নবজাতক শিশুর ১০টি বিষয় যেগুলো খুবই অদ্ভুত কিন্তু একদম স্বাভাবিক

Spread the love

এটা খুবই স্বাভাবিক যে নবজাতক শিশু ও গর্ভধারণ বিষয়ক সবগুলো বই এবং সব ক্লাস আপনাকে বেশ কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে জানিয়ে দেয়, আর সেগুলো হলঃ গর্ভধারন, প্রসব, রাত জেগে শিশুর খেয়াল রাখা এবং অবশ্যই সময়মত শিশুকে খাওয়ানো

কিন্তু কিছু অদ্ভুত ব্যাপার সম্পর্কে অনেকেরই হয়ত জানা নেই, যেমন ধরুন অস্বাভাবিক মলত্যাগ অথবা শিশুর দীর্ঘ সময় জেগে থাকা! এছাড়া আরো বেশ কিছু অদ্ভুত ব্যাপার নবজাতক শিশুর ক্ষেত্রে ঘটতে পারে, তবে এজন্য ভয় পেয়ে দ্রুত শিশু বিশেষজ্ঞ এর কাছে ফোন দেয়ার আগেই আমরা বেশ কিছু অদ্ভুত, কিন্তু একদম স্বাভাবিক কিছু ব্যাপার সম্পর্কে আলোচনা করব। এইসব ব্যাপারগুলো আপনি হয়তো অতি শীঘ্রই নবজাতক শিশুর মধ্যে দেখতে পারেন।

বিজ্ঞাপণ

ক্র্যাডল ক্যাপ (শিশুর মাথায় খুশকির মত স্তর)

ক্র্যাডল ক্যাপ (Cradle cap) কি স্বাভাবিক?

এটা খুবই সত্য যে ক্র্যাডল ক্যাপ অর্থাৎ শিশুর মাথার চামড়ায় বিভিন্ন ধরনের ছোপ ছোপ স্তর দেখতে খুবই অস্বাভাবিক এবং আতঙ্কজনক। আপনি হয়ত ভাবতে পারেন শিশু খুবই অসুস্থ, তবে এতে খুব একটা ভয়ের কিছু নেই। এটা নবজাতক শিশুর ক্ষেত্রে খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার।

কিন্তু এমন অদ্ভুত একটা ব্যাপারকে কীভাবে স্বাভাবিক বলে গণ্য করা হয়? এর সঠিক উত্তরটি আসলে কারো জানা না থাকলেও আশার কথাটি হল, এই ধরনের শুষ্ক ও খুসখুসে ছোপ ছোপ দাগ শিশুর জন্মের কয়েক মাসের মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়। যদিও ক্ষেত্র বিশেষে এই সময়টা আরেকটু দীর্ঘ হতে পারে।

এই সময়টাতে শিশুর মাথায় প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ‘বেবি অয়েল’ দিন। নিউইয়র্ক এর ‘অরেঞ্জটাউন শিশু বিশেষজ্ঞ এ্যাসোসিয়েশন’ এর একজন বিশেষজ্ঞ এলেনা লেভিন এ ব্যাপারে পরামর্শ দেন, শিশুর গোসলের সময় নরম ব্রাশ দিয়ে যদি আলতো করে ব্রাশ করা হয়তাহলে বেশ ভালো ফল পাওয়া যাবে।

কখন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হবেন?

একটা ব্যাপারে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে যে, এই ছোপ ছোপ দাগগুলো কি শিশুর মাথা ছাড়িয়ে শরীরের মধ্যেও চলে আসছে কি না। অথবা এই দাগগুলো কি তীব্র আকার ধারণ করছে কি না।যদি এই ধরনের কোন কিছুর সম্মুখীন হন,তাহলে অবশ্যই আপনার শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে এবং তার পরামর্শ মত মলম ব্যাবহার করতে হবে।

[আরও পড়ুনঃ নবজাতকের মাথায় খুশকি সদৃশ স্তর বা ক্র্যাডল ক্যাপ ] 

বেশি পরিমাণে মলত্যাগ

ব্যাপারটা কি স্বাভাবিক?

শুরুতেই একটা কথা বলে নেয়া ভালো যে এই ‘বেশি পরিমাণে’ শব্দটার ব্যাবহার একটি অতিরিক্তই হয়ে যাচ্ছে। তবে একটা খুব সত্য কথা হল,শিশুর মলত্যাগের পরিমাণ বেশিও হতে পারে এটা যদি আপনি না বুঝতে পারেন তবে আপনি এখনো সত্যিকার অর্থে মাতৃত্বের স্বাদ পাননি।

অন্যভাবে বলা যায়,এই আপনিই প্রথম মা নন যে কিনা নতুন মেঝে অথবা দেয়াল থেকে শিশুর মল পরিষ্কার করছে। এ ব্যাপারে শিশু বিশেষজ্ঞ এলভিন বলেন,“নবজাতক শিশুর মল একদম পাতলা পানির মতই হয়, যার ফলে এটা আপনার রুমের মধ্যে ছিটকে দিতে শিশুর খুব বেশী শক্তি খরচ করতে হয়না”। একটু অস্বস্তি লাগছে কি এটা শুনে? এতে অস্বস্তির কিছু নেই, শুধু দেয়াল নয় আপনার হাতে কিংবা শরীরেও নবজাতক শিশুর মল লেগে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়,তাই একটু মানিয়ে নেয়াই ভালো।

কখন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাবেন?

যতক্ষণ পর্যন্ত এর রং বাদামী থেকে সবুজ ও হলুদের মত হয় ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার শিশুর মলত্যাগ নিয়ে আপনাকে কোন প্রকার দুশ্চিন্তা করতে হবেনা। কিন্তু জখনই আপনার শিশুর মল ত্যাগের মধ্যে কোন প্রকার রক্তের চিহ্ন দেখবেন, হোক সেটা খুবই সামান্য পরিমাণে, সাথে সাথে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্নহবেন।

[আরও পড়ুনঃ নবজাতকের পায়খানা । কখন স্বাভাবিক, কখন নয়

Baby Boobage অর্থাৎ নবজাতকের তুলনামূলক কিঞ্চিৎ উন্নত বক্ষ  

এটা কি স্বাভাবিক?

আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে, আপনি যখন গর্ভ ধারণ করেছিলেন তখন আপনার শরীরের মধ্যে বেশ কিছু ধরনের হরমোনের অস্বাভাবিকতা হয়েছিল। আর হ্যাঁ, গর্ভে নয় মাস থাকার দরুন তার বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আপনার শিশুর শরীরেও দেখা যেতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হল বক্ষের আকার বড় হয়ে যাওয়া।

আপনার হরমোনের সংস্পর্শে থাকার কারণে আপনার নবজাতক শিশুর বক্ষের টিস্যুও কিছুটা উন্নত হয়ে যেতে পারে। কিন্তু এ নিয়ে খুব একটা উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই নিজ থেকেই এটা ঠিক হয়ে যাবে।

কখন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাবেন?

একটু খেয়াল করে দেখুন,আপনার নবজাতক শিশুর বুকের উপর কি কোন ধরনের লাগ দাগ রয়েছে কি না। যদি থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই প্রথমে শিশুর শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখুন এটা কি জ্বরের কারণে হয়েছে কি না। যদি জ্বরের কারণে না হয়ে থাকে তাহলে এটা অন্য কোন বড় ধরনের রোগের লক্ষণও হতে পারে। অতি শীঘ্রই নিকটস্থ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হোন।

 [আরও পড়ুনঃ নবজাতকের বুক থেকে দুধ নিঃসরণ বা ডাইনীর দুধ (Witch’s Milk)

অদ্ভুত ঘড়ঘড় শব্দ হওয়া

এটা কি স্বাভাবিক?  

আপনি যদি আশা করে থাকেন আপনার শিশুর মাঝে মধ্যে শুধু ঠাণ্ডা লাগবে আর খুব কম সময় সে কান্না করবে,তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন। নবজাতক শিশুর অনেক কিছুই হতে পারে। নবজাতক শিশুটি ঘড়ঘড় শব্দ, নাক ডাকা সহ আরো অনেক ধরনের শব্দই করতে পারে।

এ সম্পর্কে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ লেভিন বলেন, এই ধরনের শব্দের অন্যতম কারণ হল, শিশুর জন্মের পরপর তার নাসারন্ধ্র বেশ সরু হতে পারে। আর এর ফলে বিভিন্ন ধরনের শব্দ তৈরি হতে পারে। আর তাই এর মধ্যে অত ভয়ের কিছু নেই, নিয়মিত Nasal Aspirator দিয়ে শিশুর নাক পরিষ্কার রাখুন।

কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন?

একটু লক্ষ্য করে দেখবেন, আপনার শিশু কি প্রত্যেকটা নিঃশ্বাসের সাথেই শব্দ করছে কিনা। যদি এমনটা হয়ে থাকে তাহলে হয়ত আপনার শিশুর নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে। সাথে সাথে নিকটস্থ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

সবসময় হাঁচি দেয়া

এটা কি স্বাভাবিকভাবে নিবেন?

এটা ভুললে হবে না,একটা নবজাতক শিশু এই পৃথিবীর পরিবেশে একদমই নতুন এবং এই নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে তার বেশ কিছুটা সময় লাগবে,আপনি যেখানে ইতোমধ্যেই খাপ খাইয়ে নিয়েছেন এই পরিবেশে। আর তাই আপনার শিশু যদি কোন প্রকার অসুস্থতা ছাড়াই প্রায় সময় হাঁচি দিতে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে যে আপনার শিশু এইসব অচেনা ধুলোবালির কণার সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার প্রচেষ্টায় ব্যস্ত। হাঁচির মাধ্যমে তার শ্বাসযন্ত্রে ঢুকে যাওয়া এসব পদার্থ সে শরীর থেকে বের করে দেয়। 

একারণে আপনি যখনআপনার শিশুকে বাইরের রোদের মধ্যে বের করবেন তখন হুট করে তার হাঁচি শুরু হয়ে গেলে আপনাকে বুঝতে হবে এটা হয়ত সূর্যের তাপ অথবা বাতাসে বয়ে যাওয়া বিভিন্ন কিছুর কণার কারণে এমন হচ্ছে, এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। এছাড়াও অতিরিক্ত শ্লেষ্মা অথবা গর্ভকালীন সময়ে যে লিকুইড দিয়ে সে ঘেরা থাকে তা শিশুর শ্বাসযন্ত্র থেকে বের করার চেষ্টার কারণেও অতিরিক্ত হাঁচি হতে পারে।

কখন উদ্বিগ্ন হবেন?

যদি এই অতিরিক্ত হাঁচির সাথে শিশুর নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয় তাহলে বুঝতে হবে সে হয়ত কোন কারণে এলার্জিতে আক্রান্ত। আর এমতাবস্থায় দ্রুত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করুন। আপনাকে এটা সবসময়ই লক্ষ্য রাখতে হবে যে আপনার শিশুটির শ্বাস প্রশ্বাস ঠিকমত হচ্ছে কি না এবং সে ঠিকমত খাবার খাচ্ছে কি না। সবসময় এগুলোর দিকে নজর রাখতে হবে আপনাকে।

বিজ্ঞাপণ

হঠাৎ ঝাঁকি খাওয়া বা শরীর কেঁপে ওঠা 

এটা কি স্বাভাবিক?

শিশুর প্রায়শই ঝাঁকি খাওয়া এবং মাংস পেশিতে কাঁপুনি স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখলে অনেকটা উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ বলে মনে হতে পারে। তবে এগুলো আসলে সবই স্বাভাবিক ব্যাপার। প্রাথমিক দুই তিন মাসের মধ্যে শিশু অনেক শারীরিক পরিবর্তনের মধ্যে থাকে আর যার কারণে এই ধরনের মাংসপেশির কাঁপুনি তার হতেই পারে।

আপনি হয়ত এমন কাঁপুনি প্রায়ই দেখতে পারেন অথবা হুট করে কোন শব্দের কারণেও এমনটা হতে পারে, এগুলো সবই স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ার মধ্যে পড়ে। তবে এইসব প্রতিক্রিয়া প্রথম তিন চার মাসের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে। ততদিন পর্যন্ত শিশুকে ভালভাবে কাপড় জড়িয়ে (Swaddle) ঘুম পাড়ান। কারণ ঘুমের মাঝে শিশুর কাঁপুনি দিয়ে ঘুম ভেঙ্গে যেতে পারে।ভালোভাবে জড়ানো থাকলে সে ভালোভাবে ঘুমাতে পারবে।

কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া জরুরী?

প্রকৃতপক্ষে আপনি তখনই উদ্বিগ্ন হবেন যখন আপনার শিশুর এসব ঝাঁকুনি বা কাঁপুনি থাকবেনা। কারণ এই ধরনের কাঁপুনি যদি না থাকে তাহলেই ধরে নিতে হবে আপনার শিশুর কোন সমস্যা হচ্ছে। আর তাই এই ধরনের লক্ষণ দেখা না গেলেই বরং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন।

মাথার আকারে সামান্য অস্বাভাবিকতা

এমন কেন হয়?

একটি শিশুর জন্ম দেয়া কঠিন কাজই বটে, তবে এটা মাথায় রাখবেন যে শুধুমাত্র আপনি একাই কষ্ট করছেন তা নয় বরং আপনার শিশুকেও জন্ম নিতে বেশ কিছু কষ্ট করতে হয়। আর এই কষ্টগুলোর পরিসমাপ্তি ঘটে তার জন্মের মাধ্যমে এবং যখন জন্ম হয় তখন শিশু ফোলা ও বেগুনী রঙের হয়ে থাকে।

যেহেতু শিশুর মাথা অনেক নরম এবং নমনীয় থাকে এমতাবস্থায় শিশু যখন আপনার পেলভিক হাড়ের মধ্যে দিয়ে বের হয়ে আসে তার মাথার আকৃতিতে সামান্য একটু পরিবর্তন আসতেই পারে। এমন পরিবর্তন লক্ষ্য করলে আপনি শিশুকে বেশি বেশি সময় কোলে রাখার অভ্যাস করুন।

এ সম্পর্কে ডাক্তার লেভিন বলেন, শিশু যখন জেগে থাকে তখন তাকে কিছু সময় পেটের উপর ভর দিয়ে উপুড় করে রাখুন এবং বিছানার পাশে রাখা তার খেলনাগুলোর অবস্থান পরিবর্তন করুন যাতে সে খেলনাগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকার জন্য সবসময় একপাশেই ফিরে না থাকে।

কখন উদ্বিগ্ন হবেন?

উপরে বর্ণিত সকল কিছু করার পরেও যদি দেখেন যে শিশুর মাথার কোন কোন অংশ একদম সমান হয়ে আছে তাহলে অতি শীঘ্রই ডাক্তারের কাছে যান। আপনার শিশুকে হয়ত একটা বিশেষ ধরনের হেলমেট পড়াতে হতে পারে আর এই ধরনের হেলমেট শিশুর বয়স ৪ থেকে ৬ মাসের মধ্যেই বেশি উপযোগী এবং কার্যকর। আর তাই এমতাবস্থায় ডাক্তারের সাথে আলাপ করতে খুব বেশি অপেক্ষা করবেন না।

যৌনাঙ্গের অস্বাভাবিক আকার

এটা কি স্বাভাবিক?

যখন ছেলে শিশুর জন্ম হয় তখন তার যৌনাঙ্গ, বিশেষ করে অণ্ডকোষ আপনার অনুমানের তুলনায় একটু বড়ও হতে পারে। এমনটা আসলে কেন হয়? শিশুর জন্মের আগে মায়ের কাছ থেকে বেশ কিছু হরমোন এর সংস্পর্শে আসতে পারে যার কারণে এমনটা হয়ে থাকে। এছাড়াও আলাদা করে কোন তরল আপনার শিশুর অণ্ডকোষের মধ্যে জমা থাকতে পারে, তবে এই ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই প্রস্রাবের সাথে এগুলো বের হয়ে যাবে।

মেয়ে শিশুর ক্ষেত্রেও এমনটা হতে পারে। আপনার মেয়ে শিশুর যৌনাঙ্গ জন্মের কিছুদিন পর্যন্ত একটু ফুলে থাকতে পারে। সে যাই হোক এই ধরনের ব্যাপার ঘটা খুবই স্বাভাবিক এবং কিছুদিনের মধ্যেই এটা ঠিক হয়ে যাবে।

আরেকটা মজার ব্যাপার জেনে রাখা ভালো, জন্মের প্রথম কয়েকদিন নবজাতক শিশু প্রস্রাবের মধ্য দিয়ে প্রচুর পরিমাণ তরল নির্গত করে আর এটার পরিমাণ এতটাই বেশি হয়ে থাকে যে, এ সময় তার শরীরের ওজন প্রায় দশ শতাংশ কমে যেতে পারে।

কখন উদ্বিগ্ন হবেন?

জন্মের প্রথম কয়েকদিনের মধ্যেই যদি এই অস্বাভাবিকতা ঠিক না হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই আপনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন। বিশেষ করে আপনার যদি ছেলেশিশু থাকে তাহলে এটা মনে রাখবেন যে ছেলে শিশুরা কোষবৃদ্ধি জনিত এক রোগে (hydrocele) আক্রান্ত হতে পারে যেটা ঠিক হতে প্রায় বছর খানেকেরও বেশি সময় লেগে যেতে পারে।

ডায়পারের মধ্যে রক্ত লক্ষ্য করা

উদ্বিগ্ন হবেন কি?

নতুন বাবা-মা দের জন্য খুব অল্প পরিমাণ হলেও,শিশুর ডায়পারের মধ্যে রক্ত দেখতে পাওয়াটা বেশ আতঙ্কজনক হয়ে উঠে, তবে এতে খুব একটা আশংকার কিছু নেই। এমনটা ঘটার অনেক কারণই থাকতে পারে,কিন্তু সবগুলোই সাময়িক ব্যাপার।

বিশেষ করে আপনার যদি মেয়ে শিশু হয় তাহলে গর্ভাবস্থায় আপনার হরমোনের সংস্পর্শে থাকার কারণে এমনটা হতে পারে। তবে এতে খুবএকটা ভয়ের কিছু নেই, এই ধরনের রক্ত ক্ষরণ নবজাতক মেয়ে শিশুদের জন্য বেশ স্বাভাবিক একটা ব্যাপারে এবং এটা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে।

আরেকটা ব্যাপার জেনে রাখা জরুরী, আপনার শিশুকে কি জন্মের পরপরই খতনা করানো হয়েছে? তাহলে সেই ক্ষত থেকেও সাময়িক ভাবে রক্ত বের হতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত মলত্যাগ বা কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে শিশুর মলদ্বার আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে। এটা রক্তপাতের একটা কারণ হতে পারে।

কখন উদ্বিগ্ন হবেন?

যদিও এগুলো সবই স্বাভাবিক কিছু ব্যাপার তবে সাবধানতার জন্যএবং আপনার মানসিক সান্ত্বনার জন্য হলেও রক্ত দেখার সাথে সাথেই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেয়া ভালো। কেননা নতুন বাবা মার ক্ষেত্রে এই ধরনের ব্যাপার ঘটলে তা তাদের রাতের ঘুম নষ্ট করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।

নবজাতক শিশুর চোখ যদি ট্যারা হয়

এতে কি উদ্বিগ্ন হবেন?

জন্মের পরপর কিছু সময় ধরে শিশুর চোখের মধ্যে এমন অস্বাভাবিকতা দেখা যেতেই পারে। কেননা আরো অনেক নতুন কিছুর সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার মতই দৃষ্টিশক্তিও শিশুর জন্য একদমই নতুন একটা ব্যাপার। এবং প্রাথমিক ভাবে চোখের পেশির উপরে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ শিশুর নাও থাকতে পারে।

আরেকটা মজার ব্যাপার হলো জন্মের পর বাচ্চার নাক একটু বড় থাকে। নাকের কারণে বাচ্চার চোখের সাদা অংশ কিছুটা দেখা নাও যেতে পারে। এটা pseudoesotropia নামের দৃষ্টিভ্রম তৈরি করতে পারে। তাই প্রাথমিক অবস্থায় নবজাতক শিশুর চোখ ট্যারা না হলেও কিছুটা ট্যারা দেখাতেও পারে।

তাই একটু সতর্ক দৃষ্টিতে খেয়াল করে দেখুন যে আপনার শিশুর চোখ কি একই সমান্তরাল আছে কিনা এবং দুটো চোখই একসাথে সচল কি না। এটা ঠিক থাকলে নাকের অতিরিক্ত পেশির কারণে সাময়িক ট্যারার মত দেখাটা আপনার চোখের ভ্রমও হতে পারে।

কখন উদ্বিগ্ন হবেন?

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ লেভিনের মতে, যদি আপনার শিশুর এই ট্যারা জনিত সমস্যা তার বয়স ছয় মাস হওয়ার পরেও পরিলক্ষিত হয় তবে ডাক্তারকে জানাতে হবে। এছাড়াও আপনার শিশুর দুই চোখের সঞ্চলন যদি দুই দিকে হয় তাহলে সে strabismus এ আক্রান্ত। আর যদি শুধু একটা চোখের ক্ষেত্রেই একটু ব্যতিক্রম হয় তাহলে আপনার শিশু amblyopia অথবা lazy eye দ্বারা আক্রান্ত। এসব ক্ষেত্রে জরুরী ভিত্তিতে শিশুরোগ অথবা চক্ষু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন।       

সবার জন্য শুভকামনা। 


Spread the love

Related posts

Leave a Comment