ঘুমন্ত শিশুর কিছু আচরণ। নাক ডাকা, ঘেমে যাওয়া, দাঁত কামড়ানো এবং অন্যান্য

Spread the love

বেশীরভাগ বাবা মায়েদের মতে তাদের সুস্থ স্বাভাবিক শিশুর ঘুম একদম শান্তশিষ্ট ধরনের হয়। তবে আপনার শিশু কিন্তু ঘুমের মধ্যে এমন সব কাজ করতে পারে যেগুলো দেখে আপনি যেমন অবাক হবেন, তেমনি কিছু কিছু আচরণ উদ্বেগের কারণও বটে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘুমের মধ্যে শিশুদের এই ধরনের কাজের জন্য দুশ্চিন্তার কিছুই নেই, এগুলো খুবই স্বাভাবিক। তবে এর মধ্যে কিছু কিছু আচরণ আছে যেগুলো পরীক্ষা করে নেয়া ভালো।

বিজ্ঞাপণ

নাক ডাকা, মুখ দিয়ে শব্দ করা এবং মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নেয়া

আপনার শিশু যদি ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে, মুখ দিয়ে শব্দ করে এবং মুখ দিয়েই নিঃশ্বাস নেয় তাহলে এই ব্যাপারে আপনার শিশুর ডাক্তারের সাথে আলাপ করে নেয়া উচিৎ। তবে এমনটা যদি হয় যে, শুধুমাত্র ঠাণ্ডা লাগলেই শিশু নাক ডাকে এবং এই ধরনের শব্দ করে তাহলে এটা খুবই স্বাভাবিক।

তবে এটা জেনে রাখা ভালো যে, অন্যান্য বেশ কিছু রোগের লক্ষণের মধ্যেও কিন্তু নাক ডাকা অন্যতম। American Academy of Pediatrics এর মতে শিশুর মধ্যে নাক ডাকার অভ্যাস দেখলে তাকে ডাক্তারের দ্বারা পরীক্ষা করে নেয়া উচিৎ।

যদি শিশুর নাক বন্ধ থাকার কারণে এমনটা হয়ে থাকে তাহলে শিশুর নিঃশ্বাস আরো আরামদায়ক করার জন্য vaporizer অথবা humidifier ব্যাবহার করে দেখতে পারেন। আপনার শিশুর যদি সিজনাল এলার্জি (Seasonal Allergy) থাকে, তাহলে চেষ্টা করবেন সে যাতে অ্যালার্জেন থেকে দুরে থাকে।

আপনার শিশু যদি ঘুমের মধ্যে অনেক জোরে নাক ডাকে, নিঃশ্বাসের মধ্যে বেশ খানিকটা সময় বিরতি থাকে অথবা নিঃশ্বাস নিতে যদি সে হাঁপিয়ে উঠে তাহলে আপনার শিশু হয়তো স্লীপ অ্যাপনিয়াতে (Sleep apnea) তে ভুগছে।

শিশুদের এই sleep apnea রোগের অন্যতম কারগুলো হল টনসিল এবং এডিনয়েডের আকার বড় হয়ে যাওয়া। অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে ওজন বেশি হয়ে যাওয়া এবং চিবুক ও মুখের কিছু অস্বাভাবিক আকৃতি (Cleft palate) অন্যতম।

৩ বছর থেকে ছয় বছরের সময়টাতেই শিশুদের মধ্যে এই sleep apnea রোগ বেশি দেখা যায়। কেননা এই সময়টাতে শ্বাসনালীর তুলনায় টনসিল এবং এডিনয়েডের আকার বড় থাকে।   তবে তিন বছর ছোট শিশুদের মধ্যেও এই ধরনের সমস্যা দেখা যেতে পারে।

ঘুমের মধ্যে ঘেমে যাওয়া

কোন কোন শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে তারা যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকে, সেই সময়টাতে তাদের প্রচণ্ড পরিমাণে ঘাম হয়। এভাবে তারা ঘুমের মধ্যেই ভিজে একদম জবজবে হয়ে পড়ে।

শিশুর গভীর ঘুমের সময়টা হল, যে সময়টাতে শিশু একদম নিরবচ্ছিন্ন ভাবে ঘুমাতে পারে। আপনার শিশুর শরীর নতুন আরেকটি দিনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, তাই শিশুর ঘাম নিয়ে অতটা উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। শিশুর রাতের বেলায় ঘামানোটা কখনো কখনো sleep apnea এর লক্ষণ হলেও, রাতের বেলায় এই ধরণের ঘাম নিয়ে স্বাভাবিকভাবে খুব একটা দুশ্চিন্তার কিছু নেই।

তবুও একটু লক্ষ্য রাখুন যে শিশুর ঘুমটা আরামদায়ক হচ্ছে কি না। শিশুকে ঘুমানোর সময় সুতির হালকা কাপড় দিন এবং তার ঘরের তাপমত্রা আরামদায়ক কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

তবে যদি তার ঘামের সাথে সাথে নাক ডাকা এবং নিশ্বাসের বিরতির লক্ষণ থাকে তবে ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।

নিঃশ্বাসের মাঝে লম্বা বিরতি

আপনি হয়ত লক্ষ্য করে দেখবেন যে ঘুমানোর সময় আপনার শিশুর শ্বাস প্রশ্বাস নেয়ার ছন্দ কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে। হুট করে দেখবেন আপনার শিশু বেশ দ্রুত শ্বাস নিচ্ছে এরপর আবার কিছু সময় ধরে ধীরে ধীরে শ্বাস নিয়ে ৫ থেকে ১০ সেকেন্ডের মত একটা লম্বা বিরতি নিয়ে আবার স্বাভাবিক নিঃশ্বাসে ফিরে আসছে।

শিশুর এই রকম নিঃশ্বাসের বিরতির সাথে নাক ডাকা এবং গলা দিয়ে আওয়াজ হওয়া sleep apnea এর একটি লক্ষণ। তবে মাঝেমধ্যে শ্বাস প্রশ্বাসের সাময়িক এমন বিরতি একদমই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। এটা নিয়ে তেমন একটা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই।

অনেক শিশু ঘুমের মধ্যে আবার মাঝে মাঝে দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে। তখন দেখতে মনে হতে পারে যে তার নিঃশ্বাস কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে ছিল। তবে জেনে রাখা ভালো যে এ ধরণের দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলা একদম স্বাভাবিক একটা ব্যাপার।

শিশুদের ঘুমের মধ্যে শরীর দোলানো এবং মাথা ঝাঁকানো

শিশুদের ঘুমের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট ছন্দে শরীর দোলানো এবং মাথা ঝাঁকানো একদম স্বাভাবিক একটা বিষয়। আপনার শিশু শরীর দোলাতে দোলাতে সে হয়ত হুট করে বিছানায় উঠে বসতে পারে এমনকি বিছানার দেয়ালে তার মাথা ও বাড়ি দিতে পারে।

যদিও পুরো বিষয়টা দেখতে মোটেও স্বাভাবিক না তবে এটা ঘুমের মধ্যে আঙুল খাওয়ার মতই একদম স্বাভাবিক। তবে কখনো শিশুরা ঘুমের মধ্যে দাঁতে ব্যথা অথবা কানে ব্যথা থেকে নিজেদের মনোযোগ সরিয়ে রাখতেও বিছানার দেয়ালে মাথা বাড়ি দিতে পারে।

এই ধরনের বিষয় সাধারণত শিশুর বয়স যখন এক বছরের মত, তখন শুরু হয়। তবে তিন থেকে চার বছর বয়সের মধ্যেই এই ধরনের সমস্যা একদম ঠিক হয়ে যায়। তবে দেয়ালে মাথা বাড়ি দেয়ার বিষয়টা শিশুর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি যেমন অটিজমের কারণেও ঘটে থাকে। তবে এটা অটিজমের অনেকগুলো লক্ষণের মধ্যে একটা। শুধু মাত্র মাথা ঝাঁকানো অথবা বাড়ি দেয়াটা শিশুর কোন রোগ নয়।

ঘুমের মধ্যে শিশুর শরীর ঝাঁকি খাওয়া এবং অন্যান্য অস্থিরতা

কিছু শিশু ঘুমিয়ে পড়লে তাদের শরীর কিছুটা কেঁপে উঠে। এমনটা শিশুর মধ্যে হুট করেই কয়েক সেকেন্ড সময়ের জন্য হয় এবং মিনিটে বেশ কয়েকবার এমনটা হয়ে থাকে। তবে এমন সমস্যা ঘুমের মধ্যে এক মিনিট থেকে প্রায় ঘণ্টা খানেক সময়ের জন্যও দীর্ঘায়ীত হতে পারে।

ঘুমের মধ্যে আপনার শিশু কেঁপে উঠতে পারে এবং ঝাঁকি খেতে পারে। এমনকি শিশু ঘুমের মধ্যে তার পায়ের গোড়ালিও বাঁকা করে রাখতে পারে। এই ধরনের নড়াচড়ার জন্য শিশুরা সাধারণত ব্যাথা পায় না তবে এই ধরনের লক্ষণগুলো শিশুকে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে ঘুমাতে বাধা সৃষ্টি করে।

শরীরে আয়রন এবং ফলিক এসিডের অস্বাভাবিক মাত্রার জন্য এমনটা হয়ে থাকতে পারে। তাই এমন লক্ষণ দেখা দিলে আপনার শিশুর ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

বিজ্ঞাপণ

ঠিক এই ধরনেরই আরেকটা রোগ restless legs syndrome এ কোন কোন শিশু ভুগে থাকে। এই রোগের কারণে শিশু তার পায়ে সবসময় অস্বস্তি বোধ করে এবং এই অস্বস্তি কাটানোর জন্য সে অনবরত নড়াচড়া করতে চায়।  তাই এই ধরনের যে কোন সমস্যার কারণে যদি শিশুর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হন।

শিশুর অস্বাভাবিক ভঙ্গীতে ঘুমানো

অনেক শিশু আছে যারা ঘুমের মধ্যে অনেক নড়াচড়া করে এবং সারারাত ধরে তারা নড়াচড়া করতে করতেই ঘুমায়। এরমধ্যে কোন শিশু আছে যাদের ঘুমানোর জন্য প্রিয় কোন একটা অবস্থা আছে আর তারা দীর্ঘ সময় ধরেই সেই অবস্থায় ঘুমায়। অপরদিকে অন্য শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, তারা কখনোই এক ভঙ্গীতে বেশীক্ষণ শুয়ে থাকতে পারে না।

দেখা যায় একজন চিত হয়ে হাত পা ছাড়িয়ে স্টারফিশের মত ঘুমায় অপরদিকে অন্যজন একদম একটা বলের মত করে গোল হয়ে ঘুমায়। আবার কোন শিশুকে দেখা যায় হাত ও পা ভাজ করে ঘুমাচ্ছে।

এই বিভিন্ন ধরনের ঘুমের ভঙ্গির মধ্যে কিছু কিছু ভঙ্গি আছে যেগুলো শিশুর মধ্যে কোন ধরনের অস্বাভাবিকতা প্রকাশ করে। ঘুম বিশেষজ্ঞ যডি মিনডেলের মতে, শিশু যদি বিছানার সাইড দিয়ে মাথা ঝুলিয়ে দিয়ে ঘুমায় অথবা বালিশের উপরে মাথা উঁচু করে রেখে ঘুমায় তাহলে ধারনা করা যেতে পারে শিশুর sleep apnea হয়েছে। কেননা এই রোগে আক্রান্ত শিশুরা প্রায়শই এমন ভাবে ঘুমিয়ে থাকে। এভাবে ঘুমানো শিশুর শ্বাস প্রশ্বাসের রাস্তা সচল রাখতে সাহায্য করে।

শিশুকে তার মত করে ঘুমাতে দিন, কেননা বেশীরভাগ ঘুমের ভঙ্গীতেই কোন ধরনের সমস্যা হয় না। এমনকি সেই ভঙ্গি দেখতে খুব অস্বাভাবিক মনে হলেও, আদতে একদম স্বাভাবিক।

তবে আপনার যদি কোন কারণে সন্দেহ হয় যে, আপনার শিশু sleep apnea রোগে আক্রান্ত তাহলে শিশুর ডাক্তারকে এই সম্পর্কে বলুন। আপনার ডাক্তারই সিদ্ধান্ত নিবে যে শিশুর কোন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং চিকিৎসার প্রয়োজন আছে কিনা।

ঘুমের মধ্যে শিশুর দাঁতে দাঁত কামড়ানো

দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, দাঁতের অস্বাভাবিক অবস্থা অথবা ব্যথা এমন বিভিন্ন কারণেই রাতের বেলায় ঘুমের মধ্যে শিশু দাঁত কামড়াতে পারে। এছাড়া অ্যালার্জি জনিত কারণেও মাঝেমধ্যে এমনটা হয়ে থাকে।

বেশীরভাগ সময়েই দাঁতে দাঁত কামড়ানোর বিষয়টি শিশুর কোন ক্ষতি করে না এবং এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপও নিতে হয় না। কেননা ধীরে ধীরে শিশুর এই অভ্যাস ঠিক হয়ে যায়। তবুও দাঁতের ডাক্তারের কাছ থেকে শিশুকে একবার দেখিয়ে নিয়ে আসাটা ভাল। এছাড়াও রাতের বেলায় আপনি শিশুকে আদর করে, জড়িয়ে ধরে অথবা পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়ে আরাম দিতে পারেন।

ঘুমের মধ্যে শিশুর হাঁটা

ঘুমের মধ্যে যদি শিশু হাঁটে তবে শিশুকে দেখলে মনে হতে পারে যে সে জেগে আছে, কিন্তু আসলে সে ঘুমন্ত। তার চোখ খোলা থাকবে কিন্তু তার চেহারার মধ্যে এক ধরনের শুন্যতা দেখাবে।

শিশু তার বিছানা থেকে উঠে যাবে এবং হাঁটবে অথবা দেখা যাবে সে খেলছে। এরমধ্যে যদি সে কথাও বলে থাকে তবে সেগুলোর কোন অর্থ থাকবে না। শিশু কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্তও এভাবে ঘুমের মধ্যে হাঁটতে পারে।

তিন থেকে সাত বছর বয়সের শিশুর মধ্যে এই ধরনের সমস্যা প্রায়শই দেখা যায়, তবে এই ধরনের সমস্যা যে কোন বয়সেই কিন্তু হতে পারে। সাধারণত শিশু যদি কোন বিষয় নিয়ে চিন্তিত হয় অথবা খুব বেশি ক্লান্ত হয় তাহলে তারা এভাবে ঘুমের মধ্যে হাঁটে। এছাড়াও sleep apnea রোগে আক্রান্ত শিশুরাও রাতে ঘুমের মধ্যে হাঁটাহাঁটি করে থাকে।

সাধারণত রাতের বেলায় ঘুমের মধ্যে হাঁটাহাঁটি কোন ক্ষতি করে না, তবে আপনার শিশু যদি এমন প্রায়শই করে থাকে তাহলে আপনার শিশুর ডাক্তারের সাথে এ বিষয়ে পরামর্শ করুন। এছাড়া শিশু যাতে করে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেয় এবং একটা নিয়মিত ঘুমের রুটিন মেনে চলে সেদিকে একটু লক্ষ্য রাখুন।

দুঃস্বপ্ন

দুশ্চিন্তা  এবং ক্লান্তির কারণে শিশু ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখতে পারে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে রাতের শেষ ভাগের দিকে যখন শিশুর ঘুম হালকা থাকে বা চোখের পাতা পিটপিট করতে থাকে (REM) তখন এটা ঘটে। শিশু থেকে পূর্ণ বয়স্ক যে কারো মধ্যেই এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। জ্বর, ওষুধ, রাতে ঘুমানোর অসুবিধা, শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা এই ধরনের অনেক কারণেই শিশু রাতে ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখতে পারে।

দুঃস্বপ্ন সাধারণত একটু বড় শিশু এবং প্রি-স্কুলের শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। কেননা এই ধরনের শিশুর চিন্তা ভাবনা ধীরে ধীরে প্রসারিত হতে থাকে এবং শিশু বুঝতে শিখে যে অনেক কিছুই তাদের ক্ষতি করতে পারবে।

বিজ্ঞাপণ

এই দুঃস্বপ্নের কারণে আপনার শিশু ঘুম থেকে ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় জেগে উঠতে পারে। এমনকি স্বপ্নের কথা তার মনেও থাকতে পারে। আপনার শিশু যদি এই ধরনের দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম থেকে উঠে যায় তাহলে যতটা সম্ভব তাকে আদর করে আবার ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করুন।

যদি শিশুর প্রায়শই এই ধরনের দুঃস্বপ্ন দেখতে থাকে তাহলে দিনের বেলায় বোঝার চেষ্টা করুন শিশু ঠিক কোন কারণে রাতে ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখে এবং সেই কারণটি ঠিক করতে চেষ্টা করুন। এছাড়া শিশুর নিয়মিত দুঃস্বপ্নের জন্য যদি আপনি একটু বেশি চিন্তিত হন তাহলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে ভুলবেন না।

রাতে ঘুমের মধ্যে আতঙ্ক (sleep terror)

শিশু যদি ঘুম থেকে আতঙ্কিত অবস্থা হঠাৎ করে উঠে যায় তাহলে শিশু হয়ত night terror/sleep terror রোগে ভুগছে। সে এভাবে ঘুমের মধ্যে চিৎকার করে উঠতে পারে এবং প্রচণ্ড পরিমাণে ঘামাতে পারে। পরবর্তীতে এইসব কথা শিশুর মনে না থাকার সম্ভাবনা বেশি এবং এই সময়ে শিশুকে ঘুম থেকে জাগাতেও একটু কষ্ট হবে।

দুঃস্বপ্নের মতই এই ধরনের night terror ও শিশুর জ্বর অথবা ক্লান্তির কারণে হতে পারে। যদিও এই ধরনের সমস্যা রাতের প্রথম ভাগের দিকে গভীর ঘুমের সময়ে হয়ে থাকে।

চার থেকে বারো বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে এই ধরনের আতঙ্ক সাধারণত দেখা যায়, তবে এটা যে কোন বয়সেই হতে পারে। শিশুর নার্ভাস সিস্টেমের পরিপক্বতা আসার পর সাধারণত এই ধরনের সমস্যা ঠিক হয়ে যায়।

পরিমানমত না ঘুমানোর কারণেও শিশুর মধ্যে এই ধরনের সমস্যা দেখা যায়। তাই একটু লক্ষ্য রাখুন যে শিশু একটা নির্দিষ্ট রুটিনে পরিমাণ মত ঘুমাচ্ছে কি না। শিশুর মধ্যে যদি এই ধরনের সমস্যা প্রায়ই দেখা যায় তাহলে ডাক্তারের সাথে আলাপ করুন। শিশুর স্ট্রেস কমানোর ব্যাপারে তিনি পরামর্শ দিবেন এবং কোন ক্ষেত্রে ওষুধেরও প্রয়োজন পড়তে পারে। 

সবার জন্য শুভকামনা।


Spread the love

Related posts

Leave a Comment