কিভাবে নিরাপদ উপায়ে ফরমুলা দুধ সংরক্ষণ করে ব্যাবহার করা যায়

Spread the love

মনে রাখবেন অনিরাপদ উপায়ে সংরক্ষিত ফরমুলা দুধে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে যা আপনার নবজাতক শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আপনারশিশুর সুস্বাস্থ্য রক্ষা এবং ফরমুলা দুধে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধে নিম্নেবর্ণিত উপায় অবলম্বন করুন।

ফিডারের দুধ শেষ না হলে কি করবেন?

আপনার শিশুকে কুসুম গরম ফরমুলা দুধটি তৈরি করার সাথে সাথে খেতে দিন।আগে থেকেই দুধ গরম করে রাখবেন না,কেননা গরম দুধে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ খুব দ্রুত হতে পারে। যদি গরম করা দুধ একঘণ্টার বেশি সময় ধরে রুমের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় থাকে, তাহলে সেটা অতি সত্তর ফেলে দিন।

বিজ্ঞাপণ

এছাড়া আপনার শিশু যদি ফিডারের দুধ খাওয়া শুর করে এবংপরবর্তী এক ঘণ্টার মধ্যে সে দুধ শেষ না হয়,তাহলে সেটা এক ঘণ্টা পার হলে আপনার শিশুকে খাওয়াবেন না।

অবশিষ্ট দুধ কখনো ফ্রিজে রেখে দিবেন না অথবা পুনরায় গরম করে খাওয়াবেন না। কারণ খাবার সময় শিশুর মুখথেকে ব্যাকটেরিয়া ফিডারে মধ্যে চলে যেতে পারে এবং বোতলের দুধগুলোকে বিষাক্ত করেতুলতে পারে। এতে করে আপনার শিশু অসুস্থ হয়ে যেতে পারে।

কীভাবে ফিডারে দুধ সংরক্ষণ করে পুনরায় ব্যাবহার করবেন?

তৈরি করা ফর্মুলার ক্ষেত্রেঃ  যখন পাউডার অথবা তরল ফরমুলা দুধের সাথে পরিমাণমত  পানি মেশানো হয়ে যাবে সাথে সাথে সেই দুধ ফিডারের ঢাকনা বন্ধ করে ফ্রিজে রেখে দিন। সাধারণ তাপমাত্রায় এটাকে ঠাণ্ডা হতে দিবেন না।

এভাবে আপনি চব্বিশ ঘণ্টা পর্যন্ত ফরমুলা দুধ সংরক্ষণ করতে পারেন।চব্বিশ ঘণ্টা অতিক্রম করলে দুধ ফেলে দিন,কেননা ইতোমধ্যেই হয়ত সেটা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হয়ে গেছে।

সাথে সাথে ব্যাবহার যোগ্য ফরমুলা দুধঃ বাজারে কিছু ফরমুলা দুধ থাকে যেটাতে পরিমাণমত পানি মেশানো থাকে এবং আপনি প্যাকেট থেকে বের করেই আপনার শিশুকে খাওয়াতে পারবেন। যখন আপনি প্যাকেট খুলে ফেলবেন, সাথে সাথে সেটা ফিডারে নিয়ে আগের মতই ঢাকনা বন্ধ করে ফ্রিজে রেখে দিতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আটচল্লিশ ঘণ্টা অতিক্রম করার পর অবশিষ্ট দুধ আপনাকে ফেলে দিতে হবে। কেননা এই সময় পার হয়ে যাওয়ার পর ফরমুলা দুধে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ শুরু হয়ে যায়।

সাধারণ নির্দেশনাঃ প্রতিবার ফরমুলা দুধ প্রস্তুত করে বোতলে অথবা ফিডারে সংরক্ষণ করার সময় বা ফর্মুলার কৌটা খোলার পর, একটা কাগজে দুধ তৈরির সময় এবং তারিখ লিখে রাখুন এবং সেটা ফিডারের গায়ে লাগিয়ে দিন। এতে করে পরবর্তীতে আপনার, ভুল করেও সেই দুধ শিশুকে খাওয়ানোর ঝুঁকি থাকেনা। অথবা আপনি চাইলে মোবাইলে এলার্মও দিয়ে রাখতে পারেন।

বিজ্ঞাপণ

ফরমুলা দুধ নিয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় কি করবেন?

প্যাকেট/টিনের কৌটা খুলেই সেবন যোগ্য ফরমুলার ক্ষেত্রেঃএক্ষেত্রে সবচাইতে সহজ এবং নিরাপদ উপায় হল আপনি যখন বাসা থেকে বের হবেন, সাথে করে প্যাকেট না খোলা ফরমুলা দুধ এবংপরিষ্কার ফিডার সাথে নিয়ে নিবেন। এর ফলে যখনই আপনার শিশুর ক্ষুধা লাগবে আপনি সাথে সাথে ফরমুলা দুধটি ফিডারে ঢেলে শিশুকে খাওয়াতে পারবেন। যাই হোক, এ ধরনের ফরমুলা দুধের দাম  একটু বেশিই হয়ে থাকে এবং যেহেতু শিশুটি সবসময়এই রেডি-দুধ খেয়ে অভ্যস্ত নয় তাই সে এটা নাও খেতে চাইতে পারে।

পাউডার ফরমুলা দুধের ক্ষেত্রেঃ যখন আপনি বাসা থেকে বের হবেন তখন ফিডারের মধ্যে পরিমাণ মত পাউডার দুধ ঢেলে নিবেন এবং সাথে করে আলাদা ফ্লাস্কে গরম পানি নিয়ে নিবেন। এতে করে আপনি শুধুমাত্র ফ্লাস্ক থেকে পরিমাণ মত পানি ফিডারে ঢেলেই শিশুকে খাওয়াতে পারবেন।

তবে এক্ষেত্রে একটু সতর্ক হবেন, দেখে নিবেন যে প্রস্তুত করা ফরমুলা দুধটি আপনার শিশুর জন্য বেশি গরম কিনা। কয়েক ফোটা দুধ আপনার হাতের উল্টা পিঠের চামড়ায় দিলেই আপনি বুঝে যেতে পারবেন যে দুধটির তাপমাত্রা আপনার শিশুর জন্য নিরাপদ কিনা।  যদি খুব বেশি গরম না হয়ে থাকে তাহলে আপনি সেভাবেই দুধটি খাওয়াতে পারবেন।

ফিডারে প্রস্তুত করা ফরমুলা দুধের ক্ষেত্রেঃ আপনি যদি পূর্বে বানানো ফরমুলা দুধ ফিডারে করে নিয়ে যেতে চান তাহলে প্রথমে আপনাকে আগের মত করেই দুধ তৈরির সাথে সাথেই সেটা ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে ফ্রিজের একদম কোনায় অথবা শেষ মাথায় ফিডারটি রাখতে হবে যেখানে ফ্রিজের তাপমাত্রা সবচাইতে কম থাকে। এমন একটা ফিডার আপনি একটা বরফের ব্যাগের মধ্যে নিয়ে বের হতে পারবেন। বাইরে বের হওয়ার দুই ঘণ্টা পর্যন্ত আপনি এই দুধ শিশুকে খাওয়াতে পারবেন।

সাধারণ নির্দেশনাঃ কখনো কখনো শিশুরা একটু কুসুম গরম দুধখেতে পছন্দ করে, কিন্তু এটা বাধ্যতামূলক নয়।  তাই আপনার শিশু যদি স্বাভাবিক তাপমাত্রার বা ঠাণ্ডা ফর্মুলা খায় তাহলে আপনি সেই তাপমাত্রার দুধই শিশুকে খাওয়াতেপারেন। এতে করে কুসুম গরম পানিতে ফিডার রেখে তারপর শিশুকে খাওয়ানোর ঝক্কি পোহাতে হবে না।

ফ্রিজ থেকে বের করা ফিডার কীভাবে গরম করবেন?

ফ্রিজ থেকে বের করা ঠাণ্ডা দুধ আপনি গরম পানির মধ্যে দুই একমিনিটের জন্য রেখে গরম করে নিতে পারেন। এছাড়াও কোন পাত্রে কুসুম গরম পানি নিয়ে সেটার মধ্যে কিছুক্ষণের জন্য ফিডারটি রেখে দিতে পারেন। তাপমাত্রা যখন আপনার শিশুর জন্য সহনীয় হয়ে আসবে তখন সেই দুধ শিশুকে খাওয়াতে পারেন। যদি কোন পাত্রে আপনি পানি গরম করেন, তাহলে তার মধ্যে ফরমুলা দুধের ফিডারটি রাখার পূর্বে সেটা অবশ্যই চুলা অথবা মাইক্রোওয়েভ থেকে সরিয়ে রাখবেন। 

তবে মনে রাখবেন কোন ক্ষেত্রেই ফরমুলা দুধ মাইক্রোওয়েভে দিয়ে গরম করবেন না, কারণ এভাবে ফিডারের দুধ সম পরিমাণে গরম হয় না। কিছু অংশের দুধ বেশি গরম হয়ে যেতে পারে। আর শিশুর মুখ যেহেতু একটু সংবেদনশীল তাই সেই গরম অংশটুকু আপনার শিশু মুখ পুড়িয়েও ফেলতে পারে।       

সবার জন্য শুভকামনা।


Spread the love

Related posts

Leave a Comment