গর্ভাবস্থায় হেপাটাইটিস বি : সতর্ক থাকা জরুরী

Spread the love

হেপাটাইটিস বি কি?

লিভারের সাথে সম্পর্কিত একটি রোগ হলো ‘হেপাটাইটিস’। চিকিৎসাবিজ্ঞানে লিভার বুঝাতে ‘হেপাটো’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। হেপাটোসাইট মানে লিভারের কোষ, হেপাটিক মানে লিভার সম্পর্কিত কোনো কিছু, হেপাটাইটিস মানে লিভারে কোনো জীবাণু দ্বারা আক্রমণ।

হেপাটাইটিস রোগটি হয়ে থাকে হেপাটাইটিস ভাইরাস দ্বারা। যেহেতু আক্রমণটা হয়ে থাকে লিভারের উপর, সেহেতু একে এরূপ নামকরণ করা হয়েছে। হেপাটাইটিস ভাইরাস রয়েছে বিভিন্ন  ধরনের; এ, বি, সি, ডি, ই। হেপাটাইটিস ভাইরাসগুলোর মধ্যে ‘এ’ ও ‘ই’ ভাইরাস স্বল্পমেয়াদী লিভার প্রদাহ করে এবং ‘বি’ ও ‘সি’ দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহ করে।

বিজ্ঞাপণ

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে আমাদের দেশে বি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সাধারণ জনগণের মধ্যে ৫.৪% এবং গর্ভাবস্থায় ৩.৫%। বি ভাইরাসের সংক্রমণ দুটি পর্যায়ে হতে পারে। Acute বা স্বল্পমেয়াদি, Chronic বা দীর্ঘমেয়াদি।

হেপাটাইটিস বি শতকরা ৯৫% ক্ষেত্রে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। অর্থাৎ ৯৫% মানুষ বিশ্রাম এবং স্বাভাবিক খাবারে সুস্থতা অর্জন করে। শতকরা ৫ ভাগ ক্ষেত্রে হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়, যার জটিলতা হিসেবে সিরোসিস, গলার শিরা মোটা হয়ে যাওয়া, পেটে পানি আসা, রক্তবমি হওয়া এবং লিভার ক্যান্সার জাতীয় জটিলতা দেখা দিতে পারে।

এখানে একটি জিনিস উল্লেখযোগ্য যে, শিশুদের ক্ষেত্রে বড়দের উল্টো জিনিস ঘটে থাকে। অর্থাৎ হেপাটাইটিস বি থেকে কেবলমাত্র শতকরা ৫ ভাগ শিশু আরোগ্য লাভ করে এবং শতকরা ৯৫ ভাগ হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়। এজন্য হেপাটাইটিস বি-তে আক্রান্ত মহিলার গর্ভধারণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

গর্ভাবস্থায় হেপাটাইটিস বি এর প্রভাব

গর্ভাবস্থা মানুষের শরীরের একটা বিশেষ অবস্থা। হেপাটাইটিস বি তে আক্রান্ত মহিলা গর্ভধারণ করলে শরীরে ভাইরাসজনিত কারণে কোনো ক্ষতি হয় না। তবে মা থেকে শিশুতে বি ভাইরাস সংক্রামিত হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে।

জরায়ুর গর্ভফুলের শক্ত আবরণের জন্য সাধারণত গর্ভাবস্থায় মা থেকে শিশুতে  বি ভাইরাস সংক্রামিত হয় না। তবে শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় মায়ের রক্তের সঙ্গে শিশু সংস্পর্শ আসায় শিশু সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৪০ ভাগ।

গর্ভবতী মা যদি অ্যাকটিভ হেপাটাইটিস বি’তে আক্রান্ত হন, তাহলে তার পরিণাম গর্ভাবস্থা ছাড়া হেপাটাইটিস বি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মতো। গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যাকটিভ হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত মায়ের শিশুর মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ায় না এবং এ জন্য শিশুর জন্মগত ক্রটিও দেখা যায় না। তবে শিশুর ওজন কম হওয়া এবং নির্ধারিত সময়ের আগে জন্ম হওয়ার প্রবণতা দেখা যা।

ক্রনিক হেপাটাইটিস বি’তে আক্রান্ত গর্ভবতী মায়ের ওপর ভাইরাসের কী প্রভাব তা নিশ্চিতভাবে জনা না গেলেও গর্ভকালীন জরায়ুর ভেতরে রক্তক্ষরণ, গর্ভজনিত ডায়াবেটিসের আশঙ্কা আছে বলে ইদানীং কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তা সরাসরি হেপাটাইটিস বি এর কারণে হয় নাকি এর ফলে লিভারের যে সমস্যা হয় তার কারণে হয়, সেটা নিয়ে মতভেদ আছে।

সময়ের আগে সন্তান জন্ম হওয়া, সন্তানের ওজন কম হওয়া, নবজাতকের জন্ডিস, জন্মগত ক্রটি, গর্ভকালীন এবং জন্মের কিছু দিনের মধ্যে (পেরিন্যাটাল) মৃত্যু ইত্যাদির সাথে ক্রনিক হেপাটাইটিস বি’র সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।

ক্রনিক হেপাটাইটিস বি’র ওপর গর্ভাবস্থার কিছু প্রভাব আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় যার জন্য গর্ভকালীন স্টেরয়েড হরমোনের আধিক্যকে দায়ী করা হয়। অন্য দিকে ইস্ট্রোজেন নামের হরমোন ভাইরাসের বৃদ্ধিকে প্রতিহত করে বলে মনে করা হয়।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের আক্রমণাত্মক অবস্থাও দেখা গেছে শিশুর জন্মের এক মাসের মধ্যে। এজন্য শিশুর জন্মের পর বেশ কয়েক মাস এ ধরনের রোগীদের পর্যবেক্ষণ করা উচিত।

হেপাটাইটিস বি থাকার ফলে তা  আপনার গর্ভধারণকালীন পরিচর্যা এবং সার্বিক অভিজ্ঞতার উপর কোন প্রভাব ফেলবে না । এ রোগ থাকার  মানে এই নয় যে আপনাকে আপনাকে সিজারিয়ান করাতে হবে।

হেপাটাইটিস বি কিভাবে ছড়ায়?

রক্ত ও রক্তজাত পদার্থ হেপাটাইটিস-বি এর বাহক। কোনো ব্যক্তির যদি হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস থাকে, তবে এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত রোগীর সঙ্গে যৌন সঙ্গম করলে, আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত গ্রহণ করলে, সংক্রমিত রোগীর ব্যবহার করা টুথব্রাশ, ব্লেজার বা ব্লেড ব্যবহার করলে, সংক্রমিত রোগীর কাছ থেকে সুস্থ ব্যক্তির দেহে এ জীবাণু ছড়াতে পারে। ঐতিহ্যগতভাবে সেলুনে ব্যবহূত ক্ষুর বিভিন্ন জনের ব্যবহারকালে হেপাটাইটিস-বি সংক্রমিত হতে পারে।

গর্ভবতী মায়ের শরীরে হেপাটাইটিস-বি থাকলে প্রসবকালে নবজাতকের হেপাটাইটিস-বি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তবে সংক্রমিত রোগীর সঙ্গে করমর্দন করলে, হাঁচি দিলে, রোগীর পাশাপাশি বসলে এ ভাইরাস ছড়ায় না।

গর্ভাবস্থার প্রথমদিকে অর্থাৎ প্রথম তিন মাসে মা Acute হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত হলে শিশুতে সংক্রমণের হার শতকরা শূন্য ভাগ। চার থেকে ছয় মাস গর্ভাবস্থা হলে এর সম্ভাবনা ৬ শতাংশ এবং শেষ পর্যায় অর্থাৎ সাত থেকে নয় মাস হলে এর সম্ভাবনা ৬৭ শতাংশ। কিন্তু Chronic হেপাটাইটিস বি-তে আক্রান্ত মহিলা গর্ভধারণ করলে থেকে সংক্রমণের সম্ভাবনা পুরো গর্ভাবস্থায় একই অর্থাৎ ৪০%।

গর্ভাবস্থায় হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ

হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের অ্যাকিউট সংক্রমণের লক্ষনগুলো হলো  খাদ্যে অরুচি, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, শরীর ব্যাথা, হালকা জ্বর, প্রস্রাব গাঢ় হওয়া ইত্যাদি। এ লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে জন্ডিসে রূপ নিতে থাকে। দেখা গেছে যে, সব ধরনের হেপাটাইটিস এর ক্ষেত্রেই গা চুলকানো একটি সম্ভাব্য লক্ষন হতে পারে।

এ অসুস্থতাগুলো কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হয় এবং এরপর ধীরে ধীরে এর অবস্থার অবনতি ঘটে। কারও কারও ক্ষেত্রে যকৃতের গুরুতর অসুস্থতা(Acute Hepatic Failure)দেখা যায়। আবার কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণটি কোন লক্ষন প্রকাশ না করে সুপ্ত অবস্থাতেও থাকতে পারে।

বিজ্ঞাপণ

গর্ভাবস্থায় হেপাটাইটিস বি এর আলাদা কোন লক্ষণ প্রকাশ নাও পেতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত পরীক্ষার সময় সকল মহিলাদের হেপাটাইটিস  বি এর পরীক্ষা করানো উচিৎ।  

পরীক্ষায় যদি তা ধরা পড়ে তাহলে শিশুকে  সংক্রমণ এবং দুরারোগ্য লিভার রোগের ঝুঁকি থেকে রক্ষার জন্য চকিৎিসার দরকার হব।মায়ের চিকিৎসা  করানোরও পরার্মশ দওেয়া হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় হেপাটাইটিস বি এর চিকিৎসা

বর্তমানে হেপাটাইটিস বি এর কোনও আরোগ্য নেই। গর্ভকালীন সময় রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তে ভাইরাসের পরিমাণ জানা যাবে ( ভাইরাল লোড টেস্টিং)। আপনার ভাইরাল লোডের পরিমাণ যদি খুব বেশী হয় তাহলে ভাইরাসের মাত্রা কমিয়ে আনতে আপনাকে ওষুধ দেয়া হতে পারে।

যদি গর্ভবস্থায় রক্তে অ্যাকটিভ ভাইরাস পাওয়া গিয়েই থাকে, তবেও নিশ্চিত করে বলা যায় না, সন্তানে তা ছড়াবেই। রক্তে যদি উচ্চমাত্রায় ভাইরাসের উপস্থিতি থেকে থাকে, তবেই কেবল তা সন্তানের দেহে প্লাসেন্টা পার হয়ে ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম। এমতাবস্থায় আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসা করা যেতে পারে Tenofovir Disoproxil Fumarate ট্যাবলেট দ্বারা।

সন্তান জন্মের পূর্বে আট থেকে বারো সপ্তাহ এবং সন্তান জন্মের পর চার থেকে বার সপ্তাহ পর্যন্ত এই ট্যাবলেট সেবন করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে সাধারণত। এই ট্যাবলেটটি রক্তে ভাইরাসকে বংশবৃদ্ধিতে অক্ষম করে তোলে। একই সাথে ভাইরাস যেন প্লাসেন্টা পেরিয়ে ফিটাসের দেহে প্রবেশ করতে না পারে, সেই ব্যাপারটিও নিশ্চিত করে।

যদি গর্ভাবস্থায় মায়ের ভাইরাল লোড কম থাকে তবে ডাক্তার এসময় চিকিৎসা শুরু করার পরামর্শ নাও দিতে পারেন যদি না মায়ের কিডনির কোনও রোগ না থাকে।

হেপাটাইটিস বি এর অনেক ধরনের ওষুধ আছে। তাদের কিছু কিছু গর্ভাবস্থায় গ্রহন করা নিরাপদ নয়। এ কারণে আপনার যদি হেপাটাইটিস বি থাকে তবে সন্তান নেয়ার পরিকল্পনা করলে তা আগে ডাক্তারকে জানান উচিৎ।

আপনি যদি এর ওষুধ নেয়া অবস্থায় গর্ভবতী হয়ে পড়েন তবে সেটাও ডাক্তারকে জানাতে হবে যাতে তিনি প্রয়োজন মতো ওষুধ পরিবর্তন করতে পারেন।

আপনার শিশুকে কিভাবে হেপাটাইটিস বি থেকে সুরক্ষিত রাখবেন?

হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত মায়ের গর্ভে জন্ম নেয়া শিশুর এরোগে সংক্রমিত হওয়ার আশংকা থাকে। এসব ক্ষেত্রে ৪ টি টিকার একটি কোর্স গ্রহণ করা খুবি জরুরী কারণ এটি আপনার শিশুর সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয় এবং ভবিষ্যতে আপনার শিশুর হেপাটাইটিস বি এ সংক্রমিত হওয়া থেকে সুরক্ষা দেয়।

হেপাটাইটিস বি এর টিকা অত্যন্ত কার্যকরী এবং এর নিরাপত্তা সংক্রান্ত রেকর্ড চমৎকার। নিম্নলিখিত সময় আপনার শিশুর টিকার দরকার হবে-

  • জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে- এছাড়া আপনার শিশুর একটি এন্তিবডিজ ইনজেকশনেরও দরকার হতে পারে (ইমিউনোগ্লবিন)। একটি শিশুর লিভারকে তাৎক্ষণিকভাবে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এবং অপরটি শিশুর শরীরে স্থায়ীভাবে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরির জন্য।
  • ১ মাস বয়সের সময়।
  • ২ মাস বয়সের সময়।
  • ১২ মাস বয়সের সময়। এছাড়াও টিকা সফল হয়েছে কিনা সেটি পরীক্ষা করে দেখার জন্য একটি বাড়তি রক্ত পরীক্ষা করতে হবে।
  • ৫ বছর বয়সের সময় একটি বুস্টার টিকা নিতে হবে।

ডোজগুলো দিয়ে পুরো ভ্যাক্সিন কোর্স সচেতনতার সাথে পূর্ণ করা উচিৎ সকলের। একটি কথা, নবজাতক শিশুর জন্য এই পৃথিবী এ সময়  সবথেকে প্রতিকূল অবস্থায় বিরাজ করে, শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়ে উঠতে উঠতে অনেক সচেতন থাকতে হয় বাবা-মাকে।

শিশুকে হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত মায়ের বুকের দুধ পান করানো

বিজ্ঞাপণ

পূর্ববতী সময়ে যখন নবজাত শিশুর জন্য হেপাটাইটিস বি’র টিকা বা ভ্যাকসিন এবং হেপাটাইটিস বি ইমিউনোগ্লোবিউলিন প্রয়োগের প্রচলন ছিল না তখন হেপাটাইটিস বি’তে আক্রান্ত মায়ের বুকের দুধ পান করানোকে আক্রান্ত হওয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হতো।

ঠিক সেই সময়ে এক রিপোর্ট বেরোলো যে, হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত মায়ের বুকের দুধ পান করা শিশুর চেয়ে কৌটার দুধ পান করানো শিশুর সংখ্যা বেশি যাদের রক্তে এ ভাইরাস পজেটিভ হয়েছে (যথাক্রমে ৫৩% এবং ৬০%)।

ইদানিং আরো গবেষণা হয়েছে এ বিষয়ে, তাতে দেখা গেছে বুকের দুধ খাওয়ানো এবং না খাওয়ানো শিশুর মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণে কোনো ভিন্নতা নেই (০-৫%)।

সংগৃহীত সব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে দ্য আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য স্টাডি অব লিভার ডিজিজেস হেপাটাইটিস বি-তে আক্রান্ত মায়ের বুকের দুধ শিশুকে পান করানোর ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছে, যদি শিশুর হেপাটাইটিস বি’র টিকা এবং ইম্যুনোগ্লোবিউলিন দেয়া থাকে।

পরিশিষ্ট

একটা কথা উল্লেখ করতে হয়, স্ত্রী বা স্বামীর কারও রক্তে ‘বি’ ভাইরাস থাকলে (‘বি’ ভাইরাস পজিটিভ) তাদের জীবনসঙ্গী স্বামী বা স্ত্রীকেও ‘বি’ ভাইরাসের টিকা নিতে হবে। কারণ এই ভাইরাস রক্তের মাধ্যমে এবং শারীরিক সংস্পর্শের মাধ্যমেও ছড়ায়। আপনি ও আপনার পরিবারের সবাই হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকা নিন এবং আপনার শিশুকেও টিকা দিন। ভালো থাকুন।

সবার জন্য শুভকামনা।


Spread the love

Related posts

Leave a Comment