বয়স অনুযায়ী শিশুকে ঘরের যেসব কাজে অভ্যস্ত করতে পারেন

Spread the love

পূর্ববর্তী আর্টিকেল থেকে আমরা মোটামুটি বুঝতে পেরেছি যে ঘরের সামান্য কিছু কাজ করার মাধ্যমে শিশু অনেক কিছু শিখতে পারবে এবং সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার জন্য এই টুকটাক কাজ খুবই উপকারী ভূমিকা রাখে। এখন প্রশ্ন আসে শিশুকে কোন বয়স থেকে কাজ করতে দেয়া উচিৎ বা কাজের ধরণ কেমন হওয়া উচিত?

[ আরও পড়ুনঃ ঘরের কাজে শিশুকে কেন অভ্যস্ত করবেন | কিভাবে করবেন ]

বিজ্ঞাপণ

কোন বয়স থেকে শিশুকে ঘরের কাজ করতে দেয়া উচিৎ?

সাধারণত বেশীরভাগ বাব মা শিশুর বয়স ৮ থেকে ১০ বছর হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন, কেননা তারা মনে করেন যে শিশু হয়ত কাজটি ঠিকমত করতে পারবে না অথবা শিশুর এখনো কাজ করার বয়স হয়নি। তবে এই পদ্ধতি সবসময় কাজ নাও করতে পারে, কারণ এই বয়স থেকে হঠাৎ করে শিশুদের কাজে যুক্ত করা হলে তারা এটিকে একটি অতিরিক্ত বোঝা মনে করতে পারে এবং বিরক্তি দেখাতে পারে। এতে আপনার কাজ সহজ না হয়ে আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে কারণ আপনি বাসার সেই নিয়ম প্রতিষ্ঠা করতেই হিমশিম খেয়ে যাবেন।

অন্যদিকে ছোট শিশুরা বাবা মায়ের কাজে সাহায্য করতে মুখিয়ে থাকে। তারা সবসময়ই বড়দের অনুকরণ করে। তাদের খেলার দিকে মনোযোগ দিয়ে দেখলেই বিষয়টা বুঝতে পারবেন। তার মায়ের মতই রান্না করার খেলা খেলে, বাবার মত ঘর পরিষ্কার করার চেষ্টা করে। তাই খুব ছোট বয়স থেকেই শিশুদের আপনার কাজের সঙ্গী করে নিলে সেটা তার অভ্যাসে পরিণত হবে। পরবর্তীতে বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাকে আরও কঠিন কাজ দেয়াটাও সহজ হয়ে ওঠে।

তাই বাচ্চার বয়স যখন ২-৩ বছর তখন থেকেই ধীরে ধীরে ঘরের বিভিন্ন কাজে ( অবশ্যই তার জন্য উপযোগী এবং নিরাপদ) তাকে যুক্ত করে নিন।

বয়স অনুযায়ী শিশুর কাজ কেমন হওয়া উচিত

একটি কাজ আপনার জন্য অনেক সামান্য মনে হলেও ছোট্ট শিশুটির জন্য সেই সামান্য কাজটিই অনেক জটিল হতে পারে। তাই অবশ্যই শিশুকে কোন কাজ করতে দেয়ার আগে খেয়াল করতে হবে সেই কাজটি তার বয়সের অনুপাতে ঠিক আছে কি না। আসুন দেখে নেই বিভিন্ন বয়সের শিশুকে কি ধরণের কাজ করতে দেয়া যেতে পারেঃ

দুই বছর বয়সী শিশু

যখন দুই বছর বয়সের কথা বলা হচ্ছে তখন বুঝতেই পারছেন, এটাকে কোন কাজ হিসেবে প্রাধান্য না দেয়াই ভালো বরং শিশুর জন্য এই কাজগুলো একটি নতুন খেলা হিসেবে উপস্থাপন করা যেতে পারে।

খেলনা গুছিয়ে রাখাঃ এই বয়সী শিশুকে আপনি যে কোন খেলনা এক জায়গা থেকে তুলে নির্দিষ্ট জায়গায় রাখা শেখাতে পারেন। শিশুর খেলনা রাখার জন্য নির্দিষ্ট একটি জায়গায় একটি ঝুড়ি রাখুন রাখুন। শিশুকে দেখিয়ে দেখিয়ে বাসার ছড়িয়ে রাখা খেলনাগুলো সব সেই ঝুড়িতে রেখে দিন।

এভাবে কিছুদিন করার পর শিশুকেও সেই কাজটি করতে উৎসাহ দিন। এই বয়সী একটি শিশু সাধারণত বিভিন্ন নির্দেশ বুঝতে পারে তাই শিশুকে এই ধরণের ছোট খাটো কাজ দেয়া যেতে পারে। দেখবেন শিশুটি খেলার ছলেই স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে কাজটি করতে চেষ্টা করছে।

ঘরের কাজে আপনার অনুকরণঃ এই বয়সী শিশু যখন আপনাকে ঘরের কাজ করতে দেখে সেটা অনুকরণ করার চেষ্টা করবে। এমনটা প্রায়ই দেখা যায় যে আপনি ঘর ঝাড়ু দেয়ার পর শিশু ঝাড়ু বা এই ধরণের কিছু একটা নিয়ে ঘর ঝাড়ু দেয়ার অনুকরণ করছে। এই ধরণের কিছু দেখলে শিশুকে বাধা দিবেন না বরং শিশুকে কাজটি করার ক্ষেত্রে উৎসাহ দিন।

খাবার ধুয়ে রাখাঃ যে কোন বয়সী শিশুরাই দেখবেন পানি দিয়ে খেলতে বেশ পছন্দ করে থাকে। বাবা মায়েরা হয়ত শিশুর ঠান্ডা লেগে যাবে ভেবে খুব একটা পানি নিয়ে খেলতে দেন না। আর তাই কোন ধরণের ফল অথবা খাবার খাওয়ার আগে ধুয়ে নেয়ার সময় শিশুকেও দিন। দেখবেন শিশু বেশ আনন্দের সাথেই পানি দিয়ে খেলার ছলে সেই খাবারটি ধুয়ে ফেলছে।

এটা নিছক একটি খেলা মনে হলেও এর মাধ্যমে শিশু শিখতে পারবে পরিষ্কার পরিছন্নতা বেশ জরুরী একটি বিষয়। এটি শিশুর নিজের খাবার তৈরি করতে শেখার প্রথম ধাপ হতে পারে।   

রঙ অনুযায়ী কাপড় আলাদা করে রাখাঃ এই বয়সী শিশুরা বিভিন্ন রকম রঙের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে থাকে। আর কাপড় ধুতে দেয়ার সময় বা গোছানোর সময় রঙ অনুযায়ী শিশুকে দিয়ে সেগুলো আলাদা করাতে পারেন।

হালকা রঙের কাপড় এক দিকে আর গাড় রঙের কাপড় এক দিকে রাখতে দিলে শিশু রঙ সম্পর্কেও একটি ধারণা পেতে থাকবে।  

তিন থেকে চার বছর বয়সী শিশু

এই বয়সে শিশু অনেক কিছুই বুঝতে শুরু করে আর তাই তাকে এই সময়ে আপনি অনেক ধরণের কাজই করতে দিতে পারেনঃ 

কাপড়ের ঝুড়িতে কাপড় রাখাঃ শিশুকে আপনি ঝুড়িতে ময়লা কাপড় রেখে আসতে বলতে পারেন। এভাবে শিশুর মধ্যে নিজের কাজ নিজে করা অভ্যাস গড়ে উঠবে।

নিজের খেলনা গুছিয়ে রাখাঃ খেলার পর এলোমেলো খেলনাগুলো শিশুকেই গুছিয়ে রাখতে বলুন। জোর করার কিছু নেই, শিশুর সাথে সাথে খেলার ছলে আপনিও তাকে সাহায্য করতে পারেন।

ঘর পরিস্কারে সাহায্য করাঃ ঘরের আসবাবপত্রে ধুলো জমে গেলে শিশুকে নিয়ে একটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে সেগুলো পরিষ্কার করতে দিতে পারেন। যেসব জায়গা আপনার পরিষ্কার করতে কষ্ট হয়, যেমন- শেলফের সবচাইতে নীচের তাক, সেটি তাকে পরিষ্কার করতে বলতে পারেন।

অন্যান্য টুকিটাকি কাজঃ এছাড়া কাপড় ভাঁজ করে রাখা অথবা খাবার পর কিচেনে নিজের প্লেট রেখে আসার দায়িত্ব দিতে পারেন।

বাজার গুছিয়ে রাখাঃ শুকনো বাজার করার পর কোন জিনিসটি কোথায় রাখতে হবে তার দায়িত্ব শিশুকে দিতে পারেন। এসব কাজ শিশু খুব আনন্দের সাথেই করবে। কারণ দোকান থেকে কিনে আনা নতুন যেকোনো জিনিসের প্রতি শিশুরা উৎসাহী থাকে এবং তা ধরতে চায়।

নিজের বিছানা তৈরি করাঃ ঘুমানোর সময় নিজের বিছানা শিশুকেই তৈরি করতে দিতে পারেন। বিছানার চাদরটি টেনে দেয়া, বালিশ পরিপাটি করা বা বিছানা থেকে খেলনা সরিয়ে রাখা এসব কাজ এবয়সী শিশুরা খুব আনন্দ নিয়েই করে।

পাঁচ থেকে ছয় বছর বয়সী শিশু

পোষা প্রাণীকে খাবার দেয়াঃ বাসায় পোষা প্রাণী থাকলে সেটার দেখাশুনা করতে দিতে পারেন। পোষা প্রাণীকে খাবার খেতে দেয়া, পানি খেতে দেয়া এই কাজগুলো শিশুর মধ্যে দায়িত্ববোধ বাড়িয়ে তুলতে বেশ সাহায্য করতে পারে।   

নিজ থেকেই তৈরি হয়ে নেয়াঃ বাইরে যাওয়ার সময় নিজের জামা কাপড় পরে নিজেই যাতে শিশুর তৈরি হয়ে নেয় সে ব্যাপারে শিশুকে এই বয়স থেকেই উৎসাহ দেয়া শুরু করতে পারেন। এর পাশাপাশি গরমকালে কোন ধরণের কাপড় পরতে হয় আবার শীতকালে কোন ধরনের কাপড় পরতে হয় সেই ব্যাপারেও ধারণা দিতে পারেন।

বাজারের লিস্ট তৈরি করাঃ এই বয়সী শিশুরা ইতোমধ্যেই লেখা শিখে যায়। আর তাই কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ যেমন বাজারে যাওয়ার সময় বাজারের লিস্ট অথবা দৈনন্দিন কাজের তালিকা তৈরি করতে দিতে পারেন।

নিজের জামা গুছিয়ে রাখাঃ এই বয়সে শিশু বেশ স্বাচ্ছন্দ্যের সাথেই নিজের জামা কাপড় ভাঁজ করে রাখতে পারে।

একদম হালকা কোন বাজার বহর করতে দেয়াঃ এছাড়া বাজার করে আসার সময় শিশুর হাতে একদম হালকা কিছু একটা বহন করতে দিতে পারেন। এতে শিশু নিজেকে অনেক দায়িত্বশীল মনে করবে।

সাত থেকে নয় বছর বয়সী শিশু

ঘরের কাজে সাহায্য করাঃ ৭ থেকে ৯ বছর বয়সী শিশুকে আপনি ঘড় ঝাড়ু দেয়া এবং মোছা শেখানোর চেষ্টা করতে পারেন। এর পাশাপাশি রান্নাঘরে টুকটাক কিছু কাজ করা, খাবার পর ডাইনিং টেবিল পরিষ্কার করার দায়িত্ব এই বয়সী শিশুর জন্য বেশ উপযোগী কাজ।

গাছের যত্ন নেয়াঃ এছাড়া আপনার বাসার বারান্দায় অথবা ছাদে যদি গাছ থাকে, তাহলে শিশুকে গাছের দায়িত্ব দিতে পারেন। যেমন প্রতিদিন বিকেলে গাছের পানি দেয়া, টব থেকে আগাছা তোলা ইত্যাদির দায়িত্ব শিশুকে দিতে পারেন। সে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য এবং আগ্রহের সাথেই কাজটি করতে পারবে।

বিজ্ঞাপণ

নিজেকে পরিষ্কার রাখাঃ শিশু এখন যথেষ্ট বড় হয়ে যাচ্ছে তাই শিশু যাতে নিজেই নিজেকে পরিষ্কার রাখতে পারে, নিজে নিজেই গোসল করতে পারে সেই ব্যাপারে শেখানো যায়।

স্কুলের ব্যাগ গুছানোঃ যেহেতু এই বয়সী শিশুরা স্কুলে যাওয়া শুরু করে দেয়, তাই স্কুলে যাওয়ার সময় নিজের ব্যাগ নিজেই গুছানোর দায়িত্ব শিশুকে নিজের প্রতি দায়িত্বশীল হতে শেখায়।

নিজের রুম গুছিয়ে রাখাঃ এসময় তার পুরো রুম গুছিয়ে রাখার দায়িত্ব তাকে দিতে পারেন। রুমের কাপড়, খেলনা গুছিয়ে রাখা, বিছানা পরিষ্কার করা ইত্যাদি কাজ এখন থেকে শুরু করা গেলে কিশোর বয়সে আপনার কষ্ট অনেকটুকু কমে যাবে। 

দশ থেকে বারো বছর বয়সী শিশু

ছোট ভাই বোনদের দেখে রাখাঃ  শিশু যখন ১০/১২ বছরের বড় হয়ে যাবে তখন শিশুকে অন্যান্য আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। যেমন ছোট ভাই বোন থাকলে তাদের দেখে রাখতে বলতে পারেন।

হালকা নাশতা তৈরি করাঃ ছোটখাটো নাশতা যেমন নুডুলস রান্না করার পাশাপাশি নিজের কাপড় নিজেই ধুয়ে ফেলতে দিতে পারে। এছাড়া কাপড় স্ত্রী করা ও দোকান থেকে টুকিটাকি বাজার করার অভ্যাস এই বয়সী শিশুকে বেশ দায়িত্বশীল করে তোলে।

নিজের সাইকেল পরিষ্কার করাঃ বাসায় যদি গাড়ি থাকে অথবা সবচাইতে ভালো হয় শিশুর যদি নিজের সাইকেল থাকে তাহলে নিজের সাইকেল নিজেই ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখার কাজটি তাকে দেয়া যেতে পারে।

বাজারের হিসেব করাঃ বাজার করতে যাওয়ার সময় কি কি জিনিস লাগবে, সেগুলোর দাম কত এবং সব মিলিয়ে কত টাকা নিয়ে বাজারে যাওয়া উচিৎ এই ধরণের হিসেবগুলো শিশুকে করতে দিতে পারেন।

কিশোর বয়সী সন্তান

বিল পরিশোধ করাঃ কিশোর বয়সী সন্তানকে আপনি বেশ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিতে পারেন। ঘরের যে কোন ধরণের বিলগুলো তাকে দিয়ে পরিশোধ করাতে পারেন।

বাজারে পাঠানোঃ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়ের পাশাপাশি শিশুকে কাঁচা বাজারও করতে দিতে পারেন।

ঘরের যে কোন কাজে সাহায্যঃ ঘরের যে কোন কাজ করার মতই সে এখন উপযোগী হয়ে গিয়েছে, আর তাই ঘরের যে কোন কাজে সে আপনাকে এখন সাহায্য করতে পারে।

পোষা প্রাণীর দায়িত্ব দেয়াঃ বাসায় পোষা প্রাণী থাকলে পোষা প্রাণীকে খাওয়ানো, বাইরে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ দায়িত্ব আপনার কিশোর বয়সী সন্তানকে দিতে পারেন।

ঘরের কাজ করার জন্য কি শিশুকে কোন পুরষ্কার দেয়া উচিৎ?

বিজ্ঞাপণ

এই ব্যাপারে অনেকের মধ্যেই মতবিরোধ দেখা যায়, কোন কোন বাবা মা মনে করে থাকেন যে কাজ করার বদলে শিশুকে পুরস্কৃত করলে তার মধ্যে দায়িত্বশীলতা গড়ে উঠবে না। অর্থাৎ শিশু মনে করতে থাকবে সে আসলে দায়িত্ব থেকে নয় বরং শুধুমাত্র পুরষ্কারের জন্যই কাজ করছে। শিশুর লালন পালন প্রসঙ্গে লেখা বই “পানিশ বাই রিওয়ার্ড” এর লেখক আলফি কনও ঠিক এমনটাই তার বইয়ে লিখেছেন।

এছাড়াও অনেক শিশু লালন পালন বিশেষজ্ঞের মতে শিশুর প্রাত্যহিক কাজের জন্য তাকে পুরস্কৃত করা উচিৎ নয়। কেননা এই ধরণের কাজগুলো শিশুকে করতে দেয়া হয় যাতে করে এখান থেকে শিশু কিছু শিখতে পারে এবং বুঝতে পারে এগুলো তার দৈনন্দিন কাজেরই অংশ। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যদি কখনো শিশুকে তার দৈনন্দিন কাজের বাইরেও কোন কাজ করানো হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে সেই বিশেষ কাজের জন্য তাকে পুরস্কৃত করা যেতে পারে।

অপরদিকে “ইয়েল চাইল্ড স্টাডি সেন্টার” এর সাইকোলোজিস্ট ও একাধারে “রিওয়ার্ড ফর কিডস” নামক বইয়ের লেখিকা ডঃ ভার্জিনিয়া শিলার সহ আরো অনেক শিশু লালন পালন বিশেষজ্ঞের মতে, শিশুকে পুরস্কৃত করার মাধ্যমে নতুন ধরণের অভ্যাসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া যেতে পারে।

যেভাবে শিশুকে ঘরোয়া কাজের জন্য পুরস্কৃত করা যেতে পারে

আপনি যদি মনে করে থাকেন যে শিশুকে তার কাজের জন্য পুরস্কৃত করবেন তাহলে কিছু বিষয় অবশ্যই আপনাকে বিবেচনায় রাখতে হবে। প্রথমত পুরষ্কারের বিষয়টি শিশুকে বুঝিয়ে দিতে হবে। ঠিক কোন কাজটি করার জন্য শিশুকে পুরস্কৃত করা হচ্ছে সেটা যেন শিশু বুঝতে পারে। এছাড়া আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে যে শিশুকে কি প্রতিদিন পুরস্কৃত করবেন, নাকি এক সপ্তাহ সুন্দরভাবে কাজ করলে পুরস্কৃত করবেন অথবা মাসে একবার।

দ্বিতীয়ত, পুরষ্কারের কথা দিয়ে কখনো পুরষ্কার দেয়া থেকে বিরত থাকবেন না। অর্থাৎ আপনি যদি শিশুকে বলে থাকেন যে এই সপ্তাহ তুমি যদি সুন্দর ভাবে সব কাজ কর তাহলে তোমাকে আমি আইসক্রিম কিনে দিব। এখন এটা বলে যদি আপনি শিশুকে আইসক্রিম না কিনে দেন, তাহলে পুরষ্কারের উপর শিশুর বিশ্বাস উঠে যাবে এবং সে হতাশ হয়ে পরবর্তীতে কাজ করার উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। 

শিশু প্রতিনিয়ত কত কাজ করছে আর প্রতি সপ্তাহে পুরষ্কার হিসেবে কি কি পাচ্ছে, সেটার যদি একটা চার্ট তৈরি করে রাখা যায় তাহলে এতে শিশু অনেক বেশি উৎসাহী হয়ে উঠবে। এছাড়া শিশুও এক নজরে পুরো বিষয়টি দেখতে পেলে নিজেকে অনেক বেশি দায়িত্বশীল মনে করবে এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে।

সবশেষে মনে রাখতে হবে শিশুর জীবনে সক্রিয়তার সাথে স্বাধীনতাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। সে কিভাবে কোন কাজটি করতে চায়, শিখতে চায়- সেখানে বাধা দিলে তার বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাকে নিজের মতো করে কাজ করতে দেওয়াটা তার যে কোন ধরণের গ্রোথ এবং ডেভেলপমেন্টের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।

সবার জন্য শুভকামনা।


Spread the love

Related posts

Leave a Comment