ঘুমানোর সময় শিশুকে কিভাবে শোয়ানো নিরাপদ

Spread the love

বাসায় যদি নবজাতক থাকে, তাহলে শিশুর নিরাপদ ঘুমের অবস্থান এবং সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিন্ড্রোম বা SIDS এর ঝুঁকি কমানোর উপায় সম্পর্কে জানাটা সবার জন্য জরুরি, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর প্রায় ২৫০০ শিশুর জীবন কেড়ে নেয়।

প্রায় ৮০% আকস্মিক ও অপ্রত্যাশিত শিশু মৃত্যুর কারণ হল সিডস এবং এই ঝুঁকি এড়ানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল এক বছরের কম বয়সী শিশুকে ঘুমানোর সময় চিৎ করে শোয়ানো (supine position)।

বিজ্ঞাপণ

শিশুর ঘুমানোর নিরাপদ এবং আদর্শ অবস্থান নিয়েই আজকের আলোচনা।

শিশুর ঘুমের অভ্যাস যা অপ্রত্যাশিত মৃত্যু বা Sudden Unexpected Death In Infancy (SUDI) এর জন্য দায়ী

শিশুর অপ্রত্যাশিত মৃত্যু বা (Sudden Unexpected Death In Infancy (SUDI) এর মধ্যে SIDS এবং ঘুম জনিত মৃত্যু অন্তর্ভুক্ত। নিম্নলিখিত কিছু কারণ শিশুর অপ্রত্যাশিত মৃত্যু ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়-

  • শিশুকে পেটের উপর বা উপুড় করে এবং এক পাশ ফিরিয়ে ঘুমাতে দেওয়া।
  • শিশুকে নরম গদি, সোফা, বালিশে ঘুমাতে দেওয়া, সেটা সাথে মা বাবা থাকুক আর না থাকুক।
  • গর্ভাবস্থায় বা সন্তানের জন্মের পরে ধূমপান করা।
  • শিশুকে অতিরিক্ত কম্বল বা কাঁথা জড়িয়ে ঘুম পাড়ানো যা শিশুর নাক মুখ ঢেকে দিয়ে তার শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ করে দিতে পারে।

শিশুর শোয়ানোর জন্য নিরাপদ এবং অনিরাপদ অবস্থান

উপরের ঝুঁকিগুলি মোকাবেলা করতে শিশুর জন্য নিরাপদ এবং অনিরাপদ ঘুমের অবস্থান সম্পর্কে জানাটা  অপরিহার্য। নীচে শিশুর ঘুমানোর অবস্থান এবং সে সম্পর্কিত ঝুঁকি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে-

চিৎ হয়ে ঘুমানো

শিশুদের ঘুমানোর সময় চিৎ করে শোয়ানো উচিত। সেটা দিনের বেলা অল্প সময়ের ঘুমের ক্ষেত্রে হোক বা রাতের দীর্ঘ সময়ের ঘুমের জন্য। এভাবে ঘুমানোর সুফলগুলো হলো-

  • চিৎ হয়ে ঘুমানোর ফলে   SIDS  এর ঝুঁকি অনেকটা কমে যায় কারণ এভাবে ঘুমালে শিশুর শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা কম থাকে।
  • আমেরিকার স্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ কেন্দ্রের জাতীয় শিশু ইনস্টিটিউট (এনআইসিডি) এটিকে শিশুদের জন্য সবচেয়ে ভাল ঘুমের অবস্থান হিসাবে চিহ্নিত করেছে।
  • আমেরিকান একাডেমী অব পেডিয়াট্রিক্স ১৯৯২ সালে বাবা মায়েদের ‘ব্যাক-টু-স্লিপ’ বা চিৎ করে শোয়ানোর পরামর্শ দেয়া শুরু করে এবং এতে করে, SIDS এর হার ৫০% কমে গিয়েছিল।

চিৎ করে শোয়ানোর ফলে যেসব অসুবিধা হতে পারে

যদি বাচ্চা চিৎ হয়ে দীর্ঘ সময় শুয়ে থাকে তবে বাচ্চার মাথার পেছনের দিক সমান হয়ে যেতে পারে বা মাথার আকারের বিকৃতি ঘটতে পারে। তবে এই সমস্যা বাচ্চার এক বছর বয়স হতে হতে ঠিক হয়ে যায় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোন চিকিৎসার প্রয়োজন পড়েনা।

কিছু কৌশল  অবলম্বন করে খুব সহজেই এই অবস্থা এড়ানো যেতে পারে। তা হলো-

  • শিশু যখন জেগে থাকে তখন তাকে পেট এর উপর বা উপুড় করে (Tummy Time) রাখুন।এসময় অবশ্যই কেউ সাথে থাকতে হবে।
  • মাথার কোন একপাশ চ্যাপ্টা হয়ে গেলে শিশু ঘুমানোর সময় তার মাথা অন্য দিকটায় ঘুরিয়ে দিন।
  • বাচ্চাকে ক্যারিয়ার বা কার সিটে কম রাখার চেষ্টা করুন।
  • বাচ্চাকে কোলে রাখার সময় কিছুটা বাড়িয়ে দিন।
  • বাচ্চার মনোযোগ আকর্ষণের জন্য যদি তার বিছানার পাশে কিছু রাখেন তবে মাঝে মাঝে সেগুলোর অবস্থান পরিবর্তন করুন। এতে বাচ্চা ঐ জিনিসগুলো দেখার জন্য তার মাথা শুধু একদিকেই ঘুরিয়ে রাখবেনা।

পেটের উপর ঘুমানো

বেশ কিছু কারনে মা বাবাদের শিশুকে পেটের উপর বা উপুড় করে ঘুম পারাতে নিরুৎসাহিত করা হয়:

  • এভাবে শোয়ার ফলে বাচ্চার চোয়ালে চাপ পড়তে পারে যার ফলে তার শ্বাসনালী সঙ্কুচিত হয়ে শ্বাস প্রশ্বাসে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে।
  • শিশু যদি পেট এর উপর ঘুমাতে থাকে তবে তবে সে কাথার ভেতর মুখ ঢুকিয়ে ঘুমায় এবং তার নাক বিছানার খুব কাছাকাছি থাকে এতে সে  একই বাতাস বার বার  নিঃশ্বাসের সাথে নিতে থাকে যা তার জন্য অসাস্থ্যকর।
  • শিশু খুব নরম গদির উপর পেটে ভর দিয়ে ঘুমালে তার শ্বাস প্রশ্বাস আটকে যেতে পারে।
  • এভাবে ঘুমানোর ফলে বিছানায় বা চাদরে থাকা জীবাণু নিঃশ্বাসের সাথে তার শরীরে প্রবেশ করতে পারে।

কোন কোন ক্ষেত্রে শিশুদের পেটের উপর বা উপুড় করে শোয়ানোর পরামর্শ দেয়া হতে পারে?

বিরল ক্ষেত্রে, শারীরিক কোন অবস্থার কারণে, ডাক্তার বাবা মাকে শিশুকে পেটের উপরে ঘুম পাড়াতে পরামর্শ দিতে পারে।

কিছু চিকিৎসক বিশ্বাস করেন যে গুরুতর গ্যাস্ট্রোএসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ( gastroesophageal reflux)  বা পিয়েরে  রবিন সিনড্রোমের (Pierre Robin Syndrome)  মতো কিছু সমস্যার কারনে বাচ্চাদের পেটের উপর ঘুমাতে দেওয়া উচিত, যা শিশুদের শ্বাস প্রশ্বাস সমস্যা সমাধান করে।

তবে কোন সাম্প্রতিক গবেষণায়  এই মতবাদ এর পক্ষে বিপক্ষে কোন প্রমান পাওয়া যায়নি । এই অবস্থার সুপারিশ করার আগে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সম্ভাব্য সুবিধা এবং ঝুঁকি বিবেচনা করা উচিত।

শিশুর পেটের উপর ঘুমিয়ে রাখার পক্ষে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যুক্তি ছিল ঘুমানোর সময় বাচ্চার বমি করা। কারণ ডাক্তাররা বিশ্বাস করতেন যে শিশুর চিৎ হয়ে  ঘুমানোর সময় বমি করাটা বিপজ্জনক হবে।

তারা মনে করতেন যে চিৎ হয়ে শোওয়া অবস্থায় বাচ্চা বমি করলে শিশুদের তা গলায় আটকে যেতে পারে কেননা তারা হয়তো মাথা ঘুরাতে পারবেনা।   তবে পিঠের উপর ভর দিয়ে  ঘুমন্ত শিশুরা যদি অসুস্থ ও থাকে তবে তাদের মাথায় বাঁকাতে কোন অসুবিধা হয় এমনটা দেখা যায়নি।

এছাড়াও, আপনি আপনার কলিক শিশুকে  তাদের গ্যাস থেকে মুক্তি দিতে পেটের উপর ঘুম পাড়াতে পারেন । তবে, তাকে খাওয়ানোর সাথে সাথেই এমন করবেন না । খাবার ও ঘুমের মধ্যে কিছু সময়ের ব্যাবধান রাখুন। এক্ষেত্রে বাচ্চা ঘুমানোর সময় নজরদারিতে রাখা উচিত।

[ আরও পড়ুনঃ কলিক বেবি । শিশুর অস্বাভাবিক কান্না ]

পাশ ফিরে ঘুমানো

শিশুদের পাশ ফিরে ঘুমানোটাও খুব একটা নিরাপদ নয় কারণ এই অবস্থান থেকে তারা সহজেই উপুড় হয়ে যেতে পারে যাতে করে SIDS এর আশংকা আবার বেড়ে যায়।

শিশুর নিরাপদ ঘুমের জন্য কিছু টিপস

নরম বিছানা এড়িয়ে চলুন

শিশুর ঘুমানোর জন্য অতিরিক্ত নরম বিছানা, গদি বা সোফার বদলে শক্ত ম্যাট্রেসের পরামর্শ দেয়া হয়। বাচ্চার শোয়ার স্থানে বালিশ, কাঁথা, কম্বল বা নরম খেলনা যাতে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সহজ ভাষায়, ঘুমানোর সময় বাচ্চার মাথা ঢেকে যেতে পারে এমন কোন জিনিসই বাচ্চার শোয়ার স্থানে রাখা যাবেনা।

শিশুর দোলনায় কিছু রাখবেন না

শিশুদের দোলনা বা ক্রীবের নিচে নরম বেড বা ম্যাট্রেস  রাখবেন না। কেবলমাত্র শক্ত ও পরিষ্কার ম্যাট্রেস রাখুন এবং এর উপর চাদর দিয়ে তা চারপাশে এমনভাবে গুঁজে দিন যাতে তা শিশুর নাকে মুখে জড়িয়ে যেতে না পারে।

শিশুর বিছানাতেই ঘুমাতে দিন

কখনো শিশুকে সোফা, কোচ বা গদিওয়ালা চেয়ারে রাখা যাবে না। একা বা কারও সঙ্গে ঘুমন্ত অবস্থায় রাখা যাবে না। কারণ এসব জায়গা বিপজ্জনক। সন্তানকে দুধ খাওয়ানোর সময় যদি আপনার ঘুমিয়ে পড়ার বিন্দু পরিমাণ আশঙ্কা থাকে, তাহলে অবশ্যই নিজের বিছানায় শুয়ে দুধ খাওয়ান; সোফা বা গদিওয়ালা চেয়ারে নয়। আর ঘুম থেকে জেগে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শিশুকে নিজের বিছানায় শুইয়ে দিন।

বাচ্চাকে ক্যারিয়ার, কার সিট, বাউন্সি সিট বা স্ট্রলারে ঘুমাতে দেয়া উচিত নয় বিশেষ করে ৪ মাসের কম বয়সী বাচ্চাদের। কারণ এসবে বাচ্চা ঘুমানোর সময় মাথা বেশী সামনের দিকে ঝুঁকে গেলে বাচ্চার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এসবে বাচ্চাকে বসালে খেয়াল রাখতে হবে যাতে বাচ্চার মাথা সোজা থাকে এবং নাকে মুখে কিছু না লাগে

বাচ্চার গায়ে কম্বল বা কাঁথা দেয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন

বাচ্চার গায়ে কাঁথা বা কম্বল দিলে তা বুক পর্যন্ত রাখুন এবং হাত বাইরে রাখুন। বাচ্চারা যেহেতু হাত নাড়তে থাকে তাই তার হাত কম্বল বা কাঁথার নিছে থাকলে তার হাত নাড়ানোর কারণে তা মাথা ঢেকে দিতে পারে।

আমেরিকান একাডেমী অফ পেডিয়াট্রিক্স  ‘স্লিপ স্যাক (sleep sack)  ব্যবহার করতে পরামর্শ দেয় । এগুলো একধরনের কম্বল যা জামার মত করে বাচ্চাকে পরিয়ে রাখা যায় যাতে বাচ্চার হাত ও মাথা বাইরে থাকে।  হালকা সুতি বা মসলিন কাপড় দিয়ে শিশুকে মুড়িয়ে রাখলে ঘুমের সময় তা তাকে উপুড় হয়ে যেতে  বাধা দেয়।

বিজ্ঞাপণ

বাচ্চার যাতে বেশি গরম না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখুন

বাচ্চার যাতে বেশী গরম না লাগে তার জন্য বড়দের চাইতে শুধু মাত্র এক লেয়ার কাপড় বেশী ব্যাবহার করুন। বাচ্চার বেশী গরম লাগছে কিনা লক্ষ রাখুন, যেমন- বাচ্চা ঘামছে কিনা, চুল ভিজে গেছে কিনা বা বাচ্চার বুকে হাত দিলে গরম লাগছে কিনা ইত্যাদি।

ভাল ঘুমের পরিবেশ নিশ্চিত করুন 

শিশুর জন্য ২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের তাপমাত্রার বেশ শান্ত শীতল পরিবেশ বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

প্যাসিফায়ার (চুষনী) ব্যবহার (ঘুমানোর সময়)

আমেরিকান একাডেমী অফ পেডিয়াট্রিক্স এর মতে ঘুমানোর চুষনীর ব্যাবহার  SIDS এর ঝুঁকি কমাতে পারে। বাচ্চা ঘুমিয়ে যাওয়ার পর তার মুখ থেকে চুষনি পরে গেলে তা আবার দেয়ার প্রয়োজন নেই কিংবা বাচ্চা যদি চুষনি নিতে না চায় তবে জোর করারও দরকার নেই।বাচ্চা যদি বুকের দুধ খায় তবে সে ভালোভাবে বুকের দুধ খাওয়া শেখার আগে চুষনি ব্যাবহার না করাই ভালো।

[ আরও পড়ুনঃ শিশুর চুষনি বা প্যাসিফায়ারের ব্যাবহার এবং এর সম্পর্কে বিস্তারিত ]

একই রুমে কিন্তু একই বিছানায় নয়

আমেরিকান অ্যাকাডেমী অব পেডিয়াট্রিক্স এর মতে জন্মের অন্তত ছয় মাস পর্যন্ত এবং সম্ভব হলে একবছর পর্যন্ত বাচ্চার বাবা মায়ের সাথে একই রুমে ঘুমানো উচিত। তবে একই বিছানায় শোয়ানোর বিপক্ষে তারা। কারণ এতে দুর্ঘটনাবশত বাচ্চার বাবা মায়ের গায়ে লেগে বাচ্চার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বাচ্চার বাবা মায়ের বিছানার পাশে আলাদা ক্রিবে রাখা যেতে পারে।

[ আরও পড়ুনঃ বাচ্চার ঘুমের বিষয়ে যে সব ভুল বাবা মায়েরা করে থাকেন এবং তা শোধরানোর উপায় ]

বাচ্চাকে শোয়ানোর ব্যাপারে বাবা মায়েরা সাধারণত যেসব প্রশ্ন করেন

ঘুমের সময় শিশু নিজে নিজে উপুড় হয়ে গেলে কী হবে?

প্রায় চার থেকে পাঁচ মাস বয়সে , বাচ্চারা ঘুমের সময়  নিজে নিজে উপুড় হয়ে যেতে শুরু করে। এতে তেমন কোন সমস্যা নাও হতে পারে কারণ এই সময়  SIDS ঝুঁকি কমতে থাকে । শিশুকে নিজের আরামদায়ক ঘুমের অবস্থান খুঁজে পেতে দিন কারণ সে  এই সময় পেটের উপর ঘুমালেও মাথা বাকা করে মুখ এবং নাককে শ্বাস প্রশ্বাসের জন্য মুক্ত রাখতে পারে। তবে ঘুমের শুরুতে তাকে চিৎ করেই শোয়ান  ।

মনে রাখবেন যে SIDS এর  ঝুঁকি এক থেকে চার মাসের শিশুদের সবচাইতে বেশি থাকে, তবে শিশুর ১২ মাস বয়স পর্যন্ত এই ঝুকি থেকে যায়। সুতরাং, আপনার শিশুর প্রথম বছরের মধ্যেই SIDS এর ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য অন্যান্য সতর্কতাগুলি অনুসরণ করুন।

আমার শিশু কেন চিৎ হয়ে ঘুমানোর সময় অদ্ভুত ভঙ্গি করে থাকে ?

শিশুরা বড় হওয়ার সময় অনেকভাবেই নড়াচড়া করতে থাকে এর মধ্যে এক ধরনের হচ্ছে ফেন্সিং রিফ্লেক্স বা টনিক নেক রিফ্লেক্স। যখন বাচ্চাকে পিঠের উপর বা চিৎ করে  রাখা হয়, তখন তার মাথা একপাশে ঘুরে যায় এবং সেই দিকের হাত ও পা ছড়িয়ে রাখে এবং অন্য হাত ও পা ভাজ হয়ে যায়। এটিকে ফেন্সিং অবস্থান (fencing reflex ) বলা হয়।

এভাবে থাকার ফলে বাচ্চা ঘুমানোর সময় উল্টে যেতে পারেনা । এটি ও আপনার শিশুকে চিৎ করে শোয়ানোর আরেকটি কারণ। এই অনিচ্ছাকৃত নড়াচড়া তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।

ফেন্সিং অবস্থান
ফেন্সিং রিফ্লেক্স ছবিঃ গুগল

কখন শিশু পেটের উপর বা উপুড় করে শুইয়ে রাখা যাবে?

শিশুকে পেটের  উপর কারো তত্ত্বাবধানে রাখা যাবে, যখন সে জেগে থাকে। শিশুকে পেটের উপর শুইয়ে রাখা তার পেট, পিঠ এবং ঘাড়ের  পেশী শক্তিশালী করার একটি ভাল উপায়।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলে-ইউসিএসএফ জয়েন্ট মেডিকেল প্রোগ্রাম, কমিউনিটি হেলথ এন্ড হিউমেন ডেভেলাপমেন্টের ক্লিনিকাল প্রফেসর, ডাক্তার কারেন সোকাল-গুটিয়ারেজের মতে , শিশুরা জেগে থাকা অবস্থায় তাদের পেটের উপর উপুড় করে শুইয়ে রাখলে  SIDS এর ঝুঁকি  কমে যায়। এটি তার শরীরের উপরিভাগের গঠনেও সাহায্য করে।

আমি কি আমার শিশুর জন্য “স্লীপ পজিশনার”  ব্যবহার করতে পারি?

বাচ্চাদের মধ্যে SIDS ঝুঁকি হ্রাস বা প্রতিরোধ করার জন্য এফডিএ  শিশুদের “স্লীপ পজিশনার” ব্যবহারের পক্ষে  রায় দেয়নি। প্রকৃতপক্ষে, শিশুর ঘুমানোর জন্য “স্লীপ পজিশনার” ব্যবহার করা বিপজ্জনক।

চিৎ হয়ে ঘুমানোর সময় বাচ্চারা বমি করলে কি হবে?

সুস্থ বাচ্চাদের তাদের পিঠের উপর ঘুমানো অবস্থায় বমি হলেও গলায় আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। গ্যাস্ট্রোএসোফেজাল রিফ্লাক্স রোগ থাকলেও তা চিৎ হয়ে ঘুমানো শিশুদের মধ্যে বমি গলায় আটকানোর ঝুঁকি বাড়ায় না। কিন্তু বাচ্চাকে মুখে বোতল দিয়ে শোয়ানো কখনোই উচিত নয়। কেননা এটি শিশুর কানের সংক্রমণ এবং গলায় খাবার আটকানোর ঝুকি বাড়ায়। আপনার বাচ্চা যদি বমি করে তবে তার মাথা অন্য  দিকে হাল্কা ঘুরিয়ে দিন।

আমার শিশুর চিৎ ঘুমাতে অসুবিধা হলে কী করবো?

কিছু শিশু চিৎ হয়ে শুইয়ে গভীর ঘুম নাও যেতে পারে।  এমনকি তারা খুব অস্থির ও হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু গভীর ঘুমের অভাব হ’লেও তারা SIDS থেকে  বাঁচবে। উপুড় হয়ে শোয়ালে নবজাতকরা সাধারণত গভীরভাবে ঘুমায় এবং তার নড়াচড়া ও আশপাশের শব্দের প্রতি কম প্রতিক্রিয়া থাকে। এটা ভালো মনে হলেও এগুলো সবই কিন্তু SIDS  এর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

[ আরও পড়ুনঃ নবজাতকের ঘুম সম্পর্কে ৫ টি প্রয়োজনীয় তথ্য যা হয়তো আপনার অজানা ]

সবার জন্য শুভকামনা।


Spread the love

Related posts

Leave a Comment