কোনো শিশু কি সরাসরি হাটতে শিখে? অজস্রবার হামাগুড়ি দেওয়ার, হাটতে চাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করার পর এবং অজস্রবার পড়ে গিয়ে ব্যাথা পাওয়ার পর তারা হাটতে শিখে। আমাদের জীবনের কাহিনী ও অনেকটা তাই। উপরে উঠতে হলে আগে নিচে নামতে জানা উচিত, তা না হলে উপরে উঠা যায় না। এজন্য সন্তানের ব্যর্থতা, হতাশা দেখে ভেঙে না পড়ে তাকে এসব থেকে শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ করে দিন।

যদি উপরের পদ্ধতিগুলোর পরেও আপনার চিন্তা থেকে যায়, তাও যদি ভয়ে থাকেন আপনার সন্তানকে নিয়ে সেক্ষেত্রে আপনি কোনো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন। উনার সাথে কথা বলে উনি যা পরামর্শ দেন সেভাবে কাজ করুন, আশা করা যায় যে এতে আপনার উপকার হবে।

কীভাবে অতিরিক্ত নজরদারি না করেও সন্তানকে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন

আপনার সন্তানকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিন। যা হতে চাই, তাকে তাই হতে দিন। যা তার ভালো লাগে তাকে তাই করতে দিন। দয়া করে আপনার নিজের ইচ্ছা তার উপর চাপিয়ে দিবেন না। বরং তাকে তার মতো হতে সাহায্য করুন। প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিন। এতে করে সে নিজের মতো করে সবকিছু করতে শিখবে। পাশাপাশি আপনার প্রতি তার আস্থা ও শ্রদ্ধাবোধ অনেক বেড়ে যাবে। এতে আপনাদের সম্পর্ক আরো ভালো হবে এবং তার উপর আপনার নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকবে।

সন্তানের দুর্বলতা, শক্তিমত্তা সম্পর্কে জানুন এবং সেগুলো মেনে নিন। এগুলো সবারই থাকে। তাকে তার দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সহযোগিতা করুন। তার শারীরিক, মানসিক যেরকম সমর্থন প্রয়োজন সেটি তাকে দিন। পাশাপাশি তার শক্তির জায়গাগুলো আরো শক্তিশালী করুন। আপনার সহযোগিতা পেলে সে তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে।

সন্তানকে তার বয়স উপযোগী জিনিসপত্র নিজ থেকেই বাছাই করতে দিন। মানুষের পছন্দ অপছন্দ, শখ এগুলো একান্তই ব্যক্তিগত। এখানে জোর জবরদস্তি খাটে না। তাই সে বাছাই করতে সক্ষম এমন কাজগুলো তার উপরেই ছেড়ে দিন। সে কার সাথে মিশছে, কয়টা বন্ধু এসব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন না।

তবে তার সাথে গল্পের ছলে জেনে নিতে পারেন যে সে সারাদিন কি করেছে, দিন কেমন কাটছে ইত্যাদি। তাই, সন্তানের সাথে বেশি বেশি গল্প-গুজব করুন, তাহলে সন্তানের আশেপাশে না ঘুরেও তার সব খবরই আপনি পেয়ে যাবেন। অন্যদিকে আপনার অতিরিক্ত নজরদারির কারণে সন্তানের মধ্যে সব কিছু গোপন করার প্রবণতাও বৃদ্ধি পায়।

আপনার সন্তানকে নিজের কথা বলতে এবং মানুষের সাথে ভালোভাবে কথা বলতে শেখান। তার কথাগুলো বলে দেওয়ার জন্য আপনি তার আশেপাশে থাকবেননা সর্বদা, তার অধিকারের কথা, তার বক্তব্য তাকেই তুলে ধরতে হবে।

পাশাপাশি বড়দের সাথে, ছোট বাচ্চাদের সাথে কীরকম আচরণ করতে হয় সেটাও তাকে শিখিয়ে দিন। ঠিক মতো কথা বলতে না জানলে তাকে সব জায়গাতেই ঝামেলা পোহাতে হবে। তাই কীভাবে মানুষের সাথে কথোপকথন করতে হয় সে ব্যাপারে তাকে দীক্ষা দিন।

কিছু সাধারণ জিনিস আমাদের সবারই শিখে রাখা দরকার, কিন্তু আমরা এসব শিখতে চাই না। আমরা মনে করি যে এসব করার জন্য তো মানুষ আছেই। কিন্তু বাস্তবতা হলো এই সমস্ত কাজ জানা না থাকলে যখন পরিবার ছেড়ে দূরে থাকতে হবে তখন সমস্যায় পড়তে হবে। যেমন : রান্না করা, কাপড় ধোয়া, ঘর পরিষ্কার করা, কাপড় ইস্ত্রি করা এগুলো খুবই সহজ এবং দরকারি জিনিস। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এসব দরকার হয়। তাই আপনার সন্তানকে এই সমস্ত কাজ গুলো শিখিয়ে দেন এবং তাকেও এসব করতে উৎসাহিত করুন।

আপনার সন্তানকে কীভাবে বড় করবেন সেটি সম্পূর্ণই আপনার ব্যাপার। তবে এটি লক্ষ্য রাখবেন খুব বেশি শাসন বা খুব বেশি ছাড় যেন সে না পাই। মনে রাখবেন, অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। আপনার সন্তানকে অবশ্যই দেখে রাখবেন, কিন্তু সেটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করে নয়।

তার সাথে এমন সম্পর্ক গড়ে তুলুন যাতে সে নিজ থেকেই সব আপনাকে জানায়। তাকে তার পূর্ণ স্বাধীনতা দিন এবং নিজের স্বপ্ন, নিজের শক্তিমত্তা, নিজের দুর্বলতা এসব খুঁজে বের করতে দিন। তাকে শিখিয়ে দিন হোঁচট খেলে কিভাবে আবার উঠে দাঁড়াতে হয়। দেখবেন হেলিকপ্টার প্যারেন্ট না হয়েও আপনি আপনার সন্তানের ভালো থাকা নিশ্চিত করতে পারছেন।

সবার জন্য শুভকামনা।

বিজ্ঞাপণ

Spread the love

Related posts

Leave a Comment