১৮ সপ্তাহের গর্ভাবস্থা | ভ্রূণের বৃদ্ধি, মায়ের শরীর এবং কিছু টিপস

Spread the love

গর্ভাবস্থার ১৮ তম সপ্তাহ মায়েদের জন্য একটি স্মরণীয় সময় হয়ে উঠতে পারে কারণ এসময় অনেক মা গর্ভের ভ্রূণের নড়াচড়া প্রথমবারের মত বুঝতে পারেন। তবে ভ্রূণের নড়াচড়া যদি এ সপ্তাহে বুঝতে না পারেন ঘাবড়ে যাবেন না। বেশিরভাগ মায়েরা ১৮-২৪ সপ্তাহের মধ্যে যে কোন সময় শিশুর নড়াচড়া অনুভব করতে শুরু করতে পারেন।

গর্ভাবস্থার ১৮ তম সপ্তাহকে প্রেগন্যান্সির দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারের পঞ্চম সপ্তাহ হিসেবে ধরা হয়। এ সপ্তাহের অবস্থান গর্ভাবস্থার পঞ্চম মাসে।

বিজ্ঞাপণ
১৮ সপ্তাহের গর্ভাবস্থা

গর্ভধারণের ১৮ সপ্তাহে গর্ভের শিশুর বৃদ্ধি

১৮ তম সপ্তাহে এসে ভ্রূণটির চেহারা অনেক বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠবে এবং তার ভ্রু আর চোখের পাতার লোমগুলো পুরোপুরি সুগঠিত হয়ে যাবে।

এখন থেকেই সে তার ঘুমানোর অভ্যাস রপ্ত করতে শুরু করবে। গর্ভে সে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে থাকে আবার কিছু সময় জেগে থাকে। সারাদিন জুড়ে তার এই রুটিনই চলতে থাকে।

ভ্রূণটি এ সময় থেকেই হাই তোলা এবং হেঁচকি তোলা শুরু করবে। তার হেঁচকি তোলা আর কিছুদিন পর থেকে মাও অনুভব করতে পারবেন। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে ভ্রূণের হাই তোলা তার মস্তিষ্ক ও কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশের সাথে সম্পর্কিত (সূত্র)। তবে এটি এখনো পুরোপুরি প্রমানিত নয়।

গর্ভের শিশুটির আকার ১৮ সপ্তাহে একটি ক্যাপ্সিকামের সাথে তুলনা করা যায়।এ সময় ভ্রূণের উচ্চতা থাকে প্রায় ৫.৫৯ ইঞ্চি বা ১৪.২ সেমি এবং এর ওজন হয় আনুমানিক ৬.৭ আউন্স বা ১৯০ গ্রামের মত।

১৮ তম সপ্তাহের দিকে এসে ভ্রূণের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক বিকাশের মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। সেগুলো নিম্নরূপঃ

কান

ভ্রূণের শ্রবণ যন্ত্র এ সপ্তাহে প্রায় পুরোপুরি বিকশিত। এ সময় উচ্চ কোন শব্দ হয়তো তার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাবে। তবে সবচাইতে ভালোভাবে যে শব্দটি সে এখন শুনতে পায় তা হল মায়ের হৃদপিণ্ডের শব্দ।

চোখ

ভ্রূণের চোখের রেটিনা আলো দেখতে পারার মত যথেষ্ট বিকশিত। ভ্রূণের চোখের পাতা বন্ধ থাকলেও তার চোখগুলো এখন আলোর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে উঠবে। যদি ভ্রূণের অবস্থান অনুযায়ী পেটের ওপর আলো ফেলা হয়, তাহলে সে আলোর উৎস থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে সক্রিয় হবে।

জননাঙ্গ

ভ্রূণটি মেয়ে হলে তার ফেলপিয়ান টিউব এবং জরায়ু তাদের নির্দিষ্ট স্থানে গঠিত হয়ে গেছে আর শিশুটি ছেলে হলে তার যৌনাঙ্গ পুরোপুরি বিকশিত এবং তা আলট্রাসাউন্ডে দেখা যেতে পারে। তবে আলট্রাসাউন্ডে শিশুটির লিঙ্গ বোঝা যাবে কিনা তা নির্ভর করে আলট্রাসাউন্ড করার সময় ভ্রূণটির অবস্থানের উপর।

স্নায়ুতন্ত্র

ভ্রূণের স্নায়ুগুলোর উপর মায়েলিন (Myelin) নামক একধরনের আবরণ গঠিত হতে থাকে। এই প্রক্রিয়াকে মায়েলিনেশন (Myelination)  বলা হয়। এটি স্নায়ু কোষগুলোকে রক্ষা করার সাথে সাথে স্নায়ু কোষগুলোর মধ্যে যোগাযোগকে আরও ত্বরান্বিত করে। ফলে শরীরের বাকি অংশ থেকে মস্তিষ্কে এবং মস্তিষ্ক থেকে শরীরের বাকি অংশে সিগন্যাল পরিবহনও এখন অনেক জোরালো হবে। এই প্রক্রিয়াটি ভ্রূণের মস্তিষ্কের বিকাশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

মায়েলিনেশন শিশুর জন্মের পরও প্রায় এক বছর ধরে চলতে থাকে।   এছাড়াও মস্তিষ্কের স্নায়ুগুলো ভ্রূণের ৫ টি ইন্দ্রিয়ের ( স্পর্শ, স্বাদ, গন্ধ, দৃষ্টি ও শ্রবণ) বিকাশের জন্য তৈরি হতে থাকে।

১৮ তম সপ্তাহে মায়ের শারীরিক পরিবর্তন

গর্ভাবস্থার ১৮ সপ্তাহে গর্ভের শিশুর ওজনমায়ের ওজন দুটোই বাড়তে থাকে। তাই অনেক মায়ের পেটের আকার এ সপ্তাহ থেকেও বাড়তে শুরু করতে পারে। আবার অনেকের এ সময়ে এসেও পেটের আকারে উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন নাও আসতে পারে। দুটি ব্যাপারই খুবই স্বাভাবিক।

কারো যদি মনে হয় পেটের আকারে কোন পরিবর্তন আসেনি তবে দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই। মায়ের পেটের আকার কেমন হবে তা অনেকগুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করে, যেমন- হরমোন, গর্ভাবস্থার আগের ওজন, কততম গর্ভাবস্থা এবং মায়ের পেটের পেশীর ধরণ ইত্যাদি।

প্রথমবার মা হতে যাওয়া অনেকেই এ সময়টিতে বাচ্চার হালকা নড়াচড়া টের পেতে পারেন। এটিকে “কুইকেনিং” বলা হয়। তবে আপনি বুঝতে পারুন আর নাই পারুন, গর্ভের ভ্রুন এখন তাকে ঘিরে থাকা অ্যাম্নিওটিক ফ্লুইডে ভেসে নিয়মিত নড়াচড়া করছে।

এসময় গর্ভের শিশুর নড়াচড়ার কারণে আপনার পেটের মধ্যে বুদবুদ ওঠার মতো বা ভেতরে কোনো কিছু ওড়ার মতো অনুভূতি হতে পারে, গ্যাস বা বদহজমের কারণে কখনো কখনো যেমনটা হয়।আপনার মনে হতে পারে যে পেটের ভেতর হয়তো একটি প্রজাপতি ঢুকে গেছে আর ক্রমাগত উড়ছে।

মায়ের পেট ও বুকের মাঝামাঝি এসময় থেকে কালো দাগ দেখা দিতে পারে। এটা খুবই স্বাভাবিক, কারণ ক্রমবর্ধিষ্ণু শিশুকে জায়গা করে দেয়ার জন্য মায়ের পেটও বিস্তৃত হচ্ছে। এধরনের দাগকে লিনিয়া নিগ্রা (Linea nigra) বলে।

গর্ভাবস্থার এ সময় যেসব উপসর্গ বেশি দেখা দিতে পারে তা হল –

ব্যাক পেইন

গর্ভাবস্থায় অন্য অনেক সমস্যার মত ব্যাক পেইনের কারণ হিসেবেও হরমোনকে দায়ী করা যেতে পারে। গর্ভাবস্থায় হরমোনের নিঃসরণের কারণে সন্তান জন্মদানের প্রস্তুতি হিসেবে পেলভিক এরিয়ার লিগামেন্টগুলো নরম হয়ে যায় এবং জয়েন্টগুলো ঢিলে হয়ে যায়। এর ফলে মায়ের শরীর অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে এবং হাঁটার সময়, অনেকক্ষণ বসে থাকলে কিংবা চেয়ার থেকে ওঠার সময়, বা কোন কিছু তোলার সময় ব্যাথা অনুভূত হয়।

গর্ভাবস্থায় জরায়ু বড় হওয়ার সাথে সাথে মায়ের শরীরের ভর-কেন্দ্রও পরিবর্তিত হয় এবং পেটের পেশীগুলো সম্প্রসারিত ও দুর্বল হয়ে যায়। এর ফলে মায়ের Posture আক্রান্ত হয় এবং পিঠের উপর অতিরিক্ত চাপ পরে।

এছাড়াও যেহেতু মায়ের শরীর এ সময় অতিরিক্ত ওজন বহন করে তাই এ সময় মায়ের শরীরের পেশী এবং জয়েন্টগুলোর উপর চাপ বেশী থাকে। এই কারণে গর্ভাবস্থায় ব্যাক পেইন বা পিঠ ব্যাথা দেখা দিতে পারে।

বিজ্ঞাপণ

মাথা ঘোরা বা জ্ঞান হারানোর অনুভূতি

গর্ভাবস্থায় হার্ট রেট বেড়ে যায় কারণ হৃদপিণ্ডকে প্রতি মিনিটে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশী রক্ত পাম্প করতে হয় এবং শরীরে রক্তের পরিমান প্রায় ৩০-৫০ ভাগ বেড়ে যায়।  

বেশিরভাগ সময় গর্ভাবস্থায় হরমোনের প্রভাবে রক্তনালীগুলো স্ফীত হয়ে যায় যার কারনে রক্তচাপ কমে যায়। এছাড়াও দ্বিতীয় ও তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে বর্ধিত জরায়ুটি মায়ের শরীরের নিম্নাংশের রক্তনালীর উপর চাপ ফেলতে থাকে যার কারনে ব্লাড প্রেসার কমে যেতে পারে। আমাদের শরীর এই পরিবর্তনগুলোর সাথে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা রাখে। তবে মাঝে মাঝে খুব দ্রুত মানিয়ে নিতে পারেনা। তখন মায়েরদের মাথা ঘুরে ওঠা, অচেতন অনুভব হওয়া বা কিছু সময়ের জন্য জ্ঞান হারানোর মত অনুভুতি হতে পারে।

হঠাৎ করে বসা বা দাঁড়ানো কিংবা গর্ভাবস্থার শেষের দিকে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকার কারনেও মায়ের ব্লাড প্রেসার কমে যেতে পারে এবং এ ধরনের অনুভুতি হতে পারে।

ইডেমা বা শরীরে পানি আসা

গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক অবস্থার তুলনায় মায়ের শরীরে প্রায় ৫০ ভাগ বেশী রক্ত ও তরল উৎপন্ন হয়। এই অতিরিক্ত রক্ত এবং তরলের কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যায়।

বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থায় শরীর ফুলে যাওয়া বা ইডেমা খুবই স্বাভাবিক। এতে ভয়ের কোন কারণ নেই । বেশীর ভাগ মায়েরাই কম বেশী এ সমস্যায় ভোগেন। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইডেমা ভয়ের কারণ হতে পারে। যদি শরীর ফুলে যাওয়ার সাথে সাথে মাথা ব্যাথা থাকে এবং দৃষ্টি ঝাপসা মনে হয় তবে তা প্রি-এক্লাম্পশিয়ার লক্ষণ হতে পারে।

আরেকটি ভয়ের কারণ হলো যদি শুধুমাত্র এক পা ফুলে যায়। যদি শুধু এক পা ফুলে যায় এবং পায়ের কাফ ও উরুতে ব্যাথা অনুভূত হয় তবে তা রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষন হতে পারে। হরমোনের পরিবর্তনের কারণে গর্ভাবস্থায় রক্ত জমাট বাঁধতে পারে বিশেষ করে প্রথম ট্রাইমেস্টারে। তাই যখনি মনে হবে আপনার এক পা অন্য পায়ের চাইতে বেশী ফুলে আছে অতিসত্বর আপনার ডাক্তারকে জানান।

স্ট্রেচ মার্কস

গর্ভাবস্থার সাধারনত ৬ থেকে ৭ মাসের দিকে স্ট্রেচ মার্কস দেখা দেয় তবে অনেকের ক্ষেত্রে আরও আগেও দেখা দিতে পারে। প্রথম দিকে স্ট্রেচ মার্কস বা চামড়ার উপর দেখা দেয়া ফাটা দাগগুলো হালকা গোলাপি বর্ণের থাকে এবং এতে চুলকানি থাকতে পারে। ধীরে ধীরে দাগগুলোর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বাড়তে থাকে এবং এগুলো লাল বা বেগুনী রঙ ধারন করতে পারে। প্রসবের পর এগুলো ধীরে ধীরে বিবর্ণ হয়ে যায় এবং ধুসর রং ধারণ করতে পারে।

বেশীরভাগ মহিলাদের সাধারণত পেটে ফাটা দাগ হলেও ব্রেস্ট, উরু, কোমর এবং নিতম্বে দেখা যাওয়াটাও স্বাভাবিক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শরীরের চর্বিযুক্ত স্থানে স্ট্রেচ মার্কস বেশি দেখা যায়।

লেগ ক্র্যাম্প বা পায়ে খিল ধরা

লেগ ক্র্যাম্প সাধারণত গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারে শুরু হতে পারে এবং সময় বাড়ার সাথে সাথে মায়ের পেটের আকার যত বৃদ্ধি পায়, এর তীব্রতা তত বাড়তে পারে। পায়ে খিল ধরা দিনের বেলা হতে পারে তবে সাধারণত রাতের দিকে বেশি হয়।

গর্ভাবস্থায় জরায়ুর আকার বাড়ার কারণে এবং শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ার কারনে পায়ের রক্তনালীতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। ফলে রক্তনালীগুলো সঙ্কুচিত হয়ে যায় এবং পা থেকে হৃদপিণ্ডে রক্ত চলাচল স্বাভাবিকের চাইতে ধীরে হয়। এ কারনে পায়ে ক্র্যাম্প হতে পারে।

এ সপ্তাহে হয়তো আপনি অনেকটাই সতেজ অনুভব করতে পারেন, কিন্তু আপনার ঘুমের সমস্যা এখনো হয়তো পুরোপুরি কাটেনি। এর একটা বড় কারণ হতে পারে আপনার বাড়ন্ত পেট। আপনি যদি চিৎ হয়ে শোন, আপনার ভারী হয়ে ওঠা জরায়ু পেছনের দিকে চাপ দেবে। আরো নির্দিষ্ট করে বললে চাপটা পড়বে সায়াটিক নার্ভে (Sciatic Nerve) এবং সেখানে তীব্র ব্যথা অনুভব হবে।

এসব ছাড়াও গর্ভকালীন সময়ে মায়েরা আরও অনেক ধরণের উপসর্গ অনুভব করতে পারেন। গর্ভকালীন সব ধরণের উপসর্গ নিয়ে জানতে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ুন।

গর্ভধারণের এ সপ্তাহে করনীয়

ব্যাক পেইন হলে আমরা সাধারণত বিছানায় শুয়ে থাকি তবে খুব বেশী সময় শুয়ে থাকা উচিত নয়। শুয়ে থাকলে ব্যাক পেইনের তেমন কোন উপশম হয়না বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা আরো বেড়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে শরীরচর্চা বা ব্যায়াম খুবই উপকারী।

গর্ভাবস্থায় স্ট্রেচিং ব্যায়াম করলে ব্যাক পেইন থেকে স্বস্তি মিলতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে এ ধরনের ব্যায়াম করার সময় তা দ্রুত করা না হয় বা স্ট্রেচিং বেশী করা না হয়। এর ফলে হিতে বিপরীত হতে পারে। ব্যায়ামের সময় সব সময় নিজের শরীরের কথা শোনার চেষ্টা করুন। যখনই মনে হবে অসুবিধা হচ্ছে বা ব্যাথা হচ্ছে তখন ব্যায়াম বন্ধ করুন।

তবে মনে রাখতে হবে গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে নিতে হবে কারণ আপনার এমন কোন কন্ডিশন থাকতে পারে যার জন্য কিছু কিছু ব্যায়াম বা ব্যায়াম করা পুরোপুরি আপনার জন্য নিষিদ্ধ হতে পারে।

সোজা হয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন। গর্ভবতী মায়েরা সাধারণত একটু ঝুঁকে থাকেন। এতে মেরুদণ্ডের উপর আরও চাপ পড়ে। যদিও সোজা হয়ে দাঁড়ানোটা এসময় একটু কঠিন হবে তারপরও চেষ্টা করুন যাতে দাঁড়ানোর সময় ঘাড় পেছনের দিকে থাকে। বেশীক্ষণ দাঁড়িয়ে না থাকার চেষ্টা করুন। দাঁড়িয়ে থাকতে হলে কিছুক্ষন পর পর বসে বিশ্রাম নিন।

শোয়া বা বসা থেকে দ্রুত না ওঠার চেষ্টা করুন। শুতে যাওয়ার সময় বা ওঠার সময় আগে কিছুক্ষন বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসে থাকুন। তারপর আস্তে আস্তে শুয়ে পড়ুন বা উঠে যান। এতে মাথা ঘোরানো অনুভূতি কম হবে।

বেশীক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে বা পা নিচের দিকে ঝুলিয়ে বসে থাকলে শরীরের শিরার উপর চাপ পরে। তাই বেশীক্ষণ দাঁড়িয়ে না থেকে কিছুক্ষন পর পর কিছু সময় বসে থাকুন। বসে কাজ করার সময় পা কিছুর উপর তুলে রাখতে পারেন। কাজের জন্য বেশীক্ষণ দাড়িয়ে বা বসে থাকতে হলে কিছুক্ষণ পর পর পায়ের উপর ভর পরিবর্তন করুন বা কিছুক্ষন পর পর একটু হেঁটে নিন। হাঁটা সবসময় শরীরের জন্য উপকারী।

এই সপ্তাহে প্রেগন্যান্ট মা-কে অ্যানোমালি স্ক্যান করার পরামর্শ দেয়া হতে পারে।  অ্যানোমালি স্ক্যান করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় গর্ভাবস্থার ১৮ থেকে ২২ সপ্তাহ(পঞ্চম মাস)। এ প্রক্রিয়ায় স্ক্রিনে গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক আকার অনেকখানি স্পষ্টভাবে দেখা যায় এবং বাচ্চার লিঙ্গ বা জেন্ডার সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। তবে এ স্ক্যানটি করার মূল কারণ হলো – গর্ভস্থ শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি হচ্ছে কিনা বা কোন শারীরিক অস্বাভাবিকতা আছে কিনা তা খুঁটিয়ে দেখা।

অ্যানোমালি স্ক্যানে মা বা গর্ভের ভ্রূণের কোন ক্ষতি হয়না, তবে মায়ের কিছুটা অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে কারণ গর্ভের শিশুকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য মায়ের পেটে কিছুটা চাপ দিয়ে স্ক্যান করা হয়।

সময় কাটানোর অংশ হিসেবে বাচ্চার নাম এখন থেকেই খুজতে পারেন। বাচ্চার সুন্দর আরবি বা বাংলা নাম ও নামের অর্থ জানতে Fairyland Baby Names Finder এর সাহায্য নিতে পারেন।

সবার জন্য শুভকামনা

<<গর্ভাবস্থা সপ্তাহ- ১৭
গর্ভাবস্থা সপ্তাহ- ১৯>>


Spread the love

Related posts

Leave a Comment