বাচ্চাকে কখন থেকে খাবার পানি দেয়া উচিত?

Spread the love

বাচ্চাকে কখন থেকে খাবার পানি দেয়া উচিত?

সাধারণভাবে বলতে গেলে বাচ্চাকে তার ৬ মাস বয়স পর্যন্ত পানি দেয়া উচিত নয়। কারণ এ সময় পর্যন্ত বাচ্চা বুকের দুধ বা ফর্মুলা থেকে তার তরলের চাহিদা পুরোপুরি পূরণ করে নেয় এমনকি গরম আবাহাওয়াতেও।

আসলে মায়ের বুকের দুধ কিংবা ফরমুলাতে পানিয় অংশ থাকে বেশী, যা বাচ্চাকে হাইড্রেটেড রাখে, অতিরিক্ত পানির প্রয়োজন পড়ে না। বাচ্চার প্রথম ছয় মাস (বা ছয়মাসের কাছাকাছি) মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।

বিজ্ঞাপণ

এরকম শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ানো হলে (Exclusive Breastfeeding) কোন অতিরিক্ত পানির প্রয়োজন নেই। ভীষন গরমের সময়ও এটা প্রযোজ্য। যেসব বাচ্চা ফর্মুলা খায় অনেকেই গরমে তাতে পানির পরিমাণ একটু বাড়িয়ে দেন। এটা করাও কখনোই উচিত না।

বাচ্চার বয়স যখন ৬ মাস হয় এবং সলিড খাবার খাওয়া শুরু করে তখন তাকে কয়েক চুমুক পানি দেয়া যেতে পারে। যদি এসময়ও বেশী পানি দেয়া উচিত নয় কারণ এতে তার পেটে ব্যাথা হতে পারে এবং তার পেট ভর্তি হয়ে যাওয়ার কারণে খেতে না চাইতে পারে।

বাচ্চার প্রথম জন্মদিনের পর, যখন সে নিয়মিত সলিড খায় তখন থেকে আপনি তার ইচ্ছে মত তাকে পানি দিতে পারেন।

বাচ্চাকে কখন থেকে খাবার পানি দেয়া উচিত? | Audio Article

কেন ছয় মাস বা তার কম বয়সী বাচ্চাদের জন্য পানি নিরাপদ না?

ছয় মাস বা তার কম বয়সী বাচ্চাদের যদি অতিরিক্ত পানি দেওয়া হয়, তবে তা দুধ বা ফরমুলা থেকে পুষ্টিগুন শরীরে শোষন হওয়ার যে ক্ষমতা, তাকে বাধাগ্রস্থ করে। ছয় মাসের পরও ছোট বাচ্চাদের বেশী পানি খাওয়ানো ক্ষতিকর। এ থেকে পেটে ব্যাথা হতে পারে। এমনকি বেশী পানি ক্ষুধা কমিয়ে দেয়, এবং এতে বাচ্চা অন্য খাবার খেতে চায় না।

বিজ্ঞাপণ

বেশী পানি খেলে বাচ্চার ওয়াটার ইনটক্সিকেশন (Water Intoxication) হতে পারে। এটা তখনি হয় যখন অতিরিক্ত পানি শরীরের সোডিয়ামের কনসেন্ট্রেসন ডাইলিউট করে ফেলে। এতে শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটের ব্যালেন্স নষ্ট হয়ে যায় এবং টিস্যু ফুলে যায়। এটা থেকে বাচ্চার খিঁচুনী হতে পারে, এমনকি কোমায় পর্যন্ত চলে যেতে পারে।

তবে ব্যাতিক্রম হিসেবে ক্ষেত্রবিশেষে, যেমন পেটের অসুখের কারনে, বাচ্চা যদি পানিশূন্য হয়ে যায়, ডাক্তারের পরামর্শে খাবার স্যালাইন খাওয়ানো যেতে পারে। এসময়ও কতটুকু খাওয়াতে হবে, তার পরিমান জানাটা জরুরী।

এমনকি ফরমুলাতে অতিরিক্ত পানি মিশিয়ে পরিমানে বাড়ানোর চেষ্টা করা উচিত না। প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশাবলী ভালোমতো পড়ে নিয়ে, ঠিক যতটুকু পানির কথা বলা আছে, ততটুকুই ব্যবহার করুন।

যদি বাচ্চা পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হয় তাহলে কি করতে হবে?

যতক্ষণ বাচ্চা ঠিকমত খাচ্ছে এবং তার ওজন ঠিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে ততক্ষণ তার পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হওয়ার তেমন কোন সম্ভাবনা নেই। তবে বাচ্চার শারীরিক অসুস্থতার ক্ষেত্রে যেমন- ঠাণ্ডা লাগলে, ফ্লু হলে বা অন্য কোন সমস্যা হলে বাচ্চা ঠিকমত খেতে চায়না বা বমিডায়রিয়ার সাথে বাচ্চার শরীরের তরল বেরিয়ে যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে বাচ্চার পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারকে জানাতে হবে।

বিজ্ঞাপণ

এ সময় সাধারণত আরও ঘন ঘন দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেয়া হয় অথবা ডাক্তার জরুরী মনে করলে স্যালাইন বা ইলেক্ট্রোলাইট সলিউশন দিতে পারেন। অবস্থা আরও বেশী খারাপ হলে হাসপাতালে ভর্তি করে ইনজেকশনের মাধ্যমে স্যালাইন দেয়া হতে পারে।

সবার জন্য শুভকামনা।


Spread the love

Related posts

Leave a Comment