গর্ভাবস্থায় চিকেন পক্স ভাইরাসের সংস্পর্শে আসলে তার ঝুঁকি কতটুকু?
পুরো ব্যাপারটাই আসলে আরো বেশ কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে যেমন অতীতে যদি আপনার একবার চিকেন পক্স হয়ে থাকে তাহলে সাধারণত আপনার আবার চিকেন পক্স হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এছাড়া আপন যদি চিকেন পক্সের টিকা নিয়ে থাকেন তাহলেও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা একদম নেই বললেই চলে।
চিকেন পক্সের ভ্যাক্সিন বা টিকা সর্বপ্রথম যখন চালু হয়েছিল তখন এক ডোজ এই টিকা গ্রহণকারী প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ ব্যাক্তি চিকেন পক্স প্রতিরোধী ছিল । তখন থেকেই বিভিন্ন রকম গবেষণায় উঠে এসেছে যে দ্বিতীয়বার এই টিকা নিয়ে নিলে সেটা চিকেন পক্স থেকে আরেকটু বেশি সুরক্ষা দিয়ে থাকে। আর তাই বর্তমান সময়ে সেন্টার অফ ডিজিস কন্ট্রোল চিকেন পক্সের দুইটি টিকা গ্রহণ করার ব্যাপারে পরামর্শ দেয়।
যেহেতু বেশীরভাগ প্রাপ্তবয়স্করাই সাধারণত চিকেন পক্স থেকে সুরক্ষিত তাই গর্ভকালীন সময়ে আপনি চিকেন পক্সে আক্রান্ত হবেন এমন সম্ভাবনা খুবই কম। একটি তথ্য অনুসারে প্রতি দশ হাজার গর্ভবতী নারীর মধ্যে এক থেকে পাঁচ জন নারী চিকেন পক্সে আক্রান্ত হন।
তবু আপনার যদি টিকা না নেয়া হয়ে থাকে তাহলে আপনি চিকেন পক্সে আক্রান্ত হতে পারেন আর গর্ভকালীন সময়ে এমন সম্ভাবনাটা একটু বেশিই প্রবল। তবে এক্ষেত্রেও চিকেন পক্সের কারণে আপনার গর্ভের শিশুর কোন ধরনের ক্ষতি হতে পারে এমন সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। আপনার শরীরে কি চিকেন পক্স সংক্রমণ হতে পারে কি না সেটা আপনি একটা খুব সাধারণ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই জানতে পারবেন।
গর্ভধারণের প্রথম দিকে যদি চিকেন পক্সে আক্রান্ত হন তাহলে গর্ভের শিশুর উপর তা ঠিক কতটা প্রভাব বিস্তার করবে?
আপনার গর্ভের শিশু একদম সুস্থ এবং স্বাভাবিক থাকবে এমন সম্ভাবনাটাই প্রবল। তবে আপনি যদি গর্ভধারণের প্রথম বা দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারের মধ্যে চিকেন পক্স রোগে আক্রান্ত হন তাহলে সামান্য ঝুঁকি থাকে যে আপনার শিশুর মধ্যে Congenital varicella syndrome দেখা যেতে পারে, তবে এর সম্ভাবনা শতকরা মাত্র দুই ভাগ। তবে আপনি যদি গর্ভধারণের ১৩ থেকে ২০ সপ্তাহের মধ্যে আক্রান্ত হন তবে গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা একটু বেশি।
Congenital varicella রোগের কারণে গর্ভের শিশুর জন্মগত ক্রুটি থাকতে পারে যেমন শরীরের ত্বকে দাগ, অপরিপক্ব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, অস্বাভাবিক ছোট আকৃতির মাথা, মস্তিষ্ক জনিত সমস্যা (যেমন বুদ্ধিহীনতা অথবা শিশুর বুদ্ধি স্বাভাবিক ভাবে প্রকাশ না পাওয়া), দৃষ্টি শক্তিতে সমস্যা দেখা যাওয়া। এই রোগে আক্রান্ত হলে গর্ভে অবস্থিত শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবে নাও হতে পারে। এই সংক্রমণের কারণে গর্ভপাত এবং মৃত শিশু জন্ম গ্রহণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
আপনি যদি চিকেন পক্স আক্রান্ত হয়ে ডাক্তারের কাছে যান তাহলে আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষার মাধ্যমে গর্ভের শিশুর মধ্যে কোন অস্বাভাবিকতা আছে কি না সেটা পরীক্ষা করা হবে এবং পরবর্তীতে আরো একবার এই পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন পড়তে পারে।
আপনার ডাক্তারের পাশাপাশি আপনাকে হয়ত একজন জেনেটিক বিশেষজ্ঞ অথবা maternal-fetal medicine বিশেষজ্ঞের সাথে আপনার শারীরিক ঝুঁকিগুলো নিয়ে আলাপ করতে হতে পারে।
প্রসবের সময় ঘনিয়ে আসার পর যদি চিকেন পক্স হয় তাহলে গর্ভের শিশুর ঝুঁকি কতটুকু?
গর্ভধারণের তৃতীয় ট্রাইমেস্টারের শুরুর দিকে যদি আপনি চিকেন পক্স রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন, তাহলে আপনার শিশুর শারীরিক কোন ক্ষতির ঝুঁকি তেমন একটা নেই। ঝুঁকি না থাকার কারণ হলঃ চিকেন পক্স হওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যেই শরীরের মধ্যে চিকেন পক্স এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায় এবং এটা প্লাসেন্টা অর্থাৎ গর্ভ-ফুল এর মাধ্যমে শিশুর শরীরে প্রবেশ করে শিশুকে সুরক্ষা প্রদান করে।
উল্লেখ্য যে শিশুর ঐ অপরিপক্ব শরীরে তখনও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়নি তাই মায়ের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শিশুকে সুরক্ষা প্রদান করে থাকে।
তবে চিকেন পক্সে আক্রান্ত হওয়ার সবচাইতে ঝুঁকিপূর্ণ সময় হল প্রসবের আগের পাঁচ দিন এবং প্রসবের পরবর্তী দুইদিন। কেননা এই সময়টাতে শিশু এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়লে মায়ের শরীর থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গ্রহণ করার পর্যাপ্ত সময় পায় না।
এই সমস্ত ক্ষেত্রে শতকরা পঞ্চাশ ভাগ সম্ভাবনা রয়ে যায় যে শিশুর মধ্যে neonatal varicella দেখা যেতে পারে অথবা নবজাতক শিশু চিকেন পক্সে আক্রান্ত হতে পারে। এই ধরনের সমস্যাগুলোকে যদি সময় মত সঠিক চিকিৎসা না করানো হয় তাহলে এগুলো শিশুর মৃত্যুর কারণ হয়েও দাঁড়াতে পারে।
সৌভাগ্যবশত চিকেন পক্সের কারণে আপনার শিশুকে বড় ধরনের কোন সমস্যায় পড়তে হবে না যদি সময়মত তাকে varicella zoster immune glbulin (VZIG) নামক টিকা প্রদান করা যায়। এটা এমন এক ধরনের টিকা যার মধ্যে চিকেন পক্সের অ্যান্টিবডি থাকে । শিশু জন্মের পরপরই এই টিকা দেয়া হয় যদি আপনি প্রসবের আগে ৫ দিনের মধ্যে চিকেন পক্সে আক্রান্ত হন বা যদি প্রসবের দুইদিনের মধ্যে আপনার চিকেন পক্সের লক্ষণ দেখা যায়।
এই ধরনের টিকা ২৮ সপ্তাহে পূর্ণ হওয়ার আগে যে সব শিশু জন্ম গ্রহণ করে তাদের সবাইকেই দেয়া হয়ে থাকে (সে ভাইরাসে আক্রান্ত হোক বা না হোক)। এছাড়াও যেসব প্রিটার্ম বাচ্চা ২৮ সপ্তাহের পরে জন্মগ্রহণ করে এবং যাদের মায়েরা চিকেনপক্স প্রতিরোধী না, তাদেরও এই টিকা দেয়া হয়।
যদি আপনার নবজাতক শিশুর মধ্যে এই সংক্রমণের কোন ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পায় যেমন র্যাশ অথবা জ্বর তাহলে তাকে তাৎক্ষনিকভাবে এন্টিভাইরাল ওষুধ acyclovir দেয়া হবে, এমনকি লক্ষণগুলো যদি একদমই অল্প দেখা যায় তবুও।
গর্ভাবস্থায় চিকেন পক্স হলে সেটা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর?
হ্যাঁ এটা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ, কেননা এমনিতেই অল্প বয়সে এই রোগ না হয়ে বরং প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর হলে varicella pneumonia হওয়ার ঝুঁকি থাকে, যেটা অনেক গুরুতর এবং জীবন নাশক হতে পারে। এছাড়া আপনি যদি ধূমপায়ী হয়ে থাকেন তাহলে অথবা গর্ভধারণের তৃতীয় ট্রাইমেস্টারের সময় যদি আপনার চিকেন পক্স হয় তাহলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
গর্ভবতী নারীরা এই ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত হলে প্রিম্যাচিউর বার্থ অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ের আগেই শিশু জন্ম নিয়ে নেয়ার সম্ভাবনা একটু বেশি থাকে।
আপনার যদি মনে হয় যে আপনি চিকেন পক্স এর সংস্পর্শে এসেছেন, তাহলে আপনার করনীয় কি?
আপনি যদি জানেন যে আপনার শরীরে এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আছে তাহলে আপনার কিছুই করার দরকার নেই। তবে আপনি যদি একদম নিশ্চিত না হয়ে থাকেন তাহলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন এবং রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে নিন।
যদি রক্ত পরীক্ষার মাধ্যেম জানা যায় যে আপনার শরীরে চিকেন পক্স রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই তাহলে গুরুতর এবং জটিল সমস্যা এড়িয়ে থাকার জন্য VariZIG ভ্যাকসিনের একটি ডোজ গ্রহণ করতে পারেন। চিকেন পক্স ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার দশ দিনের মধ্যে আপনি এই ভ্যাকসিনটি গ্রহণ করতে পারেন তবে পরামর্শ হল যত দ্রুত সম্ভব এই ভ্যাকসিন নেয়া যায় ততই আপনার জন্য ভালো। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে এই ভ্যাকসিন ভ্রূণের সংক্রমণ ঠেকাতে পারেনা।
মনে রাখুনঃ এই ভ্যাকসিন আপনাকে কেবল তিন সপ্তাহের জন্য নিরাপত্তা দিবে আর তাই তিন সপ্তাহ পার হয়ে যাওয়ার পর আপনি যদি আবারও চিকেন পক্স ভাইরাসের সংস্পর্শে আসেন তাহলে পুনরায় আপনাকে এই ভ্যাকসিনটি গ্রহণ করতে হবে।
চিকেন পক্স ভাইরাসের সংস্পর্শে আসলে আপনারও চিকেন পক্স হবে এমন সম্ভাবনা কতটুকু?
চিকেন পক্স খুবই ছোঁয়াচে ধরনের রোগ। আপনার শরীরের মধ্যে যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সরাসরি সংস্পর্শে চলে আসেন তাহলে আপনিও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই প্রবল।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে আপনার পরিবারের কেউ অর্থাৎ আপনার বাসার কেউ যদি এই চিকেন পক্স রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে এবং আপনার শরীরে এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই তাহলে শতকরা নব্বই ভাগ সম্ভাবনা আছে যে আপনার মধ্যেও এই রোগের সংক্রমণ হবে।
ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কতদিনের মধ্যে আপনার শরীরে লক্ষণ ফুটে উঠবে?
ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ১০ থেকে ২১ দিনের মধ্যে আপনার মধ্যে চিকেন পক্স রোগের লক্ষণ দেখা যাবে। তবে সাধারণত ১৪-১৬ দিনের মধ্যবর্তী সময়ে এই লক্ষণগুলো দেখা যায়।
প্রাথমিক অবস্থায় আপনার মধ্যে হালকা ফ্লু এর লক্ষণ দেখা যাবে এবং পরবর্তীতে চুলকানি সহ র্যাশ হবে শরীরে। এই র্যাশের সাথে সাথে শরীরের মধ্যে লাল লাল গোটা ও ব্রণ এর মত দেখা যেতে থাকবে এবং এগুলো ধীরে ধীরে বড় হতে থাকবে। এরপর স্বাভাবিক ভাবেই এগুলো শুকিয়ে যাবে।
প্রথম দিকে আপনার এই ধরনের র্যাশ দেখবেন আপনার মুখে, বুকে অথবা তলপেটে এবং দেখতে দেখতে এই র্যাশ আপনার পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়বে। লালচে গোটা গোটা ব্রণের মত দেখা যাওয়ার প্রায় ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকে এগুলো পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আপনার থেকে চিকেন পক্স অন্যদের কাছে ছড়াতে পারে।
আপনি যদি মনে করেন আপনার চিকেন পক্স হয়েছে তাহলে আপনার করনীয় কি?
আপনার মধ্যে যদি এই রোগের লক্ষণগুলো প্রকট হতে থাকে এবং আপনি বুঝতে পারেন যে আপনার চিকেন পক্স হয়েছে তাহলে অতি দ্রুত সত্তর ডাক্তারের কাছে যান। তবে ডাক্তারের সাথে আগে থেকেই পরামর্শ না করে যাবেন না কেননা ডাক্তারের চেম্বারে থাকা অন্যান্য গর্ভবতী নারীদের মধ্যেও আপনার মাধ্যমে এই রোগ সংক্রমণ হতে পারে। ডাক্তার আপনাকে দেখার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করে রাখবেন যাতে করে ভীরের মধ্যে আপনাকে অপেক্ষা করতে না হয়।
আপনি যদি চিকেন পক্সে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে এন্টিভাইরাল ওষুধ acyclovir গ্রহণ করার জন্য আপনাকে হয়ত পরামর্শ প্রদান করা হতে পারে। এছাড়া আপনার মধ্যে যদি নিউমোনিয়া এর কোন লক্ষণও দেখা যায়, যেমন শ্বাস প্রশ্বাস দ্রুত হয়ে আসার সাথে সাথে শরীরে জ্বর আসা, শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা হওয়া, অথবা কাশি হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন কেননা খুব তাড়াতাড়ি এই ধরনের সমস্যা আরো জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
আপনার লক্ষণগুলো যেমন শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা অথবা বুকে ব্যথা যদি তীব্র আকার ধারণ করে তাহলে জরুরী সেবা পাওয়ার নাম্বার কল করুন। এই সমস্ত ক্ষেত্রে এমনকি আপনার লক্ষণগুলো যদি একদম হালকা হয়ে থাকে তবুও আপনাকে তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ করার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে এবং IV Acyclovir দ্বারা চিকিৎসা প্রদান করা হবে।
গর্ভাবস্থায় কি চিকেন পক্সের টিকা গ্রহণ করতে পারবেন?
না, সিডিসি এর মতে চিকেন পক্স এর টিকা গ্রহণের পর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রচেষ্টা করার আগে অন্তত এক মাস অপেক্ষা করতে হবে।
আর সন্তান জন্ম গ্রহণ করার পরপরই টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করতে পারেন এবং দ্বিতীয় ডোজটি চার থেকে আট সপ্তাহ পর যখন রুটিন চেকআপের জন্য ডাক্তারের কাছে যাবেন তখনও গ্রহণ করতে পারেন।
এমনটা করতে হবে আপনাকে যাতে করে পরবর্তী গর্ভধারণ করার সময় আপনার মধ্যে যাতে এই রোগের সংক্রমণ না হয়। এছাড়া শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় এই টিকা গ্রহণ করা একদমই নিরাপদ।
আপনার শরীরে যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকে তাহলে গর্ভকালীন সময়ে এই রোগে সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি কীভাবে কমাতে পারবেন?
কারো যদি চিকেন পক্স হয়ে থাকে তাহলে তার আশেপাশে যাওয়া থেকে বিরত থাকেন। এছাড়া কারো যদি এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকে এবং পূর্বের তিন সপ্তাহের মধ্যে সে সংক্রমণ হওয়া ব্যক্তির সংস্পর্শে গিয়েছে, অথবা ফ্লু এর মত লক্ষণ আছে তাহলে তার আশেপাশে যাওয়া থেকেও বিরত থাকুন। চিকেন পক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে র্যাশ হওয়ার আগে থেকেই তার দ্বারা অন্য কারো মধ্যে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাব্য প্রবল।
এছাড়া আপনি যদি জানেন কারো মধ্যে shingles রয়েছে তাহলে তার সংস্পর্শে যাওয়া থেকেও বিরত থাকুন। shingles হল এমন একটি অবস্থা যা আগে চিকেনপক্স হয়েছে এমন মানুষকে আক্রমণ করে। এই ধরনের shingles এর মধ্যে চিকেন পক্স এর ভাইরাস রয়েছে যায় এবং এর ফলে ব্যথা ও চুলকানি সহিত র্যাশ হতে পারে। এমনকি সেই shingles থেকে আপনার মধ্যে যদি shingles নাও হয় তবুও আপনি সেখান থেকে চিকেন পক্সে আক্রান্ত হয়ে পরতে পারেন।
এছাড়াও CDC এর পরামর্শ মতে বাসার ১২ মাস বা তার বেশি বয়সের শিশু থাকলে এবং বাসার অন্যসব সদস্যের চিকেনপক্সের টিকা নিয়ে নেয়া জরুরী কেননা তাদের মাধ্যমে আপনি সংক্রমিত হতে পারেন। যদি তাদের মধ্যে কেউ কিছুদিনের মধ্যে চিকেনপক্সের ভাইরাসের সংস্পর্শে আসে তবে টিকা নেয়াটা আরও বেশি জরুরী কেননা ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার অল্পদিনের মধ্যে টিকা নেয়া হলে চিকেন পক্সে আক্রান্তে হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।
গর্ভকালীন সময়ে shingles হলে সেটা কি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ?
এই ধরনের সমস্যা সাধারণত একটু বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশ দুর্বল তাদের মধ্যে দেখা যায়। আর গর্ভধারণ করা নারীদের মধ্যে এই ধরনের সমস্যা দেখা যাওয়া খুবই বিরল। তবে এমনটা যদি হয়েও থাকে তাহলে সেটা আপনার গর্ভের শিশুর কোন ক্ষতি করবেনা বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
সবার জন্য শুভকামনা।