রেসিপির বর্ণনা ও পুষ্টিগুণ
ডিমের খিচুড়ি একটি পুষ্টিকর খাবার যা বিভিন্ন খাদ্যশ্রেণী হতে খাবার নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই খাবার থেকে প্রচুর শক্তি, আমিষ, চর্বি, খনিজ লবন, ভিটামিন পাওয়া যায়।
এ রেসিপিতে মসুর ডালের ব্যবহার পর্যাপ্ত পরিমাণে আমিষের গ্রহন নিশ্চিত করে। যদিও মসুরের ডালে মিথিওনিন কম থাকে কিন্তু লাইসিন বেশি থাকে। অপরদিকে শস্য জাতীয় যেসব খাবার ব্যবহার করা হয়েছে তাতে আছে প্রচুর মিথিওনিন। এজন্য যখন শস্য, ডালের সাথে খাওয়া হয় এরা একে অন্যের পরিপুরক হিসেবে কাজ করে।
ডিমে প্রচুর আমিষ থাকে যা সুস্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়তা করে। এছাড়াও এতে আরও থাকে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, বি১২, সেলেনিয়াম এবং কোলিন। আমিষজাত খাবারের মধ্যে ডিমে সবগুলো অত্যাবশ্যকীয় এমাইনো এসিড পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। তেল যুক্ত হওায়ায় শক্তিঘনত্ব অনেক বেড়ে যায়।
বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি ব্যবহারের মাধ্যমে রেসিপিটির ভিটামিন এবং খনিজ লবনের পরিমান বৃদ্ধি করা হয়েছে। তেল যোগ করার ফলে দেহে এই সকল ভিটামিনের শোষণ বৃদ্ধি পায়।
**মিষ্টি কুমড়ার পরিবর্তে অন্যান্য রঙিন সবজি যেমন- গাজর ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে।
**পালংশাকের পরিবর্তে অন্যান্য পাতা জাতীয় সবজি যেমন- লালশাক, পুঁইশাক ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে।
প্রস্তুতকৃত খাবারের ওজনঃ ৫৭৬ গ্রাম (১ বাটি)
পরিবেশনের সংখ্যাঃ ৫
খাবার প্রস্তুতে প্রয়োজনীয় সময়ঃ ৩০ মিনিট
আয়রন এর উৎসঃ পালংশাক, ডিম, মশুর ডাল।
বয়সসীমাঃ ৬-৮ মাস, ৯-১১ মাস, ১২-২৩ মাস।
প্রস্তুত প্রণালী
১। চাল এবং ডাল ভালোমত পরিষ্কার করে ধুয়ে ফুটানো পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পর ভালোমত পানি ঝরিয়ে নিন।
২। সব শাকসবজি ধুয়ে কেটে নিন এবং পেঁয়াজ ভালোভাবে টুকরা করে কেটে নিন।
৩। একটি রান্নার পাত্রে তেল গরম করুন। তেল গরম হলে এতে পেঁয়াজ কুচি, আদা রসুন বাটা দিয়ে ক্রমাগত নাড়াচাড়া করে কিছুক্ষণ ভাজুন।
৪। পেঁয়াজ এবং মসলা সামান্য ভেজে এতে চাল ডালের মিশ্রণ ঢেলে দিন। কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করুন। স্বাদ অনুযায়ী হলুদের গুড়া এবং সামান্য লবন যোগ করুন। আবার ও অল্প আঁচে কিছুক্ষণ (১-২ মিনিট) নাড়াচাড়া করুন।
৫। চাল-ডাল সামান্য ভাজা হলে এতে প্রয়োজনমত পানি (সম্ভব হলে গরম পানি) যোগ করুন এবং রান্না হওয়ার জন্য পাত্রটি একটি পরিষ্কার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন।
৬। চাল এবং ডাল অর্ধেক সিদ্ধ হয়ে এলে সবজিগুলো সব ঢেলে দিন। ভালোমত নাড়াচাড়া করুন যাতে সবগুলো উপকরণ একসাথে মিশে যায়। পাত্রটি আবারও ঢেকে দিন।
৭। একটি ডিম ভালোমত ফেটে নিন। সবগুলো উপকরণ ভালোমত সিদ্ধ হয়ে এলে এতে ডিম ঢেলে নিন এবং ভালোমত নাড়তে থাকুন যাতে ডিম খিচুরির সাথে ভালোভাবে মিশে যায়। কিছুক্ষণ অল্প আঁচে রান্না করে চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন। প্রয়োজনে খিচুড়ি চামচ দিয়ে সামান্য চটকিয়ে নরম করে নিন এবং শিশুকে পরিবেশন করুন।
যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে
শিশুকে নতুন খাবার দেওয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখুন, শরীরের কোথাও র্যাশ, বমি বা ঢেকুরের পরিমাণ বেশি হচ্ছে কি না। বাচ্চার কান্নার পরিমাণ হঠাৎ বেড়ে গেছে বা পেট ফুলেছে, প্রস্রাব-পায়খানায় পরিবর্তন অনুভব করলে সেই খাবার বন্ধ করতে হবে। অবস্থা বেগতিক মনে হলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
তথ্যসূত্রঃ
রেসিপি টি বাংলাদেশের জন্য পরিপূরক খাবার বিষয়ে ম্যানুয়াল উন্নয়ন গবেষণা থেকে তৈরি বুকলেট “৬-২৩ মাস বয়সী শিশুদের জন্য ঘরে তৈরি পরিপূরক খাদ্য প্রস্তুত প্রণালী” থেকে গ্রহন করা হয়েছে। গবেষণাটি বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত হয়েছে। গবেষণাটিতে টেকনিক্যাল সহায়তা প্রদান করেছে এফএও এবং আর্থিক সহায়তা করছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ইউএসএআইডি।