শিশুরা অসুস্থ থাকলে তাদের জ্বর হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাদের ঠান্ডা লাগলে কিংবা ছোটখাট অসুখের কারণে তাদের প্রায়ই জ্বর উঠতে পারে। এর মধ্যে কিছু অসুখ যেমন রোজিওলা ( roseola) কিংবা স্কারলেট ফিভারের (scarlet fever) কারণে জ্বর উঠলে জ্বর চলে যাওয়ার পর শিশুর শরীরে ছোট ছোট ফুসকুড়ি বা র্যাশ দেখা দিতে পারে।
জ্বর মূলত কোন রোগ নয়, এটা একটা সিগন্যাল। শরীরের রোগ প্রতিরোধ সিস্টেম যে ইনফেকশনের সাথে যুদ্ধ করছে, সেটার সিগনালই হলো জ্বর। শরীর নিজের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
১ থেকে ৩ বছরের শিশুরা প্রায়ই বিভিন্ন রকম অসুস্থতায় ভুগে, এর কারণ হতে পারে –
- শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হয়তো এখনও ভালোমত বিকশিত হয় নি।
- প্রি-স্কুল কিংবা ডে কেয়ার সেন্টারে শিশু হয়তো অন্য কোন শিশু থেকে জীবাণু গ্রহণ করেছে।
- শিশুর হয়তো হাতের আঙুল কিংবা হাতের কাছে যা-ই পায়, তা মুখে দেওয়ার অভ্যাস রয়ে গেছে।
শিশুর অসুখটা চলে গেলে জ্বরটাও চলে যায় কিছু সময় পরেই। যাই হোক, মাঝে মাঝে জ্বর চলে যাওয়ার পর শিশুর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় র্যাশ দেখা দেয়। যদিও এগুলো খুব কমই ‘সিরিয়াস’ পর্যায়ে চলে যায়, তবুও দ্রুত ডাক্তার দেখানো উচিত।
এই আর্টিকেলে, শিশুদের জ্বরের পর র্যাশ উঠার সম্ভাব্য কারণ, করণীয় এবং কখন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে তা জানবো।
[ আরও পড়ুনঃ শিশুর জ্বর । কখন স্বাভাবিক, কখন নয় ]
জ্বরের পর র্যাশ উঠার সম্ভাব্য কারণ
শিশুর বিভিন্ন অসুখের কারণে জ্বর উঠলে তার পর ফুসকুড়ি বা র্যাশ উঠতে পারে। অধিকাংশ যদিও অত একটা সিরিয়াস নয়, কিন্তু অবশ্যই ডাক্তারকে রোগের উপসর্গগুলো সব জানাতে হবে, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে হবে। জ্বরের পর ফুসকুড়ি উঠার সম্ভাব্য কিছু কারণগুলো নিম্নরূপ:
রোজিওলা ইনফ্যানটাম (Roseola infantum)
রোজিওলা ইনফ্যানটাম এক ধরণের ভাইরাল ইনফেকশন যাকে রোজিওলা কিংবা সিক্সথ ডিজিজ নামেও ডাকা হয়। শিশুর মুখের লালা, কাশি কিংবা হাঁচির মাধ্যমে এই ভাইরাস এক শিশু থেকে আরেক শিশুর শরীরে প্রবাহিত হয়।
রোজিওলার কারণে হঠাৎ করে শিশুর ১০২° – ১০৫° ফারেনহাইট পর্যন্ত জ্বর উঠে যেতে পারে যা তিন থেকে ছয় দিন স্থায়ী হবে। এই জ্বর উঠলেও কিছু কিছু শিশু বেশ স্বাভাবিক থাকলেও কিছু কিছু শিশু নিম্নোক্ত অসুবিধার মুখোমুখি হয়। যেমন –
- খাওয়ার রুচি কমে যাওয়া, খেতে না চাওয়া
- চোখ ফুলে যায় (conjunctivitis বা pink eye)
- কাশি হয়
- সর্দি হয়, নাক দিয়ে পানি পড়ে
- ডায়রিয়া হতে পারে
- গ্রন্থি ফুলে যায়
- শিশু বেশী ঘুমায় বা মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়
সাধারণত ছয় থেকে সাত দিনের মাথায় শিশুর জ্বরের সাথে সাথে উপরোক্ত উপসর্গগুলোও চলে যায়। এগুলো চলে যাওয়ার পর শিশুর শরীরে ছোট ছোট ফুসকুড়ি দেখা দেয়।
রোজিওলা ইনফ্যানটামের কারণে ওঠা ফুসকুড়িগুলো সাধারণত নিম্নোক্ত রকমের হয় –
- প্রায় ২ থেকে ৫ মিলিমিটার প্রশস্ত গোলাপি গোলাপি দাগ
- র্যাশ ফ্ল্যাট হতে পারে বা কিছুটা ফুলে উঠতে পারে।
- ফুসকুড়ি মূলত পেট থেকে শুরু করে হাতে, গলায় ও মুখে ছড়িয়ে পড়তে পারে
- শিশুর চুলকায় না কিংবা ব্যাথাও লাগে না
- ফুসকুড়িতে চাপ দিলে দেবে যায়
- ২/১ দিনের মধ্যে সেড়েও যায়
রোজিওলায় আক্রান্ত হলে সকল উপসর্গ দেখা দিতে দিতে দিতে এক থেকে দুই সপ্তাহও লেগে যায়। রোজিওলার ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক কাজ করে না। তবে শিশুকে বেশী বেশী পানি খাওয়ালে এবং জ্বর কমানোর ঔষধ দিলে শিশুর যন্ত্রণা কিছুটা লাঘব হয়।
রোজিওলা আক্রান্ত শিশুকে স্কুল কিংবা ডে-কেয়ার এমনকি বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত রাখুন। শিশু ঔষধ ব্যাতীত ২৪ ঘন্টা সুস্থ থাকতে পারছে কিনা সেটা নিশ্চিত না হয়ে অন্য শিশুদের সংস্পর্শে নেওয়া ঠিক হবে না। রোজিওলা থেকে হওয়া র্যাশ কিন্তু ছোঁয়াচে নয়।
রোজিওলা ভাইরাসের মস্তিষ্কে পৌছে যাওয়ার ক্ষমতা আছে। আর এই কারণে এবং অতিরিক্ত জ্বরের কারণে প্রায় ১৫% রোজেলা আক্রান্ত শিশুর জ্বর জ্বর খিচুনি হয়ে থাকে। জ্বর জনিত খিচুনি হলে শিশুর মধ্যে নিম্নোক্ত ব্যাপারগুলো লক্ষ্য করবেন –
- জ্ঞান হারিয়ে ফেলবে
- হাত-পা নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে নাড়াচাড়া করবে
- শিশু শক্ত হয়ে যাবে
- চোখ উল্টে যেতে পারে
- প্রস্রাব বা পায়খানা করতে পারে
- বমি করবে
- মুখ দিয়ে ফেনা ঝড়বে
এই খিচুনি সাধারণত কয়েক মিনিটের বেশী স্থায়ী হয় না। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ নিউরোলজিকাল ডিজঅর্ডার এন্ড স্ট্রোক- এর মতে, এই খিচুনির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে বড়সড় কোন প্রভাব পড়ে না। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে শিশু কোন ঝামেলা ছাড়াই পার পেয়ে যায়। তবে খিচুনির সময় নিম্নোক্ত ব্যাপারগুলো শিশুর সাথে ঘটলে দ্রুত এম্বুলেন্স ডাকাই শ্রেয়-
- এটা যদি শিশুর প্রথম খিচুনি হয়
- খিচুনি ৫ মিনিটের বেশী সময় ধরে স্থায়ী হলে
- শিশুর ঘাড় শক্ত হয়ে গেলে, শিশু অতিরিক্ত বমি এবং অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে পড়লে
খিচুনির সময় আপনি অবশ্যই –
- শান্ত থাকার চেষ্টা করুন এবং কতক্ষণ ধরে হচ্ছে সেটার সময় গণণা করুন
- শিশুকে সাবধানে খোলামেলা নিরাপদ যায়গায় নিয়ে যান যাতে ছোটখাটো এক্সিডেন্ট এড়ানো যায়।
- নিঃশ্বাস যাতে বন্ধ হয়ে না সে, তাই শিশুকে এক পাশ ফিরে শুইয়ে দিন।
- শিশুর মুখে কিছু আটকে গেল সাবধানে তা বের করে আনুন।
স্কারলেট ফিভার (Scarlet fever)
স্কারলেট ফিভার মূলত গ্রুপ এ স্ট্রেপটোকোকুস (group A Streptococcus) ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশন থেকে সৃষ্ট জ্বর। এই ব্যাকটেরিয়া গলা ব্যাথা ও বিভিন্ন প্রকার চামড়ার ইনফেকশনও ঘটাতে সক্ষম। এই ব্যাকটেরিয়া নিম্নোক্ত উপায়ে এক শিশু থেকে আরেক শিশুতে প্রবাহিত হয়-
- হাঁচি-কাশি থেকে
- একজনের খাবার ও পানি আরেকজনের খাওয়া থেকে
- চামড়ার যেখানে ইনফেকশন হয়েছে, সেই ক্ষতস্থানে অন্য কেউ স্পর্শ করলে।
শিশুর স্কারলেট ফিভার হলে নিম্নোক্ত উপসর্গগুলো দেখা যায়-
- ১০১° ফারেনহাইট কিংবা এর বেশী মত জ্বর থাকে
- লাল লাল ফুসকুড়ি উঠে। প্রথমে গলা থেকে শুরু হয়, তারপর বগলে, দুই পায়ের মাঝখানে এরপর ধীরে ধীরে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে
- গলা লাল হয়ে যাবে, ব্যাথা করবে
- জিহবায় সাদা কিংবা লাল ছোপ ছোপ দেখা দেয়
- বগলের নিচে, ঘাড়ে, উরুর ভাঁজেড় অংশ লাল বর্ণের হয়ে যাবে
- মাথা ব্যাথা করবে
- শরীরে ব্যাথা করবে
- পেটে ব্যাথা করবে, বমিও হতে পারে
স্কারলেট ফিভারের কারণে হওয়া ফুসকুড়ি বেশ খসখসে হয়ে থাকে। জ্বর উঠার এক থেকে দুই দিনের মধ্যে এই ফুসকুড়িগুলো উঠে যা সাত দিন পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। যদিও মুখটা লালচে হয়ে যায় কিন্তু ঠোটের আশপাশটা ফ্যাকাশে হয়ে পড়ে। ফুসকুড়িগুলো চলে যাওয়ার পর ওই যায়গার চামড়ার উপরিভাগ উঠে যেতে পারে।
শিশুর মধ্যে স্কারলেট ফিভারের উপসর্গগুলো দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত। গ্রুপ-এ স্ট্রেপ ইনফেকশনের কারণে মাঝে মাঝে হৃদপিণ্ড কিংবা কিডনি সংক্রান্ত কোন জটিলতাও হতে পারে। অবশ্য সেটা খুবই দুর্লভ।
ডাক্তারেরা মূলত এন্টিবায়োটিকের মাধ্যমে স্কারলেট ফিভারের চিকিৎসা করে থাকেন। শিশু অন্ততপক্ষে ২৪ ঘন্টা এন্টিবায়োটিকের ডোজ নেওয়ার পরেই সে স্কুলে কিং ডে কেয়ারে যাওয়ার মত সুস্থ হয়ে যায়।
হ্যান্ড, ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ (Hand, foot, and mouth disease)
৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে হ্যান্ড, ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ (HFMD) খুব পরিচিত একটি রোগ। বেশ কিছু ভাইরাসের কারণেই এই অসুখটা হতে পারে। নিম্নোক্ত উপায়ে ভাইরাস এক শিশু থেকে আরেক শিশুর শরীরে যায়:
- মুখের লালা
- হাচি-কাশি
- ফুসকুড়ি থেকে বের হওয়া তরল
- মল
মূলত জ্বরের মাধ্যমেই হ্যান্ড, ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ (HFMD) শুরু হয়। তবে এছাড়াও শিশুর গলা ব্যাথা, খাওয়ার রুচি চলে যাওয়া, শারিরীক অস্বস্তি প্রভৃতি শিশুর মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। এর ১-২ দিন পর, ঘা এবং ফুসকুড়ি দেখা দিতে শুরু করে। HFMD এর উপসর্গগুলো হলো-
- মুখের ভেতরে একটু করে ঘা হবে, কিন্তু ধীরে ধীরে বড় হবে, বেশ ব্যাথা করবে
- হাতের তালুতে এবং পায়ের পাতায় সমান লাল লাল ছোপ ছোপ দাগ দেখা যাবে
- শিশুর উরুর ভেতরে ও পশ্চাতদেশে সমান লাল লাল ঘা মতো দেখা দিতে পারে
কিছু কিছু শিশুর মধ্যে সবগুলো উপসর্গই দেখা দিতে পারে আবার কারো কারো মধ্যে ঘা ব্যাতীত কেবল শিশু কিছুটা অসুস্থ এমন বোঝা যেতে পারে। যদিও অধিকাংশ HFMD এর ক্ষেত্রে আপনা আপনিই সমস্যা ঠিক হয়ে যায়, তবুও ঘা-টা শিশুকে বেশ যন্ত্রণা দিতে পারে।
এজন্যে শিশু যদি কিছু খেতে কিংবা পানি পান করতে না পারে, সেক্ষেত্রে আবার শিশুর ডিহাইড্রেশনে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়। তাই আপনি যদি দেখেন আপনার শিশু খেতে কিংবা পান করতে পারছে না, সেক্ষেত্রে ডাক্তার দেখানোই উত্তম।
ফিফথ ডিজিজ (Fifth disease)
ফিফথ ডিজিজ শিশুদের এক ধরণের ভাইরাস ইনফেকশন যাকে মেডিকের পরিভাষায় ‘এরিথেমা ইনফেক্টিওসাম’ বলা হয়। ‘পারভোভাইরাস বি১৯’ নামক ভাইরাসের ইনফেকশনের কারণে এই অসুখটা হয়ে থাকে। হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে এই ভাইরাস সহজে এক শিশু থেকে আরেক শিশুর শরীরে যেতে সক্ষম।
ফিফথ ডিজিজের উপসর্গগুলো হলো-
- জ্বর
- মাথা ব্যাথা
- নাক দিয়ে পানি পড়া
ফিফথ ডিজিজের কারণে শিশুর পেটে, হাতে, পায়ে ও পশ্চাতদেশে লালচে ফুসকুড়ি দেখা দেয় এবং কয়দিন পর লালচে ভাবটা গালে ছড়িয়ে যায়। শিশুর গালে চাপড় দিলে যেমন লাল হয়ে যায়, তখন শিশুর গালটাও তেমন লালচে হয়ে যায়। এই ফুসকুড়িগুলো চুলকাতে পারে এবং এগুলো গোল গোল না হয়ে বরং আকাবাকা রেখাকৃতির হতে পারে। এই ফুসকুড়ি প্রায় কয়েক সপ্তাহও স্থায়ী হতে পারে।
বেশীরভাগ শিশুই কোন সমস্যা ছাড়াই ফিফথ ডিজিজ থেকে মুক্তি পেতে পারে। যাই হোক, শিশু এবং বৃদ্ধ যাদের রোগ প্রতিরোধ সিস্টেম তত একটা ভালো নয়, তারা দীর্ঘমেয়াদী কোন জটিলতায় পড়ে যেতেই পারে। যেহেতু এটা ভাইরাসজনিত অসুখ, তাই ফিফথ ডিজিজের ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক কাজ করে না। যথেষ্ট পরিমাণ পানিপান, বিশ্রাম ও ব্যাথা নিরামক ঔষুধ শিশুর জন্যে উপকারী।
সাধারণত, শিশু জ্বর ছাড়া ২৪ ঘন্টা অতিক্রম করতে পারার আগ পর্যন্ত তাকে স্কুল কিংবা ডে কেয়ারে পাঠানো ঠিক হবে না। যদিও শিশুর ফুসকুড়িগুলো সংক্রামক নয়।
জ্বরের পর ফুসকুড়ি বা র্যাশ উঠলে কি করবো?
ফুসকুড়ির কারণে যদি শিশু খুব অস্বস্থি বোধ করে, সেক্ষেত্রে ব্যাথা এবং জ্বর কমাবে এমন ঔষধ শিশুকে কিছুটা আরাম দেবে। এজন্যে এইসটামিনোফেন অথবা ইবোপ্রোফেন বেশ সহজলভ্য ঔষধ। ঔষধ খাওয়ানোর সময় খেয়াল করুন-
- ঔষুধের প্যাকেটের সাথে দেওয়া নির্দেশনাবলী অনুসরণ করুন।
- শিশুর বয়স ও ওজন অনুযায়ী সঠিক মাত্রাই শিশু খাচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত হোন।
- যদি নিশ্চিত না হন, সেক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তবেই খাওয়ান
শিশুকে বেশী বেশী পানি খেতে উৎসাহিত করুন। শিশু যদি পানি খেতে না চায়, সেক্ষেত্রে পানির পরিমাণ বেশী আছে এমন ফল যেমন তরমুজ, মাল্টা ইত্যাদি খাওয়াতে পারেন। এছাড়াও শিশুর জন্যে ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় খাওয়াতে পারেন।
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
শিশুর সাধারণ অসুখ বিসুখের কারণে যে জ্বর উঠে, তার জন্যে ডাক্তার দেখানোর প্রয়োজন পড়ে না, আপনা আপনিই সেড়ে যায়। তবে শিশুর জ্বর উঠলে, এর পর ফুসকুড়ি উঠলে অবশ্যই শিশুর দিকে বাড়তি মনযোগ দিতে হবে, উপসর্গগুলো খেয়াল করতে হবে। নিম্নোক্ত ব্যাপারগুলো শিশুর সাথে ঘটলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে-
- শিশুর বয়স যদি তিন মাসের কম হয় এবং তার পায়ুপথের তাপমাত্রা ১০০.৪° ফারেনহাইট অথবা এর বেশী হয়
- শিশুর বয়স যদি তিন থেকে ছয় মাস হয় এবং তার শরীরের তাপমাত্রা ১০২° থেকে বেশী হয়
- শিশুর বয়স যদি ছয় মাসের বেশী হয় এবং তার শরীরের তাপমাত্রা ১০৩° ফারেনহাইট বা এর বেশী থাকে
শিশুর শরীরের অসুখ মাত্রা ছাড়াচ্ছে কিনা তা আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন। মাত্রা ছাড়ানোর আগেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
পরিশেষ
জ্বর এবং ফুসকুড়ি শিশুর জন্যে খুব স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। ভড়কে যাওয়ার কিছু নেই। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে শিশু কোন সমস্যা ছাড়াই জ্বর ও ফুসকুড়ি থেকে মুক্তি পেয়ে যায়। তবে জ্বর হলে অবশ্যই শিশুর দিকে বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে।
যদি উপসর্গগুলো ধীরে ধীরে খারাপের দিকে যেতে থাকে এবং অনেকদিন ধরে চলে, সেক্ষেত্রে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী শিশুর চিকিৎসা করাতে হবে।
সবার জন্য শুভকামনা।