জেনেটিক ক্যারিয়ার স্ক্রিনিং বা জিনগত রোগের বাহক পরীক্ষা কি?
জেনেটিক ক্যারিয়ার স্ক্রিনিং (genetic carrier screening) হলো এমন একটি পরীক্ষা যার মাধ্যমে দেখা হয় আপনার এবং আপনার সঙ্গী- কারো শরীরে এমন কোন জেনেটিক মিউটেশন বা জিনগত বিভাজন রয়েছে কিনা যার মাধ্যমে শিশু ভয়াবহ কোন জন্মগত রোগে আক্রান্ত হয়ে জন্ম নেওয়ার ঝুঁকি থাকে। এমন ভয়াবহ জন্মগত রোগের মধ্যে থ্যালাসেমিয়া, সিস্টিক ফিব্রোসিস, সিকল সেল ডিজিজ, টে-স্যাকস ডিজিজ অন্যতম। তবে এমন আরো শতাধিক জন্মগত রোগ রয়েছে যেগুলোর জন্যে টেস্ট করানো যায়।
একটি বেশ বড় গবেষণায় দেখা গেছে, পরীক্ষা করানো রোগীদের মধ্যে শতকরা ২৪ জনের কমপক্ষে একটি মিউটেশন কিংবা জিনগত বিভাজন বহন করছেন। এমনকি নিউরাল টিউব ডিফেক্ট কিংবা ডাউন সিনড্রোমের চেয়ে এই রোগগুলোর মধ্যে যে কোন একটিতে শিশু আক্রান্ত হয়ে জন্মানোর গড় ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি রয়েছে।
এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, বিভিন্ন প্রিনাটাল টেস্ট যেমন সিভিএস (CVS) বা এমনিওসেন্টেসিস টেস্টের মাধ্যমে এই কন্ডিশনগুলো পরীক্ষা করা হয় না; যদি না প্রথমে ক্যারিয়ার স্ক্রিনিং না করানো হয়।
কিভাবে কাজ করে: বাবা এবং মা দুজনই যদি ত্রুটিপূর্ণ জিনের বাহক হয়ে থাকেন, তবেই শিশুর এই রোগগুলোতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আপনি যদি এই রোগের কেবল বাহক হয়ে থাকেন, তাহলে বলা যায় আপনার বাবা মা যে কোন একজন থেকে আপনি একটি ত্রুটিপূর্ণ জিন পেয়েছেন এবং আরেকজন থেকে স্বাভাবিক জিনই গ্রহণ করেছেন। (বাহকদের মধ্যে রোগের কোন উপসর্গ দেখা যায় না এমনকি পরীক্ষা না করলে তারা জানেনই না যে তারা বাহক)
আপনি এবং আপনার সঙ্গী উভয়ই যদি সিস্টিক ফিব্রোসিস, সিকল সেল ডিজিজ অথবা টে-স্যাকস ডিজিজের মতো রোগের বাহক হয়ে থাকেন, তবে শিশুর আপনাদের দুজনের থেকেই ত্রুটিপূর্ণ জিন গ্রহণের এবং এই রোগে আক্রান্ত হয়ে জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা ২৫% অর্থাৎ প্রতি ৪ জনে ১ জন।
কিভাবে জেনেটিক ক্যারিয়ার স্ক্রিনিং করা হয়?
গর্ভবতী হওয়ার জন্যে কার্যপ্রক্রিয়া শুরু করার পূর্বেই এই জেনেটিক ক্যারিয়ার স্ক্রিনিং করিয়ে ফেলা উচিত। ডাক্তারের সাথে যখন গর্ভধারণের পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলবেন তখনই ডাক্তার আপনাকে এ বিষয়ে জানাবেন।
এই সময়ে যদি আপনি পরীক্ষার মাধ্যমে জানতে পারেন যে আপনি এবং আপনার সঙ্গী উভয়ই কোন দুরারোগ্য ব্যাধির বাহক, তাহলে বিকল্প হিসেবে আপনাদের হাতে অনেক কিছু করারই সুযোগ থাকবে। একজন জেনেটিক কাউন্সিলরের সাথে কথা বললে তিনি এ বিষয়ে আপনাদের আরো বিস্তারিত তথ্য দিতে পারবেন এবং আপনার শরীরের অবস্থা বুঝে শিশু জন্ম দেওয়ার বিকল্প পন্থা সম্বন্ধে অবগত করবেন।
বাহক হওয়ার ঝুঁকি আছে এমন দম্পতিদের সাধারণত দু’একটি কমন মিউটেশনের পরীক্ষাই করাতে বলে থাকেন ডাক্তারেরা। বাহক হওয়ার ঝুঁকির ব্যাপারটি অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে, যেমন – পরিবারে কারো মধ্যে কোন বংশগত রোগ থাকলে অথবা বাহক হিসেবে পরিচিতি থাকলে, স্বামী বা স্ত্রী বিশেষ কোন রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে এমন জাতি গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত থাকলে।
কিন্তু এক্ষেত্রে সমস্যা হলো বেশিরভাগ মানুষই কোন নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হয় না। বিভিন্ন গোত্রের মধ্যকার মিশ্রণ কিংবা গ্রহণ থাকে আবার অনেকে জানেনই না তাদের পূর্বপুরুষেরা কোন গোত্রের অধীন ছিল। তাই গোত্র বিবেচনা করে কার মধ্যে নির্দিষ্ট মিউটেশন থাকার ঝুঁকি বেশি সেটা পরিমাণ করার সঠিক উপায় নেই।
তার চেয়ে আপনি আরেকটু বড় পরিসরে স্ক্রিনিং করাতে পারেন – যেখানে কেবল দু’ একটি নয় বরং শতাধিকের বেশি মিউটেশনের ‘রিস্ক ফ্যাক্টর’ পরিমাপ করা হবে। একে ‘এক্সপান্ডেড ক্যারিয়ার স্ক্রিনিং’ বলা হয়। আপনার ডাক্তার যদি আপনাকে এ স্ক্রিনিং এর ব্যাপারে কিছু না বলেন, তাহলে আপনি নিজে থেকেই চেয়ে নিতে পারেন।
আপনি যদি স্ক্রিনিং করানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তাহলে স্যাম্পল হিসেবে রক্ত অথবা মুখের লালা দিতে হবে। পরীক্ষায় যদি ধরা পরে যে আপনি ‘বাহক’, তখন আপনার সঙ্গীরও পরীক্ষা করাতে হবে। আবার তাড়াতাড়ি ফলাফল পেতে চাইলে দুজন একই সাথে পরীক্ষা করিয়ে ফেলতে পারেন।
স্ক্রিনিং করানোর আগে এবং পরে আপনি একজন জেনেটিক কাউন্সিলর এর সাথে কথা বলতে পারেন। তিনি আপনাকে আপনার পরীক্ষার ফল সম্পর্কে বুঝতে এবং সে অনুযায়ী ফ্যামিলি প্ল্যানিং এর ব্যাপারে বিস্তারিত সাহায্য করবেন।
ক্যারিয়ার স্ক্রিনিং টেস্ট করাতে খরচ কেমন হতে পারে?
আশ্চর্যজনকভানে ক্যারিয়ার স্ক্রিনিং এর খরচ দিনে দিনে বেশ কমে যাচ্ছে এখন, নিত্য নতুন প্রযুক্তিকে এজন্যে ধন্যবাদ দেওয়াই উচিত। যেহেতু ক্যারিয়ার স্ক্রিনিং গর্ভপূর্ববর্তী চিকিৎসার অংশ এবং ডাক্তারের পরামর্শেই করা হয়, তাই এই পরীক্ষা বেশিরভাগ দেশেই ইনসুরেন্সের আওতাধীন থাকে। তবে কিছু কিছু ইনসুরেন্স কোম্পানী এই পরীক্ষাকে ‘ঐচ্ছিক’ বলে থাকে এবং এর দায় বহন করে না। এই টেস্ট করাতে ১৫-২০ হাজারের বেশি টাকা খরচ হওয়ার কথা নয়।
দুজনই ‘বাহক’ প্রমাণিত হলে, এর পর করণীয় কি?
গর্ভবতী হওয়ার আগেই যদি জেনে যান, তাহলে সবচেয়ে ভালো হয়। অনেকে আছেন যারা শুক্রাণু দান করে থাকেন- এমন কারো শুক্রাণু নিয়ে আপনি কৃত্তিম প্রজনন প্রক্রিয়া (artificial insemination) গ্রহণ করতে পারেন।
‘ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন” (in vitro fertilization) আরেকটি উপায় হতে পারে যেখানে ডিম্বানু এবং শুক্রাণু বিশেষ উপায়ে গ্রহণ করা হয় এবং ল্যাবরেটরিতে কৃত্রিম ভাবে নিষিক্ত করা হয়। এর মাধ্যমে তৈরি হওয়া ভ্রূণগুলোর কোন অস্বাভাবিকত্ব আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয় এবং এরপর এক বা তার অধিক সুস্থ ভ্রূণ সারভিক্স এর মধ্য দিয়ে জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করা হয়। আবার কিছু কিছু দম্পতি একেবারেই শিশু জন্ম না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন; তারা বরং শিশু ‘দত্তক’ নিয়ে নেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বেশিরভাগ নারীরা গর্ভবতী হওয়ার আগে ক্যারিয়ার স্ক্রিনিং করান না। আপনি যদি ইতোমধ্যে গর্ভবতী হয়ে যান এবং স্ক্রিনিং করানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তাহলে যত দ্রুত সম্ভব করিয়ে ফেলুন। তাহলে জেনেটিক কাউন্সিলরের সাথে কথা বলে শিশুর কোন রোগের ঝুঁকি আছে কিনা এবং ডায়াগনস্টিক টেস্টিং হিসেবে সিভিএস অথবা এমনিওসেন্টেসিস (amniocentesis) করাবেন কিনা তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যে বেশি সময় পাবেন।
তবে এটা বোঝা জরুরি যে, সিভিএস বা এমনিওসেন্টেসিসের মাধ্যমে আপনি সরাসরি জেনে যাবেন না যে শিশুর কোন জেনেটিক ডিজঅর্ডার আছে কিনা। তার আগে ক্যারিয়ার স্ক্রিনিং করাতে হবে যার মাধ্যমে আপনি এবং আপনার সঙ্গীর কি মিউটেশন আছে তা জানবেন এবং পরবর্তীতে এসব পরীক্ষা করে শিশুর মধ্যে সেই মিউটেশন আছে কিনা তার খোঁজ করবেন।
এছাড়া আগে আগে স্ক্রিনিং করানোর আরো অন্যান্য সুবিধাও আছে। যেমন স্ক্রিনিং এ যদি শিশুর অন্য কোন রোগ ধরা পড়ে, তাহলে তার জন্যে আগে থেকেই চিকিৎসা ব্যাবস্থা গ্রহণ করে রাখতে পারবেন। এছাড়া কোন ডাক্তার ভালো হবে, কিভাবে চিকিৎসা করা হবে সেসব ঠিক করতে পারবেন যাতে শিশু ভূমিষ্ট হওয়ার সাথে সাথেই চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া যায়।
নিচে বংশগত কিছু রোগ নিয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। মূলত এই দুরারোগ্য রোগগুলোই খোঁজা হয়ে থাকে ক্যারিয়ার স্ক্রিনিং এ-
সিস্টিক ফিব্রোসিস স্ক্রিনিং
সিস্টিক ফিব্রোসিস বা সিএফ (CF) এক ধরণের প্রাণঘাতী বংশগত রোগ। সিএফ এ আক্রান্ত রোগীদের বিভিন্ন শ্বাসকার্যজনিত সমস্যা( যার মধ্যে ফুসফুসের ইনফেকশন এবং ফুসফুসের বিভিন্ন যায়গায় ক্ষত ও রয়েছে), হজমের সমস্যাসহ আরো বিভিন্ন জটিলতা থাকে।
মূলত ককেশিয়ান অঞ্চলের মানুষদের এবং সিস্টিক ফিব্রোসিসে আক্রান্ত অথবা বাহক হিসেবে পরিচিত এমন কারো সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে এমন মানুষের ক্ষেত্রে এ রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। প্রতি ২৯ জন ককেশিয়ান ব্যক্তির মধ্যে ১ জন ব্যক্তি অস্বাভাবিক সিস্টিক ফিব্রোসিস জিন নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন যেখানে হিস্প্যানিক আমেরিকানদের ক্ষেত্রে প্রতি ৪৬ জনে ১ জন, আফ্রিকান আমেরিকান ক্ষেত্রে প্রতি ৬১ জনে একজন এবং এশিয়ান আমেরিকানদের ক্ষেত্রে প্রতি ৯০ জনে একজনের মধ্যে এই জিন দেখা যায়।
যেহেতু সিস্টিক ফিব্রোসিস বেশ প্রচলিত একটি রোগ, তাই সব নারীদের রুটিন প্রিন্যাটাল প্ল্যানিংয়েই এই রোগের পরীক্ষা রাখার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে থাকে আমেরিকান কলেজ অফ অবসটেট্রিশিয়ান এন্ড গাইনোকোলোজিস্ট (ACOG)। পরীক্ষায় আপনার মধ্যে যদি বিশেষ লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে আপনার সঙ্গীকেও পরীক্ষা করাতে হবে।
ককেশিয়ানদের মধ্যে বাবা মা দুজনই বাহক এমন ঘটনা ঘটে প্রতি ৮৪১ টিতে ১ টি। যদি মা বাবা দুজনই বাহক হয়ে থাকে, তাহলে শিশুর এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা প্রতি ৪ জনে ১ জন।
মনে রাখতে হবে, কোন পরীক্ষাই শতভাগ নির্ভুল নয়, কিন্তু আপনার এবং আপনার সঙ্গীর কারোর মধ্যেই যদি সিএফ এর মিউটেশন পাওয়া না যায় তাহলে শিশুর এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ০.৫ শতাংশেরও কম থাকে।
সিকল সেল স্ক্রিনিং
সিকল সেল ডিজিজ হলো দুর্বল লোহিত রক্তকণিকা জনিত অসুখ।
আফ্রিকান, ক্যারিবিয়ান, দক্ষিণ বা মধ্য আমেরিকান, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল, ইন্ডিয়ান এবং আরবাঞ্চলের মানুষদের এ রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ এর এক হিসাব অনুযায়ী প্রতি ১৩ জন আফ্রিকান আমেরিকানদের মধ্যে ১ জন এই রোগের জিন বহন করে থাকে।
আপনি যদি এ রোগের বাহক হন, তাহলে আপনার সঙ্গীকেও পরীক্ষা করাতে হবে। মা-বাবা দুজনই যদি সিকল সেল ডিজিজের (অথবা একই ধরণের রক্তকণিকা জনিত সমস্যার) বাহক হন, তাহলে শিশুর সিকল সেল ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে জন্মানোর সম্ভাবনা প্রায় ২৫%।
থ্যালাসেমিয়া স্ক্রিনিং
থ্যালাসেমিয়া বলতে বিভিন্ন প্রকারের জন্মগত রক্তের ব্যাধিকে বোঝায় যার মধ্যে কিছু কিছু একদম হালকা থেকে শুরু করে প্রাণঘাতী এনিমিয়াসহ আরো বিভিন্ন রকমের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, বিশ্বে থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক প্রায় ২৫০ মিলিয়ন।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, চায়না, ইন্ডিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, ইটালি, গ্রীস এবং ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের মানুষেরা এই রোগের ঝুঁকিতে বেশি থাকে। এছাড়া কোন দম্পতির দুই পক্ষের পরিবারের মধ্যে পূর্বে কারো থ্যালাসেমিয়া থাকলে অথবা থ্যালাসেমিয়ার বাহক হিসেবে পরিচিতি থাকলে তাহলেও এই রোগের ঝুঁকি থাকে। ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশন অফ থ্যালাসেমিয়ার হিসেব মতে, বাংলাদেশের বর্তমানে ১ কোটি ১০ লাখ থ্যালাসেমিয়ার বাহক রয়েছে। এছাড়া প্রতিবছর দেশে জন্ম নিচ্ছে সাড়ে সাত হাজার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু।
যাদের মধ্যে থ্যালাসেমিয়ার বিশেষ লক্ষণ দেখা যায়, তাদের মধ্যে হালকা রক্তশূন্যতাও থাকে। যদি আপনার প্রাথমিক রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায় যে আপনার লোহিত রক্তকণিকা ছোট কিন্তু আয়রণের পরিমাণ স্বাভাবিক- তাহলে থ্যালাসেমিয়ার বিশেষ লক্ষণ খুঁজতে আরো পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন হবে।
আপনি যদি বাহক হন, তাহলে আপনার সঙ্গীকেও পরীক্ষা করাতে হবে। আপনারা দুজনই যদি থ্যালাসেমিয়ার (অথবা আপনার সঙ্গী যদি একই ধরণের লোহিত রক্তকণিকাজনিত রোগ যেমন সিকল ডিজিজের) বাহক হন, তাহলে শিশুর এই রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করার সম্ভাবনা অনেক অনেক বেশি থাকে।
টে-স্যাকস (Tay-Sachs) স্ক্রিনিং
টে-স্যাকস কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রজনিত এক ধরণের প্রাণঘাতী অসুখ। আমেরিয়ায় প্রতি ২৫০ জনের মধ্যে ১ জন টে-স্যাকসের বাহক।
মধ্য এবং পূর্ব ইউরোপীয় ইহুদি(আশকেনাজি,), ফ্রেঞ্চ কানাডিয়ান এবং কাজুনসদের মধ্যে এই রোগের বাহক বেশি – প্রায় ২৭ জনের মধ্যে ১ জন। আইরিশ আমেরিকানদের মধ্যে এ হিসাব প্রতি ৫০ জনে একজন। উপরে উল্লেখিত অঞ্চলের মানুষেরা এবং পরিবারে কারো এ রোগ থাকলে বা বাহক হিসেবে পরিচিত থাকলে তাহলে এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
(আশকেনাজি ইহুদিদের মধ্যে টে-স্যাকস ছাড়াও প্রাণঘাতী স্নায়বিক অসুখ- ফ্যামিলিয়াল ডিজোটনোমিয়া এবং ক্যানাভান ডিজিজসহ ৩৬ টিরও বেশি বংশগত রোগের ঝুঁকি থাকে।
যদি আপনার এবং আপনার সঙ্গী উভয়ই এই রোগের বাহক হন, তাহলে তাহলে শিশুও একই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রতি ৪ জনে ১ জন।
সবার জন্য শুভকামনা।